দীপ ও নীলা। অনেকদিনের সাইবারের বন্ধু। বছর দুই আগে আলাপ হয়েছিল ওদের ফেসবুকের মাধ্যমে...নিছক প্রোফাইল সার্ফ করতে করতেই চোখে পড়ে যায় একে অপরের ছবি। কিছু ইনটারেস্টিং কথা পড়ে ভালো লেগে যায় ওদের নিজেদের। আর তারপর থেকেই চলতে থাকে প্রেম পর্ব, হতে থাকে জীবনের নানা শেয়ারিং। শিপিং করে আদান প্রদান ও হয় অনেক উপহার। দীপ থাকে সিয়াটেল’এ আর নীলা ঢাকার আড্ডাবাজ তনয়া। এই দু'বছরের সম্পর্কে যোগাযোগ হয়েছে ফোনে, চ্যাটে, স্কাইপেও..তবে দেখা হয়নি একটিবারের জন্যও।
এবারের শীতকালে দীপের ঢাকা আসা নিয়ে ওরা দুজনেই ছিল উত্তেজিত। কিন্তু, কাফে কফি ডে’র স্বচ্ছ কাঁচের ভেতরে বসে যেদিন প্রথম দেখা হলো ওদের, সেদিন দুজনেরই মুখে যেন কুলুপ এঁটেছিল...চোখের চাহনি সবসময় নীচের দিকেই আটকিয়ে ছিল যেন। যদিও বা একটু আধটু কথা হল তাও ক্ষীণ স্বরে...হোঁচট খেয়ে খেয়ে। সাইবারের জগতে ওরা এত স্বচ্ছভাবে যেমনটা আদানপ্রদান করে ফেলতো নিজেদের মনের কথা, যতটা হাল্কাভাবে দেখিয়ে ফেলতো নিজেদের মধ্যেকার আবেগ-রাগ-অনুরাগ...তার কোনোটাই ওরা সেদিনের সামনাসামনি দেখা হওয়ায় করতে পারল না। কিসের এক অজানা লজ্জা যেন বাধ সাজলো ওদের কথপোকথনে।
সাইবার স্পেসে ক্রমাগত নাড়াচাড়া, কথাবার্তা বলা ও সার্ফ করতে করতে ওদের মতো অনেকেই এখন হয়ে উঠছে ওয়েব ডিপেনডেন্ট। নেট বা কম্পিউটারের জগৎ ছাড়া আর অন্য সকল মাধ্যমেই যেন একটু পিছিয়ে, একটু থমকে যাচ্ছে এই সময়ের মানব-মানবী। চ্যাট বা স্কাইপ, টেক্সট, ই-মেল এসব মাধ্যমের ওপর এতোতাই নির্ভরশীল হয়ে উঠছে ওরা, যে বাস্তবজীবনের সাধারণতার মুখোমুখি হলে, হয়ে যাচ্ছে বাকরুদ্ধ, ভুলে যাচ্ছে আচরণের নিয়মকানুন...কমে যাচ্ছে সাবলীল কথপোকথনের নদীর গতিপথ।
দীপ-নীলার কেস-স্টাডিটা ছিল এই নতুন রোগে ভুগতে থাকা মানুষদের একটি ঘটনা মাত্র। ওদের মতো বেশিরভাগ মানুষই দিনে দিনে হয়ে পড়ছেন প্রযুক্তির ওপরে চরম নির্ভরশীল। সায়েন্সের প্রবল উন্নতি আর প্রাত্যহিক জীবনের অসম্ভব ব্যাস্ততার কারণেই দিনের সর্বোচ্চ সময়টি আমরা কাটিয়ে ফেলছি নানান প্রযুক্তির ছোঁয়ায়। ফলে মনের সঙ্গে কথা বলা বা প্রযুক্তির কোনো সাহায্য ছাড়া নিছক প্রেম-ভালোবাসা-কথপোকথন-ঝগড়া কিম্বা শেয়ারিং করা-কোনোটাই ঠিক করতে সক্ষম নই আর।
এতে হারিয়ে যাচ্ছে সামনাসামনি কথা বলার সাবলীলতা। ‘Science Daily’তে প্রকাশ হওয়া একটি নিবন্ধ থেকে জানা যাচ্ছে, অতিরিক্ত সময় ইন্টারনেটে ব্যবহারের ফলে একজন মানুষের পরিবার ও পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ ও কথাবার্তা কমে যাচ্ছে। জেনিফার আর ফেরিসের মতো মনস্তাত্বিকদের মতে অধিক ইন্টারনেট আশক্তি একটি মানসিক অসুস্থতা, যার লক্ষনগুলি সত্য ও বর্ণনাযোগ্য। তাই রোবোট হওয়া থেকে বিরত হতে হলে, কথার পিঠে কথা সাজিয়ে সহজ কথপোকথন চালিয়ে যেতে হলে-ফিরতে হবে বাস্তব দুনিয়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাজের দরকার ছাড়া অহেতুক ওয়েব জগতে না ঘুরে, উঁকি মেরে দেখে নিতে হবে নিজের চারপাশটাকে, চিনে নিতে হবে মনের রঙমহলটিকে। তাতেই ‘কথায় কথায় রাত’ হবে। সূত্র: ওয়েবসাইট।
আলোচিত ব্লগ
আমাদের জাতির কপালে শনি আছে

একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তারা বলেছে স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব না, সুতরাং ভারতের অধীন হওয়ার চেয়ে পাকিস্তানের অধীন থাকা ভালো। তারা মনে করেছে অধীকাংশ নাগরিক তাদের দলে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?
হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?
জুলাই আন্দোলনে তিনি প্রথম সারির নেতা ছিলেন না , তাকে কেউ চিনতো না কয়েক মাস আগে ও ।
জুলাই জংগীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।
মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে
আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[
স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ৩০ দেশের দুষ্ট আমেরিকান রাষ্ট্রদুত বদলায়ে দিচ্ছে!

আইয়ুব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার পর, বাংগালীদের লাথি খেয়ে সরেছে; জিয়া, কর্নেল তাহের ও জাসদের গণ বাহিনী আমাদের দেশকে নরক (১৯৭৫ সাল ) বানিয়ে নিজেরা নরকে গেছে। আমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।