অনেকদিন হয়ে গেল তেমন সময় হয়ে উঠে না, অনেক কিছু লিখব বলে ভাবি তবে লিখা হয়ে উঠে না!
দেখতে দেখতে অনেক দিন চলে গেল, আরা আমার দেশের ১২টা বাজার সময়ও চলে আসল..আমি ১২টা বলতে বুঝাইলাম যে হরতাল-হত্যা-সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়া কিংবা যাওয়ার সময়। আর সেটা কেনই বা বললাম হয়ত বুঝতে কষ্ট হবে না (প্রতিটা সরকারের শেষ সময়)।
যাই হোক যা নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম--প্রথমে আসা যাক ইসলাম নিয়ে: ইসলাম শান্তির একটি জীবন বিধান, শুধু ধর্ম বলে আমি বিশ্বাস করি না। মানুষের ব্যাক্তি জীবন, সামাজিক জীবন, রাস্ট্রীয় জীবন কিভাবে চলবে সব কিছুর সেরা সমাধান দিয়েছে ইসলাম..অন্য কোন ধর্ম বলেন, মানুষ বলেন কেউ এত সুন্দর করে দিতে পারে নাই।
এইবার আসুন রাজীব (মৃত) সাহেবের কথা বলি, বলে নিচ্ছি যে মৃত ব্যাক্তির সমালোচনা করা ঠিক না তবে মানব জাতির হেদায়তের জন্য কখনও উদাহরন হিসাবে দেয়া দরকার আছে যেমন আমরা ফেরাউন, আবু-জেহেলদের কথা বলে থাকি। রাজীব তার ব্যাক্তি জীবনে কিছু আকাম করে গেছে যার জন্য রাষ্ট্রের দরকার ছিল তার বিচার করা, করে নাই (এখনও অনেকে আছে যাদের বিচার দরকার আছে) তবে তাই বলে তাকে মেরে ফেলা বা তার বিচার করা আমার - আপনার দায়িত্ব নয়। রাষ্ট্র যদি বিচার না করে সেখানে জনগনের আইন হাতে তুলে নেবার আধিকার নাই, বরং রাষ্ট্র কে মেনে চলাই বাধ্যতামুলক, তবে হা প্রতিবাদ জানাতে পারে যাহা গনতন্ত্র বলে থাকে। অনেকে তর্ক করে থাকেন, অনেক টক-শো এ দেখি-- প্রমান করার অপচেষ্টা করে থাকেন যে রাজীব আসলে আকাম গুলা করেছিল কিন, এইটা আমাদেরকে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছু নয়। উনার ফেবুক-এই উনার আকামগুলার সাক্ষী। যা হউক মুদ্দা কথা হল তিনাই আকাম করছে তবে তিনারে মেরে ফেলাতে হবে সেটা জনগনের বা কোন দলের দায়িত্ব নয়, এই দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
এইবার চলেন আলেম সমাজের কথা---ইনারা এখন বলতেছেন "গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তাদের বিচারের দাবি", কেন ইনারা ইহা করতেছেন--কারন এই মঞ্চ থেকেই ইসলামী রাজনীতি বন্ধের কথা বলেছিল আর সেই কথা যারা বলেছিল অধিকাংশের পরিচয় নাস্তিক। একজন নাস্তিক ধর্ম চায় না এইটা খুবই স্বাভাবিক তাই বলে গন দাবি 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার' এর সাথে এইটা জুড়াই দেয়া মানে হলে মানুষের আবেগ নিয়ে রাজনীতি করা। যেমন ধরুন 'কোন এক অফিসের কর্মচারীরা সাবই দাবি করল বেতন-ভাত বৃদ্ধির জন্য, ম্যানেজার এই সবার দাবি চেয়ারম্যান এর কাছে পাঠিয়ে বলল সবাই চায় ১) বেতন-ভাত বৃদ্ধি ২) ম্যানেজারদের গাড়ি-বাড়ি।' এখন বলেন আসলে কি ঘটেছে!!! আর এই জন্যই খুবই স্বাভাবিক ভাবে ক্ষেপে বসল আলেম সমাজ!
আবার ধরুন সাঈদি সাহেবের রায়ের পর সারা দেশে পুলিশ গুলি করে একদিনে স্বাধীনতার পর এই প্রথম ৫০-৭০ জনকে মেরে ফেলল আর সরকার বলল জামাত শিবিরের তন্ডব!! হায়রে দেশ--এমনও খবর দেখেছি 'পুলিশের উপর জামাত-শিবিরের হমলা, ৪শিবির কর্মি নিহত ও ১২ জন আহত' মনে হচ্ছে আম-জনতা খুবই বোকা..খবরটা যদি এমন হত তাইলে একখান কথা 'পুলিশের উপর জামাত-শিবিরের হমলা, ৪ পুলিশ নিহত ও ১২ জন আহত'। এইখানে আমরা আম-জনতা আম হইয়া রইলাম!
এইসব করে পার পওয়া যাবে না, এই দেশের অধিকাংশ মানুষ ইসলাম প্রিয়, এই দেশে সবাই বসবাস করতে পারে, আস্তিক-নাস্তিক সবাই তবে কেউ কাউকে গালি দিলে বিপদ, কেউ কাউকে শেষ করে দিতে চাইলে বিপদ যেমনটি আজকে করা হচ্ছে, ৭৫এর মত বাকশালের আদলে ভিন্নমতের মুখ বন্ধ করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আওয়ামী মতের বাইরে হলেই গলা চিপে ধরতে হবে এইটাই মনে হচ্ছে নিয়ম। শাহবাগকে করা হয়েছে আওয়ামি মঞ্চ, ব্যাবহার করা হয়েছে জনগনের দাবীকে 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার' যেমনি উরা করেছিল ২০০৯ এর নির্বাচনে। আজকে ইসলামী রাজনীতি বন্ধের কথা বলতেছে..আম-জনতা আর আম হয়ে থাকবে না..'ইসলামী রাজনীতি' একটা সুপ্ত আগ্নেয়গীরি..মনে রাখতে হবে এইটাকে নাড়াচাড়া করলে পরিনতি ভাল হবে না, মানুষ জীবন দিতে ও ভয় পায় না যা ২৮ তারিখ দেখিয়ে দিয়েছে..অতএব সময় থাকতে সবার সজাগ হতে হবে..এই দেশ আমার-আপনার..আমরা শান্তি চাই তবে নিজের ঈমান আকিদা ছেড়ে দিয়ে নয়, নামাজ পড়তে গেলে পুলিশের হয়রানীর শিকার হয়ে নয়, দাড়ি-টুপি-পান্জাবী পড়তে ভয় পেয়ে নয়---আমরা শান্তি চাই---মাথা উচু করে বাচতে চাই!