somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনার সংবিধান নিস্তেজ কেন?

০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

{ব্লগে আজকে ঢুকে দেখি লেখা ড্রাফটে! পরে বুঝলাম মডুদের কীর্তি। তাই পোস্ট ভদ্রস্থ করে আবার দিলাম}

মাসখানেক আগে, একটা পোস্ট দিয়েছিলাম এইচএসসি পরীক্ষা নামক একটা রম্য নাট্য নিয়ে। আমি স্বয়ং একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী; এবং আমি স্বয়ং ফাঁস করা প্রশ্ন পড়ে, সমাধান করে পরীক্ষা দিয়েছি। দিচ্ছি। এবং আর একটা পরীক্ষা আছে, সেটাও এভাবেই দেব। সন্দেহের কোন অবকাশ নাই যে গোল্ডেন পাবো।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনার সংবিধান ক্যান নিস্তেজ?

কে আটকাবে? কে বলবে- না ভাই, কাজটা তো ঠিক হচ্ছে না, কিছু একটা করা দরকার?

আপনাদের আমি ইন্সাইড নিউজ দেই বরং। ভেতরের খবর। রাইট ফ্রম দা হর্সে'স মাউথ। মন দিয়া শোনেন। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের সবার মোবাইল আছে, সেখানে নেট ইউজ করে মূলত ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ চালান হয়। প্রশ্ন ফাঁস হবার সাথে সাথে বিদ্যুৎবেগে সেটা ছড়িয়ে পড়ে এক সার্কেল থেকে আরেক সার্কেলে, পনেরো-বিশ মিনিটের মাঝে সবাই জেনে যায়। পেয়েও যায়। সকালে পরীক্ষা হইলে, প্রশ্ন ফাঁস হয় নটায়। বিকেলে হইলে, সাড়ে বারো বা একটায়। অনেক সময় সকাল নটাতে সকাল-বিকেল দুই পরীক্ষার প্রশ্নই ফাঁস হয়ে যায়।

এখন বার্নিং কুশ্চেন- তাহলে এটা ফাঁস করে কারা?

ফেসবুকে কয়েকটা পেইজ আছে, হোয়াটসঅ্যাপে আছে গ্রুপ, ঢাকায় সব মিলিয়ে তেরো-চৌদ্দটার মতো- এখানকার সদস্যরা প্রশ্ন নেয় (উল্লেখ্য, এই সদস্যরা সংখ্যায় গ্রুপপ্রতি বিশজনের বেশি হয় না। কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে তারাই সমগ্র ছাত্রসমাজে প্রশ্ন শেয়ার করে ফেলে, ক্ষুদ্রতর অঙ্কের বিনিময়ে) ডিল থাকে প্রশ্ন ১০০% কমন পড়লেই কেবল অ্যাডমিনকে টাকা দেওয়া হবে।

কত টাকা? জনপ্রতি ৪০০-৫০০-১০০০ বা আরও বেশি।

অ্যাডমিন কারা? এঁর পেছনে ছাত্রনেতা ও শিক্ষকদের একটি গোষ্ঠী লুকিয়ে আছে। আমি নাম বলছি না, কিন্তু ঢাকা শহরের টপ দশটি কলেজের ছয়টিরই শিক্ষকরা এতে জড়িত। মোটা টাকা লেনদেন হয় এখানে। পরীক্ষার পর কিছু ছাত্রকে দেখা যায় 'বড় ভাইয়ের' সাথে কথা বলতে। তারা তখন এসেছেন প্রাপ্য টাকা আদায় করতে। অবশ্য, ডিজিটাল যুগ, অনেক ক্ষেত্রে তারা আসেনও না। বিকাশ করে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের একাউন্টে।

স্পেসিফিক কয়েকজন আছেন। ফেসবুকে Adnan Ahmed Joy তথা 'জয় ভাইয়া' খুবই বিখ্যাত তাঁর নিখুঁত 'সাজেশনে'র জন্যে। তিনি উদারমনা, পরীক্ষার আগে ৬০%-৭০% কমন পড়বে এমন সাজেশন দিয়ে টোপ সাজান; নিচে লেখা থাকে- #১০০% কমন পেতে হলে যোগাযোগ করো #01917457379 নাম্বারে, বা অন্য কোন মোবাইল নম্বর। 'মিলন ভাই' এবং 'রাশেদ ভাই' এরকম আর দুজন ফেরেশতা।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপের কম্বিনেশন করে কাজটা করা হয়। প্রশ্ন ফাঁসকারি ফেসবুকে একটা ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে নিরীহ চেহারার মোবাইল নাম্বার ঝুলিয়ে দেন। প্রশ্ন পেতে আগ্রহীগণ এই নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মেসেজ পাঠান, প্রশ্ন পেয়ে যান। এবং পরীক্ষার পর অই নম্বরেই বিকাশ করে টাকা পাঠিয়ে দেন। ফুল-প্রুফ প্ল্যান।

এটা তো গেল অতি দুঃসাহসী ছাত্রদের কথা। আমরা যারা নিরীহ আছি, তারা সবচে সুবিধাভোগি। আমরা না দেই টাকা, না নেই রিস্ক। স্রেফ ওই পোলাপানের সাথে মেসেঞ্জারে চ্যাটাই আর একটু পর পর চেক করি, 'অমুক সেন্ট আ ফটু' এই মেসেজটা কখন আসে।

আর পরীক্ষার হলে সে কি সুন্দর পরিবেশ! তিন ঘন্টার পরীক্ষা দুই ঘন্টায় দিয়ে শীষ মারতে মারতে বেরোই, বাইরে বাপ-মায়েরা উদ্বিগ্ন চোখে তাকিয়ে থাকেন- প্রশ্ন কমন পড়ছিল?- আমরা তাঁদের দুশ্চিন্তা উড়িয়ে দিয়ে বলি ধুউউউররর, কোন পরীক্ষা হৈল নাকি এইটা? ফাটায়া আসছি! আব্বা-আম্মা অপরাধী মুখে হাসেন, আমরা উজ্জ্বল মুখে হাসি, গেটের সামনে অ্যাডমিশন কোচিংয়ের লিফলেট বিলি করতে থাকা ভাইয়ারা ততোধিক উজ্জ্বল মুখে হাসেন।

এবং তাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনি আপনার সংবিধান যেন খাড়ায় (আইমিন সমুন্নত থাকে) সেই কাজ করেন, দরকার হৈলে মলম-জোঁকের ত্যাল-ভায়াগ্রা (আইমিন উপযুক্ত পদক্ষেপ) অ্যাপ্লাই করেন। তাও নিস্তেজ সংবিধান নিয়া শিক্ষাব্যবস্থায় উপগত (আইমিন অগ্রসর) হয়েন না। আমার মাথায় আর ভদ্রতোচিত কিছু মাথায় আসছে না, আমি কথা শেষ করতে চাই আপনার প্রতি আমার অনুভূতির শীর্ষ অবস্থানটি আরেকবার পুনরাবৃত্তি করে ---

জাজাকাল্লাহ খায়ের
(আইমিন াকিউ)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ১০:৫৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×