somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবিতা

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

০|


ইচ্ছে হয় রৌদ্ররাজকে নভবিলবোর্ডে চিজকেকের মত সাটিয়ে রাখি । টহলদার মেঘেদের পায়ে পড়িয়ে দিই একজোড়া কাঁচের স্লিপার্স । একটা প্রবীণ মেঘ ব্যোমলোকে থেকে হেঁটে হেঁটে নৈকট্যের জানালায় এসে বলে যাবে মেঘমন্দিরে প্রতিটি বৃষ্টিফোঁটার পুনরুত্থান বৃত্তান্ত ।

ইচ্ছে হয় বণ্য ত্রসরেনুদের দিয়ে সাজাতে চাঁদের শহর । নবোঢ়া চাঁদের কুমারিত্ব নির্মোচিত হলে নৈরাজ্যবাদী নেকড়েদল অনিদ্রায় ডুবে অভিষাপ বর্ষন করবে সারারাত । নির্মোচনকালে সরীসৃপের নিঃশ্বাস থেকে সমুদ্র মন্থনে সৃষ্টি হবে বৃস্টি । কুয়াশাঘন বৃস্টি শেষে রঙধনু নেমে আসবে দৃশ্যদিগন্ত জুড়ে । পাহাড় গুলোকে জড়িয়ে রাখবে সেই রঙধনুর কামিজ ।

গল্পগাঁথার রহস্যারণ্য থেকে বেরিয়ে আসবে হেমন্তের শাদা বাঘ । নিওলিথিক ইদুরের ভয়ে ভীত সাম্রাজ্যবাদী শাদা ঐরাবতের গুহাযাপনের সঙ্গী হবে বাদুর । অলস ড্রাগন দীর্ঘঘুম ভেঙে ঝলসে উঠবে উজ্জ্বল জীভে ।

শীতের পাতা উল্টাতেই উড়ে যাবে একটা নীলাভ্র চোখের বসন্ত বৌরি । জলফড়িংয়ের রঙ ছড়িয়ে চিত্রলইদুরের ঘুম ভাঙিয়ে শীতছুট দেবে বসন্তের দিকে । বসন্তচিত্রের দৃশ্য জুড়ে তখন শুধুই শুয়োপোকার ট্রেনের ছন্দেলয়ে হেঁটে যাওয়া ।

ব্রুমস্টিকে ভেসে ভোলবাজীর ময়দানে রূপালী সিংহ আর সবুজ সরীসৃপ খুঁজে ফিরবে গোল্ডেন স্নিচ ।পৃথিবী ঘিরে শুয়ে থাকে যে সমুদ্রসম অন্ধকার সেখানে ছড়িয়ে পড়বে পূর্ণিমার রাতের ক্যাম্পফায়ার-জোছনা । ব্যাঙনৌকায় চেপে, হঠাত, ভীতি ছড়িয়ে চলে যাবে জলডাকাত ।

চিনির দানায় গড়বো সুগন্ধী মরুভূমি । আমাদের আবাস গুলো তৈরি হবে নোনতা বিস্কুটে । দেবদারু ফলের মোচক থেকে নবোঢ়া কন্যাদের জন্য বানিয়ে দিতাম চিরুনী । পিঁপড়ের সাথে ডিনার শেষে জানালায় বসে শুনবো প্রবীণ মেঘের গল্পকথা । তখন জানালা গুলো শুধুই ছোট বালকের শুভ্র কাঁচের ভিতর দিয়ে বড় বালকদের খেলাঘরবিদ্যা অধ্যয়নের পাঠশালা ।

চলো, তোমাকে নিয়ে যাব রুপকথার দেশে যেখানে ঘড়ি বলবে না সময়কথা, কল্পলোকের দুরপাল্লায় অলীক দিগন্তরে । সেখানে তুমি মায়ার হাত প্রসারিত করে যা কিছু সুন্দর ছুয়ে দিতে পারবে ।

মাঝে মাঝে ইশ্বর হতে ইচ্ছে হয়, পৃথিবীকে রচতে ইচ্ছে হয় রুপকথার মত ।




মাঝে মাঝে ইশ্বর হতে ইচ্ছে হয়



১|

মেঘ রাতের শেষে হুইস্কি আকাশের ধ্বংসাবশেষ গুলো বিখণ্ডিত হয়ে যেতে লাগলো । নির্বাণোন্মুখ তারাদের একে একে মুছে যাওয়া শহরটাকে নিঃসঙ্গ করে তুললো । ঐ দুরাকাশে নক্ষত্র সিমেট্রিতে চাঁদটাকে দেখে মনে হলো হাস্যজ্জল এক প্রতাত্মা । চাঁদ নিভে গ্যালে একটা লিথিয়াম প্রত্যূষ আবির্ভূত হলো চপল ভানুমতির ছিনাল হাসি নিয়ে । হাসিটা যেন গত রাতে আঁধারে মিলিয়ে যাওয়া একটা বিজলীর সবটুকু ক্রোধ নিয়ে ফিরে এসেছে । নেশায় চুর কবি পৃথিবী থেকে তারাদের পথে গমনের সোপান ইথারের মাঝে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার অলৌকিকতাকে ঐশ্বরিক ক্রোধ হিসাবে মেনে নেয় ।

স্কুল বালকেরা বালির মাঠে সংবদ্ধ নৃত্যের প্রলোয়ল্লাসে নির্বিচারে ভাঙতে থাকে জমে থাকা অজশ্র বৃষ্টির ফোঁটা । যেন একটা দুঃস্বপ্নতাড়িত কার্নিভালে কর্দমাক্ত জলের অসুরে ভাঁজতে থাকে নৈরাজ্যের সুর । আমি পিছু নেই রংধনু রঙে আঁকা একটা প্রজাপতির । সূর্যগন্ধী মেঘদলে জুড়ে দেই তারানার সুর । খেয়ালী মেঘের পিছু পিছু ছুটে দিকবলয়ের শেষে খুঁজে পাই একটা জনহীন অপরাহ্ন ।

নভো অববাহিকার সমৃদ্ধি লগণ তখন রুধিরার্দ্র । ইসতিহারে কপট চাঁদের হত্যাকাণ্ডের খবর আসে প্যারেনথিসিসের মোড়কে ।

[রোববারের শোকসংবাদ]


====

২|

পুড়ে যাও ছোট্ট শিখা, ক্রমশ উজ্জ্বলতর হও,
পূর্ণদৈর্ঘ মোমসরণী হোক তোমার যাত্রাপথ,
মুকুলিত বাসনার কানন, যদি কেঁপেকেঁপে উঠে
চঞ্চল সময়ের মিটিমিটি আশা, থোকা থোকা
ধোঁয়ায় উড়ে যাবে নির্বেদ লাস্যের হলুদ আঁচ

মাতোয়ারা তুমি নেচে যাও মোহিনীঅট্টম,
অবিশ্রান্ত নেচে যাও, রিদমিক আশ্চর্য ওয়াল্টজ,
অথবা ডাকিনীর সহর্ষের নাচমুদ্রা সব
ছায়ার কালিতে লিখে রাখো অদৃশ্য সুখসূত্র

আলোকঝড় শেষে নিস্তেজ হয়ে আসবে চারপাশ
উড়ে যাবে অবসন্ন সব প্রেতাত্মারা
থেমে এলে আলোকের হলুদ সাম্বা
মনমোহিনী নাচিয়েরা ফিরে যাবে বলরুমের আঁধারে ....

[মোমালোক শিখা]


=====


৩|

হাওয়ার তরবারির প্রবল ঝাপটানে মাছিটা মরে গ্যাছে । উড়ে গ্যাছে দেহ-কফিনে বন্দী প্রান । সিলিংয়ের দিকে ছয় পা ছুড়ে পড়ে আছে ঝকঝকে মেঝেতে । একদল পিপড়া এসে ভীড় জমিয়ে শোকজ্ঞাপন করে চলে গ্যালো । মাছিটার স্বজাতিদের দেখছি উড়ছে ভাবলেশহীন । তাই দেহ থেকে আত্মার মুক্তির উজ্জাপনানুষ্টান ছিল অনাড়ম্বর । আরেকটা দমকা হাওয়া সমস্ত অন্তস্থ শক্তি দিয়ে তাকে উড়িয়ে নিয়ে গ্যালো কসমিক শুন্যতায় ।

গতকাল সন্ধ্যায় গলির মোড়ে দেখেছি একটা ব্যাঙের উল্টানো মৃত লাশ পড়ে আছে বিনা সৎকারে । আমি নিরুপায় । তাই কি? পৃথিবীটা আজকাল খুব সার্থপর ।

[লাশ ও সৎকার]

======



৪|

ইটগুলোর মাঝে আমি থামি, গুনে রাখি
কপালে ছায়ার বচন, ছায়াগুলো ললাটের উপসর্গ

পিচ ঢালা শহরের হলুদ আলোয়
ফুল আর পাখিরা ডুবে যায় ঘুমের বর্তুল ঘোরে
শরীরে জেগে থাকে গাঢ় রাতবাসনা

দেয়ালটা মোটা কম্বলের মত জড়িয়ে আসে
আমি ক্লান্তির শ্বাস টানি, থরথর
কেঁপে কেঁপে ক্রমশ শিথিল হয়ে যাই

বিড়ালাক্ষী চাঁদের সাথে আমার বৈরিতা,
যদিও এই আলো-আঁধারীর মাঝে
কেউ কেউ বিনীত, নিজ আলোয় উজ্জ্বল

ফ্যাকাশে ঠোঁট আর নিঃশ্বাসে কণ্ঠরোধ হয়ে এলে
এইসব স্ফুটনোন্মুখ সন্ধ্যায় আহত মাতাল আমি,
লাইসেন্স প্লেটে হরিণীর পলকা চোখ এঁটে
মধ্যাংগুলে অনূসরণ করি একটা মুল্যপত্রের

এখানে রাত্রির প্রসারন পুরনো তুলার মত
প্রান্ত সীমায় ক্রমশ শুকিয়ে ঘনফল হ্রাস পায়
আমার কালশিটে পড়া চোখের ঝিলে
ডুবে থাকে স্ট্রিট লাইট


[রূপোপজীবিনীর গল্প]

=====




৫|

আমিই আদিরূপ,
এই দেহের বালুচর
এইসব প্রাত্যহিক জর্নাল;
আমার টোটেম মন্দির,
কালের হিমাগারে
এক জীবন্ত জমাট প্রতিকৃত...

কালো কালির প্রবাহ রেখার সচ্ছন্দ
যেন প্রতিটি জীনে লিখে রাখা
মৌলিক সংকেতলিপি;
প্রতিটি রেখা, প্রতিটি বাঁক যেন
অস্থির সমতলে তীব্র শোনিতধারা...

শয়নরেখায় নিঃসংশয়, দৃঢ়মুখ আমি
অবলীলায় উন্মোচন করি
অসংবৃত ইতিহাস,
স্বত্বার রঙে রাঙাই আত্মা, আর
মাংসের রেকাবে সাজাই
অমোচনীয় কবিতা

সূচের আঁচরে ডারমিসের গভীরে
আমার বিশ্বাসের টোটেম,
বুকে হাঁটে শিরশির, পৌরাণিক ঊর্ণনাভ
অনার্য সত্যের প্রতিস্থাপন;
ব্যাথা আমার আরাধিত নৈবেদ্য
আমি রক্তাত্ব হই প্রেমার্ত রিচ্যুয়ালে


ট্যাটু
০৭০২১৪


====


৬|

আমার ফুসফুস, সম্ভবত, নিউজপেপার সাময়িকীতে ছাপান ডোরাকাটা, কালো-কালো দূষিত কবিতা, স্টিকের মত লম্বা সাদা কিছু দাগও থাকতে পারে । ম্যাক্সিকান এ্যারোপ্লেন থেকে বব মার্লে ব্যালকোনির হ্যালিপ্যাডে নেমে এলে, ক্রিয়েটিভ ৪:১ কাঁপতে থাকে জ্বরে ।

ব্যালকোনির নৈঋতে কালো শামিয়ানায় ওড়ে একঝাক হলুদ মথ আর একটা হাস্যজ্জ্বল প্রেতাত্বা- সে সম্ভবত নিশিথ মথেদের প্যারা-গ্লাইডিংয়ের কোর্স-ট্রেইনার ।

ঘড়িকলের কাঁটা পঁচিশতম দাগ পেরুলেই দেয়ালের চাঁদোয়ায় ধোঁয়ায় এঁকে ফেলি নক্তনীল দেবী আর লাললাল দেয়ালফুল । চামড়ার পকেট থেকে প্যাঁচকল হাতে বেরিয়ে অস্পষ্ট বানর, ছিপির প্যাঁচ খুলে বোতলের অতল থেকে মুক্ত করে রাই ।

রাই আমার দিকে ধুম্রনীল চোখে চেয়ে থাকে...
আর বানর ...
সে আমার মৌলিক শত্রুদের একজন...



ম্যাক্সিকান এ্যারোপ্লেনে ভ্রমন

০৫০২১৪


====

৭|

মানুষ যখন মরে যায়, কেন তার সমস্ত অর্জন, তথ্য মুছে যায় না? মৃত মানুষের অস্তিস্বশীল হয়ে থাকাটা আমার কাছে খুব বিস্ময়ের ।

আমি যখন একজন মৃত কবির কবিতা পড়ছি তখন মনে হয় কালো কালো প্রতিটি শব্দ উচ্চারনের শেষে মুছে যাবে, বইয়ের পৃষ্ঠাগুলো হয়ে উঠবে শুভ্রশাদা । অথচ প্রতিটি কবিতা পাঠ শেষেই দেখি ঘটে যাচ্ছে মিরাক্যাল ।

মৃত গায়ককে যখন গান গাইতে শুনি তখন খুব আশ্চর্জ হই । আমার মনে হয় যখন গায়ক মরে গ্যালো সাথে সাথেই তার কণ্ঠস্বর মুছে যাবে ডিস্ক থেকে । প্রতিটি ডিস্ক একবার শেষবারের মত বেজে উঠে একে একে থেমে যাবে সব বাদ্যযন্ত্র অথচ প্রতিটি গান শেষে শুনি ঘটে যাচ্ছে মিরাক্যাল ।

মনে হয় মৃত অভিনেতা তার অভিনীত প্রতিটি দৃশ্য থেকে ক্রমেই মুছে যেতে থাকবে । মৃত চিত্রকরের প্রতিটি তুলির আঁচড়, প্রতি ফোঁটা রং মুহুর্তেই চোখের সামনে থেকে হারিয়ে যাবে । এভাবেই প্রতিটি মানুষ রিউইন্ড করে হয়ে যাবে অনস্তিত্বশীল । অথচ প্রতিটি মুহুর্তেই ঘটে যাচ্ছে মিরাক্যাল । তাই প্রতিটি মুহুর্তই আমার কাছে বিস্ময়ের মনে হয় ।



মিরাক্যাল
০৩০২১৪

====

৮|



সুবচন ভুলে গ্যাছি যখন দেখলাম ভন্ড পীর আর দেবীর বেদীতে
আমাদের ডাইনিং টেবিল অপেক্ষা অধিক খাবার পরিবেশিত হয় ।
সংরক্ষিত সুবিধা গুলো ছেড়ে দিয়েছি যখন দেখলাম স্ফীত উদরের
রাজনীতিবিদদের অম্লদৃষ্টি আত্মায় সৃষ্টি করেছে ক্রনিক আলসার ।
ইশ্বর প্রদত্ত হাঁচি দেয়ার অধিকারকে গলায় জমে থাকা পাপাবমুক্তির
নিত্যকর্ম মানি, বুকের সিন্দুকে নিরালায় চুপচাপ বসে থাকেন ইশ্বর
তাই, আমি শুধুই হাঁচি দেই ।

হাঁচি



====

৯|


আজকে রাতে আমি অশ্রুতে ডুবে যাব
তুমি অবশ্য একে শরাব নামে চেনো

যে ক্ষনে হারিয়েছি, পেয়েছি তোমায় ফিরে । ওরা বলে ‘এতটা কম সময়ের স্থায়িত্ব’ । আমি বলি ‘তুমি ছিলে, থাকবে’ । ইশ্বরের সমস্ত ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তবেও সিংহাসন অস্বীকার করি, তবুও আমি শুধু তোমাকেই চাইবো । একটা সেকেলে ট্রেন মাঝরাতের মনোসরণীতে ঝিকঝিক-শব্দে খুন করে অন্তরাত্মার নির্জনতা । হাঁটাপথে হোঁচট পাই, স্মৃতিপ্রসরের হ্রাস-বৃদ্ধি । সময় শূণ্যতার ইসতেহার ঘোসিত হয় ।

আজ রাতে আমি শরাবে ডুবে যাব
তুমি অবশ্য একে বিভ্রম নামে জানো

কয়েকটা কালো কুকুর । চোখেকুঠুরী এক ঋতু শীতের কুয়াশাঘর । স্লেজে চেপে তাড়া করে তুষারফুলকি । বিস্মরণের শাদা পথ ধরে নিয়ে আসে জানুয়ারীর শীতল এই হিমঘরে । মনোসরণীতে প্রবল অস্থিতি । আহত দৃশ্যে জিহবার নিচে ঘুমিয়ে পড়লে স্লিপিং পিলের প্রাণাত্মা, দেহটানেল ধরে উদ্ভট শব্দে এগিয়ে যায় প্রবল বিপন্নতার দিকে ।

আজ রাতে আমি বিভ্রম ডুবে যাব
যদিও তুমি একে বিষাদ বলে ডাকো

বাস্তবসত্য আর তত্ত্বসত্যের মাঝপথে অস্পষ্ট রেখায় দাড়িয়ে থাকি, মানবাত্মা । ব্যারোমিটারে মাপি চাপ-চাঞ্ছল্য । মাঝ রাতে ঘুমঘোরে বা ঘুম ভেঙে গেলে তোমাকে খুঁজি আমাদের পারস্পারিক শুণ্যতায় । তখন তুমি হয়তো ঘুমিয়ে আছো । এততুকু শুধু জানতে ইচ্ছে হয়, ঘুম ভেঙে গেলে মাঝরাতে কখনো কি পড়ে মনে আমায়?



মাঝরাতে কখনো কি পড়ে মনে আমায়?



==

১০|




জীবন কোন আনন্দ শোভাযাত্রা নয়, জীবনের সাউন্ডট্রাক
বরং একটা শোকগীতি । আমি সিটি দেয়া বন্ধ করেছি ।
সুরসঙ্গতির খোঁজ করছি, মৃত্যুর অপেক্ষায় । প্রতিটা দিন
একটা পরিনামের দিকে এগিয়ে যাওয়া । সুতরাং এখানে
শীষ বাজানোর কিছু নেই ।

দারিদ্রের রোমান্টিকতা, আমাদের স্বপ্নবিহ্বলতা প্রামাণিক
সময়ে উচ্চতাতঙ্কিত হয়, সাফোকেশনে ভোগে । যে স্বপ্ন
ঘুমন্ত মানুষকে প্রসন্ন রাখে; সেই স্বপ্ন জাগরিত মানুষকে
তন্দ্রাহীনতা এনে দেয় । শূন্যতার রাশ আওয়ারে ছুটছি
আরেকটা নতুন দিনে ।


জীবন কোন আনন্দ শোভাযাত্রা নয়




==

১১|


তোমার জন্য এনেছি এক দঙ্গল রংধনুরাঙা শুদ্ধ তারাফুল,
হিম গ্রানাইটের বুকফলকে অঙ্কুরিত তুষারশুভ্রতা, ফুটে উঠা
মৌন শৈলান্তিরিক্ষের ঝলমলে রোদচুমকি ।

এই যে ভীরু পাজর, দ্বিধাগ্রস্ততার সৌধ । তোমার ভ্যাসলিন
ঠোঁটে নিকষ রোদের ফিনিক । জেনে রাখো মৌলিক প্রেমিকা
আমার, আঙুলের নখে জ্বলজ্বলে আস্থার রৌদ্ররেণু । লীন থেকেছি
সীবনহীন, ছিন্ন সন্ধিমুখে ।

বৃষ্টি হয়ে নামি ক্ষণিকের জলপ্রপাতে, আমার ভেতরে রুপালী
রুপচাঁদার ঝিলিক । আমাকে সবলে টানে বিস্মরণের লেন ।
ও প্রিয়, জেনে গ্যাছি, বুকের কার্নিশে ভাসে নীল যে অরণ্য
সেখানে আমি প্রবীণ পাহাড়ের পার্শ্বচরিত্র কিংবা দেয়ালফুল ।
সেখানে তুমি তীব্র উজ্জ্বল তারাফুল ।

নীলারণ্যে হাওয়ার নিনাদ বাজে, কেঁপে কেঁপে উঠে রৌদ্রতপ্ত
রংধনু সেতু, মচমচে পাপড়ি জ্বলে উঠে গলিত ঘাসের উপর ।
তীব্রতায় ঝলসে দগ্ধ আমি ও চোখ ।

এবং তোমার জন্য শেষ উপহার এই ভীষন বিষণ্ণ শুভবিদায় ।


বিষণ্ণ শুভবিদায়

=====



১২|


গতকাল রাতে তুমি ছিলে আলোছায়া, সাদাকালো স্বপ্ন
তোমার হাতের ইশারায় ছিল হাওয়ার হেঁয়ালি,
তুমি মগ্ন আকাশের মত প্রহেলিকা হতে চেয়েছিলে

হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দিলে হাত, ঝিঝিদের কোলাহলে
চেয়ে দেখি তোমার একলা চিবুকে ছোট্ট কালো চাঁদ,
তোমাকে দেখার আনন্দ মাঝে খুঁজেছি জানার সৌন্দর্য

ঐ অধরের জাফরান পাখিতান আমাকে বধির করে দেয়
সিলিং ফ্যান, ঝিঁঝিঁদের কোলাহল-পৃথিবীর সমস্ত শব্দ
ঘনীভূত হয়ে আসে, পিনপতন নৈঃশব্দ্যে

সবুজ বাসনার আলো ফোঁটায় ভোর দিগন্তের রেখা,
স্পর্শভাষায় তুমি হেসে উঠ কপতনয়ন । ঐ দিঘল চোখ,
খোঁপার মেঘমালা, জোনাকের নাকফুল আমাকে টানে অহর্নিশি

মাঝে মাঝে একটা অদৃশ্য ইরেজার আমাকে মুছে দিতে চায়
নিতলে হারিয়ে যাওয়ার ভয় হয় আমার । জামার কলার
চেপে ধরি । লুকিয়ে পড়ি অসংশোধিত নিজের মুখসে

এইসব দৃশ্যের মাঝামাঝি তুমি-আমি পাশাপাশি, কিংবা
আমি-তুমি ইতস্তত । আমাদের এই আশ্চর্য পারস্পারিকতার
পিলসুজে জেগে থাকে পূর্ণদৈর্ঘ্য রাত

ঘুম ভেঙে গ্যালে আমি বুঝে ফেলি সব, প্রার্থনা করি
অদেখার কাছে যে শক্তিতে আঁধার রুপালী হয়ে উঠে,
অসীমের নৈশব্দে একসাথে জ্বলজ্বল করে উঠে তারাগুলো সব


আমি শুধু তোমার আরাধনা করি ।



[আমি শুধু তোমার আরাধনা করি]




===

১৩|



যখন একলা থাকি আমার ভেতর একটা ইরেশনাল বোধ জেগে উঠে । অন্য সবাই ভুলে যায় আমার অস্তিত্ব - হয়তো বোকার মত শোনাবে কিন্তু আমার এমনটাই মনে হয় । এমনকি যখন বিশাল জনারণ্যে আমার কাছাকাছি সবাই অপরিচিত, তখন নিজেকে সকলের দৃষ্টির অগোচরে থাকা কোন এক অনস্তিত্ব মনে হয় । মনে হয় - হঠাতই মুছে গিয়ে ফিরে আসা কোন এক মানবালোক । অবশ্য সব মানুষই এক ধরনের জ্যোতি, শুধু আমিই অদৃশ্য, বিস্মরণের আলো । ক্ষয়াটে কিংবা নিস্প্রভ । তখন হঠাতই আমি ছায়ার মত বড়ই বিস্মৃতিপ্রবণ । কারো কারো চোখে দৃশ্যমান কিন্তু-অপরিচিত । আমার চোখদুটো তাকিয়ে দেখতে পারে অনেকেই, হাসতেও পারে হয়তো, কিন্তু এক দৃশ্য পরেই আমি জেনে যাই যাদের আমি ভালবাসি, ভেবে নিই বন্ধু কিংবা আত্মার আপনজন- তারাই ভুলে যায় এই আমাকে । আমি তখন চোখ ও মন- দুইয়েরই আড়াল । আমি জানি এই সবটাই অসংলগ্ন, অযৌক্তিক । তবুও আমার এমনটাই বোধ হয় ।


[একটা ইরেশনাল বোধ]




====


১৪|



কিসে হবে ভজন সাধন,
ভেবে ভেবে বিবাগী এ মন
মায়ার টানে বেড়াই ঘুরে
কি আছে নীল চোখের কূলে

তল্লাসে মোর তৃষিত দু’নয়ন
মনপুরে বসত করে মহাজন
সে যে মোর মনেরই মতন
জানে, এই প্রাণপাখি জানে

আমি কোন বাঁধনে পাব তারে
সাধিব গান কোন সুর তুফানে
মনলোভা তার রূপ কিরণে
দেখি মানুষ রতন ত্রিভূবনে

হৃদ মাঝারে হলে কুহকের জয়
সে আমি তো আমার আমি নয়
তোমা বিহনে আলোক লোকে
সব অকারণ, সব অকারণ

কিসে হবে ভজন সাধন..

[মানুষ রতন]



=====


১৫|


যদিও আছো মানসপটে, তবুও তুমি দূরেই আছ ।
যদিও আজ দুপুরে এখনও তোমার সেলফোন থেকে
কোন কল আসেনি, যদিও আমি জানি এর উপযুক্ত
কোন কারনও আছে । তবুও তোমায় ভেবে ভেবে
ঝিমঝিম দুপুর । তবুও ঝিমঘুমে বিষাদী স্বপ্নগুলো
আসে । তবুও বিভ্রমের ঘোর গন্ধই সবচেয়ে তীব্র
হয়ে উঠে । আমার তখন দোয়েল মন । বিভ্রমের
ঘেরাটোপে চোখের ঘুলঘুলিতে অশ্রুরং প্রবল হয় ।
যদি-হারিয়ে-ফেলি বোধ জেঁকে বসে, দুঃখবোধে
আচ্ছনন হয়ে পড়ি ।

সাঝবেলা যখন তুমি সেলফোনে বাতাসের কম্পন
প্রবেশ করো আমার কর্ণকুহরে, তখন মুছে যায়
সমস্ত দুপুর অবসাদ । দুপুরভ্রম গুলো অপরাহ্নে
মিশে । তোমার অধরে সমর্পিত হই, মিশে থাকি,
ডুব দেই নীল চোখের অতলে । আমাদের হাসিতে
রচিত হয় নতুন এক গল্পগাথা, প্রতিদিনের মত
একটা ম্যাগপাই উড়ে আসে আমার জানালায় ।


[ফোনকল]

====


১৬|


ছেলেবেলায় কড়া রোদের মাঝেও
এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গ্যালে
পুকুর পাড়ে বড়শি নিয়ে
সবচেয়ে অদ্ভুত রংধনুদের শিকারে যেতাম ।

মাছরাঙার আলোয় ভীতবিভ্রান্ত কোন রূপচাঁদা
বড়শিতে আটকে গ্যালে
আমি রংধনু দেখতে দেখতে
বাড়ি ফিরে আসতাম ।

==


১৭|

মাঝে মাঝে যখন বাতাস গেয়ে উঠে নীরবে,
মরচে পড়া টিনের চালে
বৃষ্টিফোঁটার রিমঝিম শব্দের আড়ালে,
আমি শুনি;
দৃশ্য গুলো চোখের সকাশে,
সর্পিল পথে ঘুরপাক খেতে খেতে
স্মৃতির ক্যালাইডোস্কোপে
ফোঁটারা একে অপরের অভিঘাতে প্রতিক্ষিপ্ত হয় ।

মাঝে মাঝে বাতাস
আমাদের দূরতম মর্মের তান তোলে,
আমি শুনি,
ফিসফিস স্বরে সতর্ক কথন ।


===


১৮|


তুমি জলের মত নির্ভুল, জোছনার ননী মাখা উপল মলাটে বাঁধা প্রতিমা । তোমার তুরপুন নয়ন যেন সাঁজোয়া এক জলকামান; আমার অনুভুতি-ব্যূহ ক্ষনিকেই করে দেয় ছত্রখান ।

ভীরুলোচনের ঘুমপাহাড়ে সবুজ স্বপ্নলোকের স্ফুরণ, মিহিন বার্লিদানা যেন, হেসে উঠে কপতনয়ন জাফরান পাখিদের গান । নেত্রপল্লবে ফোঁটে ভোর দিগন্তের রেখা; নীলাভ্র চোখের ছড়, হৃদতন্ত্রীতে তোলে শিহরণ ।

গোলাপের জোড়া পাঁপড়িতে জমেছে জোড়া নীহারমুক্তা সারি, ডালিমের দানার মত । গর্বিত গ্রীবা, কপোল মন্দির যেন জবাফুলের কিঙ্করী । স্ফুরিতাধর তুলে বিশুদ্ধ পাখিতান, ধরেছে মদির আধোবোল ।

কাঠবাদাম আঙুলে আঁকা সূচিমুখ নখ-তলের সংবেদ । কি সচ্ছন্দ তোমার রেশমী কাপড়ের তারল্য, পোষাকের প্রবাহমানতা আর তোমর হেঁটে যাওয়া; 'এ কী শোভা, মনোলোভা জবাকুসুমবরনা' ।


ক্রাস
১০০৬১৩



====

১৯|


সরীসৃপদের মত যখন বুকে হেঁটে যেতাম
কাঁকরনূড়ি চিহ্ন যেত মালাইচাকির শিশুত্বকে

শুনেছি পাতাদের পতনছন্দে সতন্ত্র সুর
দেখেছি হিমবাতাসের মেরুদণ্ড বাঁকানো বুনোরোষে
সবুজ শুষে নেয়া

প্রবীন এক দেবদারুর নিচে বসে
ভদ্রতার কৌপিনে ধারন করেছি
মৌসুমী ফসল, তীক্ষ্ণ ঋতুদাগ সমুহ

অনুসরণ করেছি জলস্রোত, পিছু পিছু
দেখেছি তার আলস্যভরে মুছে যাওয়া

আজ ভুমিস্পর্ষী বুড়ো মেঘ ছিড়ে
বেরিয়ে আসছে নিস্পন্দ স্মৃতির অঙ্কুর


===


২০|


রাতে ঘুম ভেঙ্গে গ্যালে আমি প্রায়ই ইউটিউবে ঘুরেফিরি
আজকে একটা ক্লিপে হঠাত আমাকে দেখতে পেলাম,
১৯৩৮ সালের আমি, অবিকল আমার মতই কিংবা আমিই,
আমার সাদাকালো দ্বিতয়, তখন আমি ছিলাম ড্রামবাদক,
ফুয়েরারের সৈন্যদল আমার ড্রামের তালে মার্চপাষ্ট করাতো ।

মনিটর স্ক্রিনে আমার সিভিতে দেয়া ছবিটা ওপেন করি,
মিলিয়ে দেখি, অনুভব করি আর জনমের রক্তের স্পন্দন ।

খুঁজে দেখো হয়তো তোমাদের অনেকেরই প্রতিপাদ সিসিফাস,
সৈনিক মিথুন ছিল সেই কুচকাওয়াজ দলে ।


====



২১|




শব্দকে বলি মেঘের ফুলকি আর কবিতাকে বৃষ্টিফোঁটা,
কাঁচপোকার আহবানে কাপালিক মেঘ নির্বাণ লাভ করে,
পাহাড়চূড়ায় নিতল পাতালপুরীসম নির্জনতায় অধিষ্ঠিত হয়
পৃথিবীর বুক চিরে নেমে গিরিনিঃস্রাব, আঁকাবাঁকা পথে
আঁকে জন্মক্ষণের শৈলজলিপি । জলদ লয়ে বাজে,
সৃষ্টি হয় এক কূলবতীর কাব্য ।

নদী কি জানে, উচ্ছাসী ঢেউদের সফেনে বদলে যাওয়া;
তটের বোধিবৃক্ষ তলে ছায়াদের ডানা মেলা;
নদী কি জানে, কূলবতীর দুঃখগাথা ।
নির্মল নদী, তোমার স্ফটিকতায় বহে যে যাযাবর জল,
শুনেছ কি তার গভিরে বৃষ্টি ফোঁটার জলজ রুপকথা,
দেবদূতের শ্রুতিগম্য ফিসফিস, সতর্ক কথন?


মাঝে মাঝে বর্ণান্ধ বৃষ্টিফোঁটার উদ্দীপনা, ভাষা আর
বাঙময়তার কাছে নেহায়েত তুচ্ছ, বিবর্ণ হয়ে পড়ি ।
আবার যখন কান পেতে শুনি সেইসব ফিসফিস,
ধাঁধাবিহ্ববল রুপালী রংয়ের ছড়িয়ে পড়া...অব্যক্ততার মাঝেও
তাদের ইন্দ্রজাল, ক্রীড়াচ্ছল ক্রমশ মোহিনী হয়ে উঠে



অর্হণা, বৃষ্টির প্রতি
২১১২১৩...

====

২২|





আমার ফিটফাট জামার আস্তিনে লেপ্টে আছে লিপ্সা
শার্টের প্রতিটি জোড়মুখে প্রলোভনের সুতোর সেলাই
বিপ্লবী কলারের ভিতর বসত করে মিথ্যের সন্ন্যাস

অহমের আঁকড়ে বাঁধা আমার প্রগলভ টাইয়ের নট
ইর্ষার সুচের ফোঁড়ে গাঁথা প্রতিটি বোতামের আস্ফালন
দুরস্ত ট্রাউজারের সংবেদ জুড়ে আছে ক্রোধ, ফিতেবাঁধা
জুতোর সুখতলা অবদী ছড়িয়েছে রিরংসার মৌতাত

শুধু, তোমার কাছেই আমি নিরাভরণ থাকি


পাপাভরন..
২২১২১৩...



====

২৩|






১.

আমি বিশ্বাস করি এইসব কালমেঘ হলো বিস্মৃত আগুন যা কখনও সূর্য মাঝে ফুটিয়েছিল ফিনিক ।

২.

এই আঁধার রাত্রি কতটা দিঘল, এই অরব কুঠুরী কতটা গহন, ভয়াল এক উচ্চনাদী নৈঃশব্দ্য এই চার দেয়ালের স্থাবর ।

মাঝে মাঝে এখানে শার্সি গলে ঢুকে পড়ে এক জানালা রক্তাত্ব কাক ।

৩.

যে হাতে উপচে পড়ে অপাচ্য শুন্যতা, সেই হাতের বিঘত অন্তহীন অপরিমেয়তার এক কৃষ্ণগহবর ।


৪.

তুষার বৃষ্টিতে জীবন দুর্বহ । প্রতিটা দিন সর্বশেষ দিন থেকে শৈত্যত্তাপে দুস্তর । কোকেনের মত শুভ্রবিষাদ লেপ্টে দেয় করোটির সাইনাস কুঠুরিতে ।

শৈত্য বিষাদের ভয়াবহ এক রুপভেদ ।

৫.

কখন কখনও তুমি দুরের ট্রেন, রাত্রি হুইসালের অনুরনণ । চাকার কোলাহলে মিইয়ে আসো হাহাকার মনের অন্ধকার টানেলে, একাকি ও নির্জন রেলস্টেশানের দৃশ্য জুড়ে বেজে উঠো ভয়াবহ এক শব্দহীন প্রতিধ্বনি ।

৬.

চন্দ্রবালিকা, তুমি ইদানিং প্রতিদিনই আমার ঘুমদৃশ্যে এসে পড়, আমাদের কল্পকথামালার সময়গ্রন্থি জুড়ে । ঘুমের আস্বাদে কথোপকথন ক্ষণে আমি অহরহ খুনি হই, নিহত হয় ক্রোনস ।

আমি তোমার উপস্থিতি অনুভব করি জলন্ত অঙ্গারের মত । আমাদের এই যে অনেক দৃশ্যান্তরের ব্যবধান- এইসব দুরত্বের অপূর্ণতা ও নিষন্নতার মাঝেও একটা অশরীরি আলোর রিবন বিকিরিত করে আমার অস্তিত্বকে আশ্লেষে জড়িয়ে থাকো তুমি ।

আমি ইতস্তত হই স্বপ্নসিন্ধু পথে । সংগ্রাম করি কল্পসৈকত জুড়ে । মাঘনিশীথের নির্জনতায়, এক অমোঘ নাক্ষত্রিক শুণ্যতায় । আমার অনুভূতি বোধ তরঙ্গসঙ্কুল হয়ে পড়ে আসক্তির ঝোড় বাতাসের ঝাপটায় । কল্পনার সাত সাগরে সাতঁরেও খুঁজে না পাই বেলাভূমি ।

গহন ঘুমের গভীর ঘোরে ঢুকে পড়ে তিমিরনিবিড় রাতের বিপন্ন বোধ । আমাতে অন্তরীণ নদীর ভিতর খেলা করে তোমার খোপার অন্ধকারের সমান বয়সী মদ্যপ লালস্রোত । তুমি নিবিড় থাকো ঘোর অমানিশার মত এক অনধিকারে ।

৭.

বর্ষণহীন এইদিন গুলো বৃষ্টিমুখরতায় ছেয়ে আছে ।

সম্ভবত বৃষ্টি সবচয়ে সফল অন্তর্বর্তীকালীন নির্জনতা যা দিনগুলোকে নৈবক্তিক একাকিত্বতায় অবরুদ্ধ করে ফেলে ।

৮.

আমি সপ্তাহের পর সপ্তাহ বৈরি কালোরাতের ঘুমবটিকা জমিয়ে রেখে ভোরগুলোর সাথে গড়ে তুলেছি নির্বিবাদি এক সমঝোতা ।

৯.

আমি জলপ্রপাতের নিঃসঙ্গ আত্মা,
আমি অজশ্র বৃষ্টিমুখর নিরব সময়,
আমি মৃত পাহাড়ের মত বিচ্ছিন্ন প্রবীণ ।

১০

All the lonely people
Where do they all come from?
All the lonely people
Where do they all belong?

-বিটলস

[ প্রতি, ব ]


স্ক্রিবল...



====



২৪|



০...

সে নেচেছিল বাতাসের বিষাণ সুরে, শুকনো পাতার উন্মাদনা বুকে নিয়ে । প্রতিকুল বাতাসের কাছে করেছিলে নবতর গল্পের সওদা । হাত হয়ে গেলে শঙ্খচিলের ডানা, আঙুল গুলো হয়ে যায় পালক, ফ্লেমেংকোর প্রলয় আহবানে অরুণরাঙা পলাশ ফুটিয়েছিলে আগুনফুল; বুকের বেহালায় সানিয়ে রৌদ্রনিনাদ, মরুময়দানের তপ্তহলুদ চোখে তিমিরনাদী প্রলয় তুলেছিলে র্যা টলস্নেক । প্রতি রাতে স্বপ্নলোকের অলীক চড়ুইয়ের পিছু পিছু ছুটে পৌছে গিয়েছিল চোখের আলোয় ফুটে থাকা তারার ফুলে ।

১..

প্রতিবোধনের নির্লিপ্ততা ভেঙে উঠবে কি জেগে, হে বিনিদ্র!
চলো পাহাড় কুড়াই । পাহাড় রচি । করি পাহাড় চূড়ার আরোহন । তার মত একটি বার করি অনাস্বাদের খোঁজ । যেখানে ঝিঝি পোকারা গিলে ফেলে আস্ত কাছিম । মাছেরা যেখানে কাঁকড়ার মত উরোগামী । নীল তিমিরা সমুদ্র থেকে উতক্ষেপিত হয় রকেটের মত । রৌদ্র বিস্ফোরণের ল্যাণ্ডস্কেপে রাতকফিন নিয়ে চাঁদ আসে, ভেসে যায় আঙুলের তুড়িতে ।

২...

অতপর, মুনরেবিটের জীবন সুধা পান করে সে ঝুলে পড়ে একটা গাছের শিকড়ে, একশত ছেচল্লিশ মিটার একটা রশি দিয়ে ঝুলে পড়ে অভিকর্ষের বিপরীতে । তার পায়ের অঙ্গুলিসঙ্কেত আকাশের দিকে । সে ছিল চিল-শকুনের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে । জোনাকের আলোকবিস্তৃতি তাকে ছুঁয়ে যেত ।

তার চোখের অন্ধপূরীতে কেঁদে উঠে বিষণ্ণ এক নদী ।
চেয়ে দেখো- কি করেছে সে!
মহিমানবত পিরামিড । ত্রিকোন স্ফটিক অশ্রুফোঁটা ।

কোন মৃত্যুই পরিপূর্ণ মৃত্যু নয় যতক্ষন না তার থেকে আরেকটি জীবনের বিকাশের শুরু হয় । আজও সে বাতাসে তুলে চলে নাচমুদ্রা, অদ্ভুদ কোন ওয়াল্টজ । সে শুধুই চেয়েছিল শবদেহ থেকে বিমর্ষ আত্মার মুক্তি । তাই সে জীবন লিখেছিল মৃত্যুর কালো কালিতে ।

৩..

বালকের প্লেন শার্সি গলে প্রস্থান করে এক অরব শোভাযাত্রায় । উড়ালপথ বাত্যাহত হয় । বাতাসের ফেরেব্বাজীতে তার আত্মহুতি । মৃত্যু নিজের কাঁধে ফেলে কবি বিলীন হয় রৌরব মেঘমালায় । হাসনাহেনার আশ্লেষ নেই, কোন লৌকিকতা নেই অথবা কোন বিদায় সম্ভাষন । বাতাসে মুছে যায় তার অবশিষ্ট উত্তরাধিকার, মিশে যায় কবির অন্তিম সাম্রাজ্য । নিলীন হয় হিমচাঁদের অনচ্ছতায় । নীলের ত্রিকোনমিতিতে হয়ে রয় নিরবয়ব স্পর্শক ।


কবির মৃত্যু


====


২৫|

একদিন আমি ঝরে যাব অবসাদবালিশে মাথা রেখে, ঝরা পাতাদের মত উড়ে যাব বসন্তবৌরি হয়ে । চলে যাব আমি নিস্তল সন্ধায় আধাঁরের করতলে হাত রেখে । পানিহীন মাছের মত ছটফট করা ইটকাঠের খাঁচায় বন্দীদের ছেড়ে, জোনাকির বাতিঘরে দীর্ঘরাত্রি ক্ষয় করে চলে যাব লক্ষকোটি নক্ষত্রের পন্যরথে ।

আমি হেঁটে হেঁটে চলে যাব বিরজা নদীর পাড় ধরে, পানকৌড়ির কুশলতায় সুর্য হয়ে ডুব দিবো দিকচক্রবালে । একদিন আমি ছেড়ে যাব সব, নিরেট হলুদ রাতের ভিতর দিয়ে ক্লান্ত বাতাস ফুড়ে, কফিনবদ্ধ কৃষ্ণতম সন্ধা গুলোকে বাতাস টেনে নিয়ে যাবে মৃতমাঝির দাড় বেয়ে নক্ষত্রের মাস্তুলে । মেঘের ব্লেডে ক্রমাগত কেটে যেতে থাকবে পৃথিবীর কালোবৃক্ষরাজী । আমি চলে যাব, চোখ বেয়ে নেমে আসা অনুভবজাত ভায়োলিনের সুর ঝিনুকের রেটিনায় ঝরবে অতীন্দ্রিয় আলো হয়ে । জলজসিম্ফোনি থেমে এলে নিহত নদীর জলছবিতে ডুবে যাবে ওফেলিয়া পৌষের রাতে । শামুক হয়ে নৈশব্দের তমসতনু বেয়ে হেটে হেটে চলে যাব শান্ত হরিনের মত ।

আকাশের ধোঁয়াসাগ্রস্থ অপস্রীয়মান নীলগুলো ক্রমশ জমা হতে থাকবে ডাকপিয়নের ইনবক্সে । রৌদ্রজ্জল শহর অশ্লীল নেবুলাস্তরে আচ্ছন্ন হয়ে আসবে । অভিকর্ষের স্ফীত মেদ পাড়ি দিয়ে চলে যাব আমি শতশত আলোকবর্ষ দূরে নক্ষত্রসিমেট্রির জ্যোৎস্নাকুঞ্জে । নিয়ন আলোর এই মাতাল শহরে গোফওয়ালা দার্শনিক শ্লিশের মত দাড়িয়ে থাকবে স্তব্ধ মনোলিথগুলো । মেঘের বিষন্নতার অসুখগুলো দেখে যাব আমি বিমর্ষ বিড়ালের চোখে, গির্জার ডিংডং শব্দে হয়তো আর্তনাদে কেঁপে উঠবে অ্যাজমাগ্রস্থ শহরের মৃতপ্রায় প্রবৃত্তিগুলো ।

চৈত্রের দুপু্রে কচিডালের সেতু পাড়ি দিবো শুয়োপোকার ট্রেনে । চলে যাব আমি রেললাইনের স্লিপার ধরে, মিশে যাব প্যারাবোলার অসীম তটে । কাঠফাটা রোদের ভিতর হারিয়ে যাব আমি অস্তগামী ফুল হয়ে । পিলসুজের তলায় উঠবে জমে আধাঁরের তহবিল । লোকাল ট্রেনের ধোঁয়ার আড়াল থেকে ধেয়ে আসবে আঁধার রাত ।



আমি চলে যাব

=====


২৬|


০১

তুমি কি সূর্য মাঝে ভোররঙে আঁকা রঙীন সকাল খুঁজো ? নাকি জাগ্রত তোমাকেই খুঁজে নেয় সকালের জ্যোতি । প্রতিটি সূর্যেরই শুরুটা প্রথাগত, প্রথাবদ্ধতা ছাপিয়েই স্পষ্ট হয় মানবালোক । এখানে শুরু মহাকালের বিনির্মাণ ও ভাংচুর ।

০২

তুমি চাইলেই আমি সময়ের গতিরোধ করতে পারি । সময়ের গতি অধিরৈখিক হারে হ্রাস করতে পারি । অবশ্য চূড়ান্ত ভাবে থামিয়ে দিতে পারি না । হ্রাস পেতে পেতে থেমে যাওয়ার খুব কাছাকাছি একসময় সময়ের গতি পুনরায় রৈখিক হয়ে পড়বে । বিচিত্র ও অদ্ভুত মনে হতে পারে তোমার, অসম্ভব নয় । অনেকে ত্বাত্বিকভাবে ত্রিশ দিনেই একটা পুকুর শাপলা ফুলে টইটুম্বুর করে তুলতে পারে । একমাত্র আমিই অনতিক্রমণীয়, সম্পূর্ণ এবঙ অনুপমেয় ।
এবং আমিই ক্রোনস ।

০৩

নিজের অজান্তেই জাগতিক বাস্তবতায় অবরুদ্ধ মানুষ তুমি । আর আমি জাগতিক বাস্তবতাকে গন্ডি পেরিয়ে করে গড়ে তুলেছি নিজস্ব চিত্রানুপাত, দর্শানুপাত । বলরুমের নৈশব্দ্যে ব্যালেরিনার আঙুলশীর্ষে যেভাবে আটকে থাকে সময়, আমিই এক দেয়ালফুল কার্পেথিয়ান পাহাড়ে ফুটে থাকি একাকী ।

০৪

আমি খুঁজি অরূপের জীবন । করি ফড়িং-জীবনের অনুসন্ধান । আমি আলোর রিবনের ভিতর খুজি অনাস্বাদিত জীবনের স্বাদ । যে রং কখনও চোখে দেখিনি, যেই রং কখনও প্রবল হয়ে উঠেনি, সেই রঙের খোঁজ করি আমি । যে শব্দ কখনও শ্রবণগোচর হয়নি, যেই শব্দ কখনও উচ্চকিত হয়ে উঠেনি, আমি করি সে শব্দের তল্লাস ।

০৫

আমি শুনি ট্যাপের জলপতনের শব্দ প্রতিধ্বনীত হয় ফোঁটায় ফোঁটায়, প্রতিটি ফোঁটার পতনের সময় ক্রমেই দীর্ঘ হয় । আমি যখন আয়নার দিকে দেখি তখন একটা ড্যাগার সবেগে আমার দিকে ধেয়ে আসতে চায় । প্রতিরক্ষায় ফুসফুস থেকে কিছু বাতাস আমি নির্বাসনে পাঠাই ।

আমার দালানের চাঁদোয়ায় চারটা স্টিলের ডানার ফ্যান গড়পড়তা বেগে বাতাস কেটে ঘুরছে । যখন সময়ের ভাঙচুর করি তখন ডানাগুলো্র প্রতিটি এমন যেন এক-একটা স্বচ্ছ শামুক পাতার দেয়াল বেয়ে চলছে । বাতাসের স্পর্ষে উপনীত হই, শীতল হাওয়ার সবুজ রেশ প্রলম্বিত হয় ।

আমি দেখি জানালার নক্তনীল কানাতে ঝুলে থাকে বাতাস । মেঘমন্থর পর্দায় মন্দানিল চলে সাইন কার্ভের উনমাদনা । তোমার জাদুকাঠির অদৃশ্য ইশারায় দালানের চাঁদয়া থেকে উড়ে আসে জাদুর ভীমরুল । আর ফড়িয়ের ভ্রমডানায় চেপে আমার চোখে প্রবেশ করে রং, মায়া আর ছলনা । আমার চোখ ধুয়ে দেয় কমলা নীল আর সবুজের বিভ্রম । দেয়ালের প্রিজম থেকে ছুটোছুটি করে আলোর ঢেউ । আমি ঢুকে পড়ি আলোকের ত্রিমাত্রায় ।


আমিই ক্রোনস

[সাইনোসয়ডাল স্ক্রিবল]


নোটঃ Chronos হলো গ্রিক পুরানে সময়ের ইশ্বর



============


২৭|

আমি জ্যোৎস্নাফুলে সাজান এই নক্ষত্রবাগীচায় ঋতব্রত বনমালী,
রাতারণ্যে নিরন্তর বদলে চলেছি প্রতিবিম্বের ব্যাপ্তি, ফুলকিরণ ।
জোনাকিদের এই বাতিঘরে তুমি রেখে গ্যাছো কসমিক এক শুন্যতা,
এইখানে দীর্ঘরাত্রি ক্ষয় করে তারাগুলো নির্বাণোন্মুখ হয়ে উঠে ।

সবুজ ছায়ারা হেলে গ্যালে, আমিই নক্ষত্রবণিক, ম্রিয়মাণ অতিকায়
নক্ষত্রদের উদ্ধরণে আকাশের ক্যানভাসে নির্মাণ করি ঝুলটানেল,
অতীত স্বপ্নসুরে মীড় মিলিয়ে সানাই নক্ষত্রগীত, মৃত্যুভূক আঁধারে
ফোটাই ফিনিক ।

ধূপছায়ার ভেতরে আঁধার ঢুকে পড়লে অশরীরীরা ওত পেতে থাকে
পাঁচিলে পাঁচিলে । আলোর ফুলকি দেখে হতভম্ব কালো বিড়াল
পাঁচিলে আঁচড় কাটে বারংবার । আমি হাঁটি স্মৃতি স্মরণি ধরে,
অলিগলি পথের অবস অনুভুতির দেয়ালে দেখি রক্তাত্ব মুরাল ।

তোমাকে বার বার ভেঙ্গে আবার গড়ি । শূন্যতার অপরিমেয়তায়
ফিরে দেখি কোথাও কেউ আর নেই। তোমার আমার অন্তহীন
শূন্যতার এই যৌথখামারে জেগে থাকে শুধুই শাদা নাসপাতিফুল
আর বাতাসে রটে পড়ে কিছু কসমিক টিডবিট ।


শূন্যতার যৌথখামার
২২০৯১৩

==========

২৮|



১)



এই নগর এক পৌরাণিক জ্যোতির্ময়তায় ভরে উঠে,
গোধুলীর ম্লান আঁধার নিভে এলে, আমার শরীর থেকে
সুর্যত্বক খুলে জড়িয়ে নিই চন্দ্রত্বক । গির্জায় বাজে
ঘন্টাধ্বনি, স্তবপাঠের আহবান ।

তোমার পোরসেলিন মুখে নির্লিপ্ত অভিনয়,
বারবনিতার লালচে চুলের চেয়ে নিস্পৃহ ।
মধ্যযামের ঝুলন্ত দেয়ালে তোমার অনুক্রম স্বগতোক্তি
কখনো কখনো শবযাত্রার চেয়ে তীব্র, দীর্ঘ ।

আমি ব্যাপিত হয়েছি বিচূর্ন অস্থির মজ্জায়, করতল থেকে
নির্মোচন করেছি প্রতিটি মিনিটকাঁটা, চন্দ্রত্বক থেকে
খুলে ফেলেছি বৃত্তবন্দী প্রতিটি সেকেন্ড ।

নিরক্ত আঙুলের মাঝে ক্রমশ লীয়মান তুমি, ম্লান মুখে
মেঘ করে কিছু আবছা ডিজিট । তুমি ছিলে কণ্ঠলীন
সৌম্য ঘন্টারবে, ঐকতানের কস্তুরী সুরে ।

মুছে গ্যাছে প্রতিটি দিনের ভিতর দাঁড়িয়ে থাকা
অজশ্র স্তব্ধতার অট্টালিকা । গ্রাসে মুছে গ্যাছে
কত শত তপ্ত রৌদ্ররাজ । ডানাওয়ালা সরীসৃপে চেপে
উড়ে চলে গ্যাছে কতগুলো সৌরমাস ।

তোমার ইশ্বর’কে বলো, সূর্য একটা গতানুগতিক স্বপ্ন-
এর চেয়ে বেশি কিছু নয়, নক্ষত্রদের ত্রিকোনমিতে
আমি আর মাপিনা অদৃষ্টের অভিক্ষেপ ।



২)

তিনটে আঙুল, হড়বড়ে এঁকে যায়, শুণ্যতার ডায়ালব্যাপী নক্ষত্রবাগান । মুখজুড়ে করাল হাসির মওসুম । স্নায়ুর পেন্ডুলাম দোলে, টিকটক, টিকটিক ।

রৌদ্র-প্ররোচনায় বিগড়ে যাওয়া উচ্চিংড়ে সশব্দে বলে যায় সৌরমিথের অঙ্ক ।

খসে পড়া ছুটন্ত তারা আর ডুবন্ত রোদ ঠিকঠিক উসকে দেয় টিকটিকির অতন্দ্র প্রহরা, সংকেতের সতর্ক বয়ান ।

নিঃশ্বাষে টেনে নিই মেঘরঙ স্টারডাস্ট । হাত ঘুরে ঘুরে রেবতীর পথে, ডায়াল জুড়ে রক্তচাঁদ ।

মৃত্যুদেয়ালের মুখোমুখি উপনিবেশ সাজাই, প্রলম্বিত প্রতিক্ষায় ।



[ডায়াল জুড়ে রক্তচাঁদ]





=========


২৯|

খসখসে ফিসফিসে কথা বলি অস্ত্রবৈদ্যের মত
কলমের রেতে আঁচর কাটি তীব্র হিজিবিজি

নীরক্ত কাগজ!
ফিনকি দিচ্ছে না বেদনা
স্ফীত হয়ে উঠছে না ব্যথার দাগ

[দগ্ধ]



জানালা ভর্তি মাঝরাত, চৌকাঠের স্তব্ধতায় উড়ছে
লগবগে পিঙ্গল, পাখসাট বাজিয়ে ক্রমশ ক্ষীয়মান
মোমনিশান, দহ্যমান আয়ু বেড়ে যাচ্ছে, কেঁপে কেঁপে
নিভে যাচ্ছে শিরদাঁড়া, শাদা মোমস্তম্ভে

আমি দেখি আয়নাঘরে দৃশ্য ভাসে, নাচমুদ্রা সব
ক্রমশ মানবার্চি হয়ে উঠে, মোমাভা পেরিয়ে
কালজীর্ণ আমার একান্ত প্রতিবিম্ব


[শাদা মোমস্তম্ভে]

==

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:১০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×