মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই একটি কথা বলেন শিক্ষা ছাড়া উ্ন্নয়ন সম্ভব না।অশিক্ষিতরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন দেশের উন্নয়ন হয়নি। এর মাধ্যমে তিনি কাকে বুঝাতে চেয়েছেন তা বুঝার জন্য এ+ পাওয়ার দরকার হয়না। যাক সে কথা আসল কথায় আসি গত ২রা ফেব্রুয়ারী সারা বাংলাদেশে এস,এস,সি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আমরা যখন এই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ছিলাম তখন সবার কাছেই এটা ১ম পাবলিক পরীক্ষা ছিল তবে এখন আর তা নয়। পরীক্ষার্থীরা সকলেই আরো দুটি পাবলিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছে। তাই তাদের মনে এতোটা ভাবনার ছায়া পড়েনা। হা তাদের মাঝে পরীক্ষার একটা টেনশন তো অবশ্যই আছে। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আলোচিত সমালোচিত যাই বলুন না কেন একটা বিষয় তিনি জাতিকে উপহার দিয়েছেন তা হলো সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি। এই পদ্ধতির ফলে ছাত্রদের মাঝে নকল করার মানসিকতা আর নেই। ছাত্ররা বইকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে পড়ে। এইটা ভেবে মনে করেছিলাম যাক এবার হয়তো কিছু শিক্ষিত জেনারেশন তৈরী হবে আর আমাদের জাতীর মেরুদন্ড আস্তে আস্তে মজবুত হবে। জাতি নিজের পায়ে দাড়াবে, হাটবে, চলবে এমনকি সামনের দিকে দৌড়াবে। আমাদের আর কেউ পিছন ফেলতে পারবে না।গন্তব্য যতই দূরের হউক আমরা করবো জয়।
হঠাৎ একটা বিষয় আমার আশার তৈরী হতাশার সাগরে ডুবিয়ে দিলো। আর তা হলো আসলে শিক্ষাই কি জাতির মেরুদন্ড ?? নাকি এ+ জাতির মেরুদন্ড??? আমরা কেন জানি দিন দিন শিক্ষার দিকে নয় এ+ এর দিকে দৌড়াচ্ছি। এখন আমার কাছে মনে হয় শিক্ষা যদি জাতির মেরুদন্ড হয় তবে নিশ্চই এ+ হবে শিক্ষার মেরুদন্ড। আমার মতো হয়তো মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ভাবছেন। তা না হলে এ+ পাওয়া পরবর্তী কলেজে ভর্তির মাপকাঠি হয় কীভাবে?? আর এ+ পাওয়ার জন্য ছাত্র-শিক্ষকদের এতো দৌড়ঝাপ কেন?
এই সব আমি বলার কে? আর আমি বল্লে কি আর এ+ নিশ্চিক করার জন্য শিক্ষকের দ্বারে দ্বারে শিক্ষার্থীদের ধরনা দেয়া বন্ধ হবে? হবে না।কি করে হবে? শিক্ষকদের বেতন বাড়লে কি হবে সেই সাথে চাহিদাও তো অনেক বাড়ছে তাই না।?? ব্যালেন্স করতে কোচিং বানিজ্য অবশ্যই টিকিয়ে রাখতে হবে।
নকল বন্ধ হয়েছে আগের মন্ত্রীরা পারেনি এমনকি এহসানুল হক মিলন সাহেবও হেলিকপ্টারে করে কেন্দ্র পরিদর্শন করে নকলের বিরোদ্ধে জিহাদ করেছিলেন। আমাদের নাহিদ সাহেব এক সৃজনশীল দিয়ে নকলকে গুডবাই জানালেন। যদিও এমন কোন পাবলিক পরীক্ষা উনার আমলে হয়নি যে পরীক্ষায় ছাত্ররা প্রশ্নপত্র পরীক্ষার ১দিন আগে হাতে পায়নি। আগের নকল ছিল হাতে লেখা হার্ড কপি এখন ডিজিটাল যুগে সেটা অচল সবকিছু সফট কপি। আগে সাবজেক্ট অনুযায়ী বুক(বই)এর পেইজ ছিড়ে নকল হতো। আর এখন একটাই বুক ছাত্রদের হাতে (ফেইস বুক) এতো পেইজ লাগেনা একটা ফেইসবুক পেইজ লইক দিলেই উত্তর সহ প্রশ্ন আর কি চাই? এ+ হাতের নাগালে।
যে শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড সে শিক্ষার মেরুদন্ড কি ফেইজবুকের প্রশ্নদিয়ে এ+ পাওয়া?? আরে ভাই আমারে কেউ বুঝান। লাগলে কোচিং ফি আমি দেবো তবু আমারে একটা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখে দিন।
ক. শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড হলে শিক্ষার মেরুদন্ড কী?
খ. ফেইসবুক যদি উত্তর সহ প্রশ্ন দিতে পারে আর তাতে যদি কেউ এ+ পায় এবং মেডিকেলে ভর্তি হয়ে ডাক্তার হয়। তাহলে জাতীর মেরুদন্ডে ব্যবস্থাপত্র কেমন হতে পারে বলে মনে কর ??
গ.জনাব এক্স সাহেব একটি কোচিং সেন্টারের মালেক তিনি এটাকে বিনোদনের জায়গা মনে করেন, তিনি বলেন কোচিং ফি নিয়মিত আদায় করবে আর বিনোদনে ব্যস্ত থাকবে। পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্ন আমি দেবো এ+ না পাইলে টাকা ফেরত এবং বিনোদন ও ফেরত। এক্স সাহেবের ফেইসবুক পেইজে সকলকে একটিভ থাকতে বলা হয়।
১. এ ক্ষেত্রে মাননীয়প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কী করার আছে?
২. কোচিং বানিজ্যের কোন দিকে নতুন মোড় নিচ্ছে বলে মনে করেন?
৩. ফেইসবুক জাতীয় পাঠ্যক্রমে সংযুক্ত করা যায় কিনা আপনার মতামত প্রদান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫০