কিছুটা হঠাৎ করেই আমার এই ভ্রমন। প্রবাসী বন্ধু জিকু তার আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কিছু উপহার এনেছিল তাদের দেবে বলে। তাই তার দেশের বাড়ি বরিশাল যাবার দরকার ছিল। একসময় বলে আমাকে ” কিরে যাবি নাকি আমার সাথে আমাদের বাড়ি?” আমিও আর এই সুজোগ হাতছাড়া করলাম না যেহেতু ভ্রমনের নেশা আমার প্রচুর। আর এর আগে কখনো বরিশাল যাওয়া হয়নি। আর এখান থেকেই শুরু আমার বরিশাল জেলা সফর।
দিনটি ছিল অক্টোবরের ৪ তারিখ অর্থাৎ হেমন্তের শুরু শুরু ভাব। তাই আকাশে বর্ষার শেষ উপহার হিসেবে কিছুটা মেঘলা ছিল। সারদিনই টিপটিপ বৃষ্টি ঝরছিল। বন্ধু জিকু ও তার বড় বোন কলি আপার সাথে আমিও যোগ দিলাম তাদের সাথে বরিশাল যাবার উদ্দেশ্যে। সিএনজি করে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে পৌছানোর আগেই জিকুর মামা মোস্তাক মামা আগেই আমাদের আসন বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন। ঠিক সময়ে আমরা লঞ্চে উঠলাম। বড় কোন লঞ্চে উঠার অভিজ্ঞতাও এটি আমার প্রথম। তাই এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ অনুভব করছিলাম। বিশাল দানব আকারের লঞ্চটি আমি একটু ঘুরে দেখার চেষ্টা করলাম। প্রথমবার আমি বেশ ক্লান্ত হয়ে পরেছিলাম। তাই তখন পুরোটা শেষ করতে পারিনি। তাই আবার কেবিনে ঢুকে পরলাম। তখন মোস্তাক মামা আমাদের রাতের খাবার আনতে বেড়িয়ে পরলেন। অর্থাৎ রাতে আমরা লঞ্চেই খাব। অনেকের কাছে হয়তো বেপারটা একদম স্বাভাবিক হতে পারে তবে আমার জীবনের এমনটি প্রথম বলেই বেশ মজা পেয়েছিলাম আমি সেইদিন। আবার একটু বের হলাম বাকি অংশটা দেখতে। এবার পেছনের অংশ। পেছনে গিয়ে দেখি ইঞ্জিন তখনো চালু না হলেও জেনারেটর যা এই বিশাল লঞ্চটির বিদ্যুতের চাহিদা মেটাচ্ছে সেটি বেজায় শব্দ করছে। তাই যাত্রা সংক্ষেপ করে আবার ফিরে এলাম কেবিনে। রাত ৯টায় লঞ্চটি আস্তে আস্তে পেছনে যেতে শুরু করছে দেখে বাইরে বের হয়ে দেখি লঞ্চটি ছাড়তে শুরু করেছে। যখনি লঞ্চ ছাড়তে শুরু করেছে তখনি এক অদ্ভুদ কান্ড দেখলাম। দেখি লঞ্চ ছাড়ার সাথে সাথে সবাই একত্রে তাদের খাবার খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। বেশ হাসি পেল তা দেখে।
রাত তখন প্রায় ১১টা। লঞ্চ তখন তার বিশাল প্রপেলার দুটোকে তীব্র শক্তিতে ঘুরিয়ে সামনে এগুতে থাকে। চারদিক অন্ধকার সত্বেও যখন দেখি প্রথম বুড়িগংগা সেতুতে নিয়ন বাতি গুলো জ্বলছে তখন দুর থেকে এক অদ্ভুদ সুন্দর লাগছিল তাকে। দ্রতই সময় ফুরিয়ে যেতে লাগল। সময় তখন আনুমানিক দেড়টা। আমি একেবারে সামনে বসে আছি একেবারে একা। তখন হঠাৎ করেই দেখি নদী বড় হতে থাকে। তখন আমি বুঝতে পারলাম মাত্র আমরা পদ্মা নদীতে প্রবেশ করেছি। বিশাল নদীতে মাঝে মাঝে সার্চ লাইট জালিয়ে মাষ্টার পরিক্ষা করে দেখছে সামনে আর কোন ধরনের নৌযান আছে কিনা। বেশ জোরে বাতাস বইছিল। নদীতে ঢেউও বিশাল আকারের যা এ বিশাল নৌযানটিকেও একটু পর পর ঝাকুনি দিচ্ছিল। একটা সময় আবিষ্কার করলাম বৃহৎ এই নদীর এপার থেকে ওপার এখন আর দেখা যাচ্ছেনা আর আমাদের নৌযানটি ছাড়া আশেপাশে আর কোন কিছুই নেই। তখন হঠাৎ করেই এক অনুভুতি আমার ঘাড়ে ভর করলো। মনে হতে লাগল বিশাল এই সৃষ্টিতে আমরা কতটাই না অসহায়। এখন যদি লঞ্চটি ডুবতে বসে তবে রক্ষা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই করতে পারে। রাত আনুমানিক ৩টার দিকে খেয়াল করলাম এখন আর আমরা একা নই আশেপাশে জেলেরা ছোট্ট একটি নৌকা নিয়ে বিশাল এই নদীতে ছোট একটি টর্চবাতি নিয়ে মাছ শিকারে ব্যাসÍ। কি কষ্টে কাটে তাদের জীবন। শুধুমাত্র পরিবারের মুখে একটুকরো হাসি ফুটানোর জন্য এরা চরে বেড়ায় নদী এ মাথা থেকে ও মাথা। এখন একটু শীত শীত লাগছে বলে আর বাইরে থাকা সম্ভন নয়। তাই ভাবলাম একটু দুরে হাঠাচলা করলে কেমন হয়। ১ম আর ২য় তলায় ডেকে গিয়েই দেখি সবাই ডেকেরে মধ্যে যে যার মত যায়গা দখল করে ঘুমিয়ে আছে কোন ধরনের চিন্তা ভাবনা ছাড়াই। যদিও বাতি জ¦লছিল তখনো। তখন মনে হলো এই মানুষগুলো সত্যিকারের কর্মজীবি। কেননা কøান্তি এদের এমন এক অদ্ভুত পরিবেশেও বেশ ঘুম পারিয়ে রেখেছে।
রাত আনুমানিক ৪টায় আমরা বরিশাল টার্মিনালে পৌছালাম। তখনো ভোরের আলো ফোটেনি। তাই এখনি বাইরে যাবনা বলে আমরা সবাই ঠিক করলাম। সকাল সাড়ে ৫টায় আমরা লঞ্চ থেকে বের হলাম গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। এখানে গ্যাস এখনো আসেনি। তাই সিএনজি চালিত কোন যানবাহন নজরে আসেনি। মাহিন্দ্র নামে ডিজেল চালিত একধরনের যানে চড়ে আমরা জিকুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যাত্রা পথে ব্যপক ঘুম পাওয়ায় আশেপাশের দৃশ্য তখন আর নজরে অতটা আশে নাই। সকাল ৬টায় আমরা জিকুর দাদা বাড়ি পৌছালে তার বাবা আমাদের সামনে এসে বাড়ির দিকে নিয়ে যেতে থাকে। সারারাত ঘুম হয়নি তাই বাড়ি গিয়েই ভাবলাম একটু ঘুমলে মন্দ হয় না।
সকাল ১১টায় আমার ঘুম ভাঙ্গে। ঘুম ভাঙ্গলে হাত মুখ ধুয়ে বেশ এক নাস্তা পেলাম। খাওয়া দাওয়ার পর চিন্তা করলাম এখন একটু ঘুরে আসা যাক বাইরে থেকে। যে চিন্তা সেই কাজ ঘুরতে বেড় হয়ে গেলাম বাড়ির বাইরে এবং সাথে জিকুও। আমরা যেই গ্রামটিতে গিয়েছিলাম তার নাম চন্ডিপুর। জেলা শহর থেকে প্রায় ৯কি.মি. ভিতরে। সুতরাং একটি আদর্শ গ্রামের যা যা বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার তার সবই ছিল সেখানে। আমরা দুজন হাটছিলাম গ্রামের একটা সরু রাস্তা দিয়ে। আকাঁ বাঁকা সে পথ। কিন্তু পিচঢালাই করা বলে বেশ সুন্দর লাগছিল সেটা। চারদিকে গাছ গাছালিতে ভরপুর এলাকাটি। এইমাত্র খেয়াল করলাম যে এলাকাটি আমাদের ঢাকা শহরের মত ঘনবসতিপুনর্ নয়। চারদিক বেশ নিরব মাঝে মাঝে গাছের ফাঁকে দু একটি পাখি ডাকছে। একটা সময় পেছনে তাকালে পেছনের রাস্তাটিকে গাছদিয়ে ঢাকা বলে একটি সরু গুহার মত মনে হতে লাগল। অনেকদিন পর গ্রাম দেখতে পেয়ে আর যেন বাড়ি ফিরতে মন চাইছিল না। যেখানেই তাকাইনা কেন সবুজ আর সবুজ। দুর থেকে অন্য এলাকার রাস্তাগুলোকে এক রকমের বনের মত লাগছিল। আর আমাদের ঢাকার আশে পাশে গ্রাম্য এলাকাতে যেমন একতরফা ফসলী জমি আছে সেখানে এমনটি নেই। এলাকাতে জমি বেশি থাকায় তারা ভাগে ভাগে বিভিন্ন জিনিসের চাষ করে থাকে যেমন একভাগে থাকে গাছের চারা আরেক ভাগে মাছ এবং আরেক ভাগ থাকে ফসলী জমি এমন। যাইহোক তখন ভ্রমন সংক্ষেপ করে বাড়ি ফিরে এলাম। ঘোরাফেরার পর একটা ব্যপার লক্ষনীয় যে এই এলাকার মানুষগুলো প্রায় সবাই প্রত্যেকেই প্রত্যেকের বাড়ি ঢোকার জন্য নিজেদের রাস্তা করে রেখেছে। যার ঘর সুন্দর নয় তারও বাড়ি ঢোকর পাকা রাস্তা আছে এবং অবকাঠামোগত দিক দিয়ে আমার দেখা অনান্য গ্রামের চাইতে এখানকার গ্রামগুলো বেশ উন্নত। প্রায় প্রতিটি গ্রামেই আছে বিদ্যুৎ সংযোগ আর সবচাইতে মজার ব্যাপর হলো আমার থাকা গত ৯০ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যুৎ ছিলনা সেখানে মাত্র ৩ ঘন্টা। স্বাভাবিকভাবেই তারা আমাদের ঢাকা শহরবাসীর চেয় বিদ্যুতের ঝামেলায় কম পরে। লোক মুখে শুনতে পাই শুধুমাত্র দুর্যোগজনিত বিপদ ছাড়া বিদ্যুৎ খুব কম যায় এখানে। আশ্চর্য লাগল যেখানে শহরবাসী বিদ্যুতের জন্য মরি মরি অবস্থা সেখানে এখানের গ্রামগুলোতেও দিব্যি বিদ্যুৎ থাকে।
দপুর বেলা খেলাম জিকুর ফুফুর বাড়িতে। খেতে গিয়ে আরো একটি ব্যপার লক্ষ করলাম তা হল এ এলাকার লোকজনেরা অতিথিদের আপ্যায়ন করতে বেশ পছন্দ করে। হরেক রকমের খাবার দাবার এল সামনে। একসাথে সবগুলো পারবনা বলতেই নির্দেশ এল সবগুলো থেকে একটু একটু করে খেতেই হবে। খাবারের পর বেশ এক ঘুম ঘুমালাম। রাত নামার সাথে সাথেই দেখি এক ঘুটঘুটে অন্ধকার প্রকৃতিকে গ্রাস করতে চাইছে। আমারা তখন ওদের এলাকার বাজারে বসে গল্প করছিলাম আর তখনি জিকুর বাবা আমাদের টর্চ লাইট দিতে আসলেন তখন খেয়াল করলাম সকালের রাস্তাটিকে এখন আর নির্দেশ করার উপায় নেই। আলো ছাড়া কোন দিকই যেন পাওয়া যাবেনা এই অ›ধকারে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঝিঝি পোকার শব্দ যেন প্রখরভাবে কানে এসে নাড়া দিতে থাকে শহরে হয়তো এমনভাবে ওরা ডাকার সুযোগই পায় না। সেই রাত জিকুর দাদা বাড়িতেই কাটল।
পরদিন যে গ্রামটিতে গেলাম সেই যায়গার নাম কাশিপুর। আধা শহর আর আধা গ্রাম লাগলো আমার কাছে। একটু ভিতরেই মামার বাড়ি তাই গ্রামের পরিবেশ আবার আসলো। সেখানে যাওয়ার সময় দেখলাম পান চাষ করছে চাষিরা। পাঠ কাঠি অনেকগুলো একসাথে মাটিতে পুতে পান গাছ বড় হওয়ার আর পাতা মেলার সুজোগ করে দেওয়া আছে সেখানে। নদীথেকে একসরু খাল একেবেঁক চলে গেছে গ্রামের উপর দিয়ে। সেই পুকুরে কিছু পাট চাষি সোনালী আশঁ পাট জাগদিচ্ছে দেখা গেল। চারদিকে শুধুই পাটের গন্ধ। অনেকদিন পর আবার এমন পরিবেশ পেয়ে তখন আমার মনে ছোটবেলার স¥ৃতি ভাসতে থাকে যা আগে আমার গ্রামেও দেখতাম। কিন্তু শহুরে সভ্যতা তাকে এখন গ্রাস করে নিয়ে চলে গেছে অনেক আগেই। বিকালের খাবার সেখানে খেতে গিয়েও একই পরিস্থিতি আপ্যায়নটা বেশ। সেখান থেকে আমরা রওনা করলাম বিকালে গুঠিয়া নামের একটি এলাকায় যাওয়ার জন্য। যেখানে একটি দর্শনীয় মসজিদ আছে। গিয়ে দেখলাম মসজিদটি নতুন তৈরী তবে এর শৈল্পিক কাজ দেখে মনে হল এর প্রতিষ্ঠাতা হয়তোবা একে মসজিদ বানানো উদ্দেশ্যে তৈরী করেনি বরং করেছে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে। কেননা সেখানে গিয়ে দেখলাম আবার টিকেট কেটে ঢুকতে হয়। তবে সবচেয়ে বড় কথা এই গুঠিয়া মসজিদটি একটি আধুনিক স্থাপত্য হিসেবে বেশ সুন্দর। সেই যায়গা পরিদর্শন শেষে আমরা সন্ধায় জিকুর খালা বাড়ি ফিরলাম। সেই যায়গাটি বেশ শহর শহর। রাতে খাবাবের পর শুবার সময় ভাবতে লাগলাম ভ্রমনটি বেশ ভাল ভাবেই কাটছে।
সকালবেলা আমার। আজ আমার বাড়ি ফিরে যেতে হবে। কিন্তু জিকু এবং কলি আপু একসাথে কিছুদিন পর ফিরবে। তাই আমার একাই বাড়ি ফিরতে হবে। কিন্তু লঞ্চতো আবার রাত ছাড়া চলেনা। তাই একরকম বাধ্য হয়েই আমার গাড়িতে আসা প্রয়োজন হয়ে পরলো। আমি আমার ফিরতি যাত্রা শুরু করি বরিশাল কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল থেকে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো আমাকে ফরিদপুর পর্যন্ত আসতে হবে ভাড়া করা মাইক্রোবাসে। জানিনা এ কেমন যাত্রা আরামদায়ক নাকি কষ্টদায়ক। যাইহোক সকাল ১১টা বাজে আমার গাড়ি ছাড়ল তার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। আমি লক্ষ করলাম যখন গাড়ি মাদারিপুর জেলা দিয়ে চলছে তখন প্রায় সব যাত্রিই আরামে ঘুম দিচ্ছে। আমি শুধু সবকিছু দেখার চেষ্টা করছি। বেলা একটার সময় আমি তখন মাওয়া ফেরিঘাটে পৌছালাম। তবে খুব দ্রুতই বাসা ফিরতে হবে কারন মা ফোন করে জরুরি তলব করেছে তাই ফেরি দিয়ে বা লঞ্চ দিয়ে পদ্মা পার হবার সময় এখন আর আমার হাতে নেই। স্পিডবোট দিয়ে ফেরাই উত্তম মনে করলাম। তাই সেখান থেকে আমি স্পিডবোটে চরলাম। সেখানে আরেকটি নতুন অভিজ্ঞতা। এর আগে কখনো নদী পার হতে স্পিডবোটে চড়া হয়নি। তাই সেখানেও বেশ রোমাঞ্চ অনুভব করছিলাম। আমাদের বোটটি ছাড়ার পর যখন আমরা শান্ত নদী শেষ করে কিছুটা অশান্ত এলাকায় প্রবেশ করলাম তখন দেখলাম স্পিডবোটটি ঢেইয়ের সাথে প্রচন্ড এক লড়াইয়ে নেমে ঝাকুনি দিল। প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলাম পরে অবশ্য অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। অনেক কম সময়ে মাওয়া ফেরিঘাটের অপর প্রান্তে পেীছালাম। সেখান থেকে আমি আমার গনÍব্যের বাসটি খুব তাড়াতাড়িই পেয়ে গেলাম। বাসে উঠার কিছুক্ষন পর বাস যখন হাসারা নামের একটি স্থানে এসে একটু চেকিং করা হচ্ছিল তখন আমাদের পিছনের একটি বাস আমাদের ওভারটেক করে সামনে যেতেই সামনে দিক থেকে আসা আরেকটি বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটালো। মুহুর্তেই বিপরীতের বাসটির সামনের দরজা দুমরে মুচরে গেল। কেউ হতাহত হয়েছিল কিনা তা দেখার আগেই আমাদের বাসের ড্রাইভার আগেভাগেই তার বাসখানা নিয়ে দৌড় দিলেন পাছে আমরা ভয়ংকর কোন জ্যামে আটক হয়ে পরি। একটা সময় নিজেকে খুব বেশি অনুভুতিহীন মনে হতে লাগল। ভাবতে লাগলাম আমরা মানুষ এখন কতটাই না যান্ত্রিক! একটু খোজঁও নেয়ার সময় কেউ আমরা পেলামনা সেই বাসটির যাকে একটু আগেই পিছনে ফেলে আসলাম। এইসব চিন্তা করতে করতে হঠাৎ ক্লান্ত শরীরে ঘুম ভর করলো। আর ঘুমের ঘোরে আমি ভাবতে লাগলাম বরিশালের ফেলে আসা স্মৃতিগুলো। একটা সময় মনে হলো ভ্রমনটি মন্দ ছিল না। সুন্দর প্রকৃতি, গাছপালা, সবুজ মাঠ, নদী এইসব ভাবতে ভাবতে আমার চোখবুজে আসতে লাগল।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:২৬