একজন শিক্ষক ব্লগারকে প্রায়ই দেখা যায় সামু'র দুষ্ট এবং প্রায় বখে যাওয়া ব্যাকরণ না মানা ব্লগারদের বাংলা ব্যাকরণ শিখাতে। কিন্তু কে শুনে কার কথা! কিংবা কে দেখে কার লেখা! যে ব্যাকরণ দেখলে এককালে পেট ব্যথা শুরু হয়ে যেত সে ব্যাকরণ আবার নিজ দায়িত্বে ঘাড়ে তুলতে কে চায়? তবে যেকোন গোষ্ঠির একটা নিজস্ব ভাষা রয়েছে। তেমনি সামুবাসীরও একটা নিজস্ব স্টাইলের মডার্ণ ভাষা রয়েছে। কেউ কেউ জন্ম থেকেই অর্থাৎ রেজি: করার পরমুহুর্ত থেকেই অন্যদের দেখাদেখি অতি উৎসাহিত হয়ে এই ভাষা ব্যবহার করা শুরু করে। আবার কাউকে কাউকে দেখা যায় এই ভাষা রীতিতে লেখা পোষ্ট দেখলে সেখানে আর পদধুলি দিতে চান না। আজ আমরা সামু ভাষায় কিছু শব্দের পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংকোচন ও প্রসারণ দেখব:
১। যদি কোন বাংলা শব্দের প্রথম ও শেষ অক্ষরের মাঝে "র" এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যার উচ্চারণ হসন্তযুক্ত "র" এর মত হয় তাহলে অবশ্যই সেটাকে সামু ভাষায় " রেফ্" চিহ্নে (রেফ একটি ফলা) পরিবর্তন করতে হবে।
যেমন:
কি করব = কিকর্ব
পারছিনা = পার্ছিনা
করতেছিনা = কর্তেছিনা
২। যদি কোন শব্দের প্রথম ও শেষ অক্ষরের মাঝে "র" এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যার উচ্চারণ "র+অ" বা "র+আ" অর্থাৎ হসন্ত ছাড়া "র" এর মত হয় তাহলে অবশ্যই সেটাকে "র-ফলা" তে রূপান্তর করতে হবে।
যেমন:
চরম = চ্রম
খারাপ= খ্রাপ
গরম = গ্রম
যারা যারা = য্রা য্রা
৩। দীর্ঘ বাংলা বাক্যকে সংক্ষিপ্ত করা সামু ভাষারীতির একটি স্বত্ন্ত্র বৈশিষ্ট্য। দীর্ঘ বাক্যের একটি/দুটি/তিনটি বা আপনার যতটা ইচ্ছা ততটা বর্ণ নিজ ইচ্ছামত গায়েব করে দিতে পারেন। কেউ কিছু বলবেনা। সেক্ষেত্রে আপনার সৃজনশীলতাই মুখ্য বিষয়। তবে কিছু নিয়ম আছে-- বাক্যে "আ" থাকে সেটাকে আপনি "য়া" হিসেবে চালাতে পারবেন এবং তার সাথে উপরের নিয়ম দুটি মেনে চলে ভাষাকে আরও দৃষ্টিগোচর করতে পারেন।
যেমন:
কি আর করব = কিয়ার্কর্ব
করতে পারতেছিনা = কর্তার্তেছিনা
যাইতে পারতেছিনা = যাইতার্তেছিনা
৪। সামুভাষায় যুক্তাক্ষর রীতি অনেক বেশি প্রচলিত। বাংলা যে সকল শব্দে যুক্তাক্ষর দেওয়া আইনত দন্ডনীয় অপরাধ সে সকল শব্দে আপনি খেয়াল খুশিমত যুক্তাক্ষর ব্যাবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নিজস্ব উচ্চারণ রীতি লক্ষ্য রাখতে হবে। আপনি যেভাবে উচ্চারণ করেন ঠিক সেভাবেই বর্ণগুলোকে যুক্ত করে দিবেন।
যেমন:
কেমনে কি = ক্যাম্নে কি
মন চায় = মঞ্চায়
আপনার = আপ্নার
৫। এই ভাষা রীতিতে আপনি নতুন নতুন বর্ণ এনে বাংলা সুশীল এবং গোবেচারা শব্দটিকে অলঙ্কৃত করতে পারেন যদিও বাংলা শব্দটি কলঙ্কিত হয়ে যায়। তাতে কি? আধুনিকায়ণ বলে কথা!
যেমন:
ব্যাপক = বিয়াপক
ব্যাপক = বিয়াফুক
ব্যাপক = ব্যাফুক
৬। বাংলায় যেসকল শব্দে যুক্তাক্ষর রয়েছে সেগুলোকে আপনি ভেঙ্গে চুরে চুরমার করে লিখতে পারেন।
যেমন:
ব্লগ = বলগ
ব্লক = বলক
৭।"ও-কার" যুক্ত বাংলা শব্দে "ও-কার' এর স্থলে "উ-কার" বসাতে হবে।
যেমন:
পোষ্ট =পুষ্ট
কোনটা = কুন্টা
লোল = লুল
লোকাল টক = লুকাল্টক
ফটো = ফটু > ফডু > ফটুক
আলো = আলু
৮। যদি আপনার কমেন্ট বা পোষ্টে একটা স্যাটায়ার ভাব আনতে চান তাহলে । "শ" "স" এবং "ছ" এর স্থলে "চ" লিখতে পারেন।
যেমন:
মাইনাস = মাইনাচ
আছে = আচে
আপনি যদি কোন হালকা পোষ্ট বা সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষ্যমতে রম্য বা স্যাটায়ার পোষ্ট লিখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে কিছু আঞ্চলিক এবং কিছু সামুরীতিতে পরিবর্তিত শব্দ লিখতে হবে..... তা না হলে সেখানে রম্যভাব প্রকাশে ব্যার্থ হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায়না।
অবশেষে একটা টিপস্ দেই (ডু নট ট্রাই দিস এ্যাট হোম), আপনি যদি বন্ধুবৎসল হন অথবা মজা করে কোন কমেন্ট দিতে চান তাহলে ধারণা করা হয় এই ভাষারীতিতে লিখলে সেটা অনেক আন্তরিক হয়।
যেমন:
আপনি যদি লেখন: আপ্নে খুব খ্রাপ লুক।
উত্তর আসবে : হে হে
আবার
যদি আপনি লেখেন: আপনি খুব খারাপ লোক।
উত্তর আসবে: আপনাকে ব্লক করা হল।
ভাষার বিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। সামুর সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষারও বিবর্তন হবে.......তখন আবার রিসার্চ করব ইনশাল্লাহ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১০:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




