somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বৃষ্টিতে ভেজা ও বিদ্যুৎ মহাশয়ের অভিমান

২৮ শে এপ্রিল, ২০১০ দুপুর ২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বৃষ্টিতে ভেজা ও বিদ্যুৎ মহাশয়ের অভিমান

যেন কতকাল পর সেদিন (এপ্রিল ২৬, ‘১০) বৃষ্টি নামলো! ভিজতে চাইছিলাম না। বৃষ্টি নেমেছে তাতেই খুশি। আবহটাই কেমন যেন গরম হয়ে গিয়েছিলো। হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি এসে সেই গরম আবহটাকে ঠান্ডা করে দিয়েছে- এতেই এত খুশি। সন্ধ্যার ঠিক পরেই। আমি সেদিন নগরবাসে করে বাড়ি ফিরছিলাম। এটাকে ধুলিঝড়ই বলবো। প্রচন্ড বাতাসে রাস্তার ধুলিকণা যেন একাত্মতা ঘোষনা করলো। চারপাশে শুধু ধুলা আর ধুলা। বাসের জানালা বন্ধ হতে লাগলো দুম্‌দাম্‌ করে। তার ঠিক পরেই এলো প্রশান্তির বরষ। রবীন্দ্রনাথের ‘গগনে গরজে মেঘ ঘন বরষা’র মত তীব্র ছিলোনা এটি। কাঠফাটা রোদ্দুরে যখন খা খা করছে চারপাশ, তখন প্রশান্তির এক পশলা নরম বৃষ্টিকে স্বাগত জানাতে কুন্ঠাবোধ করেনি কেউই। মোবাইল ব্রাউজার দিয়ে ঢুকেছিলাম ফেইসবুকে। সবার স্টাটাসের সুর একই, শুধু ভাষাটা ভিন্ন। কতবার কত উপায়ে যে এই বৃষ্টিকে অনুভব করেছিলাম তা’ বলতে গেলে ঠিক অসংলগ্ন লাগে নিজেকে। শুধু জানি, দারুণ উপভোগ করেছিলাম। যদিও শেষের দিকটায় আমাকে একটু বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছিলো। অনেকদিন পর বৃষ্টিতে ভিজতে এত ভালো লেগেছিলো যে আমার প্রানেশ্বরীও যদি আমাকে সেই বৃষ্টিতে ভেজতে দেখতো, আমি নিশ্চিত, তারও বৃষ্টিকে হিংসে হতো। ভাগ্যিস! সে দূরেই ছিলো।

ওটা ছিলো প্রথম পর্ব। অবশেষে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে যখন বাসায় পৌছালাম, ততক্ষণে বেশ নমনীয় ভাব দেখতে পাচ্ছি ওর দুরন্ত গতিতে ছুটে আসা ফোঁটাগুলোতে। বাসায় এসে জামা-কাপড় বদলানোর আগেই মহারাজ আমাকে গুডবাই জানালেন। চিনতে পারলেননা তো! মহারাজ আমাদের বিদ্যুৎ মহাশয়। সম্প্রতি উনার খামখেয়ালীপনা এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে উনার মর্জি বুঝতে পারার ক্ষমতা আমি বিলকুল হারিয়ে ফেলেছি। যাইহোক, দ্বিতীয় পর্বের কথা বলতে চাইছিলাম। সেটা ঐ মহামান্য রাজাধিরাজ বিদ্যুৎ মহাশয়কে নিয়েই লিখবো বলে ভাবছি। এর মধ্যেই উনি অভিমান করে বসলেন। ব্যাস, আমার এই লেখাটা আবার থেমে গেলো। দ্বিতীয় পর্বটা তাই বিদ্যুৎ মহাশয়ের শুভাগমনের পরেই শুরু করতে হলো। বলছিলাম বৃষ্টির পরের কথা। সারাটা সময় ঝরঝর বৃষ্টির সাথে মলয়বাবু মানে বাতাসের একটু তান্ডবনৃত্য দেখা দিলেও বিদ্যুৎ মহাশয় বহাল তবিয়তেই ছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে তিনি যে একটা সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন। তাই আর দেরী না করেই চলে গেলেন। হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার মতো, সেই যে গেলেন আর ফিরে এলেন না। তারপর কত চন্দ্রভুক আমাবস্যা পার হয়ে গেলো, উনি ফিরে এলেননা আর! (মনে মনে বলি) নাদের আলী, আমি আর কত বড় হবো! আর কত বিদ্যুতের পানে চেয়ে চেয়ে ঝাপসা করে ফেলবো আমার এই দু’চোখ! বিদ্যুৎ মহাশয়ের জন্য আমি হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়েছি। দুরন্ত ষাড়ের চোখে বেধেছি লাল কাপড়। বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি একশ আটটা নীল পদ্ম। তবু কথা রাখেনি বিদ্যুৎ মহাশয়।

তারপর উনি যখন এলেন, তখন পরদিন রাত্রি প্রায় সমাগত। ঈষাণকোনে কৃষ্ণরঙা মেঘের আনাগোনা। মাঝে মাঝে দু’ এক ফোঁটা বৃষ্টিও পড়ছিলো। এমন মওকা কেউ হেলায় হারায়? হারালেননা মহামান্য বিদ্যুৎ মহাশয়ও। আবারও তিনি টুপ করে ডুব দিলেন। আমাদেরকে রেখে গেলেন আমাবশ্যার অন্ধকারে। ভাবছি এতেই বা মন্দ কি? জীবনানন্দ তো বলেছেনঃ
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশী আজ চোখে দেখে তারা ;
শুনেছি বর্তমানে নাকি ডিজিটাল গভমেন্ট ক্ষমতায়। উনারা বোধহয় জীবনানন্দের নীতিটা চমৎকার বুঝতে পেরেছেন। তাই আমাদেরকে অন্ধকারে চোখে দেখাতে চাইছেন।

পুনশ্চঃ ১. দ্বিতীয়বারের পরে তিনি (বিদ্যুৎ মহাশয়)আমার সাথে অনেকবার লুকোচুরি খেলা খেলেছেন। তারপর অনেকটা সময় পরে যখন স্থায়ীরুপে আবির্ভূত হলেন, আমি আমার এই লেখাটা শুরু করতে পারলাম।
পুনশ্চঃ ২. এই লেখাটি পোস্ট করার ঠিক আগ মুহুর্তেই বিদ্যুৎ মহাশয় আরও একবার অভিমান করে বসলেন।


এখানেও দেখুন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×