somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গত ম্যাচের অভিজ্ঞতা এবং আগামী ম্যাচের প্রত্যাশা।

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মাঠে গিয়ে এটা ছিল আমার ২য় বার খেলা দেখা, বাংলাদেশের খেলা ১ম বার। নিজের 'কুফাত্বের' জন্য একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম। খেলা শুরু হওয়া কথা ৭.৩০ এ, আমরা মাঠের বাইরে চলে আসলাম ৭ টা বাজার আগেই। আমাদের গেটের সামনে দেখলাম বিশাল বড় লাইন। এতো বড় লাইন, সেটার শুরু খুঁজে বের করতেই ৫ মিনিট চলে গেলো। লাইনে দাঁড়ানোর পর দেখলাম অনেক ধীর গতিতে লাইন এগোচ্ছে। এভাবে এগোলে কতক্ষণ লাগবে বুঝতে পারছিলাম না। মানুষ দেখলাম অনেকে চক্ষু লজ্জার বা-বাপ এক করে লাইনের মাঝখান দিয়ে ঢুকে যাচ্ছে। চাইলে আমরাও ঢুকে যেতে পারতাম, কিন্তু আত্মসম্মান বলে একটা বিষয় আছে, সামান্য একটু আগে ঢুকার জন্য সেটা বিসর্জন দেবার ইচ্ছে হল না। আমরা দীর্ঘ লাইন দিয়ে মেইন গেটে আসতে আসতে পাকিস্তানের একটা উইকেট পড়ে গেল! কী আর করার, মেইন গেটে আসার পর দেখলাম, উল্টো দিক দিয়ে আরেকটা লাইন তৈরী হয়ে গিয়েছে! তাহলে আমাদের এতক্ষণ এই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে কী লাভ হল? আমাদের রেখে লাইনে ঢুকে যাচ্ছে, বুঝা গেল তারা কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী! গ্যালারিতে গিয়ে দেখি বসার জন্য ভালো কোন জায়গা নেই, এমন জায়গায় সিট আছে, যেখান থেকে পরিষ্কারভাবে খেলা দেখা যায় না! মাঠের মধ্যে এতো বড় বড় গ্রিল দিয়ে রাখার মানে কী যেটার জন্য পরিষ্কারভাবে খেলাও দেখা যায় না, কাঁচ দিয়ে বেড়া দিলে ভালো হত, বেড়া দেওয়াও হত, সেটার ফাঁক দিয়ে খেলাও দেখা যেত। যাই হোক, ভিতরে ঢোকার আগে আমার পিছনে দাঁড়ানো লোকে কাছে শুনতে পেলাম, উনি ২৫০ টাকার টিকিট নাকি ২৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন! আমার কাছে ছিল ৫০০ টাকার টিকিট, একবার ভাবলাম বিক্রি করে দিলে একটা লাভজনক ব্যবসা হত! ভিতরে যেহেতু ঢুকে গেছি, খেলা কষ্ট করে দেখতে হবে! আগে যখন টিভিতে বসে খেলা দেখতাম, দেখতাম ছক্কা-চার-আউট হলে মানুষ সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে যায়। আমি আগে ভাবতাম, উত্তেজনায়, মাঠে যাওয়ার পর বুঝতে পারলাম ওটা উত্তেজনায় নয়। মাঠের সিটগুলো এতো অ-আরামদায়ক, সেখানে বেশিক্ষণ বসে থাকা যায় না। সবাই একটু সুযোগ পেলেই উঠে দাঁড়িয়ে যায় আর পশ্চাদ্দেশের সাথে লেগে যাওয়া প্যান্টের কাপড় ছাড়ায়! আমার সামনে বসা এক মেকাবতী (মেকআপ করে রুপবতী) নারী কিছুক্ষণ পর পর সেলফি তুলতে লাগলো, বুঝা গেলো, খেলা দেখাটা তার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না, কিন্তু নেটওয়ার্কের কারণে বেচারা সেগুলো আপলোড করতে পারছিল না, এই কারণে মনটা অনেক খারাপ! এমন জায়গায় বসছি, সেখান থেকে মাঠের অর্ধেক দেখা যায় না, ঐদিকে বল গেলে টিভি স্ক্রিনে দেখতে হয় আসলে কী ঘটেছে! ম্যাচের শেষের দিকে খেলার অবস্থা এমন, মনে হয় হার্ট ফেইল করেই মারা যাবো! কেউ দূর্নীতি করে, কেউ অনিয়ম করে খেলা দেখতে আসলো, সবকিছু ছাপিয়ে যেটা বড় করে এসেছে সেটা হল দেশের প্রতি মানুষের অসীম প্রেম। কথায় বলে, 'Everything is fair in love and war! ' কিন্তু দেশের ক্রিকেট কে ভালবাসার পাশাপাশি দেশের ক্রিকেটারদেরও ভালবাসতে হবে। আজকে ভাল খেললে নায়ক, কালকে খারাপ খেললে তার দেওয়া সব অবদান ভুলে যাবো সেটা ঠিক নয়। আজকে ভালো খেললে 'বুলস' কাল খারাপ খেললে 'ম্যাগি নুডলস' সেটা করা ঠিক নয়। এমন করলে ইন্ডিয়ার ফ্যান আর আমাদের মধ্যে কী বা পার্থক্য থাকে? যুবরাজ ওদের দুটি বিশ্বকাপ জেতালো, ওর বাড়িতেই ওরা ঢিল ছুড়ে মারে! কালকের ফাইনালের টিকিটের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি, মনে হচ্ছে না পাওয়া যাবে! কয়েক জায়গায় শুনলাম টিকিটের জন্য সংঘর্ষ থেকে গোলাগুলিও হয়েছে! কয়েক জায়গায় শুনলাম, ১০০০ টাকার টিকিট ১০,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে! এখন একটাই উপায় আছে. একটা ড্রোন জোগাড় করে সেটাতে করে স্টেডিয়ামের ছাদে নামতে হবে! অথবা আয়রন ম্যান এর সুট! এগুলো না পারলে, ঐদিন খেলা দেখতে গিয়ে একটা বাংলাদেশের পতাকাযুক্ত 'গ্যান্ডফ' হ্যাট কিনে এনেছিলাম, সেটা দিয়েই কাল বাসায় বসে খেলা দেখবো আর বেশি বেশি করে স্ট্যাটাস মারবো, ছবি আপলোড করবো।
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×