দেশের রাজনীতি নিয়ে আমি তেমন কোন মাথা ঘামাতে চাইনা। কেননা আমার মাথা ঘেমে গোসল করা হলেও কারো যায় আসে না। দেশের দায়িত্বশীল কর্তা ব্যাক্তিদের উল্টাপাল্টা কথার ফুলঝুড়িতে মাঝে মধ্যে মাথায় উদ্বেগের পাপড়ী গজায়। আর সেই পাপড়ীর বিষাদময় দুর্ঘন্ধে ক্ষনিক পর পর বমির ভাব হয়। আজ ১৬ই এপ্রিল 2016 জাতীয় দৈনিকের সবগুলোতে মাননীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের একটি বানীর ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। আমি মনে করি যদি উনার কথা সত্যিই হয় তবে এদেশের ১৬কোটি মানুষ তাকে স্যালুট করা উচিত। আর যদি রাজনৈতিক হিনমন্যতা থেকে এমন উক্তির হম্বিতম্বি হয়ে থাকে তবে তা এদেশের মানুষের পোড়া কপাল ছাড়া আর কিছুই নয়।
“বাংলাদেশে কোন আইএস নেই”-স্বরাষ্টমন্ত্রী এর আগে আমরা শুনেছিলাম ‘বাংলাভাই নামে কিছু নেই, এইসব মিডিয়ার বানানো’ জৈনক ঐ মন্ত্রীর কথা পরবর্তিতে দিবালোকের মতোই প্রকাশ হয়েছিল। আর দেশের মানুষ বাংলাভাইকেও মিডিয়ার কল্যানে দেখতে পেয়েছিল। বর্তমান মাননীয় মন্ত্রীমহোদয়ের কাছে কেমন তথ্য আছে আমি জানি না তবে আমাদের মাননীয় তথ্যমন্ত্রীর দেয়া তথ্য যদি সঠিক হয় তবে অচিরিই আমাদের স্বাধীন দেশটা আইএসের দখলে চলে যাবে বলে আশঙ্কা হয়। “আল-কায়দার প্রশিক্ষণ নিয়ে ৮০০০ জঙ্গি দেশে”-তথ্যমন্ত্রী ,দৈনিক মানব জমিন।
এখন আমার মাথায় যে উদ্বেগের বিষাক্ত পাপড়ী গজিয়েছে তা হলো – আই এহন কিতা কততাম!- অবস্থা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কথায় নিরাপত্তাবোধ করলেও তথ্যমন্তীর তথ্যানুযায়ী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে। সেই সাথে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশে ঘাটি করে জঙ্গিরা ভারত ও মায়ানমার দখল করতে চায়। কত ভয়াবহ কথা!!
গুলশান একটি নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে এই কুটনীতি পাড়া, ইতিপূর্বেও সেখানে জঙ্গি হামলায় বিদেশীদের হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এবং আপতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে সেখান থেকেও সরকার রাজনৈতিক ফায়দা নিতে ভুলেনি। প্রকৃত অপরাধের মূল হোতাদের আড়ালে রেখে মনে হচ্ছে একটা রাজনৈতিক রুপ দেয়ার চেষ্টা হয়েছে।কিন্তু একটি বিষয় আমাদের খেয়াল রাখা উচিত যারা আইএস বা জঙ্গি তারা কোন রাজনৈতিক দলের স্বার্থে কাজ করেনা তারা দলমত সবার জন্যই হুমকী স্বরুপ। আর এর মোকাবেলা সবাইকে নিয়েই করা উচিত । আমরা তা না করে কেবল একে অপরকে দুষারোপ করায় ব্যাস্ত এটা কিন্তু জঙ্গিদের একটা সুযোগ যা তারা বার বার কাজে লাগাচ্ছে।বিভিন্ন হত্যাকান্ডে আজ জঙ্গি সম্পৃক্ততার প্রমান পাওয়া যাচ্ছে অথচ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিপুর্বে অনেক নিড়িহ মানুষকে ক্রসফায়ারে দেয়া হয়েছে। যা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।
প্রতিটি জঙ্গি হামলার পর সুষ্ঠু তদন্দ করে ব্যবস্থা নিতে পারলে আজ গুলশান ও শোলাকিয়ার মতো ঘটনা থেকে হয়তো জাতি রক্ষা পেত। মাননীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী মহোদয় নাকি আগে থেকেই এইসব জানতে কিন্তু কঠোর হতে চাননি। লিংক Click This Link তাহলে কেন আজ দেশী বিদেশী লোকদের হত্যা হলো। তিনি আগে জেনে থাকলে কেনইবা ব্যবস্থা নিলেন না এর দায় কী তিনি এড়াতে পারেন? আপনাদের কাদা ছুড়াছুড়ি ই জঙ্গিদের মূল শক্তি কারন আপনা বিবক্ত তুরষ্কের মতো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেননি।
আমি বা আমরা সরকারকে পরামর্শ দেয়ার ক্ষমতা রাখিনা। কেননা জনগনের তো আর সেই অধিকার নাই। জনগনের ভোটে ক্ষমতায় আসলেই ভোটের পরে বুটের বাড়ি খেতে হয় এবার তো ভোটছাড়াই ফ্রি গতি কে শুনে কার কথা!!? সপ্তাহন্তে আপনারা মন্ত্রিপরিষদের মিটিং করেন বলে পেপার পত্রিকায় দেখি, তাহলে সহজ বিষয়টা দেশের স্বার্থে আপনারা প্রকাশকরতে পারেননা কেন??? কেন আপনারা জনগনের জান-মাল নিয়ে হলিখেলায় মেতে আছেন?? ব্লগার হত্যার প্রেক্ষিতে আপনারা উগ্রবাদি, বিচ্ছিন্নতাবাদি ও জঙ্গিদের হাত আছে বলে স্বিকার করলেও এর পিছনে আসলে কে বা কারা আজো জাতি তা বুঝতে পারলো না। সাগর রুনী হত্যার পর ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম আর তনু হত্যার বিচার নিয়ে জনগণ এখন কিংকর্তব্যবিমূর হয়ে ইয়া নাছফি ই্য়া নাফছি করতে শুরু করেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:১৫