somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বাসের পরিচ্ছন্নতায় ইসলাম

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র নিয়ে আমার লেখাটি একটি ব্লগে শেয়ার হওয়ার পর সেখানে একজন পাঠিকার করা মন্তব্য পড়ে মনে হলো যে আমাদের অনেকেরই হয়তো ইসলাম নিয়ে কিছু অদ্ভুত ধারণা রয়েছে। এই লেখাটিতে তাই কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব যা ইসলাম নিয়ে আমাদের চিন্তাকে শুদ্ধ করবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। সকল প্রশংসাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার। সালাত ও সালাম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর।

ইসলাম (বা ধর্ম) নিয়ে অনেকেরই ধারণা হচ্ছে ধার্মিকেরা শুধুই ‘বিশ্বাসী’। মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রত্যেক মানুষই বিশ্বাসী, কেউ আল্লাহতে, আর কেউ নিজের বুদ্ধিতে, আর কেউ নিজের কামনায় (desire)। কোনো নাস্তিক যদি বলে যেঃ ‘আমি ধর্মে বা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করি না’, আদতে এই কথাটাই সেই নাস্তিকের একটা বিশ্বাস!

বিশ্বাসী হওয়াটা দোষের নয়, দোষ হচ্ছে যদি বিশ্বাসটা ভিত্তিহীন হয়। দুর্বল বিশ্বাসীর ভিত্তি দুর্বল, তাই ‘অবিশ্বাসের’ হাওয়া লাগতেই তা কেঁপে ওঠে।

*****

একজন মুসলিম তখনই শক্তিমান মুসলিম হয়ে ওঠে, যখন সে ইসলামের সত্যতা সম্পর্কে জেনে এবং বুঝে ইসলাম পালন করে। ইসলামের সত্যতা প্রমাণ করা এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। বরং ইসলামের সত্যতা নিয়ে নিশ্চিত একজন মুসলিমের চিন্তার ধাপগুলো নিয়ে আমরা কিছুটা আলোচনা করব।

একজন মুসলিমের জ্ঞানের প্রথম উৎস হচ্ছে কোরআন। কেউ যদি কোরআনকে আল্লাহর কিতাব হিসেবে মানে, তবে তাকে এটাও মানতে হবে যে কোরআনের পুরোটাই সত্য এবং এতে কোনো পরস্পর বিরোধীতা নেই (দেখুনঃ সূরা নিসা, আয়াত ৮২)। আর কোরআনকে মানার অর্থ হচ্ছে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মানা, কারণ কোরআনেই আল্লাহ তাঁর রাসূলের কর্তৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করেছেন (যেমন দেখুনঃ সূরা আলে-ইমরান, আয়াত ৩২)।

কোরআন এবং সুন্নাহকে আমাদের জ্ঞানের উৎস হিসেবে মেনে নেয়ার মানে হচ্ছেঃ আমাদের মূল্যবোধের মাপকাঠি আমরা কোরআন এবং সুন্নাহ থেকেই নেব। কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল, তা আমরা আগে কোরআন এবং সুন্নাহর আলোকে জানব। আমাদের সংস্কৃতির কোনো দিক যদি কোরআন এবং সুন্নাহর বিরোধী হয়, তবে আমরা সেই সংস্কৃতিকেই পরিত্যাগ করব। ইসলাম যা হারাম করেছে, তা হারামই থাকবে, সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে তা হালাল হবে না। আর তাই, নারী-পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বা মেলামেশা-কে ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে; পৃথিবীর সকল মানুষ এক হলেও তা কখনো হালাল হবে না। সমকামীতা ইসলামে নিষিদ্ধ, আধুনিকতার দোহাই দিয়ে কখনোই তা হালাল হবে না। মিউজিককে ইসলাম হারাম করেছে, কেয়ামত পর্যন্ত তা হালাল হবে না।

কোরআন এবং সুন্নাহকে আমাদের জ্ঞানের উৎস হিসেবে মেনে নেয়ার মানে হচ্ছেঃ কোরআন এবং সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক যে কোন মত বা পথ থেকে আমরা দূরে থাকব (দেখুনঃ সূরা আলে-ইমরান, আয়াত ৮৫)। যে মানুষদের জীবনে কোরআন এবং সুন্নাহর কোনো প্রভাব নেই, তাদেরকে আমরা আমাদের ‘আলোকবর্তিকা’ হিসেবে গ্রহণ করব না।

উপরের এই কথাগুলো পড়ে যদি কারো ‘কিন্তু যদি…’ মনে হয়, তবে বুঝতে হবে যে সেই ব্যক্তির মনে ইসলামের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ইসলামের সত্যতা নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার মানে হচ্ছে জীবনে কোরআন এবং সুন্নাহর কর্তৃত্ব মেনে নেয়া। মুসলিম নামধারী কারো যদি আল্লাহর নাম নিতে বা কোরআনকে অধ্যয়ন করতে অনীহা থাকে, তবে বুঝতে হবে যে সেই ব্যক্তির ইসলাম নিয়ে গুরুতর সমস্যা আছে।

*****

পরিবারের মুসলিম বাবা-মায়ের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের সন্তানদের ইসলাম সম্মত পরিবেশ দেয়া। একই ভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি মুসলিমদের দ্বারা পরিচালিত হয়, তবে সেই প্রতিষ্ঠানের পরিবেশটাও ইসলাম সম্মত হতে হবে। যদি তা না হয়, তবে বুঝতে হবে যে, সেই প্রতিষ্ঠান যারা পরিচালনা করছেন হয় তারা ইসলাম বিষয়ে অজ্ঞ অথবা মুসলিম নামধারী ইসলাম বিদ্বেষী।

বাংলাদেশের মতো মুসলিম প্রধান দেশে কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রকাশ্যে ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম চালানো সহজ নয়। অনলাইনে বেনামে ইসলামের বিরুদ্ধে লেখালেখি হয়ত করা যায়, কিন্তু ঠিকানা আছে এমন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম চালাতে গেলে কিছুটা ‘ইসলামি পোশাক’ পরা জরুরী! আর তাই, আমাদের দেশের সবচেয়ে ইসলাম বিরোধী পত্রিকায় ‘বিনোদন পাতা’র পাশাপাশি ‘ইসলামি পাতা’ও থাকে। কি অদ্ভুত বৈপরীত্য! একদিকে আমরা আল্লাহর কর্তৃত্ব মানি বলে ‘দাবি’ করছি, আর অন্য দিকে আল্লাহর বেঁধে দেয়া সীমানা লঙ্ঘন করছি, আর এমন ভাব করছি যেন এটাই ইসলাম। যেন ইসলাম কী, সেটা আমরা আমাদের মন মতো ঠিক করব! এরকম মানসিকতার ব্যক্তিদের জন্য দুটো নাম আছে ইসলামেঃ মুনাফিক (hypocrite) আর যিনদিক (যে ইসলামে প্রবেশ করে ইসলামের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে)।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মতো প্রতিষ্ঠানের পরিবেশটাও এরকমঃ তারা প্রকাশ্যে কখনই বলবে না যে তারা ইসলাম বিরোধী। কিন্তু এই সব প্রতিষ্ঠানের পরিবেশটা এমন যেখানে ইসলাম হচ্ছে একটা একাডেমিক বিষয় মাত্র। এই সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে সুশীলতা আর আধুনিকতার মানদণ্ড হচ্ছে ক্লাসিকাল মুভি বা সঙ্গীতকে appreciate করতে পারার যোগ্যতা। তাদের এই স্বপ্রতিষ্ঠিত মানদণ্ড যে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে পরিত্যাজ্য, সেটা আমরা বললে আমরা হয়ে যাবো ‘ধর্মান্ধ-একগুঁয়ে’!

কেউ বলতে পারেনঃ ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র তো ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা করতে মানা করে না!’ ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা করতে মানা না করা এক ব্যাপার, আর ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা করতে উৎসাহিত করা আরেক ব্যাপার। একটি উদাহরণ দেই। ধরুন, কোন এক পরিবারের বাবা-মা তাদের সন্তানকে গান-বাজনা-চলচ্চিত্র-নৃত্য-সাহিত্য চর্চার মধ্যে বড় করেন, আর সেই পরিবারে কোরআন বা ইসলাম নিয়ে কোনো আলোচনাই হয় না, যদিও কোরআনের একখানা কপি সেই বাসার বই-এর শেলফে শোভা পায়। এরকম একটি পরিবারের কর্তা যদি দাবি করেন যে তিনি আসলে ইসলাম বিরোধী নন, তাহলে তার সেই দাবি কি গ্রহণযোগ্য? মোটেই নয়। ইসলাম সম্পর্কে যদি এই কর্তার নিশ্চিত বিশ্বাস থাকত, তবে তার পরিবারে কোরআন আর সুন্নাহ নিয়ে পড়াশুনা আর আলোচনা প্রাধান্য পেত। সেটা যখন হচ্ছে না, তখন এই কর্তা হয় একজন মূর্খ অথবা মুসলিম নামধারী ইসলাম-বিদ্বেষী।

কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিবেশটাও যদি উপরের পরিবারের মত হয়, তবে সেই প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরাও হয় ইসলামের ব্যাপারে অজ্ঞ, অথবা ইসলাম নিয়ে উদাসীন অথবা মুসলিম নামধারী ইসলাম-বিদ্বেষী।

*****

যাকে আমরা ভালোবাসি, তাঁর সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্টা করি। এটাই মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা। আমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসি, তাহলে আমরা আল্লাহ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। আল্লাহর নাম আর গুণাবলী সম্পর্কে জানব।

আল্লাহ সম্পর্কে আমরা যতই জানব, ততই আল্লাহর প্রতি আমাদের ভালবাসা (love), ভয় (fear) আর আশা (hope) জন্ম নেবে। সমস্ত উত্তম নাম আর গুণাবলী আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার। আর আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর সেই সমস্ত নাম দিয়েই ডাকতে বা ইবাদত করতে বলেছেন (দেখুনঃ সূরা আল-আ’রাফ, আয়াত ১৮০)। আর এই আয়াতেই আল্লাহ সেই সব লোকদের সঙ্গ পরিত্যাগ করতে বলেছেন যারা আল্লাহর নামকে পরিবর্তন বা অস্বীকার করে।

আল্লাহর সকল নামের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নামটাই হচ্ছে ‘আল্লাহ’। আল্লাহর এই শ্রেষ্ঠ নামটাই মুখে নিতে যদি কারো দ্বিধা হয়, তবে বুঝতে হবে যে সেই ব্যক্তির ইসলাম নিয়ে গুরুতর সমস্যা আছে। এরকম একজন ব্যক্তির নামটা মুসলিম হতে পারে, হতে পারে তিনি কোরআনও পড়েছেন, হয়ত পড়েছেন আল্লাহর রাসূলের জীবনীও। কোনো ব্যক্তির যদি আল্লাহর নাম নিতে দ্বিধা হয় বা আল্লাহর কিতাব পড়তে অন্যকে উৎসাহিত করতে সঙ্কোচ বোধ হয়, তাহলে এই কথা বলা ভুল হবে না যে এরকম ব্যক্তি হয়ত ইসলামের সান্নিধ্য পেয়েছেন, কিন্তু তিনি ইসলামের শিক্ষা আত্নস্থ করতে পারেন নি।

‘আর যার জন্য আল্লাহ নূর রাখেননি, তার জন্য কোন নূরই নেই’ (সূরা আন-নূর, আয়াত ৪০)।

অগাস্ট ২৭, ২০২০

[এই লেখাটি একজন প্রবাসীর, যিনি একটা বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত। তিনি আমার নিকটাত্মীয়ও বটে। এই ব্লগে তার কোন একাউন্ট নেই। আমি তাই লেখাটা তার অনুমতি নিয়ে, মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য, আমার একাউন্টে শেয়ার করলাম।]
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৩০
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×