somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের শিক্ষাব্যাবস্থা ও ভর্তি বানিজ্য....

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বহু দিন আগের কথা,
যৌনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য
আমরা ৭ বন্ধু ভর্তি পরিক্ষা দিলাম।
.
কিন্তু রেজাল্টের দিন আমার আর
সায়েম সাহেবের নাম আসল ওয়েটিং লিষ্টে।
ওয়েটিং লিষ্টে নিজের নাম দেখিয়া
মন চাইল নোটিশ বোর্ড টা গুম কইরালাই... :-/
.
কিন্তু কি আর করব, ১০০+ আসনের জন্য
ওয়েটিং লিষ্টে ৩৫০+ পুলাপান দেইখা
আমি আবুল বাল, সরি মাল হয়ে গেলাম।
.
অনিশ্চয়তার মাঝে ঝুলে আছি আমি,
আমার ঝুলা ঝুলি দেইখা যৌনিক দুস্থ কহিল,
দোস্ত তুই এখানে ভর্তি হইতে না
পারলে আমরাও এখানে ভর্তি হমুনা...
.
তুই অন্তত ওয়েটিং লিষ্টেরর থেকে পাশ
করার জন্য মৌখিক পরিক্ষাটা দে।
.
তো মৌখিক পরিক্ষার দিন গেলাম।
রোল নাম্বার অনুযায়ী সিরিয়ালে বেঞ্চে বসলাম।
.
আমার সামনে বসল একজন সুন্দরী
নিশ্চিত ধণ-ই বাপের আহ্লাদি মেয়ে।
ওর রোল ১৪১ আমার ১৪২।
.
হেতি আমার সাথে বইসা পরিক্ষা দিবে
এমন জানলে তো সকাল সকাল এসেই বসে থাকতাম। :-)
ভাবতেছি ওয়েটিং লিষ্টে থেকে লাভ ই হইছে... :-)
.
তো একটু পর ললনার কাছে ঘেষিয়া জিজ্ঞাসিলামঃ
.
- প্রস্তুতি কেমন...??
- ভালই, তবে খারাপ হলেও সমস্যা নাই,
আমার আব্বু এখানে সব বলে রাখছে
তাই টেনশন মুক্ত। তোমার...??
.
- এই আছে মোটামুটি,
গরিবের ছেলে কত আশা নিয়ে আসলাম
এখানে পড়ব। কিন্তু দেখ তোমার মত
আমিও ঝুলে আছি, তোমার তো আব্বু সব
করে দিবে আমার তো কেউ নাই চান্স না
পাইলে আমার আর পড়াই হবেনা।
.
- কেন পড়বানা..??
- অনেক টাকা খরচ করে প্রাইভেটে
পড়ার সামর্থ্য আমার নাই তাই। :-(
.
- ও আচ্ছ, আমি দেখি কিছু করা যায় কিনা।
.
কিছুক্ষন পর ধণ-ই বাপের আহ্লাদি
মেয়ে সহ আমাদের ৩ জনকে
মৌখিক পরিক্ষার জন্য ডাক দিল।
.
তারপর আহ্লাদি'কে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছেঃ
.
- তোমার নাম কি...?
- প্রিয়াংকা মজুমদার।
- বাবা কি এডভুকেট সমরেশ মজুমদার..??
(আগে থেকেই ম্যানেজ করা)
- জি স্যার...
- এখন কি কোয়াটারে থাক..??
- জি না স্যার নিজেদের ফ্লাটে উঠলাম।
- আম্মু কেমন আছে..??
- ভাল স্যার।
.
তো আহ্লাদির প্রশ্ন শুনিয়া,
মনে মনে খুব আনন্দিত হইলাম।
আর আমি ভাবলাম কি না কি জিগায়,
আর এখন দেখি ফ্যামেলীর খোজ খবর নেয়। :-)
.
হুহাহাহা, তাইলে নিশ্চিত আমিও পাশ দিমুই।
কারন বাপে মা'য়ের নাম তো মুখাস্ত।
.
তারপর আমাকে জিজ্ঞাসিতেছেঃ
- নাম কি..??
- মামুন রহমান।
- ঈশ্বরচন্দ্রের বাবার নাম কি..??
.
(দেখছেন মাইয়ারে জিগায় ওর বাপের নাম
আর আমাকে জিগায় ঈশ্বরচন্দ্রের বাবার নাম :'( )
.
- স্যার মনে নেই...
তবে কোন ক্লাশে যানি পড়ছি।
.
- থাক আর মনে করা লাগবেনা,
এবার বল ২০০৩ সালে শান্তিতে নো"বেইল পাইছে কে..??
.
(হায় হায় স্যার কি আমাকে দিয়ে
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করিতে চায় নাকি ) :-)
.
- স্যার বিষয় ভিত্তিক কিছু জিজ্ঞেস করেন...
আমি উত্তর দিতে পারব।
.
- তো বল সফটওয়্যার খালি চোখে দেখা যায় না কেন....??
.
(আমি বুজ্জালাইছি এখানে আমার ভর্তি হবেনা,
কারন মাইক্রো সফটের "বিলগেটস" কাকায় ও
এটা ভাবে নাই। তো আমিও উত্তর দিলাম)
.
- মানুষের চোখ ফোরটুয়ান্টি (420) মেগাপিক্সেলের না
তাই সফটওয়্যার দেখা যায় না।
- মানে কি..??
.
- মানে হল স্যার, যেহেতু ক্যামেরার লেন্সের
মেগাপিক্সেল অনুযায়ী মানুষের চোখ ৩৫৬ মেগাপিক্সেল।
সেহেতু সফটওয়্যার দেখতে আমাদের 420+
মেগাপিক্সেলের চোখ লাগবে
তাই সফটওয়্যার না দেখেই আমরা শুধু হাতাই টিপাটিপি করি... :-)
.
- আমার সাথে কি ফাজলামি কর..??
.
- না স্যার সব জানিনা বলেই তো শিখতে আসলাম,
আচ্চা স্যার আপনি বলেন তো
ইনফুট আর আউটফুট বলতে কি বুঝেন,
আর এটা কিভাবে তাদের কার্য সম্পাদন করে...?? :-)
.
- আমি তোমার এক্সাম নিতে আসলাম,
তুমি না। Goo Away..
.
তো আর কি করা চলে আসলাম
এটা শুধু আমার সাথেই ঘটেনাই।
তখন মৌখিকের অনেকের সাথেই এমন ঘটল।
.
এ হল তখনকার অবস্থা,
আর বর্তমানে কি হয় আপনারা তো জানেন ই...
কদিন আগে ঢাবি'র প্রশ্ন ফাঁস গ্রেফতার কৃতরাই স্বীকার করল ৪ লাখ টাকা দিলেই
ওরা কাম সারাইয়া দেয়... :-D
.
মামু, খালু, টাকা থাকলেই আপনি পাস।
পরিক্ষার আগে প্রশ্ন FUCK হয়ে যায়। :-)
আর ধণ-ইর দুলালেরা কিনে নেয়।
আর আমরা গরিব গুলা নাম্বারের ব্যবধানে চান্স হারাই।
.
.
.
তবে বর্তমানে মৌখিকে মেয়েদের ব্যাপারটা আলাদা,
স্যারের সামনে ৯০ ডিগ্রী ঝুকিয়া বসিলেই পাশ... :-)
.
আমার খুব বিশ্বস্থ লোক গেল মৌখিক পরিক্ষা দিতে।
তো তার সামনে ২ টা মেয়ে বোরখা নেকাপ ছাড়াই
আসল।
তাদের তাদের মোটামুটি সহজ
বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন করেই ছেড়ে দিল।
.
আর ইনি বোরখা নেকাপ সহই গেল,
আর তখন
ওকে জিজ্ঞেস করে যত্ত
ফাউল আজে বাজে প্রশ্ন।
.
এই হল আমাদের শিক্ষাব্যাবস্থার অবস্থা,
এদের কাছে থেকে আমরা কি শিক্ষব।
বর্তমানের বেশিরভাগ সালাই এক একটা "পরিমল ছাত্রী ধর" :-/
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×