somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা বিমানবন্দরে ব্যাগ হারানো আর আমার দুই ঘন্টার দৌড়ঝাপ

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিমানবন্দরের তিন নাম্বর গেটে স্ক্যান করতে দিয়ে অপর পাশে যেয়ে দেখি আমার ল্যাপটপ ব্যাগ নাই। কিছুটা ভীর ছিল কিন্তু চোখের সামনে ব্যাগ হওয়া হয়ে যাবে চিন্তাই করতে পারি নাই।স্ক্যান মেশিনের ওখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে কিছু সময় ওয়েট করতে বললেন। প্রায় ১৫ মিনিট থাকার পর দেখছি আমার মত আরেকটা ব্যাগ পরে আছে। মনে হচ্ছে কোনো যাত্রী ভুল করে তার টা রেখে আমার ব্যাগ নিয়ে গেছে। পুলিশ পরে থাকা ব্যাগ খুলে যাত্রীর কোনো তথ্য পাওয়া যায় কিনা চেক করলেন। ব্যাগে শুধু মহিলাদের জামা কাপড়, যাত্রীর কোনো তথ্য নাই। আমাকে বিভিন্ন কাউন্টারে ব্যাগ খোজ করতে বলে এবং তিনি হারানো বিজ্ঞপ্তি দেয়ার ব্যবস্থা করলেন।

আমি বিভিন্ন কাউন্টারে খোঁজাখোঁজি করে ব্যাগ না পেয়ে ৬ নাম্বর গেটে দায়িত্বরত মহিলা পুলিশ কর্মকতাকে ইনফর্ম করলাম। তিনি আমাকে অনেক আশ্বাস বাণী শুনাইলেন। তার ব্যবহার ছিল সত্তিই অসাধারণ। মনে হচ্ছিল তিনিও আমার ব্যথায় ব্যথিত। আমাকে সি সি ফুটেজ দেখার জন্য নিচে পাঠিয়ে দিলেন। সেখানে দায়িত্বরত ব্যক্তি জানালেন আমাদের কর্মকর্তা এক ঘন্টা পরে আসবে, আপনি প্লিজ এক ঘন্টা পরে আসেন। আমি আবার ৩ নাম্বর গেটে এসে পুলিশ কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করছি। তারাও বিভিন্ন জায়গায় সার্চ করছেন।

বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রতিটি সংস্থাকে জানাচ্ছি। শাকিল ভাইকে জানানোর পর তিনি আমাকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে থাকলেন। বিশিষ্ট সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক এবং ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মোশতাক আহমেদ (ভাই) বিমানবন্দরে দায়িত্বে থাকা এ.এস.পি জসিম ভাই কে জানালে তিনি আমাকে স্টাফ গেট দিয়ে প্রবেশ করে যাত্রী লাউঞ্জে ব্যাগ দেখতে বললেন। সাথে আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দিলেন। আমরা দুজন দুদিকে খুজছি। জসিম ভাই বেশ কয়েকবার ফোন করে খোজখবর নিচ্ছেন এবং জিজ্ঞাসা করছেন কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি। এদিকে আমার ফ্লাইটের সময় হয়ে আসছে। বাইরের ৩ নম্বর এবং ৬ নম্বর গেট থেকে ফোন করেও আমার খোজ নিচ্ছেন। যতবার বলছি ব্যাগ পাইনি ততবার তারাও যেন মন খারাপ করছেন। আমরা দুজন ব্যর্থ হয়ে জসিম ভাইয়ের কাছে উপস্থিত হলাম।

জসিম ভাই, যাত্রীর ফেলা যাওয়া ব্যাগে কি ধরনের জিনিসপত্র আছে আমার কাছ থেকে বর্ণনা শুনে তিনি দ্রুত ভিতরে এয়ার এরাবিয়া কাউন্টারে যেতে বললেন। সাথে আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা দিয়ে বললেন এয়ার এরাবিয়া কিছু সময়ের মধ্যে ছেড়ে যাবে। অনবোর্ড অপেক্ষায় থাকা মহিলা যাত্রীদের ব্যাগ দেখতে বললেন। আমি জসিম ভাইয়ের আন্তরিকতা এবং দূরদর্শিতায় অবাক হয়ে গেলাম। আমরা ৫ এবং ৬ নম্বর কাউন্টারে যেয়ে দেখি বিশাল লাইন ধরে আছে। এয়ার এরাবিয়া ৫ নম্বর কাউন্টার চেক করে বাংলাদেশ বিমানের লন্ডনগামী ৬ নম্বর কাউন্টার দিকে যেতে দেখি একজন বয়স্ক ভদ্রলোকের হাতে আমার ব্যাগ। আমার ব্যাগের চেইন খোলা। তিনি আমার ব্যাগে তার ওষুধ খুজছেন। সাথে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা তার পাসপোর্ট দেখতে চাইলেন। তিনি একজন বাংলাদেশী বংশভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তিনিও আসলে বুঝতে পারেন নাই। বাইরের ৩ নম্বর গেট থেকে তার ব্যাগটা সংগ্রহ করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তা তাকে নিয়ে গেলেন। আমি জসিম ভাইকে ধন্যবাদ দিয়ে ইমিগ্রেশনের সব কাজ শেষ করে আমার ফ্লাইটের কাউন্টারে চলে গেলাম। এর মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ২ ঘন্টা। এর মধ্যে বিমানবন্দরের সবাই জেনে গেছে আমি ব্যাগ ফিরে পেয়েছি। আমাকে ফোন দিয়ে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। আমার ইচ্ছা হচ্ছিলো সবাইকে কাছে গিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে আসি কিন্তু সময় সল্পতার কারণে যেতে পারিনি।

আমি যতজনের কাছে সাহায্য চেয়েছি বা পেয়েছি তারা বয়সে সবাই প্রায় তরুণ কর্মকর্তা। তাদের সবার অমায়িক ব্যবহার এবং আন্তরিকতায় সত্যিই আমি মুগ্ধ। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে এত সুন্দরভাবে সাহায্য করার জন্য। সবিশেষ সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিভিন্ন ভাবে সবাই আমাকে ঋণী করেছেন।

দুবাই প্যারেডে বাংলাদেশীদের গর্বিত অংশগ্রহন !! (ছবিব্লগ)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×