আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল কিংবা অন্যকোনো ভিনদেশি পতাকা লাগিয়ে আমরা কিছু মানুষ একটু ফুটবল উন্মাদনা প্রকাশ করলেই আপনাদের দেশপ্রেম মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।
দেশের বিশেষ কিছু দিন যখন জাতীয় পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক তখন আপনাদের দূরবীন দিয়েও পাওয়া যায়না।
আপনাদের সেদিনও পতাকা বা দেশের প্রতি সামান্য মমতা জাগেনা যে বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে, রস্তাঘাট সর্বত্র হাজারে হাজার দেশী পতাকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায় এবং মানষের পায়ে পদদলিত হতে থাকে।
বিশ্বকাপ এলেই কেউ কেউ এসে আহাউহু করেন টাকার শ্রাদ্ধ হচ্ছে বলে। পতাকা না বানিয়ে এই টাকা দিয়ে কি কি করা যেতো তার ক্যালকুলেশন করে অর্থনীতিবিদ বনে যান অনেকেই।
তাদের কাছে প্রশ্ন, আচ্ছা এই টাকা তো ঘুরেফিরে দেশের অর্থনীতিতেই লাগছ, পাড়ামহল্লার দর্জিরা কিছু অতিরিক্ত টাকা ইনকাম করছে পতাকা বানানো উপলক্ষ্যে। বিষয়টা কি ভেবে দেখেছেন?
আপনাদের আস্ফালন শুনে মনে হয়, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল থেকে পতাকার কাপড় কিনে নিয়ে আসা হয়। অথচ পতাকার কাপড়টা কিন্তু সলিড বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরাই পকেটে ভরছেন। পারলে সেই ব্যবসায়ীদের গিয়ে বলুন লাভের কিছু টাকা মানবতার পথে ব্যয় করতে।
অনেক মানবতাবাদীরা হায়হায় করে মাথা ফাটিয়ে বলেন, এই টাকা দিয়ে এতিমদের দুবেলা খাওয়ানো যেতো, দুস্থদের ঈদে কাপড় হতো ইত্যাদি ইত্যাদি। হাজারটা জটিলতাপূর্ণ জীবনে সামান্য বিনোদন লাভের আশায় কেউ দুই পয়সা উড়িয়ে দিলেই আপনাদের হাপিত্যেস শুরু হয়ে যায় আর দেশের কোটিকোটি টাকা লুটেরাদের নিয়ে কিছু বলতে গেলেই আপনাদের দলান্ধতা বেরিয়ে আসে। আসলে তাদের ব্যপারে বলতে ভয় পান কিংবা নিজেদের দলীয় আপনা মানুষ তাই চুপ থাকেন। আসলেই যদি দেশপ্রেমিক হতেন তাহলে প্রশ্ন ভিনদেশী পতাকায় মাথা না ঘামিয়ে মাথা ঘামাতেন ভিনদেশে বাংলাদেশী একজন ছাত্র যার উপার্জনের কোনো প্রমাণ নেই সে কিভাবে ২০০-৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে? ২০০-৩০০ কোটি টাকায় আপনার নজর নেই কারণ সে বড় মানুষের বড় সন্তান। আপনি দেশপ্রেম দেখাতে আসবেন আমাদের ২০০-৩০০ টাকার পতাকার নির্ভেজাল বিনোদনে।
সম্মানিত দেশপ্রেমিকগণ ক্ষমা করবেন কারণ আপনাদের চোখে আমরা আজীবন বিদেশপ্রেমিকই থেকে যাবো।