মুহাম্মাদ জাফর ইকবাল নামটি আমাদের অনেকের কাছে একটি অতি পরিচিত নাম। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। তিনি সায়েন্স ফিকশান সহ বহু গ্রন্থের প্রণেতা এবং প্রথম আলোর একজন নিয়মিত কলাম লেখক। জাফর ইকবালা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও নেতৃস্থানীয় লেখক ও ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম। আমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমরা যখন কাউকে অনুসরণ করি তখন তাকে অন্ধভাবে অনুসরণ করি। জাফর ইকবাল সাহেব সম্প্রতি তার কলামসমূহে ইসলাম বিদ্বেষী এবং আধুনিক (?) লেখা লিখেছেন যা সুধী (?) সমাজ সাদরে গ্রহন করেছেন। তার লেখায় ইসলাম বিরোধিতাও বাড়াবাড়ি রকমে চোখে পড়ে। তিনি নারী স্বাধীনতার নামে আমাদের তরুণীদেরকে বস্ত্রহীন করার পায়তারায় লিপ্ত। কিন্তু এইসব দিকগুলো তার অন্ধ ভক্তদের চোখে খুব কমই ধরা পড়ে। তাদের জন্যই আমার এই লেখা। তিনি যে শুধু ইসলামের বিরোধিতাই করেছেন তা নয় তিনি আসলে আমাদের সংস্কৃতিকেও অপমান করেছেন। আজকের আলোচনায় আমি শুধু এটুকুই বলবো যে, তার বক্তব্যগুলো কতোখানি অবৈজ্ঞানিক। আমি শুধু সেইভাবে যুক্তি দেব যেরকমটি ডা, জাকির নায়েক দেন। একজন বিজ্ঞান বিভাগীয় শিক্ষক হয়ে কি করে যে তিনি এতো এরুপ যুক্তিহীন কথা বলতে পারলেন তা এই অধমের মাথায় ঢুকছে না। তার মনে রাখা উচিত, তিনি এই দেশের প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রী-পীর-মাউলানা-মুফতি ইত্যাদির চেয়ে অনেক বেশী জনপ্রিয়। তার একটি ভুল কথা সমগ্র দেশকে ভুল পথে ঠেলে দিতে পারে। তাই আসুন, আমরা অন্দেধ অনুসরণ না করে যুক্তির নিরিখে দেখি এবং সবশেষে যেটা শুদ্ধ প্রমাণিত হবে তাই গ্রহণ করি। যুক্তির আলোকে কিভাবে তিনি তা করেছেন- [ (ক) পয়েন্টে ইসলামের আলোকে ব্যাক্ষ্যা করা কয়েছে এবং (খ) পয়েন্টে বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে ব্যাক্ষা করা হয়েছে।]
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আর্টিকেলটি পড়ুন এবং দেখুন, এখানে কোন রাজনৈতিক দলের প্রচার চালানো হয় নাই। যদি প্রমাণ করতে পারেন এখানে কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা দলসমূহের পক্ষে প্রচারণা চালানো হয়েছে তবে আমি আপনাকে ১ লক্ষ্য টাকা নগদ ক্ষতিপূরণ দেব। তবে প্রমাণ ব্যতিত কিছু বলবেন না
অদ্য শুক্রবার(৪ নভেম্বর ২০১১) প্রথম আলোর ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ৬৪ পৃষ্ঠায় তার লেখা “ওদের নিয়ে কেন স্বপ্ন দেখব না” লেখাটি পড়ে দেখুন। আমার কথার সত্যতা খুজে পাবেন আশা করি। লেখাটির কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ নিচে তুলে ধরছি।
১) তরুন প্রজন্ম বললেই আমাদের চোখে ভেসে উঠে টি-শার্ট পরা কিছু তরুন ও উজ্জল রঙের ফতুয়া পরা হাশিখুশি কিছু তরুণীর চেহারা।(পৃষ্ঠা ৬৪, ১ম কলাম, ১ম লাইন)
(ক)এর মাধ্যমে তিনি তরুনীদেরকে এই বানী পৌঁছে দিলেন যে, তোমরা যদি ফতুয়া পরে রাস্তায় না বের হও তোমাদেরকে সত্যিকার অর্থে সম্ভাবনাময় তরুণী বলা যাবে না!
(খ) এর মাধ্যমে তিনি ধর্মভীরুতা ও পর্দানশীলতা যে বাঙ্গালী জাতির প্রধান বৈশিষ্ট্য তাকেও অপমান করলেন। জাফর ইকবাল মুক্তিযুদ্ধের কথা বিওলেন। মুক্তিযুদ্ধ কি আমাদের এসব অশ্লীলতা, বাঙ্গালী চেতনা বিরোধী কাজের অনুমতি দেয়?
২) বেশ কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে আমি ও আমার স্ত্রী গিয়েছিলাম। একটা ছবি দেখিয়ে আমার স্ত্রী বলল, ‘একটা জিনিস লক্ষ করেছ?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম কি জিনিস? সে বলল, ‘ভাষা আন্দোলনে কত মেয়ে! কিন্তু একটা মেয়েও বোরকা পরে নেই, একটি মেয়েও হিজাব পরে নেই’, আমি তাকিয়ে দেখি তার কথা সত্যি। ষাট বছর আগে এদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা বোরকা পরতে হতো না, এখন মেয়েদের বোরকা পরতে হয়। ষাট বছর আগে এ দেশের মেয়েরা ধর্মহীন ছিল, এখন মেয়েরা ধর্মভীরু হয়ে গেছে- আমি সেটা বিশ্বাস করি না। যারা বুদ্ধিমান গবেষক, তাঁরা প্রকৃত কারনটি খুজে বের করবেন। এই সমাজে মৌলবাদী ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাজ হলো মেয়দের ঘরের ভিতর আটকে রাখা। একান্তই যদি তা না পারা যায় অন্তত বোরকার ভিতর আটকে রাখা যাক। (৬০ পৃষ্ঠা, ১ম কলাম, ২য় পারা)
(ক)এর দ্বারা তিনি আল্লাহর ফরজ বিধান হিজাবের বিরুদ্ধে স্পষ্টতই অবস্থান নিয়েছেন। আর যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে ও বিধানসমূহকে অস্বীকার করে, এগুলো নিয়ে হাসি তামাশা করে, তারা স্পষ্টতই কাফের। যে হিজাব পালন করে না তাকে আমরা বড়জোর পাপী বলতে পারি, কিন্তু যে হিজাবের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করে, হিজাবকে নারীদের জন্য অত্যাচার মনে করে, আল্লাহর এই বিধান বর্তমান শতাব্দীতে অচল মনে করে, তাদেরকে কাফির বা অবিশ্বাসী বলতে কোনো বাধা থাকার কথা নয়।
(খ) এখন আসুন দেখা যাক, বাঙ্গালী সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় হিজাব/পর্দা কি। বাঙ্গালী সংস্কৃতি হাজার বছরেরও বেশী সময় ধরে প্রচলিত। এ হাজার বছরেন কখনোই অশ্লীলতা সমর্থন করে নাই, এ কারনেই আমরা সারা বিশ্বে প্রশংসিত এবং গর্বিত। মুক্তিযুদ্ধের শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, আজাদের মা এনারাও ধর্মভীরু এবং পর্দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। পর্দা না করার জন্যও এবং ইসলামের নাম নিয়ে ছেলেখেলা করার জন্য বি এন পি সভানেত্রী খালেদা জিয়া কে কম কটাক্ষ করেন নাই জাফর ইকবাল এর মতো সুধী সমাজের লোকেরা। তাদের যুক্তি ছিল, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) মাথার চুল হতে পায়ের নখ পর্যন্ত কোথাও বাঙ্গালী সংস্কৃতির ছোয়া নাই। আজ কোথায় গেল সেই সংস্কৃতি? আমি তখন তাদের খালেদা জিয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেয়া কে আকন্ঠ সমর্থন জানিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম তারা সত্যই সংস্কৃতি প্রেমী। কিন্তু আজ তাদের সেই বাঙ্গালিয়ানা হারিয়ে গেছে। তাই আজ আমাকে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হচ্ছে। এখন মনে হয়, তারা মনে হয় দলীয় বুদ্ধিজীবী।
৩) কক্সসবাজার এর পথে একবার হঠাৎ একটি মেয়ের সাথে দেখা। মেয়েটি বলল, ‘স্যার, আমি আপনার ছাত্রী’,আমি খুবই অপস্তুত হলাম, কারন আমি তাকে চিনতে পারিনি! ছাত্রীটি তখন নিজেই ব্যাখ্যা করল, ‘স্যার, আমি তো department এ বোরকা পরে যাই, তাই আপনি চিনতে পারছেন না,তখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। ক্লাসে যার শুধু একজোড়া চোখ দেখেছি, তাকে আমি কেমন করে চিনব? কিন্তু গত ৫০ বছরে যে মেয়েদের একটি প্রজন্মকে ঘরের ভিতর আটকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে, সেই প্রজন্মকে নিয়ে আমরা কি স্বপ্ন দেখব? (৬০ পৃষ্ঠা, ২য় কলাম, ২য় পারা)
(ক)এর দ্বারা তরুন প্রজন্মের আদর্শ(!) জাফর ইকবাল সাহেব তরুণীদের বোঝালেন, হিযাব পরলে তোমাদের কোনো দাম নেই! সুতরাং হিজাব খুলে ফেল, টি-শার্ট, ফতুয়া ও জিন্স পর। আর নিজেদেরকে পুরুষের ভোগ্য সামগ্রীতে পরিনত করার ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাও! নিজেদেরকে পতিতাদের চেয়েও সস্তা করে ফেলো।
অথছ, আল্লাহর রসূল( সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রয়োজনীয় বিদ্যা শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর উপর ফরয।
সুতরাং মেয়দেরকে অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে কিন্তু তা হিজাব পালন করেই।
এছাড়াও দেখুন, বোরখা পড়লে, পর্দা করলে মেয়েদের ঘরের ভিতরে আটকে রাখা হয়? হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা যিনি অনেক যুদ্ধে মহানবী (সা) কে প্রয়জোনীয় পরামর্শ দিয়েছিলেন, প্রয়োজনভেদে যুদ্ধে নেতৃত্বও (হযরত আলী (রা) এর সাথে উসমান (রা) হত্যাকাণ্ড নিয়ে বোঝাবুঝি হলে আলী (রা) এর সাথে আয়েশা (রা) এর যুদ্ধ হয় এবং সে যুদ্ধে আয়েশা (রা) নেতৃত্ব দেন) দিয়েছেন, শিক্ষকতা করেছিলেন (হযরত আয়েশা (রা) হাদীস শিক্ষা দিতেন। হযরত মুয়াবিয়া (রা), হযরত আবু মুসা আশআরি (রা) তার কাছ থেকে হাদীস শরীফ শিক্ষা নেন প্রয়োজনভেদে), তাকে কি ঘরের ভেতর আটকে রাখা কোন মেয়ে বলা যাবে? যাবে না। সেই আয়েশা (রা) পর্দা করতেন, বোরখা পড়তেন।
(খ) বোরখা পড়লে, পর্দা করলে মেয়েদের ঘরের ভিতরে আটকে রাখা হয়?
বেগম রোকেয়া, যিনি নারী শিক্ষার অগ্রদূত তিনি পর্দা করতেন। তাতে কি তিনি পিছিয়ে পড়েছিলেন??? আমার মা একজন পর্দানশীল মহিলা, তিনি ইংরেজীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছেন। তিনি তো ঘরের ভিতরে আবদ্ধ থাকেন নাই। জাফর ইকবাল সাহেব এর দেয়া উদাহরন থেকেই বলি, কক্সবাজারে জাফর ইকবাল সাহেবের যে ছাত্রীর সাথে তার দেখা হয় সে পর্দানশীল হওয়া সত্ত্বেও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন। ঐ ছাত্রীও তো বোরখা পড়েছেন, পর্দা করেছেন কিন্তু একই সাথে পড়াশুনা ঠিকই করেছেন এবং আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতও হয়েছেন। তাহলে কিভাবে পর্দা নারীদের ঘরের ভেতরে আটকে রাখছে??? কেন তাহলে এই শিক্ষিত নারী সমাজকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা যাবে না??? শুধু এই কারনে যে, তারা বাঙ্গালী সংস্কৃতি মেনে নিজেদের গোপন অঙ্গ ওয়েস্টার্নদের মতো দেখিয়ে বেড়াচ্ছেন না তাই??? তাই যদি হয় তবে একজন সংস্কৃতিপ্রেমী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মানুষ হয়ে আমি বলব, "লাগবে না আপনাদের সুশীল দেশ, ফিরিয়ে দিন আমার বাঙ্গালী সংস্কৃত"।
আর একটা কথা হিজাব শুধু মেয়েদের জন্যই নয়, পুরুষের জন্যও আল্লাহ পর্দার ( ছেলেদের জন্বিয নাভী হতে হাটু পর্ধাযন্নত পর্দা করা ফরয) দিয়েছেন। সুতরাং ছেলে মেয়ে উভয়েই পর্দা পালন করলেই কেবল আমরা একটি সুন্দর সমাজ নির্মাণ করতে পারব, জাফর ইকবালের কথামত হিজাব বাদ দিয়ে নয়।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুক, আমিন! আর্টিকেলটি পড়ুন এবং দেখুন, এখানে কোন রাজনৈতিক দলের প্রচার চালানো হয় নাই। স্রেফ ইসলামের আলোকে এবং মুক্তিযুদ্ধ-বাঙ্গালী সংস্কৃতির চেতনায় জাফর ইকবালের কথাগুলোকে ভুল প্রমানিত করা হয়েছে। উপরের আলোচনার স্বাপেক্ষে এটা বল্লেকোনক্রমেই ভুল হবে না যে, জামাত যেমন ধর্মব্যবসায়ী (জামাতি ভাইয়েরা, আপনাদের বিরুদ্ধে অনুরুপ অভিযোগ আছে বলেই বলছি। আর এ অভিযোগ যদি মিথ্যে হয় তবে এর স্বপক্ষে জনতার সম্মুখে প্রমান দিন। এদেশের জনগন ইন শা আল্লাহ সত্য আর মিথ্যে নির্নয়ে ভুল করবে না) ঠিক তেমন জাফর ইকবাল হচ্ছেন সংস্কৃতি-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসায়ী।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই আর্টিকেলটির কোন স্বত্ত্বাধিকার সংরক্ষিত নয়। সকলে এর ব্যাপক পরচারের ব্যবাস্থা করবেন এটিই কাম্য। তবে লেখক কি উদ্দেশ্যে কি কথা বলেছেন তা লেখকই ভাল জানেন। তাই কোন প্রশ্ন থাকলে তার উত্তর লেখকই ভাল দিতে পারবেন (আল্লাহর পর, নিশ্চই আল্লাহ সর্বোত্তম জ্ঞানী)... তাই এতটুকু অনুরোধ থাকবে লেখাটি যখন অপরের নিকট পৌছে দিবেন তখন ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে লেখকের নাম এবং যোগাযোগের ঠিকানাগুলো ঠিক রাখবেন এতে করে লেখক এই আর্টিকেলের উপর আনা অভিযোগসমূহের সমুচিত জবাব প্রদান করতে পারবেন। আর্টিকেলটির কোন অংশে যদি আপনার দ্বিমত থাকে তবে অবশ্যই তা জানাতে ভুল করবেন না। মানুষ মাত্রই ভুল। সাহাবায়ে কেরামও অনিচ্ছাকৃত অনেক ভুল করেছেন আর আমি তো সেই কোন ছার। প্রকৃত বন্ধু সেই যে সামনে ভুল ধরিয়ে দেয়, পশ্চাতে প্রশংসা করে। আর্টিকেলটিতে কোন তথ্যগত ভুল (যেমনঃ কুরান-হাদিসের ভুল রেফারেন্স ইত্যাদি) বা যেকোন প্রকার ভুল থাকলে তা পশ্চাতে না বলে সামনে বলবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।
নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা আল্লাহর এবং আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।
মোহাম্মদ আশরাফ আজীজ ইশরাক (ফাহিম)
মেইলঃ [email protected] অথবা [email protected] অথবা [email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:১৫