অনেকেই আছেন, যারা কম্পুটার গেম বলতে পাগল । বিশেষ করে ১২-১৪ বছর বয়সের ছেলেরা ( কন্যাদের কথা বললাম না, কারণ এখন পর্যন্ত আমার পরিচিত কোন কন্যা গেমার দেখি নাই। যারা গেম খেলে থাকেন, তাহারা অধিক দক্ষতায় Bow & Arrow এবং Farmville ধাঁচের গেমে দক্ষতা রাখেন । ) গেম বলতে পাগল । এলাকার ডিভিডির দোকানে গেলে শুধু গেম ডিভিডিই বেচাবিক্রি হতে দেখি ।
এরা গেমের ব্যাপারে ভয়ংকর সিরিয়াস হলেও যে বস্তু দিয়ে গেম চালাচ্ছে এবং খেলছে, তা নিয়ে কোন ধারনাই রাখে না । রাখলেও তা শুধু মাত্র কত গিগাহার্টজ প্রসেসর, কত গিগা/মেগা র¤্যাম এবং এজিপি কত মেগা( হ্যাঁ, এজিপি । পিসিআই এক্সপ্রেস কার্ড/ গ্রাফিক্স কার্ড নামটা অনেকেই দুর্ভাগ্যক্রমে জানে না ) , এইটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ।
আর আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা বেশ নিচু মন মানসিকতার অধিকারী । তারা জেনে হোক না জেনে হোক, একটা Low/Mid রেঞ্জের কম্পুটারের মেইন্টেনেন্স এর জন্য নিম্নতম যে ব্যবস্থাগুলি আছে ( ছোটখাট দুটি 80mm ফ্যান, ক্যাবল গুলি গুছিয়ে একপাশে দেওয়া এবং বাতাস চলাচলের জন্য কিছুটা ফাঁকা জায়গা রাখা ) তার কোনটাই এরা করে দেয় না । অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হবার ফলে যে এত শখের কম্পুটারের লাইফ স্প্যান কমে যাচ্ছে, সেটাও জানার কোন ব্যবস্থা এদের নেই । আমি নিজেও অমনই ছিলাম একসময় ( এখনো তেমন উন্নতি লাভ করি নাই যদিও ) । এজন্য জানি, একটা কম্পুটার অকালে ঝরে গেলে কেমন কস্ট লাগে । এদের জন্যই আজকের এই ক্ষুদ্র টিউটোরিয়াল ।
১. কুলিং ফ্যান
কুলিং ফ্যান কি এবং কেন দরকার ?
কুলিং ফ্যান হল কম্পুটার কেসিঙের ভেতরে শীতল বাতাসের প্রবাহ সুনিশ্চিত রাখার জন্য ব্যবহৃত ফ্যান । সাধারণত বাজারে যেসব সাধারণ কেসিং পাওয়া যায়, সেগুলোতে দুটি থেকে তিনটি ফ্যান লাগানোর ব্যবস্থা থাকে । কোথায় কোথায় থাকে, তা দেখানোর জন্য নিচের ছবি গুলি দেখুন ।
প্রথম ছবিতে কেসিঙের সামনের অংশে ফ্যান লাগানোর স্থান দেখানো হয়েছে, আর দ্বিতীয়টিতে পেছনে দেখানো হয়েছে । এখানে যে ফ্যান গুলো দেখা যাচ্ছে, এগুলো 80mm ফ্যান । ঢাকায় এই ফ্যান সংগ্রহ করার জন্য সেরা স্থান এলিফেন্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার । এখানে লেভেল ৬ এ বেশ কিছু দোকান আছে, যেখানে ফ্যানগুলি পাবেন । দাম নেবে ১০০-১২০ টাকা । এগুলো ব্যবহার করলে আপনার কম্পুটার অতিরিক্ত তাপের হাত থেকে রক্ষা পাবে । আর ফ্যানের সাথে স্ক্রু নিতে ভুলবেন না । সাধারণ স্ক্রু দিয়ে ফ্যানগুলি লাগানো যায় না । এগুলোও এসব দোকানেই পাবেন । আরেকটি কাজ করতে পারেন । কেসিঙের সাথে যে Accessories এর প্যাকেট টা থাকে, সেটা দোকানের কর্মচারীরা সবসময়ই মেরে দেয় । আপনি যখন কম্পুটার কিনবেন, তখন অবশ্যই এই প্যাকেটটি নিয়ে আসবেন। এখানে কেসিঙের সাথে অতিরিক্ত যা যা লাগানো সম্ভব, তার জন্য সকল প্রকার স্ক্রু দেওয়া থাকে । দোকানিরা দিতে চাবে না, তবে ঝাড়ি লাগালে অবশ্যই দেবে ।
২. ক্যাবল ম্যানেজমেন্ট
ক্যাবল ম্যানেজমেন্ট বলতে কম্পুটারের কেসিঙের ভেতর যে তারগুলো দেখা যায়, সেগুলোকে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে গুছিয়ে এমন ভাবে রাখাকে বোঝানো হয়, যেন কেসিঙের ভেতর সর্বোচ্চ পরিমাণ ফাঁকা স্থান থাকে এবং বায়ু প্রবাহ সুনিশ্চিত হয় । যদি তারগুলি অগোছালো অবস্থায় থাকে, তাহলে তা বায়ু প্রবাহে বাধাদান করে এবং ফল হিসেবে কেসিঙের ভেতরে তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায় । এজন্য তারগুলি গুছিয়ে রাখা প্রয়োজনীয় । নিচের ছবিটি দেখুন ।
নিঃসন্দেহে খুব করুন অবস্থা । এখন দেখুন এই ছবিগুলি ।
এভাবে তারগুলিকে বেঁধে রাখতে পারলে তা বায়ুপ্রবাহ অনেকটুকু বাড়িয়ে দেয় । আর এভাবে বাধার জন্য অবশ্যই বিদ্যুৎ অপরিবাহী বস্তুর তৈরি সুতো ব্যবহার করবেন । আর উপরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ছবিতে ফ্যানের অবস্থানও দেখানো আছে । এভাবে যখন বাধবেন, তখন অবশ্যই তারগুলি দ্বিতীয় ছবিতে দেখানো স্থানে জড় করে রাখবেন । কেসিঙের মাঝ বরাবর রাখলে তা বাতাস প্রবাহে বাধা দেয় ।
আর তার বাধার জন্য নিচের ছবির জিনিসগুলা সবচেয়ে ভাল ।
আর নিয়মিত কেসিঙের ভেতরের ধুলো পরিষ্কার করবেন । ধুলো বালি অত্যন্ত ক্ষতিকর । আর এরজন্য ৪০০ টাকা দিয়ে একটি ব্লোয়ার কিনে নেওয়াই সবচেয়ে ভাল । কম্পুটার ফিটফাট, আপনিও ফিটফাট।
সংক্ষেপে যতটুকু বলা সম্ভব, ততটুকু বললাম । যারা নিজের কম্পুটারের আয়ু বাড়াতে চান এবং যত্ন নিতে চান কিন্তু উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না, আশা করি তাদের কিছুটা হলেও উপকারে আসবে এই লেখাটি।
Happy Gaming ...
কুলিং ফ্যান ও ক্যাবল ম্যানেজমেন্টঃ একটি ছোট টিউটোরিয়াল
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১১টি মন্তব্য ৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য
ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার
(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন
সম্পর্ক
আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭
ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।
এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন
একাত্তরের এই দিনে
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে
তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন