somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিংগাপুর প্রবাসী তামিমের সেই প্রেমের গল্পটা,,,

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভালোবাসার মূল্য দিতে হলো জীবন দিয়ে!!!!

সাজানো কোন গল্প নয়। সিংগাপুরের একজন প্রবাসির ভালবাসার শেষ পরিনতির সত্যিকারের ঘটনা। মৃত্যুর ঘন্টাখানেক আগে দেয়া একজন সত্যিকার প্রেমিকের ফেইসবুকের শেষ স্টাটাস। পড়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। তাই হুবহু তার স্টাটাস তুলে ধরলাম

আমার জান,

আমার জিবনের শেষ কথাগুলো তোমাকে বলে যাওয়ার কোন মাধ্যম না পেয়ে ফেইসবুকের মাধ্যমে পাঠালাম। কারন তোমার আম্মু আমার IMO, ফোন নাম্বার সব ব্লক করে দিয়েছে।

জান, অামাদের ভালোবাসার মধ্যে কোন অভিনয় ছিলোনা। অভিনয় ছিলো তোমার মায়ের ভালোবাসার ভিতর। ওনাকে আমার মায়ের আসনে বসিয়েছিলাম। কিন্তুু উনি এটা কি করলেন আমাদের সাথে? আমি তোমাকে বিশ্বাস করে ভুল করিনি। ভুল করেছি তোমার মাকে বিশ্বাস করে। যদিও আমার মা বলতো, দেখিস তুই বিদেশ চলে গেলে ওর মা ওকে অন্য যায়গায় বিয়ে দিয়ে দিবে। কিন্তুু তখন আমি আমার মায়ের কথাতে গুরুত্ব দেই নাই। কিন্তুু এখন ঠিকি বুঝেছি। আমার সব থেকে বেশি খারাপ লাগলো এই কারনে যে, আমি কাল তোমার মাকে বল্লাম আমি আপনার পা ধরে অনুরোধ করেছি। আপনি আমার জানের সাথে আমাকে শেষ বারের মত ১ মিনিট কথা বলতে দেন। কিন্তুু উনি এটা না করে তোমার মামার কাছে ফোন দিলো। আর তোমার মামা অনেক অনেক বাজে কথা বললো। উনি বললো আমি নাকি তোমাদের সম্পত্তির লোভে তোমাকে ভালোবাসি। আসলে ওনার কোন দোষ নাই। কারন উনি তো জানেই না ভালোবাসার সম্পর্ক কি? উনি শুধু চেনে টাকা। আচ্ছা মামা আমি যদি সম্পত্তির জন্যই আপনার ভাগ্নিকে ভালোবাসতাম তাহলে ওকে না পাওয়ার কারনে হাসি মুখে মরতে রাজি হতাম না। জান তোমার প্রতি আমার একটুও রাগ নেই। আছে শুধু বুক ভরা ভালোবাসা। তোমার কাছ থেকে যতটুকু ভালোবাসা আর বিস্বাস পেয়েছি তাতেই আমি সন্তুুষ্ট। আর আমার প্রতি তোমার ওই ভালোবাসা নিয়েই আজ হাসি মুখে মরছি।

অনেকেই বলবে আমি বোকা তাই আমি একটা মেয়েকে না পাওয়ার কারনে মারা যাচ্ছি। কিন্তুু তারা এটা জানে না যে, একটা ছেলে একটা মেয়ের উপর কি পরিমান বিস্বাস আর ভালোবাসা থাকলে ঐ মেয়ের জন্য মরতে পারে।

যাইহোক, জান তুমি আমার কথা ভেবে কষ্ট পেওনা না। জানো জান, কাল রাত থেকে ঐ গেন্জিটা পরে আছি। যেটাতে তোমার শরীরের ছোয়া লেগে আছে। আর আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম আমি ঐ গেন্জিটা পরবো যেদিন তোমাকে কাছে পাবো না হয় যেদিন আমি মারা যাবো। আজ সকালে বাথরুমে মুখ ধুতে গিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখি বুকের বাম দিকটা ফাকা ফাকা লাগছে। তখন ভাবছিলাম সেই আমি আছি, আমার গেন্জিটাও আছে কিন্তুু আমার বুকের বাম পাশে আমার জানের মাথাটা নেই। তখনো তোমাকে খুব মিস করেছিলাম আর এই ভাবে তোমাকে সব সময় মিস করতে হবে বলেই সবাইকে ফাকি দিয়ে চলে যাচ্ছি জাহান্নামের পথে। তুমি আমাকে অনেক বুঝাইছো। আমার মা, বাবা, বন্ধু সবাই বুঝাইছে কিন্তুু কোন কিছুতেই যে আমার বুঝ মানে না। যখন কেউ আমাকে বুঝায়, তখন আমার খুব খারাপ লাগে। ভাবি এমন কাজ আর করবো না। কিন্তুু যখন একা থাকি আর ভাবি তুমি না থাকলে আমি কি করবো, তখন আমার আর মাথায় কাজ করে না। অনেক আগে থেকেই তোমাকে ছাড়া বেচে থাকার চিন্তা বাদ দিয়ে দিয়েছি। জান, তুমি তোমার নতুন জিবন শুরু করো। আমার জন্য তুমি একটুও মন খারাপ করবা না। আমি তো আছি তোমার ভিতরে। তোমার বাহির দিকটা যেটা সবাই দেখে,সেটা তুমি। আর যেটা ভেতরে আছে, যেটা কেউ দেখে না, সেটা আমি। তাই জান তুমি আমাকে তোমার ভেতরে বাচিয়ে রেখ। আর আমার ইচ্ছেগুলোকে পুরন করার চেস্টা করো। মারা যাবার আগে আমি তোমার মুখ থেকে I love you জান কথাটা শুনবো, কিন্তুু সেটা আর আমার কপালে হলো না। এতে আমার কোন দুঃখ নেই। কারন জিবনে অনেক কিছুই পুরন হলোনা। তাই এটা পুরন না হলেও সমস্যা নেই।

জান, আমার মৃত্যুর জন্য তুমি নিজেকে কখোনো দায়ি করবা না। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি না। আমার মৃত্যুর জন্য আমি নিজেই দায়ি। কারনটা আমি তোমাকে পাইনি বলে, আমার দুঃখ নিয়ে। আমি তোমাকে না পাওয়ার বেদনা ভোলার জন্যই তো আমি এই পথ বেছে নিয়েছি। কিন্তুু আমার খারাপ লাগে আমার পরিবারের কথা ভেবে। আমার পরিবারের সবাই আমার কাছে অনেক কিছু আশা করে কিন্তুু আমি তাদের কিছু দিতে পারলাম না। আমার মা আমাকে যেই পরিমানে ভালোবাসে, আমার যদি ৭ বার জন্ম হয় আর আমি যদি ৭ বারি সারা জিবন আমার মার পা ধুয়ে পানি খাই তবু আমার মার ঋন আমি শোধ করতে পারবো না। আর আমার আব্বাও আমাকে অনেক ভালোবাসে। আর আমার ছোট বোনটা আমি বাড়িতে থাকলে সবসময় আমার সাথে মারামারি করতো কিন্তুু এখন ঠিকি আমার জন্য কাদবে। আমার পরিবারের সবার এত ভালবাসা সত্তেও আমি তাদের মুখের দিকে তাকিয়েও বেচে থাকতে পারছি না। আমি অনেক চেস্টা করছি কিন্তুু পারি না। তাই আমি তাদের কাছে হ্মমা চাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নাই।

জান, ৩০ জানুয়ারি যখন তুমি বলেছিলে তোমার যেকোন সময় বিয়ে দিয়ে দিবে, তখন থেকেই আমি ভয়ে থাকতাম। আর মৃত্যুর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতাম। আমি তোমাকে বলতাম যেই কদিন আমার আছো, আর যেকদিন বেচে আছি তুমি সেই কদিন আমাকে প্রান খুলে ভালোবাসো। তুমি আমার কথা শুনেছিলে। আমরা এই কদিন দুজন দুজনার আরো কাছে চলে গিয়েছিলাম। তোমার বিয়ের দিন সন্ধা বেলাতেও তুমি আমার সাথে কত সুন্দর ভাবে কথা বল্লে। আর আমিও বল্লাম। কিন্তুু আমি বুঝতেই পারি নাই এই কথাই তোমার সাথে আমার জিবনের শেষ কথা হবে। তারপরেও জান আমি তোমার উপর সন্তুুুষ্ট। আর এই সন্তুুুষ্টি নিয়ে আমি হাসি মুখে মরবো। কিন্তুু আমি তোমার মায়ের সন্তুুুষ্ট হয়ে মরতে পারলাম না। কারন ওনার মুখোশ কাল খুলে গেছে। আমি কাল ওনার আসল চেহারা দেখতে পেলাম। তোমার মা কাল কি কাজটা করলো? তোমার কাছে ফোন না দিয়ে তোমার মামার কাছে দিলো। আমার কথা হলো আজ থেকে ৩ বছর আগে যখন তোমার আমার সম্পর্কের কথা জানলো তখন কেন তোমার মামা বল্লোনা? তাহলেতো আমাদের এত কস্ট পেতে হতো না। আর আমাকেও মরতে হতো না। আর কাল যখন তোমার বিয়ের পর, আমি মরার আগে, তোমার সাথে শেষ বারের মত কথা বলতে চাইলাম, তখন কিনা জানালো। তোমার মায়ের অভিনয়ে আমি মুগ্ধ। আচ্ছা তোমার মা কেন আমাকে এত আশা দিছিলো? আমাকে আজ ৩টা বছর আশা দিয়ে রাখছিলো কোন উদ্দেশ্য ? আমিতো তার কাছে কোন অনুরোধ করছিলাম না। তবে কেন আমাদের জিবন নিয়ে ছিনিমিনি খেললো? কি লাভ পেলো উনি? আর দেড় ঘন্টা পর আমি আত্নহত্যা করবো ভাবছি। তাই এই সময় আমি শেষ বারের মত কথা বলবো ভেবে কল দিয়েছি কিন্তুু তোমার মা কল কেটে দিয়েছে। যদিও কাল রাত থেকে বলছি, আমি এই সময় এই কাজ করবো। তো আপনার মেয়ের সাথে মরার আগে ১ মিনিট কথা বলতে দিয়েন। কিন্তুু এখন উনি ফোনি রিসিভ করছেন না। কত পাষান তার হৃদয়। তার পরেও আমি মরার আগে হ্মমা করে দিয়েছি। আমার এই সব লেখাতে যদি তুমি কষ্ট পেয়ে থাকো তাহলে আমাকে হ্মমা করে দিও। তুমি কোন দোষ করোনি। তবুও যদি অজান্তে কোন দোষ হয়ে থাকে তাহলেও আমি তোমাকে হ্মমা করে দিলাম। আর কথা বাড়াতে চাই না। আমার সময় প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। তাই এখন একটু আমার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে হবে। তোমার সাথে কথা বলাতো আমার কপালে নেই। ফোনে যেটা বলতাম সেটা এস, এম, এসেই বলছি।

I LOVE YOU জান।

অামি তোমাকে অামার জিবনের থেকেও বেশি ভালবাসি। অার সেটা অামার জিবন দিয়ে প্রমান দিয়ে গেলাম।

জান ভালো থেকো, সুখে থেকো।

অাল্লাহ্ হাফেজ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×