somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানবতাবোধহীন লক্ষ্যচ্যুত ডাক্তারের সংখ্যাই কি আজ বেশি?

২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ৩:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বয়ষ্ক মানুষ দেখলে সাধারনত সে রিক্শায় উঠিনা কারন সিটে বসে তাঁর হাপিয়ে হাপিয়ে প্যাডেল চালানোটা দেখতে কষ্ট হয়। সেদিন এক বড় ভাইয়ার সাথে ছিলাম। প্রবর্তক থেকে চকবাজার রিকশা করে যাবো। ভাইয়া কথা বলতে বলতেই খেয়াল না করে রিকশা একটা ঠিক করলো। উ্ঠার পর্ খেয়াল করলাম উনি বয়ষ্ক। বয়সের ভারে নুয়ে পরছে, কিন্তু পেট তো আর বয়স মানেনা; সে আজন্ম ক্ষুধা নিয়ে এসেছে। ভাবলাম উঠেই যখন পরেছি চলে যাই, টাকা কিছু বাড়িয়ে দিবো।
খুব কষ্ট করেই রিকশা টানছিল। যেতে যেতে হঠাৎ একটা গাছের ছায়ার রিকশাটা থামালো। রিকশা থেকে নেমেই মাটিতে বসে খুব হাপাতে শুরু করল।আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম।
জিজ্ঞেস করলাম,
কি হয়েছে চাচা? খারাপ লাগছে? শরীর খারাপ?

-হ বাবা, কোমরের নিচে দুই পাশে দুইডা ফোড়া উটসে।

: ডাক্তারের কাছে যান নাই?

- গেসিলাম।ডাক্তারের দুইডা ফাও(পা) ধরসি ওষুদের লাইগ্গা। দেয়নাই, কয় ২০০ টেহা আন, তারপর দেখুম। ২০০টেহা জোগার করবার আইসি। রাগ কইরেনা না বাবা, একটু জিরায় লই।

কথাগুলো শুনে খুব খারাপ লাগলো। সাথে সাথেই দুজন রিকশা থেকে নেমে গেলাম। তাকে কিছু টাকা দিয়ে বললাম ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খান। আজকে আর চালাইয়েন না।

ভাবছি ডাক্তাররা কি আসলেই অনুভুতি শুন্য? এই বুড়ো মানুষটার জন্য একটুও দয়া হয়নি ঐ বেটার? যে পেশার মুলনীতিই মানুষের সেবা করা, তাদেরই যদি সামান্যতম মানবতাবোধ না থাকে তো আর কার কাছে আশা করা যায়..এই অবহেলা কি "ডাক্তার"’” নামের অপমান না?

আসলে এখন ডাক্তারি পড়ার মুল লক্ষ্য হয়ে দাড়িয়েছে টাকা বানানো। আর যেখানে অর্থ ঢুকে পড়েছে, সেখানে মানবতাবোধের কোন স্থান না থাকাটা স্বাভাবিক।

একটা ঘটনা বলি।
যখন মেস এ থাকতাম, একজন ছিল ম্যাডিকেল স্টুডেন্ট যে ঢাকা থেকে চিটাগাং এসেছে পড়তে । তাকে যখন জিজ্ঞাস করতাম সে ডাক্তারি কেন পড়ছে, সে নির্দ্বিধায় উত্তর দিতো এই পেশায় টাকা বেশি আয় করা যায় তাই।

তার মানবতার একটা উদাহরণ দেই। একদিন রাতে পাশের রুমের এ্ক বড় ভা্ইয়ার কানের ভেতর ঘুমের মধ্যেই একটা ছোট পোকা ঢুকেছে। ব্যাপারটা হাস্যকর হলেও ভয়ানক ছিল। কোন ভাবেই সেই পোকা বের হচ্ছে না। এবার রুম থেকে বেড় হয়ে হাকডাক শুরু করে দিল। স্বভাবতই এই বিপদে প্রথমে ডাক্তারের কথাই আগে মনে পরে। তাকে মনে পরেছিল কারণ হাসপাতালে সে সাথে গেলে সুবিধা হবে। তো ডাক্তারের রুমে টোকা দিচ্ছেন। কিন্তু ডাক্তার তো উঠেনা। কানে যে হেডফোন লাগিয়ে ঘুমিয়েছেন। যাক ফোন টোন দিয়ে তুললেন কোন ভাবে।

:ভাই আমার কানের ভেতরে কি পোকা একটা ঢুকল আর বের হচ্ছেনা। তুমি একটু আসবে আমার সাথে হাসপাতালে?

-সরি ভাই আমারতো কালকে একটা ভাইবা আছে, যাইতে পরবোনা।

কি সোজা উত্তর। কোনভাবেই আর কনভিন্স করানো গেলোনা ডাক্তার সাহেবকে।ভাবছি এই সময়ে তার ভা্ইবার কথাই মনে পড়তে হল?

বাধ্য হয়েই আমার রুমে টোকা দিলেন।

-ও মাহফুজ! ও মাহফুজ! দড়জাটা খোল। আমি মারুফ।

আমি হন্তদন্ত হয়ে দড়জা খুললাম।উনার লাফালাফি দেখে তাড়াতাড়ি প্যান্ট পরলাম। চলেন ভাই চলেন।আমি বুঝতে পাড়ছি আপনার কানের ভেতর কি চলছে।সাধারণ একটা পিপড়া ঢুকলেই কি অসহ্য লাগে, আর সেখানে একটা পোকা। মনে হবে একটা হাতি ঢুকে তান্ডব চালাচ্ছে।

রেডি হেয়ে বের হব এমন সময় ভাইয়ার কান থেকে ফুড়ুৎ করে পোকাটা বের হল। দেখে তো অবাক, এত বড় পোকা কানে ঢোকে কিভাবে?
পানি খেয়ে কানে তুলা দিয়ে ঘুমাতে বললাম। যাতে আর ঢুকতে না পারে:P

রুমে ঢুকে রুমমেট সহ দুজন হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেলাম কিছুক্ষন।

ইন্জিনিয়ারদের কি পরিমান ক্লাস ট্সে আর রিপোর্ট থাকে সেটা ইন্জিনিয়াররা ছাড়া আর কেউ জানেনা। আমারও তো ইক্সাম ছিল। কিন্তু এই বিপদে ইক্সামের কথা মাথায়ও আসেনি।
ডাক্তারের মাথায় আসলো কেন? কারন সে ভালো ডাক্তার হয়ে টাকা কামাবে।সুতরাং পরীক্ষা মিস দেয়া যাবেনা। আসলে এই জানোয়ার ভালো ডাক্তার হবে না, ভালো কসাই হবে।

যার ভেতর শুরুতেই মানবতার লেশ মাত্র নেই সে হবে ডাক্তার।তার মত কসাইয়ের ফি দিয়ে গিয়েই ওষুধ কেনার টাকা থাকবে না।
সুতরাং ফর্মেসির হাতুড়ে ডাক্তারই এই শ্রেনীর একমাত্র ভরশা। যারা সব অসুখেই বলে, প্যারাসিটামল দুইবেলা...।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ৩:৪৭
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×