প্রকৃতপক্ষে লেখাটি ছোট বালক নামক এক ব্লগার ভাইয়ের একটি পোস্টে মন্তব্য হিসেবে লিখেছিলাম । পরে ভাবলাম, এটি নিয়ে একটি পোস্টও দেওয়া যায় বৈকি । পড়ে দেখুন , আশা করি ভাল লাগবে ।
নারী ও পুরুষ উভয়েরই দায়িত্ব নিজ নিজ পশুরিপুকে যেকোন মূল্যে নিয়ন্ত্রণ করা । একজন নারী যদি অশ্লীল পোশাক আশাকে ঘোরাফেরা করে, তাহলে সে নিজের পশুত্বকে সমাজের সামনে প্রতীয়মান করে । ইদানিং পুরুষেরাও অশ্লীল পোশাক আশাকে ঘোরাফেরা করে আমাদের সমাজে । তাদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য । এককভাবে নারীদের দোষারোপ করা চূড়ান্ত একচোখি মনোভাবের পরিচায়ক ।
নারীরা যদি অশ্লীল পোশাক আশাকে ঘোরা ফেরা করে, তাহলে পুরুষের দায়িত্ব তাদের থেকে চোখ সরিয়ে নেওয়া । কিছু মানুষ আছে যারা অতিরিক্ত খোলামেলা পোশাক পরিহিতা নারীদের রসালো ফল বা এইধরনের বাজে শব্দ দ্বারা চিহ্নিত করে। তাদের জন্য একটি উদাহরণ দেই( শুধুই উদাহরণ) । ধরুন, বাজারে আমের দোকানে গিয়েছেন আম কিনতে । আপনি কি সেই আমটি তুলে নিবেন, যেটি দুর্গন্ধময় ও কদর্য ? যে নারীরা জেনে বুঝে অশ্লীল পোশাক আশাক পরিধান করে, তারা দুর্গন্ধময় ও কদর্য আমের সমতুল্য । আবার অনেকে আছেন, যারা না বুঝেই অন্ধ অনুকরণের প্রবণতার কারণে এসব পোশাক আশাক পরে । এদেরকে মার্জিত পোশাক আশাকের গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝানোর দায়িত্ব তাদের পরিবারের মানুষেরই । আজে বাজে পোশাক পরিধানকারি পুরুষদের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য ।
এখন হয়তোবা জিজ্ঞেস করবেন, মার্জিত পোশাক কোনটিকে বলবো । পুরুষদের জন্য আছে প্যান্ট শার্ট, সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে পরা উচিত । ( কোমরের নিচে প্যান্ট পরে underwear বের করে হাটে অনেকে ) কদর্য ছবি ছাপানো টি শার্ট, ছেড়া প্যান্ট, হাজার পকেটওয়ালা প্যান্ট শার্ট ইত্যাদি পরিত্যাগ করা প্রয়োজন । নিতান্ত নিরপেক্ষ দৃষ্টিতেই এসব পোশাক ভয়ংকর রকমের দৃষ্টিকটু ।
নারীদের জন্য আমাদের দেশি যেসব পোশাকের চল রয়েছে, সেসবই ভাল । সালোয়ার কামিজ এবং শাড়ি । সালোয়ার কামিজের সাথে ওড়নার সঠিক ব্যবহার দরকার । ওড়না গলায় ঝুলিয়ে রাখলে লাভ নেই । সরাসরিই বলি, ওড়নার মূল purpose হল বুক ঢেকে রাখা । ইদানিং অনেকে এত শর্ট কামিজ পরেন যে, তাদের কোমর উন্মুক্ত হয়ে থাকে । আর শাড়ি পরিধান করার সময় অনেকে হাতাকাটা ব্লাউজ এবং পরিধানের সঠিক স্থান থেকে অনেক নিচে পরিধান করেন, যার ফলে দেহের অনেক অংশ উন্মুক্ত হয়ে থাকে । এরই নাম সভ্যতা ? এটি পরিত্যাজ্য নয় কি?
তবে, কেউ যদি নিজ উদ্যোগে তার নিজ ধর্ম সম্পর্কিত কিছু ব্যবহার করতে চায়, যেমন শাখা-সিঁদুর-হিজাব- বোরখা, তারা তা অবশ্যই ব্যবহার করতে পারে । এটি তাদের অধিকার ।
মানবসভ্যতার শুরুর দিকে গুহামানবেরা পোশাক আশাকের ধার ধারতো না । সভ্যতার বিবর্তনের সাথে সাথে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় এবং সুন্দর পোশাক আশাকের প্রচলন হয় সমাজে । কিন্তু আজ এই বিবর্তন পিছনে যাত্রা করছে ।
আমাদের প্রয়োজন নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন সাধন করা । মেয়েদেরকে আম জাম কাঁঠালের সাথে তুলনা করবেন না । আপনি যেমন মানুষ, তারাও মানুষ, আমরা সবাই মানুষ ।
আমার এই লেখার সাথে অনেকেরই মত মিলবে না । মেলার কথাও নয় । কারণ প্রত্যেকেই স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী । তবে কিছু অংশ মিলে যাওয়া অস্বাভাবিক নয় বলেই আমি মনে করে । যদি কেউ সম্পুর্ন বিপরীত ধারনা পোষণ করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই মন্ত্যবে আমাকে জানান, মার্জিত ভাষায় ।
ধন্যবাদ ।