মোঃ ওমর ফারুক স্যার
মোঃ ওমর ফারুক স্যার ছিলেন নোয়াপাড়া ইসলামিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসার একজন আদর্শ আরবী প্রভাষক। তাঁর শিখানোর ধরন এবং আচরণ ছিল মাশাআল্লাহ অতুলনীয়। শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও সহমর্মিতা তাকে সবার প্রিয় শিক্ষক হিসেবে গড়ে তুলেছিল। ক্লাসে তিনি ছিলেন দারুণ শৃঙ্খলাপরায়ণ, কিন্তু তাঁর ব্যবহারের কোমলতা সকলের মন জয় করে নিয়েছিল।
ফারুক স্যার শুধু একজন শিক্ষক ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন অনুপ্রেরণাদাতা, যার কষ্ট এবং সংগ্রামের কাহিনী শিক্ষার্থীদের জীবনে আলোকবর্তিকা হয়ে দাঁড়াতো। একটা সময় তিনি কঠিন এক রোগে আক্রান্ত হন, যার কারণে তাকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকতে হয়। চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে তিনি কখনো নিজের কষ্টের কথা প্রকাশ করতেন না, বরং সবসময় সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলতেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি ঈমানের পথে অবিচল ছিলেন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে, শেষ মুহূর্তে তাঁর চোখে সকলের জন্য দোয়া ছিল।
মোসাঃ ইয়াসমিন বেগম
মোসাঃ ইয়াসমিন বেগম ছিলেন নোয়াপাড়া ইসলামিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসার একজন সহকারী শিক্ষিকা। তাঁর আন্তরিকতা, নিষ্ঠা এবং সবার প্রতি ভালোবাসা ছিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মনে গভীরভাবে প্রোথিত। তাঁর কথা বলার ধরণে ছিল মায়া, যা সবাইকে আপন করে নিত। শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর মাতৃসুলভ আচরণে সবাই নিজেকে সুরক্ষিত ও আদরে ভরা অনুভব করতো।
যখন তিনি কঠিন রোগে আক্রান্ত হলেন, তখনও তিনি ধৈর্যের সাথে কষ্ট সহ্য করেন। তাঁর শরীর দুর্বল হয়ে আসলেও, মনের শক্তি ছিল অটুট। শিক্ষকতার কাজ থেকে বিরত থাকলেও, শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁর দোয়া এবং শুভকামনা ছিল অনবরত। একসময় চিকিৎসার প্রয়াস ব্যর্থ হয় এবং তিনি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে থাকা সেই নিষ্ঠা এবং দয়া আজও সবার মনে রয়েছে।
উপমা ঊষা নওশীন
উপমা ঊষা নওশীন ছিলেন ৮১নং নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা। তিনি ছিলেন একজন সদা হাসিখুশি এবং প্রাণবন্ত মানুষ। তাঁর ছাত্রছাত্রীদের প্রতি ভালোবাসা ছিল সীমাহীন, এবং তাঁর প্রাণশক্তি সবসময় বিদ্যালয়ের পরিবেশকে আনন্দময় করে তুলত। তাঁকে সবাই ভালোবাসতেন, কারণ তিনি ছিলেন সবার সুখ-দুঃখের সাথী।
দুর্ভাগ্যক্রমে, নওশীন ম্যাডাম একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। রোগের কারণে তাঁর শরীর দুর্বল হয়ে পড়লেও, তিনি মানসিকভাবে সবসময় দৃঢ় ছিলেন। হাসপাতালের বেডেও তিনি নিজের অবস্থার প্রতি নির্লিপ্ত থেকে, সবসময় শিক্ষার্থীদের ভালো থাকার কথা চিন্তা করতেন। তাঁর মৃত্যু শিক্ষার্থী, সহকর্মী, ও বন্ধু-বান্ধবদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে দাঁড়ায়।
উপরের উল্লেখিত তিনজন ব্যক্তির সাথে কাজ করার সৌভাগ্য আমার জীবনের অন্যতম বড় অর্জন। তাদের আচার-ব্যবহার, পরিশ্রম ও নৈতিকতা সবসময়ই আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাদের সাথে কাটানো সময়গুলো অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে। মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি, তিনি যেন উনাদের সকলকে জান্নাতের উচ্চতম স্থানে সমাসীন করেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই প্রার্থনা কবুল করুন। আমিন।
#আজহার উদ্দিন
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৬