একবার আমাদের পাশের গ্রামের এক লোক মেম্বার নির্বাচিত হয়েছে। আসমান মিঞা। টেরা চোখে ঘন ঘন পাতি ফেলত। শত ভাগ ব-কলম। কোথাও স্বাক্ষর টাক্ষরের ব্যাপার থাকলে বউকে সাথে নিয়ে যেত। কারন বউ তার আট কেলাশ কম মেট্রিক পাশ। একবার একলোক গেছে তার বাড়িতে "গরুর রশিদ" স্বাক্ষর করাতে। মেম্বার তার বউকে দিয়ে কাজটা করিয়েছিল।
মেম্বার কিন্তু নিজের ইচ্ছায় নির্বাচনে দাড়াতে চায়নি। গ্রামের মাতব্বরেরা ষরযন্ত্র করে তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহন করিয়েছিল যাতে প্রতিপক্ষ সহজেই জিততে পারে। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে আসমান মিঞা নির্বাচিত হয়ে গেল।
তো এই ব্যাক্তি নির্বাচিত হবার পর এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ বক্তব্য দিবে। মঞ্চের উপর উঠে মাইকের সামনে দাড়াল। তার কাপুনির চোটে মঞ্চ সুদ্ধ কাপার জোগার। ভাষন শুরু করল,
: এ্যএ্যএ্য..বাইসব..আফনেরা আমারে..আফনেরা আমারে..এ্যএ্যএ্য..আফনেরা আমারে..
ঐইটুকুই শোনা যাচ্ছিল, তারপর আর কোন লাইন বেরোয় না।
বিরক্ত শ্রোতারা ওপাশ থেকে চিতকার করছে,
-ঐ হালার ফুত, আমরা তরে কিতা করসি কসনা???
বেচারার ধন্যবাদ জ্ঞাপন ওখানেই RIP। থতমথ হয়ে কোন মতে শেষ করে সরে পড়ল।
পরবর্তীতে দেখা গেছে অক্ষর জ্ঞানহীন টেরা চোখের ঐ মেম্বারই এলাকার জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। যা আগের মেট্রিক পাশ মেম্বাররা করতে পারেনি। এমনকি নিজ কাধেঁ করে টিউবয়েল বয়ে নিয়ে গেছে গ্রামের মানুষদের জন্য। মসজিদের জন্য। কারন মেম্বার হবার আগে ক্ষেতে খামারে কাজ করে খেত। মানুষদের সমস্যাগুলোও সেকারনে তার চোখে ধরা পরত সহজে। শেষের দিকে সবার কাছে খুব প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছিল সেই ব-কলম আসমান মিঞা।
ফুটনোট:
জাতীয় সংসদের সাংসদেরা কিন্তু সেই ব-কলম আসমান মিঞার মত না। তারা বক্তব্য দিতে গিয়ে নিজের গলা ফাটিয়ে সংসদের মাইক শুদ্ধ ফাটিয়ে দিতে পারেন। তারা আসমান মিঞায় মত অত গরীব না।
ওহ! তারা কিন্তু আসমান মিয়ার মতো টেরাও না।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




