ইতিহাস এবং প্রেক্ষাপট
কলকাতার কয়েকজন সঙ্গীতশিল্পী মিলে ১৯৭৪ সালের শেষ দিকে গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই ব্যান্ডটির গঠন করেন । প্রাথমিক ভাবে তাঁদের নাম ছিল সপ্তর্ষি। পরে তাঁদের নাম পরিবর্তন হয় যেমন তীরন্দাজ এবং গৌতম চট্টোপাধ্যায় বিএসসি এবং সম্প্রদায় একেবারে শেষে রঞ্জন ঘোষাল এই ব্যান্ডটির নাম দেন মহীনের ঘোড়াগুলি ।
প্রায় এই একই সময়ে বাংলাদেশে সোল্স এবং ফিডব্যাক নামের দুটি ব্যান্ড গঠিত হয়।
১৯৭০ এর দশক বাংলা ব্যান্ড এবং রক সঙ্গীতের পক্ষে খুব একটা সুবিধার সময় ছিল না । সেই সময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, শ্যামল মিত্র, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরা । সঙ্গীতের দিক থেকে তাঁরা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের পুরনো ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক । তাঁদের গাওয়া বাংলা সিনেমার গান এবং বাংলা আধুনিক গানের জনপ্রিয়তা ছিল খুবই বেশি।
মহীনের ঘোড়াগুলি নামের মানে
এই ব্যান্ডের নামটি তাদের ভক্তদের জন্য একটি বড় ধাধা। আক্ষরিক অর্থে মহীনের ঘোড়াগুলির সাথে সঙ্গীতের কোন মিল পাওয়া যায় না। প্রকৃতপক্ষে এই ব্যান্ডের নাম নেয়া হয়েছে বিশিষ্ট আধুনিক বাংলা কবি জীবনানন্দ দাশের একটি কবিতা ঘোড়া থেকে। কবিতার দ্বিতীয় পংতি হচ্ছেঃ
"মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জোৎস্না প্রান্তরে"
এই ব্যান্ডের একটি জনপ্রিয় গান ভালবাসি জোসনায় বাংলার প্রকৃতির রুপময় নৈসর্গিক দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। জীবনানন্দের প্রভাব এখানে স্পস্ট ভাবে ধরা পড়েছে।
এখানে আরেকটি মিল পাওয়া যায়। জীবনানন্দ তৎকালীন সমসাময়িক কবিতার বৃত্তের বাইরে এসে বাংলা সাহিত্যে আধুনিক কবিতার সূচনা করেন। মহীনের ঘোড়াগুলি ব্যান্ডটিও তৎকালীন সাধারন সঙ্গীতের গন্ডির বাইরে বাংলা সঙ্গীতকে নতুন কিছু দেয়ার চেষ্টা করেছে।
মহীনের ঘোড়াগুলির সদস্যরা
গৌতম চট্টোপাধ্যায় (মনি) -- কণ্ঠ, কথা, লিড গিটার, স্যাক্সোফোন
আব্রাহাম মজুমদার -- পিয়ানো, বেহালা
প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় (বুলা) -- বেস গিটার, বাঁশি
রঞ্জন ঘোষাল -- কথা, emcee, মিডিয়া সম্পর্ক
বিশু চট্টোপাধ্যায় -- ড্রামস, বেস বেহালা
তাপস দাস (বাপি) -- কণ্ঠ, গিটার
তপেশ বন্দোপাধ্যায় (ভানু) -- কণ্ঠ, গিটার
প্রকাশিত অ্যালবাম
সংবিগ্ন পাখিকূল ও কলকাতা বিষয়ক
অজানা উড়ন্ত বস্তু বা অ-উ-ব
দৃশ্যমান মহীনের ঘোড়াগুলি
আবার বছর কুড়ি পরে
ঝরা সময়ের গান
মায়া
খ্যাপার গান
যেহেতু, ব্যান্ডটি অনেক পুরাতন সেহেতু অনলাইনে গান পাওয়া বেশ মুস্কিল। তবে বেশ কিছু গান পেয়েছি যা এখান থেকে ডাউনলোড করুন।
ধন্যবাদ। আসুন নতুন করে আবার জানি পুরানকে।
সূত্র: উইকিপেডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:১০