ইসলাম ধর্মের পাঁচ স্তম্ভ... কলিমা নমাজ রোজা হজ এবং যাকাত।
মনেপ্রাণে এক স্রষ্টা বিশ্বাস করা। একমনে নমাজ পড়া। রোজামাসে ত্রিশ রোজা রাখা। ধনী হলে হজে যাওয়া এবং যাকাত আদায় করা হলো অবশ্যপালনীয় আদেশ।
মুসলমানের সবকিছুতে বৈধতা থাকতে হবে। অবৈধতা বর্জন করতে হবে। ন্যায় কাজ করতে হবে। অন্যায় এবং অভিচার থেকে দূরে থাকতেই হবে।
কিন্তু ষড়রিপুর প্রভাবে আমরা সহজে লোভার্ত হই এবং আকাম কুকাম করে বিভ্রান্ত এবং বিপর্যন্ত হই, যা মানবজাতির স্বভাব। অনুতপ্ত এবং লজ্জিত হয়ে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করেন। আমাদের প্রতিপালক হলেন অতি ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু।
এখন আসি আসল সমস্যায়, যা শুরু হয় ক্ষমা চাওয়া এবং ক্ষমা পাওয়া থেকে। শুরুতে যা মানা এবং করা অবশ্যপালনীয় আদেশ, অন্তরের কুমন্ত্রণায় তা পরে ঐচ্ছিক অথবা স্বেচ্ছামূলক হয়ে যায়, মানে তা আর বাধ্যতামূলক থাকে না। আমাদের প্রতিপালক হলেন অতি ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু। অজান্তে ভুল হয়েছে ক্ষমা চাইলে ক্ষমা পাব। এমন মনোভাব। তার উপর শয়তানের প্ররোচনা, উসকানি এবং উত্তেজনা তো আছেই।
একটা কথা মনে রাখতে হবে, গোপনে অনিষ্টকারী এবং গোপনে নিন্দাকারীকে কেউ পছন্দ করে না। সাধ্যসাধনা এবং ধৈর্যের সাথে গোপনে অনিষ্ট করা এবং গোপনে নিন্দা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারলে আত্মবিশ্বাস এবং স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস অটুট থাকবে। আমরা মানুষ, আমরা সহজে লোভার্ত হই এবং হব। মুখে বললেই আত্মশুদ্ধি হয় না এবং আত্মশাসন সহজ বিষয় নয়।
ধৈর্যশীল এবং সংযমী হতে হলে শিক্ষিত এবং বিচক্ষণ হতে হয়। চিন্তাশীল অথবা মনিষী হওয়া মুখের কথা নয়। জানতে হলে পড়তে হয়। আর পড়তে হলে অক্ষরজ্ঞানের প্রয়োজন। পড়ে বুঝলে কুরআনে সব বিষয় বিশ্লেষিত আছে। কুরআনে যা আছে তা আমাদেরকে চর্চা করতে হবে। শুধু মুখস্ত পড়লে হবে না।
ফতুয়া থেকে ফ্যাসাদ শুরু হয় জানাসত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ফরজ বাদ দিয়ে ফতুয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলে মাঝে মাঝে পরেজগারি জাহিরের হুজুগ তুঙ্গে উঠে। এসব হুজুগ এবং সুযোগ এড়িয়ে চলতে হবে। অন্যায়, অভিচার, বৈধ এবং অবৈধ সম্বন্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। গায়েরজোরে অথবা বুদ্ধিরজোরে অন্যের ক্ষতি করা ছাড়তে হবে।
কুরআনের প্রথম শব্দদ্বয় হলো... বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম, অর্থ "পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে"।
তারপর হলো... আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ'লামীন, অর্থ হল "সমস্ত প্রশংসা এবং ধন্যবাদ আল্লাহের জন্যে যিনি বিশ্বজগতের পালনকর্তা"।
আল্লাহ নিজে বলেছেন ...
আল-মা'আরিজ ১৯. নিশ্চয় মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে অতিশয় অস্থিরচিত্তরূপে। ২০. যখন বিপদ তাকে স্পর্শ করে সে হয় হা-হুতাশকারী।
সূরা ক্বাফ আয়াত ১৬. আর অবশ্যই আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রবৃত্তি তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয় তাও আমরা জানি। আর আমরা তার গ্ৰীবাস্থিত ধমনীর চেয়েও নিকটতর।
সূরা যুমার আয়াত ৬২. আল্লাহ সব কিছুর স্রষ্টা এবং তিনিই সব কিছুর ব্যবস্থাপক।
সূরা ফাতির আয়াত ৪৫. আর আল্লাহ্ মানুষদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও করলে, ভূ-পৃষ্ঠে কোন প্রাণীকেই তিনি রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অতঃপর যখন তাদের নির্দিষ্ট সময় এসে যাবে, তখন তো আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে সম্যক দ্রষ্টা।
উপরের আয়াত থেকে প্রমাণিত হয়, আল্লাহর কাছে সবাই সমান। কেউ মানে না, তা তার ব্যক্তিগত সমস্যা।
সকলের মঙ্গল হোক! শান্তি বর্ষিত হোক সবার উপর।
© Mohammed Abdulhaque
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:৩০