somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্রণ কি? কেন হয়? মুক্তির উপায়, চিকিৎসা।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রচলিত একটি কথা আছে, প্রতিকার থেকে প্রতিরোধ উত্তম। ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে ব্রণ কি, কেন হয়, কাদের হয়, কি করনীয়, চিকিৎসা কি।

প্রথমেই আমরা জানবো ব্রণ কি?
সেবাসিয়াস গ্রন্থি সেবাম নামে একপ্রকার তৈলাক্ত পদার্থ নিঃসরণ করে যা ত্বককে মসৃণ রাখে। কোনো কারণে সেবাসিয়াস গ্রন্থির নালির মুখ বন্ধ হয়ে গেলে সেবাম নিঃসরণের বাধার সৃষ্টি হয় এবং তা ভেতরে জমে ফুলে উঠে যা ব্রণ (acne) নামে পরিচিত। ব্রণ তৈরি হওয়ার পর্যায়ে এর মুখ বন্ধ থাকায় সাদাটে দেখায়। বন্ধ নালির মুখে জমাকৃত কোষগুলি আস্ত আস্তে কালো হয়ে গেলে তাকে কালো ফোঁটা বলে। প্রায়ই ব্রণের চারপাশে প্রদাহ শুরু হয় এবং এর রং লাল দেখায়। এর উপর জীবাণু সংক্রমণ ঘটলে পুঁজ তৈরি হয়। বাইরে থেকে এদের ছোট দেখালেও এরা বেশ গভীর হতে পারে। এজন্য ব্রণে সংক্রমণ সেরে গেলেও মুখে দাগ থেকে যেতে পারে।



তেরো বছর থেকে উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত শতকরা নব্বই জনের এ রোগটি কমবেশি হয়ে থাকে। বিশ বছর বয়সের পর থেকে নিজে থেকেই এ রোগটি ভাল হয়ে যেতে থাকে। তবে এর ব্যতিক্রম যে হয় না তা নয়। কখনও কখনও বিশ থেকে তিরিশ বছর বয়সেও এটি দেখা দিতে পারে এবং অনেক বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

কেন হয়?
ব্রণের সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত না হলেও সাধারণত দেখা যায় হজমের গোলমাল, সুরাপান, বয়ঃসন্ধিকালে কিংবা অন্যান্য কারণে অনেকের মুখে ব্রণ হয়।
আবার অনেকেই বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ব্রনের অনেকগূলো কারণের ভিতর বংশগত কারণ একটি অন্যতম কারণ। প্রোপাইনি ব্যাকটেরিয়াম একনিস নামক এক ধরনের জীবাণু স্বাভাবিকভাবেই লোমের গোড়াতে থাকে। এন্ড্রোজেন হরমনের প্রভাবে সেবাম-এর নিঃসরণ ( মাথা, মুখ, ইত্যাদি জায়গায় তেলতেলে ভাব ) বেরে যায় এবং লোমের গোড়াতে উপস্থিত জীবাণু সেবাম থেকে ফ্রী ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করে। অ্যাসিডের কারণে লোমের গোড়ায় প্রদাহের সৃষ্টি হয় এবং লোমের গোড়ায় কেরাটিন জমা হতে থাকে।

ব্রণের প্রকারভেদঃ
১) ট্রপিক্যাল একনি– অতিরিক্ত গরম এবং বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হলে পিঠে, উরুতে ব্রণ হয়ে থাকে।
২) প্রিমিন্সট্রুয়াল একনি– কোনো কোনো মহিলার মাসিকের সাপ্তাহ খানেক আগে ৫-১০টির মতো ব্রণ মুখে দেখা দেয়।
৩) একনি কসমেটিকা– কোনো কোনো প্রসাধনী লাগাতার ব্যবহারে মুখে অল্প পরিমাণে ব্রণ হয়ে থাকে।
৪) একনি ডিটারজিনেকস– মুখ অতিরিক্ত ভাবে সাবান দিয়ে ধুলেও ( দৈনিক ১/২ বারের বেশি ) ব্রণের পরিমাণ বেড়ে যায়।
৫) স্টেরয়েড একনি– স্টেরয়েড ঔষধ সেবনে হঠাৎ করে ব্রণ দেখা দেয়। মুখে স্টেরয়েড, যেমন– বটানোবেট ডার্মোভেট জাতীয় । ঔষুধ একাধারে অনেকদিন ব্যবহারে ব্রণের পরিমান বেড়ে যায় ।

ব্রণ থেকে মুক্তির উপায় :
কিছু নিয়ম অবলম্বন করলেই ব্রণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। অনেকের ধারণা, কোনো বিশেষ খাবার খেলেই ব্রণ হয়ে থাকে। আসলে এটি ঠিক নয়। কোনো খাবার খেলে যদি ব্রণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে তবে সে খাবারটি বাদ দিতে হবে। তবে প্রচুর ফলমূল ও পানি খেতে হবে। মুখে বেশি ব্রণ থাকলে রাসায়নিক কোনো উপাদান বা কসমেটিক ব্যবহার করা ঠিক নয়, যথাসম্ভব প্রাকৃতিক বা হারবাল জিনিস ব্যবহার করা ভালো কারণ এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। বেশির ভাগ ব্রণ নিজস্ব পরীক্ষার মাধ্যমে সেরে ফেলা সম্ভব।

ব্রণ হলে কী করবেন:
দিনে দুই-তিনবার হালকা সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোবেন।
ব্রণে হাত লাগাবেন না।
তেল ছাড়া অর্থাৎ ওয়াটার বেসড মেকআপ ব্যবহার করবেন।
মাথা খুশকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং নিজের জন্য আলাদা তোয়ালে রাখুন।
রাতে ঠিকমতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
মানসিক চাপ পরিহার করুন।
প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি খান ও প্রচুর পানি পান করুন।
কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তা দূর করতে হবে।
ঝাল-মশলাযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
পুষ্টিহীনতায় ভুগলে প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
ব্রণ হলে কী করবেন না:
রোদে বেরুবেন না, রৌদ্র এড়িয়ে চলুন।
তেলযুক্ত ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন না।
ব্রণে হাত লাগাবেন না। ব্রণ খুঁটবেন না।
চুলে এমনভাবে তেল দেবেন না যাতে মুখটাও তেলতেলে হয়ে যায়।
ব্রণ হলে একেবারেই আচার খাবেন না। তবে মিষ্টি চাটনি খেতে পারেন।
বেশি পরিমাণে নিরামিষ খাবার খান। আমিষ খাবার যতটা সম্ভব না খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ডেইরি প্রোডাক্টসের মধ্যে হরমোনাল উপাদান বেশি পরিমাণে থাকে বলে তা খুব সহজে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এ কারণেই পনির, দুধ এবং দই কম খান।
কোল ড্রিঙ্কস খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দিন।
আয়ুর্বেদের মতে অতিরিক্ত ক্রোধের ফলে শরীরে পিত্ত সঞ্চিত হয়। তাই ক্রোধ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন।
কেন ব্রণের চিকিৎসা করাবেন:
ব্রণ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। কারণ চিকিৎসা না করালে অনেক সময় ব্রণ ত্বকের মারাÍক ক্ষতি করতে পারে। ত্বকে গভীর প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। আর ব্রণ হলে চেহারা খারাপ দেখানোর কারণে অনেকে হতাশ হয়ে যায়।
চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্রণের প্রকারভেদের ওপর নির্ভর করে।
ব্রণের পরিমাণ যদি খুব বেশি হয় তবে টেট্রাসাইক্লিন বা ইরাইথ্রোমাইসিন থেতে হয়। এ জাতীয় ওষুধ একাধারে অনেক দিন খেতে হয়। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে বলে এসব ওষুধ একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের অধীনে খাওয়াই মঙ্গল।
তবে সাধারণভাবে রেটিন-এ ক্রীম অথবা পেনক্সিল ২.৫% জেলটি নিরাপদে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সূর্য ডোবার পর ( সন্ধার পর ) শুধু গোটাগুলোতে ১/২ দিন ব্যবহারের পর ঠিক হয়ে যায়। লালভাব বা এলার্জি যদি খুব বেশি হয় তবে ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়াই ভাল।
বি.দ্র.: আমি কোন ডাক্তার বা মেডিকেল স্টুডেন্ট নই। ইন্টারনেট অবলম্বনে লিখেছি আর চিকিৎসা আর্টিকেলটি “ডা. সজল আশফাক” এর “মেডিকেল পেসক্রিপশন A টু Z” বই থেকে।
ব্রণের ভেষজ চিকিৎসাঃ
ব্রণ থেকে মুক্তির সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে সচেতনতা। যাহোক আমি আপনাদেরকে ব্রণ নিরাময়ে কিছু ভেষজ পদ্ধতি পরামর্শ দেব। যা আপনারা ঘরে বসেই করতে পারবেন।
১। ত্রিফলাঃ ব্রণ তাড়ানোর জন্য একটি কার্যকরী উপাদান হলো ত্রিফলা। এটি শুধু ব্রণের জন্য নয়, শরীরের আরো নানা সমস্যার সমাধান দেয়। পেটের সমস্যা, হজমের সমস্যার জন্য এটি খুবই উপকারি। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো রিস্ক নিয়ে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার না করে যদি ন্যাচারাল কিছু আপনার কাজে আসে তাহলে কেন আপনি ত্রিফলা ব্যবহার করবেন না? আর যদি সেই ন্যাচারাল কিছু খুব সহজেই পাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই।
ত্রিফলা বাজারে শুষ্ক ফলের মত অবস্থায় পাওয়া যায়। অনেক কম্পানি এটি কে নানা ভাবে প্রক্রিয়াজাত করেও বিক্রি করে। তবে সবচেয়ে নিরাপদ হবে যদি আপনি শুষ্ক ফল এর মত অবস্থায় ত্রিফলা ব্যবহার করেন। ত্রিফলা হল ৩ টি ফলের মিশ্রন। এতে থাকে আমলকি,হরিতকি,বিভিতকি।
যেভাবে আপনি এটি ব্যবহার করবেন সেটি হল আপনাকে ত্রিফলার মিশ্রণের একটি অংশ(যাতে অন্তত ১ টি হরিতকি,১ টি বিভিতকি ও ২ টি আমলকি থাকে) গুড়া করে রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং সকালে খালি পেটে রস টি ছেকে খেয়ে নিতে হবে।খাওয়ার পর অন্তত ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে নাস্তা করার জন্য।
এভাবে যদি আপনি টানা ৩ মাস প্রতিদিন খেতে পারেন তাহলে দেখবেন ব্রণ আর আপনার দিকে ফিরেও তাকাবে না। তখন নিজের পরিস্কার ত্বক দেখলে আপনি নিজেই আপনার প্রেমে পড়ে যাবেন।
২। মধুঃ ব্রণের সমস্যা এত বিচ্ছিরি একটা ব্যাপার যে তা যেন আপনার সমস্ত সৌন্দর্যকে ম্লান করে দেয়। নারী হন বা পুরুষ, মুখে ব্রণ কারো ক্ষেত্রেই ভালো লাগে না দেখতে। নানান রকম চিকিৎসা করিয়ে যারা হতাশ হয়ে পড়েছেন, তাঁদের জন্য রইলো ব্রণের আরেকটি ঘরোয়া চিকিৎসা। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণ ওঠা শূন্যের কোটায় চলে যাবে, আবার চট জলদি ব্রণ কমাতেও এর জুড়ি নেই। ত্বকের জন্য সর্বদা প্রাকৃতিক চিকিৎসাই সবচাইতে উপকারী!
বিশুদ্ধ মধু সংগ্রহ করুন প্রথমেই। মধু একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক। ব্রণের প্রকোপ কমাতে ও দাগ দূর করতে এর জুড়ি নেই।
মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিন খুব হাল্কা ফেসওয়াশ দিয়ে। তারপর ভালো করে মুখ ধুয়ে আলতো করে মুছে নিন। এবার আঙ্গুলের ডগায় মধু নিয়ে ভেজা ত্বকেই লাগান। অল্প একটু ম্যাসাজ করে ১০ মিনিট রাখুন। তারপর পানি দিয়ে খুব ভালো করে ধুয়ে নিন। অন্তত ২ ঘণ্টা মুখে কোন প্রসাধনলাগাবেন না।
৩। জলপাই তেল ম্যাসাজ
আপনার ত্বক তৈলাক্ত কিংবা শুষ্ক যাই হোক না কেনো প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে জলপাই তেল দিয়ে পরিষ্কার করলে ত্বক মসৃণ হয় এবং ধীরে ধীরে ব্রণের উপদ্রব কমে যায়।
প্রথমে হাতের তালুতে জলপাই তেল নিয়ে দুই হাতে ঘষে তেল কিছুটা গরম করে নিন। এবার এই তেলটা পুরো মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন নিচের থেকে উপরের দিকে। এভাবে প্রায় ২ মিনিট ধরে মুখ ম্যাসাজ করুন। এভাবে ম্যাসাজ করলে ত্বক থেকে মেকআপ এবং ময়লা উঠে আসবে ভালো করে। এরপর কুসুম গরম পানিতে টাওয়েল ভিজিয়ে মুখের অতিরিক্ত তেল মুছে নিন ভালো করে। এভাবে প্রতিদিন রাতে মুখ পরিষ্কার করে নিলে ব্রণ ওঠা ধীরে ধীরে কমে যাবে।
৪। গোলাপ জলের টোনার:
প্রতিদিন মুখ ভালো করে ধুয়ে নেয়ার পরে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করার জন্য টোনার ব্যবহার করা জরুরী। কারণ লোমকূপ খোলা থাকলে ময়লা ঢুকে ব্রণের উপদ্রব বৃদ্ধি করে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গোলাপ জল বেশ কার্যকারী টোনার হিসেবে কাজ করে।
পানিতে গোলাপ জল মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে বরফ বানিয়ে নিন। সকালে বাইরে যাওয়ার আগে অথবা বাসায় ফিরে মুখ ধোয়ার পর এই বরফ দিয়ে পুরো মুখ ঘষে নিন। ত্বক দীর্ঘ সময় ধরে তেল মুক্ত থাকবে এবং লোমকূপগুলো বন্ধ হবে। বরফ হিসেবে ব্যবহার করতে না চাইলে তুলায় গোলাপ জল লাগিয়ে মুখটা মুছে নিলেও টোনারের কাজ হবে।
৫। স্ক্র্যাবার হিসেবে বেকিং সোডাঃ
আমাদের ত্বকে মরা চামড়া ও ব্ল্যাক হেডস জমে। এগুলোর জন্য ব্রণ হয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা হারায়। তাই ত্বককে মাঝে মাঝে স্ক্র্যাবিং করতে হয়। এক্ষেত্রে বেকিং সোডা বেশ ভালো স্ক্র্যাবার।
প্রথমে বেকিং সোডা ও সামান্য পানি মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি সারা মুখে, ঘাড়ে ও গলায় ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন। এক মিনিট ম্যাসাজ করার পরে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিন বার এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ব্রণের উপদ্রব কমে যাবে, ব্রণের দাগ কমবে এবং ব্ল্যাক হেডস দূর হবে।
এবং পরিক্ষা করে দেখতে পারেন নিচের ১০ টি পদ্ধতিঃ
১) ব্রণ হবার একটি অন্যতম কারণ হলো অপরিষ্কার ত্বক। তাই ত্বক রাখতে হবে পরিষ্কার। নিয়মিত স্ক্রাবিং ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ব্রণ শুধু মুখে নয়, শরীরের অন্যান্য অংশেও হতে পারে। তাই স্ক্রাবিং পুরো দেহের জন্যই প্রযোজ্য। পাকা পেঁপে চটকে নিন এক কাপ। এর সাথে মেশা এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চালের গুঁড়ো। মিশ্রণটি মুখসহ পুরো শরীরে লাগান। ২০-২৫ মিনিট মাসাজ করে গোসল করে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস।
২)পুদিনা পাতা ত্বকের অতিরিক্ত তেল এবং ব্রণের সংক্রমণ কমাতে খুবই উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর হয়ে যাবে। অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বকে যেসব ফুসকুড়ি এবং ব্রণ হয় সেগুলো দূর করতেও পুদিনা পাতা উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট এরপর ধুয়ে ফেলুন।
৩)পুদিনা পাতার রস করে নিয়ে সেটা দিয়ে আইস কিউব তৈরি করুন। ফুসকুড়ি ও ব্রণের এই আইস কিউব ঘষুন ১০-১৫ মিনিট। এতে ফুসকুড়ি ও ব্রণের সংক্রমণ তো কমবেই সাথে ত্বকের জ্বালাপোড়াও দূর করবে।
৪) লবঙ্গ মূলত মসলা হিসেবে পরিচিত হলেও ব্রণ সারাতে তা খুবই কার্যকর। লবঙ্গের তেল দিয়ে ত্বক মাসাজ করা খুবই উপকারী। ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেড়ে গেলে লবঙ্গ গুঁড়ো করে তাতে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ব্রণের জায়গাগুলোতে মিশ্রণের মোটা প্রলেপ দিন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
৫) টক স্বাদের কদবেল খেতে অনেকেই ভালবাসেন। কাঁচা কদবেলের রস ব্রণের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা কদবেলের রস তুলাতে ভিজিয়ে ব্রণ আক্রান্ত জায়গাগুলোতে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
৬) নিমপাতা খুব ভালো জীবাণুনাশক। তাই ব্রণ সারাতে নিমপাতা খুবই উপকারী। নিমপাতা বেটে সাথে চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ পর ধুয়ে ফেলুন।
৭) যাঁদের ব্রণের পরিমাণ অত্যধিক বেশি তাঁরা পাতিলেবুর রস দিনে দুই তিনবার ব্রণে আক্রান্ত জায়গাগুলোতে লাগান। তবে একটানা ১০ মিনিটের বেশি রাখবেন না। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৮)ধনিয়াপাতাও ব্রণ সারাতে কার্যকর। ধনিয়াপাতা বেটে তাতে কয়েক চিমটি হলুদ গুঁড়া মেশান। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ২০-২৫ পর ধুয়ে ফেলুন।
৯) ১ লিটার পানিতে ২৫০ গ্রাম টাটকা নিমপাতা জ্বাল দিন। পানির পরিমাণ অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিতে থাকুন। এই পানি ছেঁকে ঠান্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই পানি পান করলে ব্রণ হবার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে।
১০)গোলাপজলের নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনি গুঁড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ব্রণের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
ব্রণের কালো-দাগ দূর করার উপায়ঃ
অনেকেরই মুখে দেখা যায় ব্রণ ও কালো ছোপ ছোপ দাগ। এ জাতীয় ব্রণ ও কালো দাগ হলে প্রথম থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। ত্বকের ক্ষেত্রে অবহেলার ফল মারাত্নক হতে পারে। আর নষ্ট করে দিতে পারে আপনার সুন্দর চেহারার সৌন্দর্য মুখের এসব কালো দাগ ও ব্রণ দূর করার জন্য বাড়তি একটু পরিচর্যা দরকার আরও কিছু টিপস নীচে দেওয়া হলঃ

*ব্রণের দাগ ও ব্রণের উপর লবঙ্গ বেটে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখবেন। ১ দিন পর পর টানা ১ মাস এভাবে লাগালে দাগ কমে যাবে। লবঙ্গে ঝাঁঝ থাকে বলে লাগানোর প্রথম ৫-৭ মিনিট ত্বক জ্বলবে, কিন্তু এতে ঘাবড়িয়ে যাবেন না। কিছুক্ষণ পর জ্বলা ঠিক হয়ে যাবে। প্রতিবার ই এমন হবে। লবঙ্গ বাটার সময় এতে একটু পানি মিশিয়ে নিবেন।
*২ চামচ বেসন, ১ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, ১ চা চামচ কমলার খোসা বাটা একসাথে মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এবার এটা মুখে ঘাড়ে মাখিয়ে রেখে ১৫-২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
*আপেল এবং কমলার খোসা একসাথে বেটে এর সাথে ১ চামচ দুধ, ডিমের সাদা অংশ এবং কমলার রস মেশান। এবার মিশ্রনটা ত্বকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
*পাকা পেঁপের শাঁস মুখে মেখে নিন। ১ চামচ পাকা পেঁপের শাঁস ও ১ চামচ শশার রস মুখে মেখে নিন। ত্বক উজ্জ্বল হবে।
*একটি ডিম, ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, একটি গোটা লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন, এটি নখ, গলা, হাত ও ঘাড়ের কালো ছোপে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের দাগ, হাত, ঘাড়ের কালো ছোপ ইত্যাদি সেরে যাবে।
*২ চা চামচ চিনা বাদাম বাটা, ২ চা চামচ দুধের সর মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ মিলিয়ে যাবে।

সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি। ভালো থাকবেন সবাই।

২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×