আমি তখন ক্লাস ত্রি এ পড়ি। ক্লাস ওয়ান ঢাকা পড়েছিলাম। ক্লাস টু পড়িনি ।
ক্লাস ত্রি গ্রামের এক স্কুল এ ভর্তি হ্ই। ঐ স্কুলে আমার এক আপা ( ফুফাত বোন) টিচার ছিলেন। তাই আম্মা আমাকে ঐ স্কুল এ দিসিলেন। ওটার ও কাহিনী আছে। আমি গ্রাম এর স্কুল এ যেতে চাইতাম নাহ। তাও ক্লাস রুম এ বাসতাম নাহ। কান্না করতাম।
তাই আপার সাথে অফিস রুম এ বসতাম। যখন যেই টিচার ক্লাস এ যেতেন তাঁর সাথে ক্লাসে যেতাম। পিকুলিআর কান্ড, মনে পড়লে হাসি পায় খুব।স্কুল এ কোন ড্রেস ছিল নাহ, আমি আগের স্কুল এর ড্রেস এবং কেডস পড়ে স্কুল এ যেতাম। তাই ক্লাস এর ছেলেরা আমাকে বেইলি কেডস ডাকত।আমি খুব মন খারাপ করতাম।
ঐ স্কুল এর ছেলেমেয়ে গুলা তেমন পড়াশুনা করত নাহ। সবাই দেখা যেত সারাদিন মাটে কাজ করছে, আর স্কুল এর সময় হলে স্কুলে আসে। বাসায় গিয়ে আর পড়ত না। কিন্তু আমি সব পাড়তাম। টিচার পড়ানোর আগে আম্মা আমাকে সব পড়িয়ে ফেলতেন। ইংলিশ ও ভালো পাড়তাম। তাই ক্লাস এর ছেলে-মেয়েরা আমার কাছ থেকে অনেক কিছু দেখিয়ে নিত। আমার এক বান্ধবী ছিল, সে ও সব পড়া পারত। স্কুলে অনেকদিন হয়ে গেলো। এখন মাঝে মাঝে টিচার না থাকলে ও ক্লাস এ বসি। আমার সাথে একটা নেইলকাটার থাকতো, কেন জানি ওটা খুব ভাল লাগত আমার, মামা এনেছিলো বাইরে থেকে। তো একদিন এক ছেলে আমাকে বলল, তোমার সাথে কথা আছে, টিফিনের পরে স্কুল এর পিছনে থেক( আন্চলিক ভাষায়)। আমি ভাবলাম, আমার কাছে থেকে হোম ওয়ার্ক গুলা দেখে নিবে।
টিফিন এর পরে দেখা করলাম..ওমা সে আমাকে বলে কি .."আঁই তোরে বিয়া গইজ্জইম". মানে "আমি তোমাকে বিয়ে করব"...
আমি নেইল কাটার এর ছুরি দেখিয়ে বললাম..."তোর ফেডদি ছুরি ঢুকাই দিয়ম".
মানে "তো পেটে ছুরি ঢুকাই দিব"....
ঐ চেলের নাম ছিল মঁয়ুর
এর পর সে অনেক ভয় পাইছে। আর স্কুলে আসে নাহ।
আমি এটা আমার বান্ধবী পলিন কে বললাম। ও বলল কাউকে বলার দরকার নাই, কেউ জানলে আমাদেরকে মারবে। আমি আম্মাকে বলতে চাইলাম, ও নিষেধ করলো।ক্লাস ফাইভ এ পড়ত আমার এক প্রতিবেশি ছিল, নাম মামুন, সে আবার একটু কাবিল টাইপস।পলিন এইবার এই কাহিনী মামুন কে বলে দিল। আর মামুন বাড়িতে এসে সাবইকে বলল। আম্মাকে ও বলল।আমার অই টিচার আপাকেও বলল। আরো বলল সে নাকি আমাকে ময়ুরের হাত থেকে বাচাইছে।কি হাস্যকর।
আপা তো পরদিন গিয়ে আমার ক্লাস টিচারকে বলল। সেদিন ময়ুর ও আসলো। ক্লাস টিচার এই গহটনার কথা ক্লাসের সব ছেলেকে জিগাসা করল। সবাই চুপ। এক ছেলে আবার বলল, সব ছেলে এটা এ জরিত। আমিত কিছুই বুঝতে পারছিলামনা। টিচার ৪/৫ টা বেত এনে সবাইকে মারলো।
অই ৪/৫ বেত ভেংগেও গেল, শুধু দুইজান ছাত্রকে মারেনি...কারন তারা সেদিন স্কুল এ আসেনি।
সবশেষে এসে আমাকে আর পলিনকে ও হাতে ২ করে বেতের বারি দিল,আমরা কেন টিচার কে জানাইনি তাই। আমি কখনো হাতে বেতের বারি খাইনি...আমি ত অনেক কাদলাম। কিন্তু কেউ দেখি এত মাইর খেয়েও কাঁদল না।
আমি এখনো বুঝলাম না সেদিন ক্লাস এর সবাইকে কে টিচার মারল, আমাকেই বা কেন মারল?
আমি ত মাইর খেয়ে অই ছেলের উপর রাগ বেড়ে গেল। ময়ুর মাঝে মাঝে আমাদের বাড়ের সামনে দিয়ে যেত।একদিন তাকে দেখলাম.।যাচ্ছে...একটা লাটি নিয়ে মাইর দিলাম....বললাম আর কনদিন এই দিক দিয়ে যাবি নাহ।
তার ও কিছুদিন পরে বৃষ্টির দিনে আবার তাকে দেখলাম..আমাদের বড়ির সামনে দিয়ে যেতে, ছাতা নিয়ে। সাথে আমার আর এক ফ্রেন্ড ছিল। দুইজন মিলে ছাতা কেড়ে নিলাম..তারপর ছাতা নিয়েই তার পায়ে মাইর দিলাম। তখন অবশ্য আমি অই স্কুলে পড়তাম নাহ।তার ছাতা টা নিয়ে পানিতে ফেলে দিছিলাম
[আমি অনেক কষ্ট করে লিখলাম, বাংলা লিখা, কষ্ট। আর ভাল লিখতেও পারি নাহ,তাই অগোছালো।]
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০০৯ দুপুর ১:২৮