somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

লক্ষণ ভান্ডারী
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন

অজয়ের ঘাটে মকরস্নান

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পৌষ বা মকর সংক্রান্তিতে সূর্য ধনুরাশি থেকে মকরে সঞ্চারিত হয়, তাই এর নাম 'মকর সংক্রান্তি'। একে 'উত্তরায়ণ সংক্রান্তি'-ও বলে, কারণ এইদিন থেকে সূর্য উত্তরায়ণের দিকে যাত্রা শুরু করে। এই সংক্রান্তির ব্রহ্মমুহূর্তে যমুনা নদীতে মকর-স্নান করলে আয়ুবৃদ্ধি হবে -- এই বিশ্বাসে মাতা যশোমতী বালক কৃষ্ণকে স্নান করাতে নিয়ে যান। পরে এদিনেই যমুনায় স্নান সেরে শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমতি রাধিকার সঙ্গে 'মকর-পাতায়', এ হল আত্মার সঙ্গে আত্মার দৃঢ় বন্ধন স্থাপন।



গ্রাম বাংলার অনেক স্থানে একসময় কুমারী মেয়েরা এইদিন থেকে কনকনে ঠাণ্ডার ভোরে একমাস ব্যাপী মকরস্নান-ব্রত শুরু করতো। আলস্য, নিদ্রা, তন্দ্রা, জড়তা-তামসিকতার রিপুগুলিকে জয় করার এ ছিল এক সংগ্রামী মনোবৃত্তি। ছড়া গেয়ে পাঁচ ডুব দেওয়ার নিয়ম আছে: "এক ডুব দিলে আই-ঢাই।/দুই ডুব দিলে তারা পাই।।/তিন ডুব দিলে মকরের স্নান।/চার ডুব দিলে অজয় স্নান।/পাঁচ ডুব দিলে গঙ্গাস্নান।।



পৌষ সংক্রান্তি দিনে গ্রাম-বাংলার অনেক স্থানে উঠোনে মড়াই-এর পাশে 'উঠোন লক্ষ্মী'র পুজো হয়। তিনিই কোথাও 'পৌষলক্ষ্মী'। এদিন বাড়ির উঠোন গোবরজল দিয়ে নিকিয়ে, শুচি-স্নিগ্ধ করে তোলা হয়। ধানকাটা পর্বে যে 'পৌষ তোলা'র চার-পাঁচ গুচ্ছ ধানগাছ সাদরে গৃহস্থ বাড়িতে আনা হয়েছিল, তাই গাদা থেকে নামিয়ে মাথায় বহন করে নামানো হয় উঠোনে। গোটা উঠোন জুড়েই আতপ চাল বেঁটে আলপনা দেওয়া হয়।



সোনার পৌষ যে চলে যায়, তাকে বাঁধতে হবে! তাই শিসসহ ধানগাছ পুজো করে ঘরের খুঁটি, গোলা, গোয়ালঘর, সিন্দুক ঢেঁকিশালে তা বাঁধা হয়। আর শস্য-সম্পদের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করা হয়। তারই অঙ্গ হিসাবে বাংলার মেয়েরা ছড়া কেটে পৌষ বন্দনা করেন, "পৌষ পৌষ -- সোনার পৌষ/এস পৌষ যেয়ো না/জনম জনম ছেড়ো না।/না যেয়ো ছাড়িয়ে পৌষ--/না যেয়ো ছাড়িয়ে,/পৌষ পৌষ -- সোনার পৌষ।"



পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তিতে অজয়ের ঘাটে দূরবর্তী বহু গ্রাম থেকে মকর স্নান করতে বহু লোকের জন-সমাগম হয় আজকের দিনে। তীরে তীরে বহু দোকানপাট বসে, স্নানের পরে সবাই মুড়ি মুড়কি, সিঙাড়া, আলুর চপের দোকানে ভিড় জমায়। গাঁয়ের এই মহামিলনে সকলেই সমবেত হয় অজয়ের ঘাটে।



সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। মানুষকে ভালবাসুন, মানুষের সুখদুঃখের সাথী হোন।
বাংলা কবিতার আসরে আমার প্রিয় সকল কবিগণকে শুভ মকর-সংক্রান্তির
আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!



অজয়ের ঘাটে মকরস্নান
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

অজয়ের ঘাট ভরে মানুষের ভিড়ে,
মানুষের ঢল নামে অজয়ের তীরে।
গোরু-গাড়ি চড়ি কেহ নদীঘাটে আসে,
কেহ আসে সাইকেলে কেহ মিনিবাসে।

অজয়ের ঘাট ভরে জন কোলাহলে,
মকর সিনান করে সবে নদীজলে।
জলে নামি স্নান করে যত নর-নারী,
বসেছে দোকান কত ঘাটে সারিসারি।

পূবেতে অরুণ রবি দিতেছে কিরণ,
মকর স্নানের তরে এ মহা মিলন।
টুসুর ভাসান আজি অজয়ের ঘাটে,
মহানন্দে সবাকার সারাদিন কাটে।

অজয়ের ঘাটে আজি মহা ভিড় জমে,
বেলা হলে অবশেষে ভিড় যায় কমে।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×