somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ঈদ-২০১৫

২২ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ঈদুল-ফিতর

সকাল বেলা থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ফজরের নামাজ পড়ে বসে আছি। ছেলেদেরকে নিয়া ঈদের নামাজে যাবো, গোছল করা একান্ত প্রয়োজন, ছোট্ট বেলায় আমার বাবা আমাদেরকে গোসল করাইয়া ভাল কাপড় চোপড় পড়াইয়া সবাইকে নিয়া ঈদের মাঠে যেতেন। সে যে কি আনন্দ ছিল আজও ভূলতে পারছি না। বাবার কথা বেশী বেশী মনে পরে, কিন্তু মা বেচে আছেন, বিভিন্ন প্রতিকুলতার মাঝে ঈদের আগে তাকে দেখতে যাবো তাহা কোন ক্রমেই হয়ে উঠলো না। বড়ই বাদ সাধলো অর্থ, যে টাকা হাতে আছে তাতে কর্মস্থলে যোগদান করাই কষ্ট হয়ে যাবে। ডিজিটাল যুগ মায়ের সাথে কিছুক্ষন পর পর কথা হয়। তবে ঈদের পরের দিন যেতে হবে। মায়ের আচল শান্তির নীড়, কোথাও এত শান্তি আছে কিনা , তা আমার জানা নাই, আপনাদের জানা থাকলে আমাকে জানাবেন।

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
লাইলাহাইল্লাহু
আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার
ওলিল্লাহিল হামদ।



তাকবির বলতে বলতে ঈদের মাঠের দিকে যাত্র আরম্ভ করলাম কিন্তু বৃষ্টি বাধ সাধলো, তাই ঈদের মাঠের দিকের জাওয়া সম্ভব হলো না।পাশ্বেই একটি মসজিদে নামাজ আদায় করার নিমিত্তে ডুকলাম। কিন্তু মানুষ এতই বেশী যে বসার ঠাই পাইতেছিলাম না। হুজুর একটু কায়দা করে বললেন, যে, আপনারা মোনাজাত না করে যাবেন না। আজকে মোনাজান ভিন্ন রকমের আনন্দ, আর এতে নেয়ামতও অনেক বেশী, তবে, আমি জানি আপনারা কম বেশী দান করবেন, সে টা যদি নামাজের আগে হয় আপনাদের কোন আপত্তি আছে, কেউ কেউ নিরব থাকলো, আবার কেউ কেউ বিপুল বেগে সাড়া দিল, বেশ ভালই হলো, আদায় আগে হয়ে গেল।

বেশীর ভাগ মানুষ নামাজ হয়ে গেলেই কেটে পড়ে, কারন এই নামার ঠেইকা পড়তে আসেছে, কারণ, না পড়লে হয়তো মানুষ বলবে "ঈদের নামারটাই পড় না" এই হলো আমাদের ইবাদত, এটা কিন্তু সবার জন্য নয়। আসলে, রমজানেরই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ, মানে হলো, এ্ই ঈদ হল রোজাদার মোমেন বান্দার জন্য, বেরোজাদারের জন্য নয়, আল্রাহু বলেছেন, তিনি নিজ হাতে রোজার নেয়ামত দান করবেন একথা একান্তই সত্য, চির সত্য, কোন সন্দেহ নাই।

যারা সত্যি কারের ঈমানদার, তাদের ব্যাপারটা সম্পূর্ব আলাদা, তাদের কথা লেখার মত সাধ্য আমার নাই। তাদের ইবাদত পবিত্র কোরআর হাদিসের আলোকে, তারা সবাই বির্তকের অনেক উর্ধ্যে। আল্লাহু তাহাদের জন্য নিয়ামত দান করবেন নিজ হাতে। ।অমিন্্্

ঈদের নামাজ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকম আনন্দ হয়, কিন্তু আমার ইচ্ছা নামাজ আদায় করবো, মুনাজাত করবো, আল্লাহুকে মনে কষ্টের কথা বলবো, ফানা চাবো, মা-বাবার জন্য জান্নাত চাইব,সারা জাহানের মুসলমানের জন্য দোয়া করবো।



জামাতে নামাজ পড়ার আনন্দ ও নেয়ামত অনেক বেশী, এটা থেকে মাহরুম হওয়া থেকে আমরা সবাই চাই বাঁচতে।



একটা জামাতে অনেক লোক থাকে তার মাধ্যে অবশ্যই কেউ না কেউ মুমিন বান্দা আছে তার উছিলাম আমাদের সবার গুনাহ মাফ হবে এই আশায় এই রকম বড় জামায়াতে অংশ গ্রহন করতে আমরা ইচ্ছা পোষন করি। মনে রাখতে হবে, আমাদের মাঝে কেউ না কেউ আল্লাহুর অলি, আউলিয়া আছে। কোন বান্দাকে আল্রাহু বেশী ভালবাসেন, কার উছিলায় মোনাজাত কবুল হবে একথা আমি আপনী কেউ কি জানি? না জানি না। জানতে হলে, প্রকৃত ভাবে নায়েবে রাসুলের কাছে যেতে হবে, খাটি মানুষের কাছে যেতে হবে। আমার বাসার পার্শ্বে কত লোক আছে, তারা কেমন আছে, কেমনে বেচেঁ আছে আমরা কি কেউ তাদের খবর রাখি?



রেল লাইনের পাশ্বে যে কত মানুষ কত কষ্টে আছে আমরা কি তাদের কোন খবর রাখি। যথচ, তোমার প্রতিবেশী যদি অনাহারে নিদ্রা যায়, তবে তোমার কোন এবাদতই হবে না। এখানে ইসলাম কি বলেন।



একটি দিনও কি তাদের কথা আমরা মনে মনে ভাবি, কি ভাবে তারা জীবন চালাচ্ছে। তাদের জন্য একটি দিনের জন্যও আনন্দ দিতে পারি না। তারা সারা বৎসর অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটায় কিন্তু এই ঈদ কাদের জন্য?



এই ঈদ কার জন্য, যদি বলি "মুসলমানের ঈদ" তবে তারা কি মুসলমান নয়, এখানে তোমার আমার তাদের জন্য কি, কিছুই করার নাই। তা হলে আমরা কি সুধুই নিবর দর্শক।

তবে ইসলাম কি বলে, তোমার সম্পদের জাকাত দান করো, নিসাব পরিমান, তার মানে তোমার যদি ৫২ তোলা রুপা বা ৭.৫ তোলা স্বর্ন এর সমপরিমান অর্থ জমা থাকে, সারা বৎসর ভরন পোষনের পর তবেই জাকাত ফরজ,। কত টুকু জাকাত দিবেন, যদি একলক্ষ টাকা হয় তবে ২.৫ হাজার টাকা, উদাহরন স্বরুপ এই জাকাত যদি প্রতি জনকে যদি ২১/২৫ হাজার টাকার পরিমান দেওয়া হয় তবে সে আর গরীব থাকতে পারে না। পরের বছর ঐলোকই জাকাত দেওয়ার উপযোগী হয়ে যাবে, কিন্তু বাংলাদেশের জাকাত ব্যবস্থা অন্য রকম, যার মধ্যে গোড়ামী থাকে।



কেউ জাকাত দেয় মাইক দিয়ে এলান করে, তার নাম প্রচারের জন্য, সবাই জানবে তালূকদার সাহেব, জাকাত দিচ্ছে, দেখা যায় গরিব লোক জন এক টুকরো কাপড়ের জন্য ঠেলা-ঠেলি করতে যাইয়া বা ভীরের চোটে পায়ের তলা পিষ্ট হয়ে ২০/২৫ জন মারা গেছে, পত্রিকা খুললেই তাদের ছবি দেখে আফসোস করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।

আর খোলাফায়ে রাশেদীন কিভাবে জাকাত দিতেন তা কি আমরা কেউ জানি, তবে শুনুন, আপনারা হয়তো জানেন হযরত ওমর ফাকুক (রাঃ) বুড়ির বাড়িতে নিজ কাধে ময়দা ও খাবার পৌছে দিয়ে এসেছিলেন, কারন এবাদত যেহেতু তাহার তাই কাজটা তাকেই করতে হবে। এটাই ইসলাম। আবার কেউ জাকাত দেয়, তার অন্য উদ্যেশ হাসিল করার জন্য, কয়েক জনকে যদি বেশী পরিমান অর্থ দিয়ে দেওয়া হয় তবে সে তো আর গরীব থাকবে না, তা হলে তাহার বাজারের ব্যাগ কে বহন করবে। হয়রে মানুষ এই যদি হয় তার চিন্তা চেতনা তবে আর ইসলাম বলার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।

ইসলাম সবাইকে সমান করার চিন্তা করেছেন।

সব মুসলমানকে এক সাড়িতে দাড় করাতে চায়, আর আমরা কি চাই? নিজেদের মধ্যে প্রভেদ তৈরি করতে। ইসলামকে ফাকি দেওয়া হচ্ছে। যাকাত গরীবের হক। আপনী সুধুই আপনার হক আদায় করছেন। যদি আপনী আপনার হক আদায় না করেন তবে আর ইবাদতের চিন্তা ছেড়ে দেন। প্রতিটি মানুষের হক আদায় জরুরী, তাই ইসলামকে বেশী বেশী করে জানতে হবে। তবেই আমাদের মাঝে শান্তি আসবে, আসবে ঈদের আসল আনন্দ।

ব্যবসা করা হলাল আর মানুষ ঠকানো হারাম। আগামী পর্বে কথা হবে, সে পর্যন্ত আল্লাহু তায়ালা সবাইকে ভাল রাখুন, সুস্থ্য রাখুন, আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×