আমি এবার ছেলেটির মুখের দিকে তাকাই। ছেেিলটির মুখে পরিশ্রমের প্রচন্ড ছাপ ফুটে উঠেছে। তার আজকের মত বিশ্রাম চাই এই মুহুর্তে কোন কিছুতেই তার মন নেই। কোথাও যাবার প্রচন্ড তাড়া। আমি ভার্সিটির কাছাকাছি তার রিকসা থেকে নেমে যাই। যাবার সময় আমার হলের ঠিকানাটা নিয়ে গেল।
বেশ কিছুদিন পরে হলের গেটে সেই রিকসাওলা ছেলেটির সাথে দেখা। চেনা যাচ্ছিল না। বেশ ভুষায় বেশ পরিবর্তন । আমার দিকে চোখ পড়তেই এগিয়ে এল। কেমন আছে জিঞ্জেস করাতে বলল গরীবের যে ভাবে দিন যায় সেটাই ভাল। আমি কিছুটা থেমে জিজ্ঞেস করি রিকসা কই ? উত্তরে বলল, " আমি তো আপা ভার্সিটি এলাকাতে রিকসা চালাইনা"। আমার মনে পড়ে যাওয়াতে হঁ্যা বললাম ।
খুব সংক্ষেপে সে যা বলল সেটা এ রকম দুখীনি মায়ের একমাত্র ছেলে। কারও কাছে হাত পাততে খুব সংকোচ লাগে তাই নিজের শ্রম বেচে অর্জিত অর্থে পড়াশুনা করছে। শুধু তাই নয় সে এই ভার্সিটিরই ছাত্র। বন্ধু বান্ধব রা ঘৃনা করতে পারে বলে সে এ এলাকাতে রিকসা চালায় না। ছুটিতে সবাই যখন যে যার বাড়িতে গেছে সে সে সময়ে রিকসা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করেছে।
আমি বললাম তুমি তো টিউশনিও করতে পার । উত্তরে বলল আমি তো সবে ফার্ষ্ট ইয়ারের পড়ি তাছাড়া টিউশনি যোগার করার চেষ্টা করেও পাই নাই।
পরের ঘটনা খুব সংক্ষিপ্ত, বন্ধু বান্ধবদের চেষ্টাতে দুটা টিউশনি আর কোচিংয়ে ক্লাস নেবার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। তার পর আর তেমন দেখা হয়নি। পরে খোজ নিয়ে জেনেছি শুধু হলে সিট পাবার জন্য সে পুরো দস্তর জামায়ত শিবিরে যোগ দিয়েছে।
আমি কোন ছাত্র সঙগঠন করি না কিন্ত শুধৃ মাত্র এই ছাত্র সংঠনে যাবার জন্য আমি আর কখনো খোজ নেই নি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০