somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘৃণা জানানোর ভাষা নেই

১১ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছুদিন পরপরই ধর্ষণ, ধর্ষিত হওয়ার খবর নিয়মিত ভাবেই প্রকাশিত হচ্ছে। গ্রাম থেকে শহর, দরিদ্র থেকে ধনী, অশিক্ষিত থেকে উচ্চশিক্ষিত, চাষী থেকে বড় ব্যবসায়ী কোন শ্রেনীরই বাদ নেই এই পশুবৃত্তির হিংস্র থাবা থেকে। সচেতন, অচেতন নারী পুরুষ সকল ধরনের মানুষই জানে ধর্ষণ একটি জঘন্যতম শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং সামান্যতম মানবতাবোধ হৃদয় নামক স্থানে থাকলে এমন ধরনের নিকৃষ্টতম অপরাধ তার দ্বারা সংঘটিত হতে পারেনা।

আপন জুয়েলার্স এর মালিকের ছেলে এবং তাদের বন্ধুমহল দ্বারা সংঘটিত ধর্ষন নিয়েই বলতে চাচ্ছিলাম। কত নাটক কত ড্রামা কত আলোচনা সমালোচনা পক্ষ বিপক্ষ সবকিছুই যেন কেমন জানি ইংগিত দেয় বরাবরের মতই যারা ধর্ষিত হয়েছে ইডাইরেক্টলি তাদের দিকেই যেন আঙ্গুল নির্দেশ করে অনেকেই। পরিবার সমাজ পুলিশ প্রশাসন যেন প্রকৃত অপরাধীদেরকেই বাঁচানোর জন্য এমন নাটক করে চরেছে। মামলা নিতেই সময় লেগেছে ৪৮ ঘন্টা থানায় অবস্থান করার পর যদিও ঘটনার পর মাস পেড়িয়ে গেল।

এখানেও নানা মনের নানা মত, ধর্ষিত হওয়ার এতদিন পার হওয়ার পর কেন মামলা করলো। এতদিন তাহলে আপোষ মিমাংসা করার জন্য চেষ্টা চলছিল নাকি অন্যকিছু যা সমাধান হয়নি বলে মামলার সিদ্ধান্ত নিলো। যদি ধর্ষিতই হতো সাথে সাথে মামলা করলোনা কেন? আর সারারাত মেয়ে ঘরে ফেরেনি, কেমন অভিবাবক যে একবারও খোঁজ নিলোনা মেয়ে কোথায় এবং না ফিরলে পুলিশকে জানালোনা কেন? এভাবে নানা প্রশ্নবানে প্রশ্নবিদ্ধ করা মানেই অপরাধীর পক্ষে সাফাই গেয়ে ভিকটিমদের ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করার পায়তারা আর কিছুনা।

আমারা আমাদের সমাজের দৃষ্টি ভঙ্গী, আচার আচরণের কথা একদম ভুলে যাই। যারা ভিকটিম তারা তো এ সমাজেরই সন্তান এ সমাজেরই কৃষ্টি কালচারের পরিধির ভিতরেই অবস্থান। যখন তাদের এমন নৃশংস ঘটনার শিকার হতে হয়েছিল তখন তাদের মানসিকতার পরিস্থিতি তারা এবং তাদের পরিবার ছাড়া আর কেউ উপলব্ধি করতে পারবেনা। মেয়ের বিপদ মানেই চোখ বন্ধ করে পরিবার থেকে শুরু করে সবাি বলতে থাকে যে, মেয়েটিই খারাপ, তার চরিত্রই খারাপ, তার চলন বলনই খারাপ, তার পোষাক পরিচ্ছদই খারাপ, সব কিছুই তার খারাপ।

এই যে এভাবে একটি মেয়েকে যদি কেউ সব দোষ তার উপরই চাপিয়ে দেয় তাহলে সেই মেয়েটি বড় বিপদে পরলেও কিভাবে কারো কাছে তার বিপদের কথা জানানোর সাহস করবে? সে তো বরং সবকিছুকে নিজে নিজে হজম করার চেষ্টা করবে কারণ সে শতভাগ ভাল থাকলেও তার উপরই সব দোষ চাপিয়ে দেয়া হয়।

যতগুলো ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধর্ষিতদের উপরই দোষ চাপিয়ে দিয়েছে অথচ ধর্ষকের বিচার হোক শাস্তি হোক এ নিয়ে কয়জনে খোলাখোলিভাবে একবাক্যে বিচার চায়? যখন ঘটনা ঘটে তখন শুরু হয় মেয়েটি কেমন ছিল, তার চরিত্র কেমন ছিল, তার মা বাবা কি মেয়েকে ভাল শিক্ষা দেয়নি বা তার পোষাক আশাক চাল চলনের কারণেই এমন হয়েছে, রাতে মধ্যরাতে ঘরের বাইরে যাওয়ার কারণেই এমন হয়েছে, ভাল ঘরের মেয়েরা রাতে বের হয় নাকি, কত হাবিজাবি যুক্তি সমালোচনা।

পোষাকই যদি তার কারণ হতো তাহলে দুই বছরের শিশু ৫ বছরের শিশু তারাও কিভাবে ধর্ষিত হয় নর পশুদের দ্বারা। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে হাত কাটা জানা সর্ট স্কার্ট শুধুমাত্র বুকের অংশ বা কোমরের নীচের অংশ ঢেকে বা কোথাও কোথাও সম্পূর্ন খোলামেলাভাবেই পোশাক পরে চলাফেরা করে তাদের তো এমন হতে শুনি, তারা মধ্যরাত কেন সারারাতই ক্লাবে পুরুষ মহিলা একসাথে ড্রিংকস করে, হার্ড সফ্ট সব ধরনের ড্রিংকস করে, নাচে গায় হুইহুল্লুর করে তারপরও তো কারো দৃষ্টি হায়েনার মত তা তো শুনিনা।

সবকিছুর মূলে দৃষ্টিভঙ্গি মানসিকতা তা স্বিকার করবেনা হায়েনার বংশজাত জন্মগতভাবে যারা পশুপ্রভৃত্তির অধিকারী। অপরাধিদের বাঁচাতে কত তালবাহানা। পরিবারে হোটেলে আমোদ ফুর্টি করে বেড়ায় আর পুলিশ তাদের ধরতে পারেনা। জনগনের টাকা খেয়ে অপরাধিদের বাঁচানোর এমন পায়তারা আর কতদিন। অনেক করে আসছে আরো করবে নিশ্চিত কিন্তু চিরদিনতো এভাবে চলতে পারেনা। জনগন এখন অনেক সচেতন, পুলিশ তাদের ধরতে না পারলে জনগণের হাতে ছেড়ে দিক তারা অপরাধীদের ধরতে পারছেনা।

যারা ধর্ষক তারাতো অপরাধী বটেই কিন্তু তাদের বাবাসহ আত্নীয় পুলিশ প্রশাসন যারা নাটক করে ধরতে পারছেনা তারাও অপরাধী। তাদের দোকান পাট, ব্যাংক হিসাব সব জব্দ করা হোক অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য। তাদের কিভাবে নিন্দা জানাবো, ভাষা খোঁজে পাইনা, পথ খোঁজে পাইনা। তারপরও একটাই দাবী অপরাধীদের ধরে নাটক না করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক যেন সাধারণ জনগণ একটু হলেও আস্থা খোঁজে পায়।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:৩৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×