এই মূহুর্তে আমাদের রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন দরকার। ঘৃণ্য এই রাজনৈতিক পরিবেশের মূল সপাটে উৎপাটিত করার সময় এখন এসেছে। ধিক! সেই সকল রাজনৈতিক দল এবং তাদের নেতা নেত্রীদের কে যারা নিজের ভুড়ি বাড়ানোর জন্য আমাদের মত গরীব জনসাধারণকে ঠকিয়ে যাচ্ছেন। যাদের নূণ্যতম কোন বিবেকবোধ নেই তারাই আজ আমাদের রাজনৈতিক নেতা, আমাদের প্রতিনিধি। তারেক মাসুদ, মিশুক মনিরের মত সৃষ্টিশীল মানুষেরা যদি অন্য কোন দেশের নাগরিক হতেন তাহলে হয়তবা এইভাবে তাদের কে প্রান দিতে হত না। আমাদের গর্ব করা উচিত যে তারা এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আমরা সাধারণ জনগণ যারা আছি তারা ঠিক ই বুঝি, ভেতর থেকে অনুভব করতে পারি। কিন্তু যাদের আমাদের আগে বুঝা উচিত ছিল তারা কি কিছুই বুঝেন না? কিছুই করতে পারেন না আমাদের জন্য? তবে কেন তোমরা ঐ আসনে বসে আছ যেখানে তোমাদের কে মানায় না। তোমাদের তো শুধু ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করা উচিত না, জীবন থেকে ও পদত্যাগ করা উচিত। প্রয়াত মিশুক মুনিরের সহধর্মিনীর মত আমি ও বলতে চাই “মানুষ নিয়ে ব্যবসা করবেন না। আমাদের কে নিয়ে ব্যবসা করার জন্য আপনাদের কে মন্রীত্ব দেয়া হয়নি। একজন বাবাকে বিক্রি করে রাজনীতি করছেন, আরেকজন করছেন স্বামীকে বিক্রি করে।” এইগুলো বন্ধ করুন। জনগন এখন আর আপনাদের পুতুল খেলার পুতুল নয়। সময় পাল্টেছে। একটা টাঙ্গইল রোড বন্ধ হয়েছে, আরো শত শত রোড বন্ধ হয়ে যাবে। রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়ে যাবে। তখন বস্রহীন হয়েও পালিয়ে যাবার সময় থাকবে না। যে মানুষের তোমাদের কে দেশ চালানোর দায়িত্ব দিয়েছিল, সেই মানুষেরাই তোমাদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিবে।
টিভি চ্যানেলগুলোর দিকে একটু দৃষ্টিপাত করি। আপনাদেরও উদ্দেশ্য কি শুধুই ব্যবসা করা। মিশুক মুনির, তারেক মাসুদ মারা গেলেন। আপনাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম। দেখতে পারলাম কোথায় কি হচ্ছে। শুধু তাই নয় দেশের ছোট বড়, দেশ-বিদেশের অনেক খবরই আপনাদের কল্যাণে আমরা জানতে পারি। এইজন্য আপনাদেরকে অনেক ধণ্যবাদ। কিন্তু ওই দূর্ঘটনায় কি শুধু মিশুক মুনির আর তারেক মাসুদই মারা গিয়েছিলেন? তাদের সাথে তো আরো তিনটি তাজা প্রান নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল। তাদের কোন খবর তো আপনারা আমদের সামনে তুলে ধরেন নি। তারা ও প্রান দিয়েছেন ঐ দুই কৃ্তি সন্তানদের সাথে। তাদের পরিবারের বর্তমান কি অবস্থা তা কি আমাদের সামনে তুলে ধরা উচিত ছিল না? মিশুক মুনিরের সহধর্মিনী কি বলেছেন তা কেন আমাদের সামনে তুলে ধরেন না? এরকম হাজারো খবর হয়তোবা আমাদের লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে যায়। আপনাদের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ এই রিপোর্ট গুলো আমাদের সামনে তুলে ধরুন। সাংবাদিক ভাইদের তৈরী করা এই রিপোর্টগুলোই তো আমাদের কে উদ্বোদ্ধ করবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আরো সাহসী করে তোলবে।
আর কিছু কথা আমি না বলেই পারছিনা।
আমি যখন মারা যাব তখন আমার বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই দুঃখ পাবে, বিলাপ করবে, শোক প্রকাশ করবে। কিন্তু দয়া করে কেউ আমার বাড়িতে চল্লিশা খেতে আসবেন না কেউ। দরকার হলে সবার বাড়িতে বাড়িতে খাবার পাটিয়ে দেয়া হবে। কারণ আমার বাড়িতে আসার সময় আপনি যদি ডাকাত সন্দেহে গ্রেফতার হোন সেই দায়ভার কে নেবে? আপনি যদি গণপিঠুনির স্বীকার হন, সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান সেই জন্য আমার বিদেহী আত্না কে দায়ী করবেন? না,সেই সুযোগ আমি আপনাদের কে দিতে চাই না।
আমি জানি আমার এই লেখায় উপর মহলের ব্যক্তিদের কোন পরিবর্তন হবে না। পরিবর্তন হবে না তাদের নীতিগত চরিত্রের। তারা ঠিকই শাহরুখ খানের কনসার্টে গিয়ে মাটিতে বসবেন, দেশের টাকা বিদেশে নিয়ে গিয়ে টাকার পাহাড় গড়ে তোলবেন। তাদের পরিবর্তন কেমন করে হবে, যারা সামান্য একটা বাড়ির জন্য দিনের পর দিন হরতাল ডাকতে পারেন অথচ মানুষের জীবন রক্ষার্থে মানব বন্ধনই করতে জানেন না। তাদের কাছে কি খুব বেশী কিছু আমরা আশা করতে পারি? তবে সময় এসেছে পরিবর্তনের। দরকার নতুন নেতৃত্বের, নতুন সাহসী নেতাদের। যারা আমাদের উন্নতির কথা ভাববেন, আমাদের কে নিয়ে ব্যবসা করার কথা নয়। তবেই লিমন, কাদিরের মত মানুষদের পচতে হবে না ঘৃণ্য এই প্রশাসনের জন্য। জন্ম হবে আরো অনেক সৃষ্টিশীল মানুষের। দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
জনগণ আসুন সচেতন হওয়ার মিছিলে। শুরু করে দিন বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্লোগান। আবারো প্রমাণ করে দিন “জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস”।