somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দৃঢ় চরিত্রের মুক্তমনা কেউ বাংলা একাডেমির দায়িত্ব নিনঃ

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব শামছুজ্জামান খানের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলা অবান্তর।নিঃসন্দেহে তিনি একজন যোগ্য ও প্রগতিশীল মানুষ।কিন্তু মুক্তমনা জাগরণে বাংলাদেশ যে সন্ধিখানে দাড়িয়ে সেখানে তিনি কতটা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন তা আমাদের ভাবতে হবে।

নাস্তিকতা ,মুক্তমনা সব সমাজে সবসময় ছিল।বিশ্ব ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় বিভিন্ন ধর্ম আশ্রিত মানুষ দ্বারা নাস্তিক,মুক্তমনা মানুষেরা নিষ্পেষিত হয়েছে,তাদের হত্যা করা হয়েছে।অনেক ধর্ম আজ সহনীয় পর্যায়ে গেলেও ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসী মানুষজন এখন সেই সমাজে বাস করছে।চলছে তাদের দোর্দাণ্ড দাপট। সারা বিশ্বময় ইসলাম এক আতঙ্কের নাম।যে সব দেশে মুসলমানদের সংখ্যা কম তারা একপ্রকার নিরাপত্তা বোধ করলেও আতঙ্কে আছে।বর্তমান গ্লোবার বিশ্বে সম্পূর্ণ আলাদা থাকাটা একেবারেই কঠিন। বিভিন্ন দেশে চলছে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের অবাধ অনুপ্রবেশ। কিন্তু ইসলাম বিশ্বাসী মানুষজন ভিতরে ইসলাম নামক যে বিষ নেয়ে প্রবেশ করছে তারা একসময় সহিংস হয়ে উঠছে।সাম্প্রতিক ফ্রান্সে যে উগ্রবাদী হামলা তা থেকে সহযেই অনুমেয়।ইসলামপ্রধান দেশ বাদে প্রত্যেক দেশ আজ তারে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করছে।তারা হয়ত চেষ্টা করে কিছুটা ভাল থাকছে বা ভাল থাকা চেষ্টা করছে কিন্তু ইসলাম প্রধান দেশে চলছে এর অবাধ চাষ।বিষয়টি এতই বেগবান যে রাষ্ট্রের প্রধানগণও মুক্তমনা হওয়া সত্তেও ভিতরে যাই থাকুক না কেন, বাইরে ধর্মের মোড়ক পড়তে বাধ্য হচ্ছেন।অনেক ক্ষেত্রে তারা মুক্তমনা মানুষকেও শাস্তি দিতে বাধ্য হচ্ছে।আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়টি দেখলে বোঝা যায়।

এমনই এক পরিস্থতিতে বাংলাদেশে মুক্তমনার চর্চা চলছে।মুক্তমনাদের সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা সমাজে বিদ্যমান ছিল হুমাউন আজাদ,রাজিব,বাবু,অভিজিত, দীপন,নীলয়েরা জীবন দিয়ে এক শুভ্র ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছে।মুক্তমনা/নাস্তিক মানুষ যে আসলে আদর্শবান, সৎ, কুসংস্কারমুক্ত, মানবতাবাদ, বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ তা অনেকটা প্রতিষ্ঠিত।ধর্মের নোংরা ও হিংস্র হাত যতই সহিংস হয়ে এগিয়ে আসুক না কেন,মুক্তমনাদের সম্পর্কে মানুষের ধারণা তত পরিবর্তিত হচ্ছে।

হুমাউন আজাদ,রাজিব,বাবু,অভিজিত, দীপন,নীলয়ের প্রত্যেকের নৃসংশহ হত্যা আমাদের কাঁদিয়েছে ,আমরা যা হারিয়েছি তা পূরণ হওয়ার নয়।তবু যুগ যুগের দৃষ্টান্ত দেখলে দেখা যায় এভাবে কিছু মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে একটা সভ্যতা জেগে উঠেছে এবং পরবর্তী প্রজন্ম তার সুফল ভোগ করেছে।

আমাদের দেশে মুক্তমনা/নাস্তিকতা/মানবতার প্রসারে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে বাংলা একাডেমি।আমাদের বাংলা একাডেমি সত্যিকারের কী কাজ করে তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ আছে।একটা প্রতিষ্ঠান আছে,রুটিন কাজ করে, এটা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজ সম্ভব নয়।কেউ কেউ হয়ত করছে-সেটা বাংলা একাডেমির চেয়ে ঐ ব্যক্তির একাগ্রতার জন্য।তাছাড়া প্রতিষ্ঠান থাকলে দু‘চারটি কাজ ত হয়ই। কিন্তু কোন দেশের একটা সমাজকে দ্রুত পরিবর্তনের জন্য এটা তেমন কাজের নয়।

আমাদের বাংলা একাডেমি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে তা হল প্রতিবছর বইমেলার আয়োজন।বইমেলা সম্পর্কে বেশি কিছু বলার নেই।দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আমাদের বইমেলা যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অন্যকে পথ দেখিয়ে চলছে তা আজ স্বীকৃত।আমাদের মুক্তমনা প্রকাশের সবচেয়ে বড় মাধ্যম বই।মুক্তমনার অধিকাংশ মানুষ নিজের সৃষ্টিশীল চিন্তাকে বই আকারে অন্যের কাছে ছড়িয়ে দিতে চায়।আর বই মেলা তাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।তাই তাদের লেখাকে প্রকাশের ক্ষেত্রে বাংলা একাডমির বিশেষ ও অগ্রণী দায়িত্ব পালন করা উচিত।

সমাজে অসংখ্য খারাপ ধারণা থাকতে পারে।আলোকিত মানুষেরা তা নিরিসনে এগিয়ে আসবে একাই কাম্য।অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি-সবচেয়ে বড় বাধাটি সেখান থেকে আসছে ।কে কী বলল তাই নিয়ে চলছে-মুক্তমনার বইগুলো নিষিদ্ধ করা , প্রকাশনা বন্ধ করা। মুক্তমনারা সমাজে নিজের পরিচয় টুকু দিতেও ভয় পাচ্ছে। যেখানে বাংলা একাডেমি যেখানে এগিয়ে আসবে, পৃষ্ঠপোষকতা করবে-তা না আমরা উল্টা দেখছি তারাও ধর্মান্ধ মানুষের পথে হাঁটছে-তাদের কাজে সাহায্য করছে।

অথচ এগুলোকে ডিঙিয়ে আমাদের প্রয়োজন সত্য প্রকাশে অগ্রণী ভূমিকা রাখা।বাংলা একাডেমি নিজে যেখানে গবেষণা সমৃদ্ধ ও সৃষ্টিশীল বই প্রকাশে এগিয়ে আসবে- তা না করে তারা বরং যারা স্বউদ্যোগে এগিয়ে আসছে তাদের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। হুমাউন আজাদ, রাজিব,বাবু,অভিজিত, দীপন,নীলয়রা নিজের জীবন দিয়ে সে সত্য প্রকাশে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে-সেখানে প্রয়োজন আমাদের বিশেষ করে বাংলা একাডেমির অগ্রণী ভূমিকা।এজন্য প্রয়োজন একজন দৃঢ়চেতা মুক্তমনা মহাপরিচালকের।সকল বাধাকে ডিঙিয়ে যিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন।জনাব শামসুজ্জামানের মত ভদ্র নরম স্বভাবের মেরুদণ্ডহীন প্রথাগত লোক দিয়ে তা কী সম্ভব?

জনাব শামসুজ্জামান খান -দ্রুত বাংলাএকাডেমির মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করুন এবং দৃঢ় চরিত্রের মুক্তমনা কেউ বাংলা একাডেমির দায়িত্ব নিন।আলোকিত জাতি আপনার দিকে তাকিয়ে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×