somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আর কি হবে মানব জীবন !

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



লালন বলেছেন , হেন মানব জীবন দীন দয়াময় দিয়েছো কোন ফলে !
এই যে মহামুল্যবান মানুষ জনম পেয়েছি , এতে আমাদের কোন হাত নেই। আমি হতে পারতাম ছারপোকা, কেচো, তেলোপোকা, গরু, কাক, কাঠবিড়ালী অথবা আর যা কিছু আছে। কিন্তু আমি সেসব না হয়ে হয়েছি পৃথীবির সবচেয়ে বুদ্ধুমান প্রানী। এই যে আমি এই অনুভুতিশীল জীবন পেলাম, কি জন্য পেলাম ! কি জন্য আমি ঘাস খাওয়া গরু না অথবা না আমি ইদুর খোজা পেচা।
এই জনম পেতে আমার কোন কষ্ট করতে হয় নি , আমাকে কেউ বলেনি এই করো ঐ করো তাহলে তুমি মানুষ জীবন পাবে । আমি এই জীবন এক্সিডিন্টলি গিফট পেয়েছি। যদিও এই গিফটেড জীবন পেতে আমাদের কোন পরিশ্রম করতে হয় নি কিন্তু এই জীবন বাচিয়ে রাখতে করতে হয় ক্রামাগত যুদ্ধ। কয়দিন আগে অরিত্রি মারা গেলো। সে তো বোঝে নাই কত মহা মুল্যবান উপহার এই মানুষ জীবন। এই সমাজ সেটা তাকে বুঝতে দেই নি । সে না বুঝেই হারিয়ে গেলো মহাবিশ্বের সবথেকে সুন্দর গ্রহ থেকে।

মনটা কয়দিন ধরেই নানা কারনের উদাস। আমার বড় ভাগ্নি ভিকারুন্নেসাই পড়ে । সেও কি এই সব ট্রমার ভেতর দিয়ে বড় হচ্ছে ! আমার আপারও কি মুখ বুজে অপমান সহ্য করতে হয় ! এই সব চিন্তা মাথার ভেতর জলের মতো ঘুরপাক খায়। মন আনচান করলে নাকি প্রিয় মানুষদের সাথে কথা বলতে হয়। আমি সাত পাচ ভাবতে ভাবতে মিরপুর ছয় এ গেলাম। মিরপুর ছয় এ কিছু রোডের বাড়ি গুলোর ছাদ একটার সাথে আরেকটা জয়েন্ট করা । মানে একটা রোডের প্রথম বাড়ি থেকে শেষ বাড়ি পর্যন্ত ছাদ দিয়ে যাওয়া যায়। আমি এবং আমরা সেই সব ছাদের একটিতে বসে জয়েন্ট ছাদের কুফল সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ মতামত দিচ্ছলাম।

ছয় তালার ছাদ। মাথার উপর বিশাল আকাশ, আকাশে গুটিকয়েক তারা, আগত শীতের হিম হিম হাওয়া আমাদের আড্ডাকে আরো প্রানবন্ত করছিল।আমি হওতোবা চায়ে চুমুক দিতে দিতে দ্বীর্ঘশাস ছেড়ে বলতে যাচ্ছিলাম , দেশটার কি যে হবে ! এমন সময় শুনলাম তিন নাম্বার ছাদের দরজাই কারা যেন জোরে জোরে বাড়ি মারছে আর বলছে , মাগো মাফ করে দেন , আপনি লাফ দিয়েন না। প্রথমে পাত্তা না দিলেও দুই তিন বার এই কথা শুনার পর দাড়ালাম। দেখলাম তিন নাম্বার ছাদের রেলিং এর গা ঘেষে একটা মহিলা দাঁড়িয়ে আছে, পড়নে শাড়ি । বুক সমান রেলিং , শাড়ির কারনে সে রেলিং এ উঠতে পারছে না। দুই হাতে ভর দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে।
আমি এই পাশ থেকে গলার সবটুকু জোর দিয়ে বলছি, প্লিজ লাফ দিবেন না। আমাদের কারো কথায় সে তার চেষ্টা থামাচ্ছে না।
আমি যে ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলাম সে ছাদে বুক সমান রেলিং। আমি চোখের পলকে তিনটা ছাদের রেলিং পেরিয়ে সেই ছাদের চলে গেলাম।
ততক্ষনে মহিলা রেলিং এর উপর উঠে বসতে সক্ষম হয়েছে। আমি দৌড়ে যেয়ে পেছন থেকে জাপটে ধরলাম। মহিলা ক্রমাগত আমার সাথে শক্তি খাটাচ্ছে। আমি এক ঝটকায় তাকে নিচে নামিয়ে ফেললাম।
দেখলাম কাচা পাকা চুলের একটা মানুষ। থর থর করে কাপছে। চোখে রাজ্যের শুন্যতা। আমি তার মাথায় হাত দিলাম। সে ঝর ঝর করে কেদে ফেললো। বললো , বাপরে যে মায়ের ছেলে নেশা করে ,কথা শোনে না, যে মায়ের মেয়ের নামে এতো কলঙ্ক ! তার বেচে থেকে লাভ কি?
ইতিমধ্যে দরজা ভাঙ্গা হয়েছে । পুরো বিল্ডিং এর লোক ছাদে চলে এসেছে। আমি নিঃশব্দে ছাদ টপকালাম।

অগ্রাহায়নের আকাশ কি ঝাপসা হয় ! নাকি আমার চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে । ঝাপসা চোখে স্বার্থপরের মতো ভাবতেছি, মানুষ কেন শুধুমাত্র নিজের জন্য বাচে না !
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×