somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আব্বাস কিরোস্তামির উইন্ড উইল ক্যারি আস

০৭ ই অক্টোবর, ২০০৬ সকাল ১০:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উইন্ড উইল ক্যারি আস (1999) দেখে তাজ্জব হয়ে গেলাম। ইরানের কুর্দি এলাকাটা জিওগ্রাফিক্যালি একটা সাবজেক্ট। আর কিরোস্তামি তার এই সিনেমার জন্য সেখানকার এমন এক গোলকধাঁধাময় গ্রাম বেছে নিয়েছেন যাকে সিনেমা তৈরির জন্য যথার্থ বলতে হয়। তেহরান থেকে একদল সাংবাদিক একটি রিপোর্টের ছবি তুলতে যায় ওই পার্বত্য গ্রামে। সেখানে এক বৃদ্ধার মৃতু্যর পর ঘটার কথা মহিলাদের ওই শোক-বিলাপের বিশেষ অনুষ্ঠানটি। কিন্তু ভিজিটররা বলে, তারা সেখানে গুপ্তধন খুঁজতে গিয়েছে। স্থানীয় একটি ছেলে ফারজাদকে তারা গাইড হিসাবে পায়। আশ্রয় নেয় একটি বাড়িতে। বৃদ্ধার মুতু্য সংবাদের অপোয় থাকে। কিন্তু সপ্তাহ চলে গেলেও বৃদ্ধার মৃতু্য হয় না। মূল চরিত্রটি (ইঞ্জিনিয়ার) ছাড়া সকলেই হতাশ হয়ে চলে যায় তেহরানে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারটি থেকে যায়। না বৃদ্ধার মৃতু্যর অপোয় আর নয়, জীবনের এক নতুন উপলদ্ধি হয় তার। জড়িয়ে পড়ে ওই গ্রামের জীবনের সঙ্গে। এক বাড়িতে দুধ আনতে গিয়ে অন্ধকার দোহন কক্ষে দেখা মেলে ষোল বছরের এক তরুণীর। তাকে সে একটি কবিতা শোনায়। সে কবিতাটিরই একটি লাইন উইন্ড উইল ক্যারি আস। ইরানি কবি ফারোঘ ফারোখজাদের কবিতা সেটি। ফারোঘ ছিলেন বেদনা আক্রান্ত এক নারী। ফারোঘের বিয়ে হয়েছিল ষোল বছর বয়সে। ইঞ্জিনিয়ার জড়িয়ে পড়ে ওই গ্রামের নানা অনুষঙ্গের সাথে। সিনেমাটি এমন এক কবিতা হয়ে ওঠে শেষ পর্যন্ত যাকে কথায় আর ভাষায় র্ণনা করা সম্ভব নয়। সিনেমায় অনেক কিছুই দেখা যায় না। খানিকটা সংকেত, খানিকটা বলার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এর কাহিনী। কিন্তু সেইটুকুই যথেষ্ট। মানুষগুলো ছাড়া আছে একটি মোবাইল ফোন আর একটি গাড়ি। ফোন ধরার জন্য ভূতের গাড়িতে করে ইঞ্জিনিয়ার যখন উঁচু পাহাড়ে উঠতে থাকে তখন অবাক এক নাটকীয়তা তৈরি হয়। বারবার ঘটতে থাকে এই ঘটনা। শেষ পর্যন্ত গ্রামের প্রকৃতি প্রেমিক এক ডাক্তারের কাছে ইঞ্জিনিয়ার জেনে যায় ওমর খৈয়ামের একটি কবিতা। না বাকীর জন্য অপো করে আর লাভ নেই। নগদ যা আছে তাকেই মেনে নাও। যাপন করো একেই। শেষ পর্যন্ত অস্পষ্ট এক সকালে শেষ হয় সিনেমা। ঠিকই মেয়েরা শোক করতে রাস্তায় নামে। আর ইঞ্জিনিয়ার তাদের ছবি তুলে শহরের পথে রওয়ানা হয়। অন্ধকার দোহন কক্ষে [লিংক=যঃঃঢ়://িি.িভড়ৎঁমযভধৎৎড়শযুধফ.ড়ৎম/রহফবী1.যঃস]ফারোঘ ফারোখজাদের[/লিংক] যে কবিতাটি ইঞ্জিনিয়ার বালিকাটিকে শোনায়:

যদি আমার বাড়িতে আসো, তাহলে আমার জন্য একটা বাতি আর নিয়ে এসো একটা জানালা। ওই জানালা দিয়ে আমি দেখবো রাস্তার সুখী ভীড়। আমার রাতটি ছোট, বাতাসের খুব কাছাকছি আছে পাতা। আমার রাত খুব ছোট আর যন্ত্রনা-ভাঙনে ভ রা। শোনো, তুমি কি ছায়াদের ফিসফাস শোনো? সুখ বিদেশী অচিন লাগে, হতাশাই খুব বেশি চেনা চেনা। যায় ছায়াদের ফিসফাস শোনা? এই গভীর নিশুতি রাতে কোথাও ঘটছে হয়তো কিছু, চাঁদ লাল হয়ে গেছে রাগে। ছাদের সঙ্গে লেগে থাকা এই চাঁদ হঠাৎ পড়বে ধ্বসে । হাহাকার করা নারীদের মতো মেঘ, এক সেকেন্ড থামাও বৃষ্টিপাত। একটি সেকেন্ড আর কিছু নয়, ব্যস। এই জানালার ওই তীরে কাঁপছে একাকী রাত পৃথিবী বন্ধ করেছে ঘোরা। এই জানালার পাশে আছে একজন। তোমাকে আমাকে নিয়ে ভাবনায় আছে সে। তুমি তোমার গোয়ালে বসে ওই স্মৃতিতে রাখো হাত- আমার হাতের 'পরে, ঠোঁটে রাখো ওই ঠোঁট আস্থা রাখো এইখানে। ভরো গরম হাওয়ার গান ছুঁয়ে দাও এই ঠোঁট। বাতাসে রাখো ভর, ভেবো না কিছু আর হাওয়াই বইবে ভার। (অনুবাদটা খারাপ হলো, পরে ঠিক করবো)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০০৬ রাত ৩:১৯
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এয়ার এম্বুলেন্স ও তিন বারের প্রধানমন্ত্রী’কে নিয়ে জরিপে আপনার মতামত দেখতে চাই॥

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৩০

যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডন শহরে বসবাস করছেন। সেই দলের মূল নেত্রী অসুস্থ। আর তাকে চিকিৎসার জন্যে বিদেশ যাওয়ার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিবে কাতারের আমির। বিএনপি এবং জিয়া পরিবারের কি এতটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭


ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

পহেল গাঁয়ে পাকিস্থানি মদদে হত্যাকান্ডের জন্য ভারত পাকিস্থানে আক্রমন করে গুড়িয়ে দেয় , আফগানিস্থান তেহেরিক তালেবানদের মদদ দেওয়ার জন্য, পাকিস্থান... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×