somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক ঝড়োবর্ষার রাতে,দুই মানব মানবী নিভৃতে।(১৮ + কিনা বলতে পারছিনা)

০১ লা জুলাই, ২০১১ বিকাল ৩:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছেলের কথাঃ

অসহ্য বৃষ্টি । রাস্তার ধারে এই ভাঙ্গা ঘরটাতে তিন ঘন্টারো বেশি সময় হবে আটকে আছি। এক কালে ক্লাবটাব ছিল বোধহয় ঘরটাতে। এখন পরিত্যাক্ত।ঘরের ভিতরে ছোট ছোট খড়ের গাদা দেখে বুঝা যায় এখন ধান মাড়ায়ের সময় কৃষকরা ব্যবহার করে ঘরটা। এনজিওর একটা কাজে এসেছিলাম গ্রামটায় । শহর থেকে বেশি দূরে নয়-রাস্তা ঘাট পাকা।কিন্তু এই ঝুম বৃষ্টির কারনেই হয়তো কোন যানবাহন চলাচল করছে না । বাইরে বৃষ্টির সাথে রাতের অন্ধকার। আশেপাশে কোন বাড়িঘর বিকালবেলা যখন রওনা হয়েছিলাম তখনি চোখে পরেনি ,এখন তো রাত। রাতটা মনে হয় এখানেই কাটাতে হবে।

একা থাকলে তেমন কোন অসুবিধা হত না। কষ্ট করে কাটিয়ে দিতাম। যদিও এই রকম ঝড়োবৃষ্টিতে নিজের আরামের বিছানা ছাড়া কখনো অন্য কোথাও ঘুমাইনি আমি,তবুও। কিন্তু অসস্তি হচ্ছে মেয়েটার জন্য। অপরিচিত একাটা মেয়ে।

অপরিচিত বলছি, কারন আমরা আসলেই অপরিচিত । শুধু তাই নয় আমাদের কে একে অপরের বিদ্বেষীও বলা যেতে পারে, তিন ঘন্টার মত আমরা একসাথে আছি অথচ একবারও কথা বলেনি কেউ কারো সাথে। একই সাথে বৃষ্টির ভেতর দৌড়াতে দৌড়াতে আমরা এই ভাংগা ঘরে আশ্রয় নিলাম কিন্তু গত তিন ঘন্টায় একটা কথাও বলেনি! আশ্চার্্যয় মেয়েতো । নাকি অহংকারি? হতে পারে-দেখতে সুন্দরতো।সুন্দরি মেয়েরা যেমন হয় আরকি। নার্সিসাস কমপ্লেক্সে ভুগে । মনে করে আশেপাশে আর কেউ নেই । দুনিয়াতে সে একাই আছে আর এটার মালিকানাও তার নিজের । সুন্দরি মেয়েদের সঙ্গ এই জনই সবসময় অসহ্য! তবুও কি আশ্চার্য্য আমারা সব সময় সুন্দরীদের সংগই কামনা করি।

মেয়েটা আসলেই সুন্দর । আড়চোখে বেশ কয়েক বার তাকিয়ে দেখেছি! ফিগারও চমৎকার। একসাথে দৌড়ে যখন এই ঘরে এলাম তখন দেখেছি,বড় নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় কেমন ফুলে উঠেছিল বড় বুক জোড়া। না না ইচ্ছে করে নয়, হঠাত চোখ পড়ে গিয়েছিল। সেটা টের পেয়েই কি মেয়েটা কথা বলছেনা আমার সাথে? ভয় পাচ্ছে নাকি ?
হতে পারে। ভয় পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। আমি কি একবারো মেয়েটাকে আমার বিছানায় কল্পনা করিনি । সচেতন অথবা নিজের দোষ কাটানোর জন্য যদি বলি্‌ ,তো অচেতন ভাবে হলেও মেয়েটাকে পাওয়ার ইচ্ছে কি আমার নেই? অবশ্যই আছে। তাহলে, খারাপ হয়ে গেলাম আমি? এত সহজ! আমি একটা মেয়েকে কামনা করলাম আর খারাপ হয়ে গেলাম?

বাস বা ট্রেনের টিকিট কাটার সময় কোন ছেলের না মনে হয় ,আহ! পাশে যদি সুন্দরি মেয়ে বসতো একটা! হয়তো সবসময় নয় কিন্তু বসেতো মাঝে মাঝে ,কি হয় ? কিছুই না। ভাল করে দুএকটা কথা ,এমনকি পরিচয়টাও হয়না অনেক সময়। এটা নির্দোষ ইচ্ছা একটা । সুন্দরী মেয়েকে কাছে পাওয়ার, কথা বলার ইচ্ছা আমার হতেই পারে! এটাই কি কামবোধ?

এই ইচ্ছা অথবা কে জানে হয়তো কামবোধ থেকেই আমার মনে হল , এই বৃষ্টির রাতে,এই মাতাল ঝড়ো হাওয়ায় এই ভাংগা ঘরের দুই কোনায় অপরিচিত দুজন মানুষ হয়ে বসে থাকার কোন মানে হয় না। ব্যপারটা একেবারেই বেমানান!অন্তত আমারা পরিচয় পর্বটাতো সেরে নিতে পারি?
- আমি শামিম। পরিচিত হতে আমিই প্রথম এগিয়ে গেলাম। মিষ্টি হাসি সহ কোন উত্তর আশা করছিলাম । কিন্তু উত্তরের জন্য আমার তাকানো চোখের দিকে মেয়েটি এমন অগ্নিদৃষ্টিতে তাকাল ,আমি পুরোপুরি অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম।

কি ভাবল মেয়েটা, আমি হেংলা । গায়ে পড়ে আলাপ জমাতে চাইছি?তারপর সুযোগ বুঝে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরব এই খরের গাদায়? সাধারন দু একটা ভদ্রতার কথাও কি আমরা বলতে পারিনা ।এই ঝড়ো রাতে , আপরিচিত পরিবেশে দুজন মানব মানবি কি একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ নিয়েই কাটিয়ে দেবে? এটাই কি নিয়তি?

কিছুক্ষন পর কি আবার চেষ্টা করবো। সঙ্গী পেয়েও এই সঙ্গীহীন নিরবতা আর ভাল লাগছেনা । কি হয় একটু কথা বললে। আজকের পর সারাজিবন হয়তো আর দেখায় হলনা আমাদের । কথা বললে অনুভুতিটা তো থাকে!

আমাকে কিছু বলতে হলনা আর ! যেহেতু আমার ঘড়িটা নষ্ট হয়ে গেছে বৃষ্টির পানিতে তাই বলতে পারবোনা ঠিক কতক্ষন পড়ে বা কয়টা বাজে তখন –যখন মেয়েটি নিজ থেকেই আমাকে বল্লো, ক্ষুধা পেয়েছে আপনার?

কি মহান কথা! দয়ার অবতার !! নাম জানতে চাইলে মুখ ঝামটা আর পরে পুতু পুতু করে জানতে চাওয়া ,ক্ষিদে পেয়েছে আপনার?
- ক্ষিধে পেলেই হোটেল থেকে খাবার চলে আসবে? কাচ্চি বিরিয়ানি?
- রেগেছেন না ? আমি সরি তখন কথা না বলার জন্য। বলতে বলতে মেয়েটা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে বিস্কিট আর ছোট বোতলে পানি বের করল। “চলে আসুন, রাগ করবেন না প্লিজ।“

ক্ষুধা পেলে না খাওয়াটা বোকামি হবে। আমি তাই বসে পড়লাম। বিস্কিটে কামড় দিয়েই বুঝলাম , হয়ে গেছে কাজ। যা আশংকা করছিলাম মনে মনে । জ্বর চলে আসছে। আসম্ভব তিতে লাগছে বিস্কিট। তিতায় আমার মুখ বিকৃত হয়ে গেল।
- কি হয়েছে ,খেতে খারাপ।
- না ।
- তবে?
- ভাল্লাগছেনা । আমি এখন শোব। বলেই খড়ের গাদার উপর একপাশ কাত হয়ে শুয়ে পরলাম আমি।

সম্ভবত জ্ঞান হারিয়েছিলাম আমি। কারন মাঝের কিছুখনের ঘটানা কিছুই মনে করতে পারছিনা। যতদুর মনে পরে মেয়েটি আমার কপালে জলপট্টি দিচ্ছিল। কি অদ্ভুত, মেয়েটির সম্পর্কে কত খরাপ ভেবেছিলাম । অথচ আমার জ্বর হল আর অমনি সব ভুলে মেয়েটি আমার মাথা কোলে তুলে নিল । এই অদ্ভুত পরিবেশ বলেই কি তা সম্ভব হল ?না মেয়েরা সবসমই এমন?

ঝড়োহাওয়ায় এলোচুলে বিদ্যুতের হাল্কা নীল আলোয় এই মায়াবী মেয়েটাকে অদ্ভুত সুন্দর বলে মনে হলো আমার কাছে। অসুস্থতার সময় বড় অদ্ভুত সময়। তখন শুধু প্রিয়জন কে কাছে পেতে ইচ্ছা করে। এই বাদলের রাতে অপরিচিতা এই মেয়েটিকে আমার অতি কাছের বলে মনে হল। আমি ঘোর লাগা চোখে মেয়েটিকে কাছে টানলাম। পলকা মেয়েটির আপত্তি , চিৎকার কানে তুলার মানসিকতা তখন ছিলনা।

তারপর.........
যথেচ্ছা হাত বুলানো, বিক্ষিপ্ত চুমো আর উম্মাদের মত জড়াজড়ি-গড়াগড়ির পর যখন শেষ হল , ততক্ষনে কেটে গেছে ঘোর। এতক্ষন যে স্বাভাবিকতা আমাদের মাঝে তৈরি হয়েছিল তা আড়াল করেরেখেছে লজ্জা। ঘরের এককোণে আনত মুখো রাঙ্গা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে নিজেকে পশু বলে মনে হল আমার।
যে তীব্র অপরাধবোধ আমার মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে বাচার জন্য অথবা কে জানে ,আমার পশুত্বটাকে বৈধতা দেওয়ার জন্যই হয়তো মনের একেবারে গভীর থেকে বললাম, বিয়ে করবে আমাকে??
************
মেয়ের কথা এখানে।।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৫
২২টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×