somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমান শিক্ষানীতিকে ধর্মহীন কেন বলা হয় পড়ে দেখুন

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্বকথা
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এক ঐতিহাসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশি জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করি। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশের জনগণকে স্বাধীনচেতা ও দ মানবসম্পদে রূপান্তরের মহান ল্যকে সামনে রেখে ড. মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদার নেতৃত্বে গঠন করা হয় বাংলাদেশ জাতীয় শিা কমিশন। এরপর সময়ের ক্রমপরম্পরায় বিভিন্ন সময়ে আরো নয়টি শিা কমিশন/কমিটি/টাস্কফোর্স গঠিত হয়। সর্বশেষ বর্তমান সরকার মতায় আসার পর গত ৬ এপ্রিল জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতীয় শিানীতি প্রণয়ন কমিটি ২০০৯ গঠন করে। গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯ এ কমিটি তাদের চূড়ান্ত খসড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট পেশ করে। স্বাধীনতা লাভের দীর্ঘ ৩৯ বছরে আমরা সর্বমোট ১০টি শিা কমিশন/শিা সংস্কার কমিটি/অন্তর্বর্তীকালীন টাস্কফোর্স/শিানীতি প্রণয়ন কমিটির বিশাল বিশাল রিপোর্ট পেয়েছি। এ সকল কমিশন/কমিটির রিপোর্টে প্রদত্ত সুপারিশমালা পর্যালোচনা করে আমরা এ কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারি যে, সামগ্রিকভাবে এসব কমিশন/কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ব্রিটিশদের চাপিয়ে দেয়া শিাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীন বাংলাদেশি জাতির শিার ভিত্তি নির্ধারণ তথা পূর্ণাঙ্গ শিানীতি প্রণয়নের পরিবর্তে শিার কাঠামোগত বিন্যাস, গুণগত ও পরিমাণগত উন্নয়নের জন্য সুপারিশ প্রণয়নের উপর তাদের পূর্ণ প্রচেষ্টা বিনিয়োগ করেছে। অধিকন্তু এসব কমিশন/কমিটির সুপারিশমালার অধিকাংশই এখন পর্যন্ত বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। তাই আঙ্গিক দিক থেকে আমরা উপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি পেলেও আমাদের মনন ও মানসজগতকে ঔপনিবেশিকতার যাঁতাকল ও নব্য সাম্রাজ্যবাদী/নব্য উপনিবেশবাদীদের কবল থেকে মুক্ত করতে পারিনি। অক্টোবর-০৯, শিানীতির খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় এবং তা নিয়ে সারাদেশে প্রতিবাদ বিােভের ঝড় ওঠে। এ বছর ৩১ মে ২০১০, মন্ত্রীসভায় জাতীয় শিানীতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। এরপর থেকেই সকলে গভীর আগ্রহে অপোয় ছিলেন শিানীতিতে কি কি পরিবর্তন করা হয়েছে তা জানার জন্য। কিন্ত মে মাসে শিানীতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুমোদন করা হলেও চার মাসে তা প্রকাশ না করায় বিভিন্ন মহল থেকে সন্দেহ করা হতে থাকে সরকার হয়তো গোপনে শিানীতি বাস্তবায়ন করবে। অবশেষে গত ৩ অক্টোবর-২০১০, জাতীয় সংসদে শিানীতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর সর্বসাধারণের জন্য সেটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এ শিানীতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি। পুরো বিষয়টি অন্ধকারে ছেড়ে দেয়ার মত। জাতীয় শিানীতি ২০১০ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পাঠ্যসূচি অধ্যায়ের নম্বর বন্টন অধ্যায়টি রাখা হয়নি। ফলে খসড়া শিানীতির সাথে চূড়ান্ত শিানীতির সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য কেউ খুঁজে বের করতে পারছেন না। এ শিানীতির এমন অনেক বিষয় যা অসংগতিপূর্ণ ও পরস্পর বিরোধী । তা ছাড়া এ শিানীতি গতানুগতিক ও নৈতিক দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ।

সারসংপে

জাতীয় শিানীতি ২০১০ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন হওয়ার পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট িি.িসড়বফঁ.মড়া.নফ -তে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে এবং এ শিানীতির আলোকেই আগামী দিনের শিা কার্যক্রম ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। জাতীয় শিানীতির-২০১০ পর্যালোচনা করার পর এর যে সারসংপে দাঁড়ায় তা নিম্নরূপ:
জাতীয় শিানীতি ২০১০-এর চূড়ান্ত খসড়ায় শিানীতির মূল উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, “মানবতার বিকাশ এবং জনমুখী উন্নয়নে ও প্রগতিতে নেতৃত্বদানের উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিবান, নিজের এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসা¤প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক এবং কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলা।পাশাপাশি শিার মাধ্যমেই জাতিকে দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার বৈশিষ্ট্য ও দতা অর্জন করতে হবে। এই শিানীতি সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশে গণমুখী, সুলভ, সার্বজনীন, সুপরিকল্পিত এবং মানসম্পন্ন শিাদানে সম শিাব্যবস্থা গড়ে তোলার ভিত্তি ও রণকৌশল হিসেবে কাজ করবে।”
শিার কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক শিা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত এবং মাধ্যমিক শিা নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে; উচ্চ শিার কাঠামো অপরিবর্তিত রয়েছে।
সাধারণ ও মাদরাসা শিা উভয় ধারাতেই প্রাথমিক স্তর হবে বাধ্যতামূলক মৌলিক শিার স্তর এবং এতে অভিন্ন পাঠ্যসূচি অনুসৃত হবে। তবে মাদরাসার েেত্র কুরআন, হাদীস, আরবিÑ এসব বিষয় অতিরিক্ত পড়তে হবে।
প্রাথমিক স্তরে শিশুদের শিখনকার্যে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য ১ বছরের প্রাক-প্রাথমিক শিার ব্যবস্থা এবং এর জন্য অবকাঠামোগত সুযোগ সৃষ্টির সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রাথমিক স্তরে সাধারণ ও মাদরাসা শিা উভয় ধারাতেই ধর্ম ও নৈতিক শিা বাধ্যতামূলক করা হলেও মাধ্যমিক স্তরের সাধারণ শিাধারার মানবিক শাখা ও ভোকেশনাল শিায় ধর্ম ও নৈতিক শিা ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে রাখা হয়েছে; কিন্তু বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিা শাখার পাঠ্যক্রম থেকে তা পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক স্তরের সাধারণ শিাধারায় তথ্যপ্রযুক্তি শিা বাধ্যতামূলক করা হলেও মাদরাসা শিাধারায় তা ঐচ্ছিক হিসেবে রাখা হয়েছে এবং প্রাথমিক স্তর থেকে শিা-উপকরণ (ঞবধপযরহম ধরফ) হিসেবে কম্পিউটার ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সাধারণ ও মাদরাসা শিা উভয় ধারাতেই বাংলাদেশ স্টাডিজ নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে; কিন্তু মাদরাসা শিার নবম-দশম শ্রেণীতে একে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে রাখা হয়েছে। শিানীতির কোথাও এর পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু (ঈড়হঃবহঃ) সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা নেই। এছাড়া প্রাথমিক স্তরে ৩য় থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনসহ পরিবেশ নামের একটি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর শেষে পাবলিক পরীার মাধ্যমে শিার্থীদের স্তরভিত্তিক পারদর্শিতার মূল্যায়ন করা হবে। এর উপর ভিত্তি করে সনদ প্রদান করা হবে। এর মধ্যবর্তী সময়ের জন্য পঞ্চম ও দশম শ্রেণী শেষে আঞ্চলিক পর্যায়ে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে।
মাদ্রাসা শিাধারার শিাক্রমে পূর্বের সাধারণ ও বিজ্ঞান শাখার পাশাপাশি ব্যবসায় শিা শাখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; কিন্তু হিফজুল কুরআন ও মুজাব্বিদ মাহির শাখা বাতিল করা হয়েছে।
সাধারণ শিাধারায় প্রাথমিক স্তর থেকেই ললিতকলা শিা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ইংরেজি মাধ্যম শিাকে বিদেশী ধারার কারণে বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করে কোনো রূপ সংস্কারপ্রস্তাব ও নিরীা কার্যক্রমের আওতার বাইরে রেখে পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য দেয়া হয়েছে।
মাদরাসা শিাধারার এ যাবতকাল পর্যন্ত চলমান স্বাতন্ত্র্যকে সমতায়ন (যড়সড়মবহরুধঃরড়হ)-এর যুক্তিতে বহুলাংশে সংকুচিত করে নিয়ে আসা হয়েছে।
বর্তমান মাদরাসা শিার ক্বাওমি ও আলিয়া এ দুটোকে পৃথক দেখানো হয়েছে এবং কওমী মাদ্রাসার জন্য আলাদা কওমী মদ্রাসা শিা কমিশন করার কথা বলা হয়েছে।
শিানীতি সম্পর্কে এতটুকু বলা যায় শিানীতি-২০১০, মূলত একটি স্তরগত পরিবর্তনশীল শিানীতি। শিাব্যাবস্থার গুনগত বৈশিষ্ট ও মৌলিক নীতি সংক্রান্ত উন্নত দর্শন এ ব্যাবস্থায় স্থান পায়নি। দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠির চিন্তা ও বিশ্বাসের পুরোপুরি প্রতিফলন এতে হয়নি। এমনকি কাঠামোগত দিকেও খসড়া শিানীতির ন্যায় পাঠ্যসূচি মান বন্টন সংক্রান্ত সংযোজনীগুলো স্থাপন না করায় এ দিকটাও অসম্পুর্ণ থেকে যায়। এসব কারনে শিানীতির পুর্নাঙ্গতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

খসড়া শিানীতি ‘০৯ থেকে জাতীয় শিানীতি '১০ কিছু পর্যবেণ

২০০৯ সালের যে খসড়া শিানীতি প্রকাশ করা হয় তার মূল বিষয় ছিল সংযোজনী ২ও৩ নামের অধ্যায়টি। প্রথম শ্রেণী থেকে এইচএসসি/ আলীম পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণীতে কোন বিষয়ে কত নম্বরের কোর্স পড়ানো হবে তার বিস্তারিত উল্লেখ ছিল এই অধ্যায়ে। ফলে এই অধ্যায়ের মাধ্যমে শিানীতির মূল চরিত্র প্রকাশ পায় এবং সকল শ্রেণীর সাধারণ মানুষ শিানীতির বৈশিষ্ট্য বুঝতে সম হয়। এই অধ্যায়ের উপর ভিত্তি করেই সারাদেশের শিানীতি নিয়ে প্রবল প্রতিবাদ গড়ে ওঠে। কিন্তু চূড়ান্ত শিানীতি থেকে এই অধ্যায়টি বাদ দেওয়ায় খসড়া শিানীতির সাথে চূড়ান্ত শিানীতির তুলনার কোন সুযোগ পাচ্ছে না। খসড়া শিানীতির সাথে চূড়ান্ত শিানীতির কতটুকু সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য রয়েছে এবং খসড়া শিানীতির যেসব বিষয় নিয়ে সারাদেশে প্রবল আপত্তি উঠেছিল তার কতটুকু রাখা বা বাদ দেয়া হয়েছে তা মিলিয়ে দেখার কোন সুযোগ রইল না।
খসড়া শিানীতিতে অনেকগুলো আপত্তিকর বিষয় থাকলেও মূলত তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে খসড়া শিানীতি নিয়ে প্রতিবাদ বিােভ শুরু হয়। এই তিনটি প্রধানতম বিষয়গুলো হল, (ক) শিানীতির শুরুতে ল্য ও উদ্দেশ্য অধ্যায়ে সেকুল্যার শব্দের প্রয়োগ, (খ) সাধারণ শিায় নবম ও দশম শ্রেণী থেকে বাধ্যতামূলক ধর্মশিা উঠিয়ে দেয়া (গ) মাদ্রাসা শিার পাঠ্যসূচি থেকে কুরআন-হাদীস আর ইসলামী শিা ব্যাপকভাবে কাটছাট করা। এই তিনটি বিষয় ছিল মারাত্মক ভাবে আপত্তিকর। বাংলাদেশের মত শতকারা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশের জাতীয় শিানীতির দর্শন এভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী মূলত তাদের ধর্মীয় পরিচয় হারাবে এবং তারা তথাকথিত সেকুল্যার জাতির অভিশপ্ত জীবনে প্রবেশ করবে। তাই এই দর্শন এদেশের সর্বস্তরের মুসলিম জনগোষ্ঠী প্রত্যাখান করেছিল। জাতীয় শিানীতি ২০১০ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে সেকুল্যার শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে যেটি ইতবাক কিন্তু মাদ্রাসা শিার পাঠ্যসূচির ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করে যেসব বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তা কতটুকু শিানীতিতে রাখা হয়েছে বা আপত্তিকর বিষয়ে শিানীতিতে কতটুকু সংশোধন করা হয়েছে সে বিষয়ে তুলনার কেউ সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পাঠ্যসূচির সেই নম্বর বন্টন অধ্যায়টি নেই।

অতীতে সকল শিানীতিতে মান বন্টন অধ্যায় ছিল

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে তিনটি শিা কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এগুলো হল কুদরাত-এ-খুদা কমিশন- ১৯৭২, মফিজউদ্দিন শিা কমিশন- ১৯৮৮ এবং জাতীয় শিা কমিশন- ২০০৩ (মনিরুজ্জামান মিঞা শিা কমিশন)। এছাড়া মাদ্রাসা শিা সংস্কার কমিটি ১৯৮৯, জাতীয় শিানীতি প্রণয়ন কমিটি ১৯৯৭ (শামসুল হক শিানীতি), জাতীয় শিানীতি ২০০০, ড. এম এ বারী কমিশন ২০০২ এবং সর্বশেষ জাতীয় শিানীতি ২০০৯ চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি শিানীতির মূল বৈশিষ্ট্য ছিল পাঠ্যসূচি এবং মানবন্টন। কোন কোন প্রতিবেদনে কোন বিষয়ে কতটি কাস হবে সে বিষয়ও উল্লেখ ছিল। কিন্তু সর্বশেষ জাতীয় শিানীতি ২০১০ এর প্রতিবেদনে পাঠ্যসূচি অধ্যায়ে মানবন্টন বিষয়ের উল্লেখ নেই।

বর্তমান শিানীতি ও খুদা কমিশন এক এবং অভিন্ন পথের যাত্রী

স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ শাসনামলে একটি শিা কমিশন এবং তিনটি শিানীতি প্রণীত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে বিজ্ঞানী কুদরাত-এ-খুদার নেতৃত্বে প্রণীত হয় কুদরাত-এ-খুদা শিা কমিশন। এরপর ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর শামসুল হকের নেতৃত্বে “জাতীয় শিানীতি প্রণয়ন কমিটি” ২০০০ সালে ‘জাতীয় শিানীতি’ এবং বর্তমানে প্রফেসর কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘জাতীয় শিানীতি ২০১০’ এর চূড়ান্ত খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। খুদা কমিশনের পর যে তিনটি শিানীতি আওয়ামীলীগ প্রণয়ন করেছে তার প্রত্যেকটি প্রণয়ন করা হয়েছে খুদা কমিশনকে ভিত্তি করেই। খুদা কমিশনকে কিভাবে যুগোপযোগী করে বাস্তবায়ন করা যায় সেটিই ছিল এ তিনটি শিানীতি কমিশন প্রণয়নের মূল ল্য। ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর শামসুল হকের নেতৃত্বে যে শিানীতি প্রণয়ন করা হয় তা ছিল আসলে খুদা কমিশনেরই আধুনিক ভার্সন। আর সর্বশেষ যে শিানীতি ২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে তা করা হয়েছে “৯৭” সালের শিানীতিকে ভিত্তি করে যার মূল ভিত্তি ছিল খুদা কমিশন। যে কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে বর্তমান শিানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে তিনি ১৯৭৪ সালে কুদরাত-এ-খুদা কমিশনেরও সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগ যখনই মতায় এসেছে তখনই তারা চেয়েছে খুদা কমিশন বাস্তবায়ন করতে। সেজন্য তারা সবসময় সেটিকে সময়োপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মতায় বসার পরপরই শিামন্ত্রী নূরূল ইসলাম নাহিদ ২০০৯ সালের ২৮ জানুয়ারী একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন, কুদরাত-এ-খুদা কমিশনের আলোকে প্রণীত শামসুল হক শিানীতিকে যুগোপযোগী করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। আর খুদা কমিশন নিয়ে প্রতিবাদের মূল বিষয় ছিল ধর্মশিাকে অবহেলা করা। আর পরের শিানীতি যেহেতু খুদা কমিশনকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে তাই সেেেত্র ধর্মকে গুরুত্বহীন করার বিষয়টি স্থান পেয়েছে ঘুরে ফিরে এবং আওয়ামী লীগ আমলে প্রণীত শিানীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এ ধর্ম। সর্বশেষ শিানীতির েেত্রও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

এ শিানীতি ইঁদুর বিড়াল খেলার সাদৃশ্য

জাতীয় শিানীতি চুড়ান্ত করার ল্েয জনগনের পরামর্শ ও মতামতের নিমিত্তে যে খসড়া শিানীতি ২০০৯ চুড়ান্ত করা হয়েছিল মূলত এই শিানীতি ছিল শিার অবকাঠামোগত সংস্কারের ভিত্তি। যেখানে চিন্তা, চেতনা ও বিশ্বাসে সেক্যুলারপন্থী বানানোর নব কৌশল ইংরেজ আমলের প্রণীত শিা ব্যবস্থার মৌলিক চরিত্র ফুটে উঠে। স্বাধীন বাংলাদেশ এবং দেশের মানুষের বিশ্বাস ও চিন্তাকে কেন্দ্রকরে এ শিানীতির দর্শন গড়ে উঠেনি। এটি জাতীয় শিানীতির একটি মৌলিক গলদ। অধিকন্তু চুড়ান্ত খসড়ায় পাঠ্যক্রম সংযোজনীর মাধ্যমে শিাব্যবস্থার মূল চরিত্র সম্পর্কে যতটুকুন অবগত হওয়ার সুযোগ ছিল শিানীতি-২০১০ প্রনয়নের সময় সেটি ও প্রকাশ না করে শিানীতির মৌলিকত্ব যতটুকু ছিল তাও নষ্ট করা হয়েছে। মূলত শিানীতি নিয়ে এ ইঁদুর বিড়াল সাদৃশ্য কাজটি কেন করা হলো, এটি একটি বড় রহস্য। সুতরাং রহস্যপূর্ণ, অস্পষ্ট কোন শিানীতি জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতির সোপান হতে পারেনা।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের অন্তরালে ধর্মবিমুখ নতুন প্রজন্ম তৈরী করাই মূল ল্য

ধর্মনিরপেক্ষতা (ঝবপঁষধৎরংস)-র সংজ্ঞা
ধর্মনিরপেক্ষতা ইংরেজী (ঝবপঁষধৎরংস)-র বাংলা প্রতিশব্দ। ঝবপঁষধৎরংস) রাষ্ট্র দর্শনের অপর নাম ঝবপঁষধৎরংস. ঝবপঁষধৎ অর্থ ইহলৌকিক, পার্থিব পরকাল বিমুখতা ইত্যাদি।
“র‌্যানডম হাউজ অব দ্যা ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ”-এ ঝবপঁষধৎ বা ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “যা ধর্ম সম্পর্কিত নয় (ঘড়ঃ ঢ়বৎষধরহরহম ঃড়ড়ৎ পড়হহপবঃবফ রিঃয ৎবষরমরড়ঁং ড়ৎফবৎ)। আর ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে এটি একটি রাজনৈতিক বা সামাজিক দর্শন যা সকল ধর্মবিশ্বাসকে নাকচ করে দেয় (জবলবপঃং ধষষ ভড়ৎসং ড়ভ ৎবষরমরড়ঁং ভধরঃয)। ঊহপুপষড়ঢ়বফরধ ড়ভ ইৎরঃধহরপধ-র সংজ্ঞা ও অনুরূপ। অর্থ্যাৎ যারা কেনো ধর্মের সংগে সম্পৃক্ত নন, কোনো ধর্মের অনুসারী নন, কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নন এবং আধ্যাত্মিকতা ও পবিত্রতার বিরোধী তাদেরকেই বলা হয় ধর্মনিরপেক্ষ। চেম্বারস ডিকশনারির মতে, “ঊফঁপধঃরড়হ ংযড়ঁষফ নব রহফবঢ়বহফবহঃ ড়ভ ৎবষরমরড়হ” অর্থ্যাৎ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ হচ্ছে এমন এক বিশ্বাস যার রাষ্ট্রনৈতিক শিক্ষা ইত্যাদি ধর্মমুক্ত থাকবে।
ঙীভড়ৎফ উরপঃরড়হধৎু-তে ঝবপঁষধৎরংস সবধহং ঃযব ফড়পঃৎরহব ঃযধঃ সড়ৎধষরঃু ংযড়ঁষফ নু নবংবফ ংড়ঃবষু ড়ভ ৎবমধৎফ ঃড় ঃযব বিষষনবরহম ড়ভ সধহশরহফ রহ ঃযব ঢ়ৎবংবহঃ ষরভব নব বীপষঁংরড়হ ড়ভ ধষষ পড়হংরফবৎধঃরড়হ ফৎধি ভৎড়স নবষরবভ রহ মড়ড়ফ ড়ৎ রহ ভঁঃঁৎব ংঃধঃব.
অর্থ্যাৎ ধর্মনিরপেক্ষতা এমন এক মতবাদ যা মনে করে আল্লাহ বিশ্বাস, পরকাল বিশ্বাস বিবেচনা থেকে মুক্ত থেকে মানবজাতির বর্তমান কল্যাণ চিন্তার উপর ভিত্তি করে নৈতিকতা গড়ে উঠবে।
প্রাচ্যবিদ ড. স্মিথ এর মতে “ঞযব ংবপঁষধৎ ংঃধঃব রং ধ ংঃধঃব যিরপয মঁধৎধহঃববং ড়ভ ৎবষরমরড়হ, ফবধষং রিঃয রহফরারফঁধষং ধং পরঃরুবহ রৎৎবংঃ ধপঃরাব ড়ভ যরং ৎবষরমরড়হ রং হড়ঃ পড়হংঃরঃঁঃরড়হধষষু পড়ৎৎবপঃবফ ঃড় ধ ঢ়ধৎঃরপঁষধৎ ৎবষরমরড়হ হড়ৎ ফড়বং রঃ ংববশ বরঃযবৎ ঃড় ঢ়ৎড়সড়ঃব ড়ৎ রহঃুবৎ ভবৎব রিঃয ৎবষরমরড়হ”
অর্থ্যাৎ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলতে বুঝায় এমন এক রাষ্ট্র যা ধর্মীয় স্বাধীনতা দান করে ব্যক্তিকে ধর্ম নির্বিশেষে নাগরিক হিসাবে বিবেচনা করে এবং শাসনতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্রে কোনো ধর্মের সাথে সংযুক্ত থাকেনা- ধর্মের উন্নতিও চায় না, হস্তক্ষেপও করেনা। বস্তুত ঝবপঁষধৎরংস বলতে বুঝায় এমন মতবাদ, যা পারলৌকিক ধ্যানধারণা ও ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কহীনভাবে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার কথা বলে। রাষ্ট্রের নীতি ও পরিচালনায় কোনোভাবেই ধর্মকে বিবেচনা করে না মুসলিম বিশ্বে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ইসলামমুক্ত শাসন। ইসলামকে ব্যক্তির জীবনে সীমাবদ্ধ রেখে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করা। ইসলাম থেকে রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পূর্ণভাবে পৃথক করা।

ধর্মনিরপেক্ষতার উৎপত্তি কোথায়

চার্চ ও রাষ্ট্রের দ্বন্দ-সংঘাতের মাধ্যমে ইউরোপে প্রথম ঝবপঁষধৎ রাষ্ট্র দর্শনের প্রসার ঘটে। কয়েক শতাব্দী ব্যাপী বিভিন্ন দার্শনিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় কার্যকলাপের ফলশ্রুতিতে ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝিতে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ পূর্ণতা লাভ করে। এর বিকাশে সহায়তা করছে ইউরোপীয় রেনেসাঁ, শিল্প বিপ্লব, জাতীয়তাবাদের আবির্ভাব, ফরাসী বিপ্লব এবং বিভিন্ন দার্শনিকের (যেমন- ম্যাকিয়াভেলি, থমাস, হবস, জর্জ জের, মার্ক্স এঙ্গেলস, ভলটেয়ার প্রমুখ) নাস্তিক্য, বস্তুবাদী, সমাজতান্ত্রিক ইত্যাদি চিন্তাধারা।
মুসলিম বিশ্বেও রাজনীতি বরাবরই ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে ক্রমান্বয়ে রাষ্ট্র ও ইসলামের বন্ধন দুর্বল হতে থাকে। তবুও অনেক বিচ্যুতি সত্ত্বেও আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি ছিল আল-ইসলাম। কিন্তু পশ্চিমা ঊপনিবেশিক শাসনের বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ অবক্ষয়ের কারণে মুসলিম বিশ্বে ঝবপঁষধৎ ভাবধারার প্রসার ঘটে। মোস্তফা কামাল-এর নেতৃত্বে ঝবপঁষধৎ তুর্কী গঠনের মধ্য দিয়ে মুসলিম বিশ্বে আনুষ্ঠানিকভাবে ঝবপঁষধৎ রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যক্রমকে ইসলামমুক্ত করে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার গোড়াপত্তন করেন। আর পরবর্তী দশকগুলোতে মুসলিমবিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ঝবপঁষধৎ রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
সুতরাং মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগকে আল্লাহ ও রাসূলের প্রভাবমুক্ত রেখে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ধর্মকে পরিত্যাগ করাই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মূল লক্ষ্য। এ মহান উদারতার খোলস পরেই মূলত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ইসলামের সাথে ঐতিহাসিক যুদ্ধে লিপ্ত। এই চিরন্তন লড়াই রাসূলে করীম (সা) এর সময়েও ছিল। যখন আল্লাহর নিকট থেকে প্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান মানব সমাজে কায়েমের আওয়াজ তুলেছেন ঠিক তখনই শাসকশ্রেণীর পক্ষ থেকে নানা অজুহাতে বিরোধীতা করা হয়েছে। হযরত ইব্রাহিম (আ)-এর সাথে নমরুদের, মুসা (আ)-এর সাথে ফেরাউনের এবং হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর সাথে আবু লাহাব-আবু জেহেলদের দ্বন্দ্ব ছিল চিরন্তন। আজও সেই লড়াই অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে। তাদের অনুসারীদের ভাষা এবং কৌশলের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু ইসলামের উপর আঘাত হানছে সমান গতিতেই এবং আরো অতিমাত্রায়।

ইতিবাচক দিকসমূহ

জাতীয় শিানীতি-২০১০ পর্যালোচনার পর আমরা এর ভেতরে কতক আশাব্যঞ্জক দিক খুঁজে পাই। শিা সংস্কারের মাধ্যমে যুগোপযোগী একটি শিাব্যবস্থা প্রণয়নের যে দাবি বহু দিন ধরে উত্থাপিত হচ্ছিল, তার অনেকখানি এ রিপোর্ট ধারণ করছে।
বিশেষ করে শিার কাঠামোগত সংস্কার সাধনের মাধ্যমে স্তরগত পুনর্বিন্যাস প্রবর্তন ছিল সময়ের দাবি। এর বাইরেও কতক বিষয় উঠে এসেছে, যা শিার মানোন্নয়নের মাধ্যমে একটি কল্যাণধর্মী উন্নত জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যেমনÑ
প্রাথমিক শিার প্রারম্ভে ১ বছর মেয়াদী প্রাক-প্রাথমিক শিা চালুকরণ।
৮ বছর মেয়াদী (১ম থেকে ৮ম শ্রেণী) বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিা চালুকরণ।
মাদরাসার মাধ্যমিক স্তরের শিাক্রমে ব্যবসায় শিা শাখা সংযোজন।
কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিার উপর গুরুত্বারোপ।
মাধ্যমিক স্তরে বাধ্যতামূলকভাবে তথ্যপ্রযুক্তি শিা অন্তর্ভুক্তকরণ।
শিক-শিার্থীর অনুপাত ১:৩০ নির্ধারণ।
প্রাথমিক স্তরে আদিবাসীসহ সকল ুদ্র জাতিসত্তার জন্য স্ব-স্ব মাতৃভাষায় শিণ-শিখন (ঃবধপযরহম-ষবধৎহরহম)-এর ব্যবস্থা করা।
সমমর্যাদাভুক্ত বা একীভূত শিাব্যবস্থা (রহপষঁংরাব বফঁপধঃরড়হ ংুংঃবস) চালুকরণ।
প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরাজমান বৈষম্য দূরীকরণের ল্েয পদপে গ্রহণ।
প্রাথমিক স্তরে (৩য় থেকে ৮ম শ্রেণী) ধর্মীয় ও নৈতিক শিা বাধ্যতামূলক করা।
শিার্থীদের শারীরিক শাস্তি সম্পূর্ণ বিলুপ্তকরণ।
উচ্চ শিায় ভর্তির েেত্র কোটা পদ্ধতির কারণে ন্যূনতম যোগ্যতার শর্ত শিথিল না করা।
উচ্চ শিায় গবেষণাকে উৎসাহিত করা এবং এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কনসালটেন্ট ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পদপে নেয়া।
সকল প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিাপ্রতিষ্ঠানে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার স্থাপন।
সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত নির্বাচনী পরীার মাধ্যমে শিার্থী ভর্তি।
জাতীয় শিানীতি নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নের জন্য একটি স্থায়ী জাতীয় শিা কমিশন গঠন।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও বেসরকারি কলেজ পর্যায়ে শিকদের নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি ও প্রশিণের জন্য একটি স্বতন্ত্র শিক নির্বাচন ও উন্নয়ন কমিশন গঠন।
প্রচলিত প্রাইভেট টিউশন ও কোচিং সেন্টার নিয়ন্ত্রণ ও নিরুৎসাহিত করে ক্রমে এর অবসান।
বিজ্ঞান ও প্রায়োগিক শিার উপর গুরুত্বারোপ।
কওমী মদ্রাসাগুলোর জন্য পৃথক কওমী শিা কমিশন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ

কিছু মৌলিক সীমাবদ্ধতা ও আমাদের বক্তব্য

জাতীয় শিানীতি-২০১০ অনেক আশাব্যঞ্জক ও বাস্তবভিত্তিক হওয়ার পরও বিশেষ কতিপয় সীমাবদ্ধতার কারণে তা জাতীয় আশা-আকাক্সা ও প্রয়োজনকে ধারণ করতে সম হয়নি। অনেক েেত্র শিানীতিতে স্ব-বিরোধিতা ফুটে উঠেছে। তাই এ শিানীাতিকে কোনোভাবেই পূর্ণাঙ্গ ও সর্বজনীন শিানীতি হিসেবে গণ্য করা যায় না। এর কারণগুলো নিম্নরূপ:

১।।
খসড়া রিপোর্টের শিার উদ্দেশ্য ও ল্য অধ্যায়ের ৪, ৫ ও ১৪ নম্বর পয়েন্টে যথাক্রমে বলা হয়েছে,
“জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারা বিকশিত করে প্রজন্ম পরম্পরায় সঞ্চালনের ব্যবস্থা করা।”
“দেশজ আবহ ও উপাদান সম্পৃক্ততার মাধ্যমে শিাকে শিার্থীর চিন্তা-চেতনা ও সৃজনশীলতার উজ্জীবন এবং তার জীবন-ঘনিষ্ট বিকাশে সহায়তা করা। ”
“সকল শিার্থীর মধ্যে সম-মৌলিক চিন্তা-চেতনা গড়ে তোলা এবংজাতির জন্য সম-নাগরিক ভিত্তি সৃষ্টির ল্েয সব ধারার শিার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে এক ও অভিন্ন শিাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যবই বাধ্যতামূলকভাবে পড়ানো। একই উদ্দেশ্যে মাধ্যমিক স্তরেও একইভাবে কয়েকটি মৌলিক বিষয় পড়ানো।”
অথচ এ বিষয় বেমালুম ভুলে যাওয়া হয়েছে ইংরেজি মাধ্যম শিার েেত্র। ইংরেজি মাধ্যম শিাকে একটি বিদেশী ধারার শিা হিসেবে গণ্য করে একে বিশেষ শিা হিসেবে স্বীকৃতি ও পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য দিয়ে সকল প্রকার পর্যবেণ, নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
জাতীয় শিানীতি ২০০৯-এর চূড়ান্ত খসড়ায় অন্য সব বিষয়ের ব্যাখ্যায় পৃথক পৃথক অধ্যায় রাখা হলেও দেশের ক্রমবর্ধমান ইংরেজি মাধ্যম শিাধারা সম্পর্কে কয়েক বাক্যেই সমাপ্ত করা হয়েছে। অথচ এখানে অধ্যয়ন করছে এ দেশেরই বিপুল সংখ্যক ছেলে-মেয়ে। আবার এ শিাধারায় এদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ছোঁয়াও নেই।
বাস্তবতা হলো, এদেশীয় বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা, রুচি ও সংস্কৃতির সাথে পরিচয় না থাকায় ইংরেজি মাধ্যমের শিার্থীরাই এদেশে অন্য একটি ংঁন-পঁষঃঁৎব গড়ে তুলছেÑ যা আমাদের সমাজের সাথে খাপ খায় না। তারা বেড়ে ওঠে একটি বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী হিসেবে, যা জাতিগত ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী।
সম-মৌলিক চিন্তা-চেতনা গড়ে তোলা ও সম-নাগরিক ভিত্তি সৃষ্টির পাশাপাশি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা ও পড়সসড়হ ংবঃ ড়ভ পঁষঃঁৎধষ াধষঁবং প্রবর্তনের স্বার্থেই ইংরেজি মাধ্যম শিাধারাসহ প্রত্যেক ধারার সকল শিার্থীরই আমাদের জাতীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা জরুরি। তাই ইংরেজি মাধ্যম শিাধারাসহ আমাদের শিাব্যবস্থার প্রত্যেক ধারাকেই সরকারি পরিবীণ ও নিরীার আওতায় আনতে হবে। আমরা মনে করি, বর্তমান ইংরেজি মাধ্যম শিাধারাকে বিদেশীদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করে এর শিাক্রম ও পাঠ্যসূচিতে সংস্কার সাধন করতে হবে। এেেত্র তাদের জন্য জাতীয় শিাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত শিাক্রমের ইংরেজি সংস্করণ (হধঃরড়হধষ পঁৎৎরপঁষঁস রহ ঊহমষরংয াবৎংরড়হ) অনুসরণ করা যেতে পারে।

২।।
জাতীয় শিানীতি-২০১০ এ চূড়ান্ত খসড়া-২০০৯ এর সংযোজনী ৩-এর নম্বর বন্টন অধ্যায়টি না থাকায় নবম ও দশম শ্রেনীতে ধর্ম শিা বাধ্যতামূলক আছে কি নাই তা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। কারন খসড়া শিানীতির মাধ্যমে মাধ্যমিক স্তরের শিা কার্যক্রম থেকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিা বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে চুড়ান্ত শিানীতির মাধ্যমিক অধ্যায়ের পৃষ্ঠা ১২তে শিাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তুক শিরোনামে বলা হয়েছে-সাধারণ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি সকল ধারায় বাংলা, ইংরেজী,বাংলাদেশ স্টাডিজ, সাধারণ গণিত এবং তথ্য প্রযুক্তি বাধ্যতা মূলক হিসেবে থাকবে। এখানে ধর্মের উল্লেখ নেই। অথচ জাতীয় শিানীতি-২০১০ এ শিানীতির মূল উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে,
“শিানীতির মূল উদ্দেশ্য মানবতার বিকাশ এবং জনমুখী উন্নয়নে ও প্রগতিতে নেতৃত্বদানের উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিবান, নিজের এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসা¤প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক এবং কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলা”।
আমরা উপর্যুক্ত মূল উদ্দেশ্য হাসিলের স্বার্থেই প্রত্যেক শিাধারার সকল স্তরের সকল শাখা ও বিভাগে ধর্মীয় ও নৈতিক শিাকে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
শিা-মনোবিজ্ঞানের আলোকে বলা যায়, সাধারণত মাধ্যমিক স্তরের শিার্থীদের বয়ঃক্রম হলো নানাবিধ টানাপোড়নের সময়।এ বয়সে মনো-দৈহিক বিশেষ পরিবর্তনের ফলে তারা বিপথে পা বাড়ায়, নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ফলে এ সময়টাতে খুব সহজেই বিকৃতি আর অনাচার বাসা বাঁধে তাদের মনে। এ থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন আত্ম-নিয়ন্ত্রণ। ধর্মীয় ও নৈতিক শিাই ব্যক্তিকে তার চিন্তা-চেতনা, কর্মকাণ্ড ও আচার-আচরণে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে সুপথে পরিচালনা করে। ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের অভাবই ব্যক্তিকে অন্তঃসারশূন্য করে দেয়। ফলে সে নানা রূপ অপরাধ, দুর্নীতি ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়ে। আমাদের আজকের সমাজবাস্তবতা তারই প্রমাণ। কারণ, আমাদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিার অপ্রতুলতা আমাদের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে সম হচ্ছে না। তাই আজকের উত্তপ্ত পৃথিবীর প্রোপটে সব স্তরের জন্যই ধর্মীয় ও নৈতিক শিা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাধারণ শিাধারার প্রাথমিক স্তরের তৃতীয় শ্রেণী থেকে ১০০ নম্বরের ধর্ম শিা রাখা হয়েছে, যা খসড়া রিপোর্ট অনুযায়ী গল্প ও জীবনীর মাধ্যমে শেখানো হবে। এটা ধর্ম শিার একমাত্র পদ্ধতি নয়। এেেত্র শিার্থীরা যাতে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারে এরূপ অনুশীলনমূলক অন্যান্য শিণ-শিখন পদ্ধতিও অনুসরণ করতে হবে। দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ধর্ম শিা না রেখে ললিতকলা শিা অর্ন্তভুক্ত করার পেছনে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।
জাতীয় শিানীতি ২০০৯-এর চূড়ান্ত খসড়া রিপোর্ট এবং শিামন্ত্রী ও জাতীয় শিানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির কোনো কোনো সদস্যের বিভিন্ন সময়ের বক্তব্য থেকে এটি স্পষ্ট যে, তাঁরা ধর্মনিরপে শিাব্যবস্থা চালু ও শিার্থীদেরকে ধর্মীয় শিা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার পাঁয়তারা করছেন। আমরা বিশ্বাস করি, শিামন্ত্রী ও জাতীয় শিানীতি ২০০৯ প্রণয়ন কমিটির সদস্যবৃন্দসহ এ প্রস্তাবের সমর্থক সকলেই প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। তাঁরা অবশ্যই ব্যক্তিক বিকাশে নৈতিক শিার গুরুত্ব অস্বীকার করবেন না।
নৈতিকতার মূল ভিত্তি হলো, অতিপ্রাকৃতিক শক্তি তথা সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস। এ বিশ্বাসই ব্যক্তিমানুষকে তাঁর আদেশ ও নিয়ম অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করে, কু-কর্মের শাস্তি সম্পর্কে অবহিত করে এবং ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করে। মূলতঃ নৈতিক মূল্যবোধের জাগরণ ও পরিস্ফুটন ব্যাতীত একটি সুশৃঙ্খল ও কল্যাণকর মানবসমাজ কল্পনা করা যায় না। আজকের বিশ্বজুড়ে চলমান অরাজকতা ও অশান্তির মূল কারণও এ নৈতিক শিার অভাব। আর নৈতিক শিার মূল বিষয়টি ধর্মীয় শিা থেকে উৎসারিত। পৃথিবীর সকল ধর্মই মানুষের মঙ্গলের কথা বলে, আত্মার পরিশুদ্ধির কথা বলে, ন্যায়-অন্যায় বোধের শিা দেয়। আর এসবই নৈতিক শিার সমন্বয়। তাহলে কি ধর্মীয় শিা ব্যাতীত নৈতিক শিা অর্জন করা যায় না? হয়তো যায়; কিন্তু তা ভঙ্গুর ও বিপ্তি। নৈতিক শিার এসব বিপ্তি স্রোতের আদি উৎসও বিভিন্ন ধর্ম। ধর্মীয় মূল্যবোধই এর মূল স্রোত। ধর্মীয় স্রোতবিহীন নৈতিক শিার েেত্র একটি দেয়াল থেকে যায়। ধর্মীয় শিার বাইরে যে নৈতিক শিা তাতে ব্যক্তি নিজের কাছে তার দায়বদ্ধতার কারণে নীতি মেনে চলে। ফলে ব্যক্তি যেকোনো দুর্বল মুহূর্তে প্রলোভনে পড়ে কিংবা মানবিক দুর্বলতার কারণে তার নৈতিক গণ্ডির বাইরে চলে যেতে পারে। তাছাড়া এখানে ব্যক্তি সৎ থাকার, নৈতিক আচরণে অটল থাকার কোনো কারণ খুঁজে পায় না। নশ্বর এই পৃথিবীতে ভোগ-বিলাস ও আরাম-আয়েশের মধ্য দিয়ে জীবন কেটে গেলেই হলো। তাতে কারো তি কি উপকার হলো তা দেখার প্রয়োজনই বা কিসের। দুনিয়ার সময়টুকু যেকোনো উপায়ে পার করতে পারলেই হলো। ব্যস খালাস!
একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের ধর্মসমূহ ও ধর্মীয় বিশ্বাস হচ্ছে সামাজিক উপাদানসমূহের একটি যৌগিক সমন্বয়। ধর্ম ও নৈতিকতা পরস্পর অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পর্কিত। এদের অবস্থান সর্বদাই পাশাপাশি। মূলত নৈতিকতার উৎপত্তি ধর্মের এমন জায়গা থেকে, যা কখনও আলাদা করার মতো নয়। নৈতিকতা মানুষের একটি সহজাত বিষয়। বয়সের সাথে সাথে এটা বিকশিত হয়ে কিছু বিষয়কে গ্রহণ এবং কিছু বিষয়কে বর্জন করে একটা মানদণ্ডে পৌঁছায়, যাকে আমরা মানুষের আচরণের েেত্র নৈতিক মানদণ্ড বলি। মানুষে মানুষে এ আচরণের ভিন্নতা ল করা যায়। এসব কারণেই মানুষের বিবেক কিছু নৈতিক গুণাবলিকে ভালো বলে স্বীকৃতি দেয় এবং কিছু বিষয়কে মন্দ বলে প্রত্যাখ্যান করে।
ধর্মীয় শিার সকল বিষয়ই স্রষ্টা-কেন্দ্রিক। এখানে মানুষের সকল কাজ-কর্ম স্রষ্টার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য উৎসর্গীকৃত। এ পৃথিবীই শেষ নয়; পৃথিবীর জীবন শেষ হলে আছে আরেক অনন্ত জীবন। সে জীবনের ভালো-মন্দ সবকিছু নির্ভর করে পৃথিবীতে ব্যক্তির কৃত সকল কাজ-কর্মের উপর। ফলে সেই অনন্ত জীবনের প্রতি বিশ্বাস থেকে এর সাফল্যের জন্য ব্যক্তি নিজেকে ভালো কাজে নিয়োজিত রাখে; মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী ব্যক্তি মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, স্রষ্টা সর্বদ্রষ্টা; প্রতিটি ভালো ও মন্দ কাজের তিনি সাী এবং সকল কাজ-কর্মের জন্য পরকালীন জীবনে স্রষ্টার কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এ বিশ্বাসের কারণেই ব্যক্তি সবচেয়ে গোপন ও নিরাপদ জায়গাতেও শত প্রলোভন সত্ত্বেও অনৈতিক কোনো কাজে জড়িত হতে পারে না; কিন্তু এ বিশ্বাসের বীজ যার হৃদয়ে বপিত হয় নি তার কাছে
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×