..প্রত্যেকের ব্যাপারেই এমনটা ঘটে কিনা জানিনা, আমার ঘটেছে। আমার এমন কিছু পছন্দ আছে যেগুলো একদম জন্মগত। বোঝার বয়স হয়নি, কিন্তু ভালো লাগতো, খুব টানতো। যখন একটু ভালো মন্দ বোঝার বয়স হল তখন হয়তো দু একটা পছন্দ পরিবর্তন হয়েছে। তবে কিছু পছন্দ আছে যেগুলো মনে হয় সারা জীবনই সজীব থাকবে।
ফুটবলের কথাই ধরা যাক।
আমি ব্রাজিলের সাপোর্টার, যখন বুঝতাম না কিছু, তখনও কাকা, রোনালদো কে নিয়ে লম্ফ ঝম্ফ করতাম। ব্রাজিলকেই যেন আমার সাপোর্ট করতে হবে। অন্য কোন দল মন টানেনা। এখনো করি।
ঐ পছন্দগুলোর একটি হল,
আমার প্রিয়কবি, প্রিয়গান সবই হতে হবে নজরুল কেন্দ্রিক। ছোটবেলায় নজরুলের ইসলামী গানই আমাকে প্রথম অসম্ভব আকর্ষণ করেছিল। ফিরোজা বেগমের কন্ঠে। উনি এখন এপোলো হসপিটালে চিকিৎসাধীন আছেন। দোয়া চাইছি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন। উনিই একমাত্র কিংবদন্তি যিনি নজরুল ইসলাম কে তার গান একদম অল্প বয়সে শুনিয়ে ছিলেন। নজরুল বিস্মিত দৃষ্টিতে বলেছিলেন, “..এই মেয়ে এই বয়সেই কত অসাধারণ গায়, বড় হলে জানি কেমন গাবে!”
..হে নামাজী আমার ঘড়ে নামাজ পড় আজ
পেতে দিলাম তোমার চরণ তলে হৃদয় জায়নামাজ।
..মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই।
যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।
কি অসাধারন কথা আর সুর গান গুলোর। ভাবছি নজরুল যদি না আসতেন তো, ও মন রমজানেরই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ…এই খুসির গানটা কোথায় পেতাম? যে গান ঈদের খুশিকে আরো দ্বিগুন বাড়িয়ে দেয়..।
মাত্র দশম শ্রেনী পর্যন্ত পরা একটা মানুষের এই প্রতিভা আমাকে বার বার বিস্মিত করে।আজকাল তো বাংলায় অনার্স করেও ঠিকমতো অনেকে বাংলা জানে না।
রবীন্দ্র নাথ একজন,
যিনি বাংলা সাহিত্যের গৃহটি শক্ত হাতে নির্মাণ করেছেন। নির্মানের পর বাড়িটিকে কাজী নজরুল ইসলাম তার আপন রাঙে আরো রাঙিয়ে তুলেছেন। ক্ষনজন্মা মানুষটি না আসলে মহকাব্য যে অসম্পুর্ণই থেকেই যেতো…..ভালবাসি নজরুল।