মেঘেদের দস্যিপনায় কাল রাত ভর লোপাট হল জোছনার আলো । বোশেখ পূর্ণিমার মেঘরাতে চাঁদ ছিলনা । ঘোলা জোছনায় ঘর ছেড়ে জীবনের সত্যি খুঁজবার ডাক না পেয়ে আবার কোন অতীশ বুদ্ধ হয়ে উঠতে পারেনি । কলিকাল বুঝি প্রাণ পেল তাই ।
সত্যির কি এখন-তখন থাকে ? আজ যেটা সত্যি, কাল সেটা মিথ্যা হয়ে যায় কেন বলতে পার ? কালের মৃত্যুই কি কেবল অমোঘ সত্যি ? আর যদি মিথ্যাই হবে, তাহলে সেটা একবারের জন্যে হলেও সত্যিই বা হয় কি করে ?
আজ যদি অতীশ থাকতেন তবে বেশ হত । অন্তত এই প্রশ্নগুলো করা যেত । তাঁর খুঁজে পাওয়া সত্যিটার আজ কী দশা, সেটা অন্তত দেখান যেত । মিথ্যে হয়ে যাওয়া সত্যির বীভৎস রূপ দেখে তিনি কি প্রব্রজ্যের পূর্ণিমার রাতে বিদীর্ণ হাহাকার করতেন ? হয়তো তাঁর সেই হাহাকার মেশান বাতাসে নিভে যেত গাঢ় কাল জলে ভাসা প্রদীপের আলো । হয়তো সারারাত ভেসে ভেসে জ্বলত তারা, কিন্তু আলো দিতে না পেরে বয়ে যেত কোথাও ।
এই শহরে হু হু হাওয়া বয়না কোন । চারদিকের উঁচু উঁচু দালানেরা এক একটা উঁচনো আঙুল হয়ে তাকে শাসিয়ে রাখে । দমকা হাওয়া এখানে তাই আসে মৃদু মন্দার হয়ে । রাজ্যের মানুষের দীর্ঘশ্বাস মিশে ভারী হয়ে থেমে যায় সে । আর পারেনা বয়ে যেতে । আমার ভেতরের বোধটা খালি হোঁচট খায় আজকাল । উচিত-অনুচিত দূরে দাঁড়িয়ে হ্যা হ্যা করে হাসতে থাকে । আমি বিভ্রান্ত হতে থাকি ।
যে ঘৃণার পাত্র তাকে ঘৃণা করাই সাজে, নয় ? কিন্তু প্রিয় মানুষের তীব্র সত্যিটা ভয়ঙ্কর মিথ্যা হয়ে সামনে চলে এলে তখনও কি ঘৃণা করাই চাই ? তাহলে অস্তিত্বে ক্ষরণই বা হয় কেন বলতো ?
মন বলে, ঘৃণার ওপারে কি কিছু নাই ? এনে দাও, সেইটা করি ।
এ ঘৃণা নয় সারথি ।
এ ঘৃণার ওপারে অন্য কিছু ।