ঈদ ঈদ ঈদ... দরজায় কড়া নাড়ছে। কাল সকালে বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে বের হচ্ছি।টিকেট টা এখনো হাতে পাইনি যদিও।পাবো কিনা তাও বুঝতে পারছিনা।টিকেট কেটে একবার ক্যানসেল করা হয়েছে। এই খরার মৌসুমে টিকেট পেয়ে আবার হাতছাড়া করে আমার মত এমন গাধারা খুব কমই আছে।টিকেট ক্যানসেল করা হয়েছে মানবদেহের গন্ধের কারণে।আমি মানুষের গায়ের গন্ধ মোটেও সহ্য করতে পারিনা।আর টিকেট টা ছিলো ট্রেনের, শোভন ক্লাসের, যেটাকে টিনের বাক্সে প্যাকড জনসমুদ্র বললে ভুল হবেনা।এই ট্রেনে ওঠার পরবর্তী ৬ ঘন্টা নিজের মাথা বাদে শরীরের অন্যান্য অংগ-প্রত্যংগের কোন হদিস পাওয়া যাবেনা।এবং, সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা- এসময়টুকুতে ঘুমানো এবং পারলে নিঃশ্বাস নেওয়া, একদম বন্ধ রাখতে হবে। নিঃশ্বাস না নিয়ে থাকাটা হয়তো সম্ভব, কিন্তু লং জার্নিতে জাগরণ- অসম্ভব একটা কাজ।
গতবার যখন ঈদের ছুটিতে বাড়ি গেলাম, সেবার পাশের সিটে পড়লো এক বুড়ো।যতক্ষণ ছিলো একটানা বকর বকর, এবং অবশেষে যেটা হলো, ঘুম ভেঙ্গে দেখি বুড়োর লালায় আমার শার্টের বামপাশ ভেসে গেছে।তো এবার আর ট্রেনে যাবার রিস্ক নিচ্ছি না।
ছোটবেলায় যেবার প্রথম ট্রেনে চড়ি-সেবারের স্মৃতি অবশ্য মনে নাই, তবে কোন একবারে কথা মনে পড়ছে এখন।ট্রেন চলছিলো, হঠাত বৃষ্টি। এদিকে জানালার কাচগুলো ততদিনে বিদায় নিয়েছে। বৃষ্টি এসে সবগুলোকে ভিজিয়ে পরিষ্কার করে দিলো।সেবার খুলনা যাচ্ছিলাম। আরেকবার ভারতে মুর্শিদাবাদ থেকে ট্রেনে যাবার পথে বাংকারে উঠে ঘুমিয়েছিলাম। অদ্ভুত লাগেজ লাগেজ একটা অনুভুতি হচ্ছিলো।ওখানকার ট্রেনগুলো মজার ছিলো, দেখে মনে হতো কোন প্রাচীন কালের ট্রেন হয়তো-পুরান ছিলো।অন্তত আমার চোখে তাই মনে হতো।
যাহোক, ট্রেন নিয়ে আরো অনেক স্মৃতি আছে, এখন মনে পড়ছেনা। পরে বলা যাবেখন।