somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহবু১৫৪
জীবনে সহজেই কোন কিছু পাবার আশা করাটা বোকামী। অনেক ঘাত প্রতিঘাত পার হয়েই আসতে হয় কাংক্ষিত লক্ষে। এই পথ এত সোজা নয়। অনেক ভুল ভ্রান্তি আছে সেই পথ চলায়। হয়তো আরো অনেক কোথিন হবে সামনের পথ টুকু। তারপর ও হার মেনে নেয়ার পক্ষে আমি নই। জয়ী যে আমাকে হতেই হবে।

আমি যুদ্ধ শিশু বলছি!

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১।
রাবেয়া? আই রাবেয়া?
জ্বী, বলেন?
কতক্ষণ লাগলো আসতে তোমার?
একটু বিজি ছিলাম।
কিসের এত বিজি তুমি শুনি?
মানে ......
চুপ বেয়াদপ! মুখে মুখে তর্ক করার অভ্যাস তোমার গেল না? বয়স তো কম হল না তোমার, এসব কবে বুঝবে তুমি?
কোন কথা না বাড়িয়ে মাথা নিচু করে রাবেয়া অন্দরমহলের পথ ধরলো। এসব তার নিত্য সঙ্গী। তাই গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।

সেদিন তো পাড়ার মুরুব্বী কাদের সাহেব এসে যা তা বলে গেল রাবেয়াকে। সমাজে নাকি কেউ মুখ দেখাতে পারছে না! সমাজের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করা আসলেই অনেক কঠিন কাজ। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদেরকে হেয় করা হয়। মুখে অনেকেই অনেক বুলি আওড়ায়। কিন্তু সেই বুলি শুধু বুলিই থেকে যায়। বিশেষ করে যাদের জন্ম পরিচয় বলতে কিছুই নেই। কে তার বাবা? কেউ জানে না। পরিবার বলতে কেউ নেই। কালেভাদ্রে কালের সাক্ষী হয়ে জন্মদাত্রী মা হয়তো বেঁচে থাকেন। কিন্তু কতজনই পারেন এভাবে দুঃসহ জীবনযাপন করতে? এসবের জন্য তো রাবেয়া দায়ী নয়! তবে কেন ওকেই এভাবে হেয় হতে হয়?

দোষ হয়ত কারো নয়! দোষ আমাদের সমাজ ব্যবস্থার। কিন্তু সেই সমাজ ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্বে নিয়জিত সেই মানুষেরাই।

২।
আজ রাবেয়ার খুশির দিন। হয়তো এমন একটি দিনের জন্য সে যুগের পর যুগ সে অপেক্ষা করে ছিল। কত প্রহর কেটে গিয়েছে, কতশত রজনী নির্ঘুম কেটেছে, কত হাজার হাজার দীর্ঘশ্বাসে আশেপাশের পরিবেশ ভারী হয়েছে তার হিসেব নেই। আজকে দিদারকে সে ভালবাসার কথা বলবে। মনের জমানো সব কথা বলবে। একটি নতুন শুরুর সুচনা হবে। গত ২ বছর ধরে মনের জমানো সব কথা বলতে চেয়েছে সে। কিন্তু পারে নি। শুধু ভয় হত তার। কিন্তু কেন জানি মন কিছুতেই আর মানছে না।

দুপুর ৩ টা,
রাবেয়াঃ ওহহ, একটু দেরি হয়ে গেল।
দিদারঃ কোন কথা নেই।
রাবেয়াঃ কি হয়েছে তোমার?
দিদারঃ না, তেমন কিছু না।
রাবেয়াঃ নাহ! কিছুতো একটা হয়েছে।
দিদারঃ আসলে, তোমাকে আমার কিছু কথা বলার আছে।
রাবেয়াঃ আমারো কিছু কথা বলার আছে তোমাকে।
দিদারঃ তাহলে তুমি আগে বল।
রাবেয়াঃ না, তুমি আগে বল।
দিদারঃ আচ্ছা। (১ মিনিট নিরবতা) আসলে, তুমি আমাকে কি বলতে চাও সেটা আমি জানি। আমিও চেয়েছিলাম কিছু একটা বলতে যা আমাদের সম্পর্ককে পাকাপোক্ত একটা রূপ দিবে। কিন্তু আমি সেটা পারবো না। কারণ তোমার পারিবারিক ইতিহাস শোনার পর আমার পরিবার তোমাকে মেনে নিচ্ছে না। তারা বলছেন তোমার সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে। আর আমিও চাই না তোমার সাথে সম্পর্ক রাখতে। সমাজে চলতে গেলে অনেক বাধা বিপত্তি পার হতে আমাকে। আমি তা পারবো না।
রাবেয়াঃ বাহ! এই তোমার কথা। ভেবেছিলাম তুমি সবার থেকে আলাদা। অথচ তুমিও সেই সবার মতই।
ভাল থাকো, লাগবে না তোমাকে আমার। বিদায়।
যতই দূরে চলে যাচ্ছে রাবেয়া, ততই তার সব স্বপ্ন যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।

৩।
নাহ! আর পারছে না রাবেয়া।
রুমে এসে দরজা বন্ধ করে সাথে সাথে ড্র্য়ার খুলে ঘুমের যতগুলো ঔষুধ যে পেল সবগুলো হাতে নিল। আজ সে অনেক ঘুমাবে। সেই ঘুম যেন আর কোনদিন না ভাঙ্গে! আপনজনদের অবহেলা পাওয়ার থেকে নিজেকে শেষ করে দেয়া অনেক ভাল। হয়তো এটা ভুল পথ। কিন্তু দিনকে দিনকে সমাজের কিট তুল্য জীবে পরিণত হওয়ার থেকে এই ঢের ভাল।

হয়তো তার মরে যাওয়ার পরে নষ্ট মানুষগুলো তাকে নিয়ে সভা করবে, পত্রিকায় ছাপাবে। মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচার করবে। বুদ্ধিজীবিরা ভাষন দিয়ে বড় বড় কথা বলবেন। টক শো চলবে। কিন্তু কেউ জানবে না এসব নরকের কিটদের মনের কথা। তাদের আসল চেহারা!
আর এভাবে করেই ঝরে পরবে অনেক প্রাণ!


সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৪
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×