ছবি অথবা গল্প উপন্যাসের চরিত্রগুলোর দুঃখ কষ্ট আমাদের ছুঁয়ে যায়! অধিকাংশ দর্শক, শ্রোতা, পাঠক/পাঠিকাদের মনে হয় 'যদি কিছু করা যেতো, আমার ক্ষমতা থাকতো এই অপরাধীদের শাস্তি দেবার, এই অসহায়দের কিছু সাহায্য করার'!
জোডিফস্টার অভিনীত 'এ্যাকিউজড্" ছবিতে সুবিচারের জন্য ধর্ষিতার সংগ্রাম, বিভূতিভুষন বন্দোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস "পথের পাঁচালী"র অপু দূর্গাদের অভাব গ্রস্থ সংসারের অনটন আর অসহায়ত্ব, বিভিন্ন ছায়াছবিতে অত্যাচারিত নায়ক, নায়িকার করুন পরিনতি - এগুলো আমরা ভুলতে পারিনা।
.
অথচ, যখন এই চরিত্রগুলো সিনেমা, গল্প উপন্যাস থেকে বেড়িয়ে বাস্তবে আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়, আমরা তাঁদের এড়িয়ে যাই। হয়তো ক্ষণিকের সহানুভূতি, দু চারটি আবেগঘন শব্দ অথবা আশ্বাস.. তার পর হারিয়ে যায় আমাদের বিস্মৃতির অতলে!!!
রাহেলা আখতার লিমা হত্যা মামলার শুনানি ছিলো ২৯শে অক্টোবর ২০০৭। সে শুনানিতে অনুপস্থিত ছিলেন সকল সাক্ষী! অত্যন্ত দুঃখজনক এই সংবাদটি তাৎক্ষনিক ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করেন ব্লগার ফয়সল নোই।ব্লগার বিপ্লব রহমান, বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোরে শুনানী ও মামলাটি বর্তমানে যেসকল বাঁধার সন্মূখীন হচ্ছে সেসম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে একটি চমৎকার রিপোর্ট প্রকাশ করেন ।
নিজের প্রিয়জনদের রাহেলার অবস্থানে কল্পনা করে শিউরে উঠি! নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করা হয় যাঁর প্রান, আজ মাত্র তিন বছর পর নিজের পরিবার পরিজনদের কাছে তাঁর স্মৃতি প্রায় মুছে গেছে! তাঁর হত্যাকারীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবার গরজ নেই কারো, মামলার শুনানীতে সাক্ষী দেবার আগ্রহ নেই কারো!
কোর্টে রাহেলা হত্যা মামলায় সাক্ষীদের অনুপস্থিতি প্রচন্ড মন খারাপ করে দিয়েছিলো। জানা ছিলো এমন হবে, তবু অসহনীয় মনে হয়! এই হতাশার মাঝে আলো দেখিয়েছেন, আমাদের দেশের সন্মানিত ও বরেন্য লেখক ডঃ মুহম্দ জাফর ইকবাল। তিনি আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন এবং কথা দিয়েছেন অচিরেই রাহেলার হত্যার বিচারের দাবীতে তাঁর শক্তিশালী কলম ধরবেন!
আমাদের প্রচেষ্টার ইতিবাচক দিক হলো তিন বছরে যে মামলাটি মৃতপ্রায় রূপ নিয়েছিলো, সামহোয়্যারইনব্লগে বিষয়টি তুলে ধরার পর বর্তমানে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিয়ে।
দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে বিদেশী সংস্থাদের চাপ প্রয়োগ স্বস্তিকর মনে হয়না। আমরা বাংলাদেশিরা যদি এধরনের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হই, তখন বিদেশিদের সাহায্য হয়তো প্রয়োজন হবে। কয়েকজন বিদেশি নাগরিক রাহেলা হত্যার বিচারের জন্য নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাঁদের মতো করে চেষ্টা করছেন, আমাদের সাথে আছেন। একটি পাশবিক বর্বর হত্যা কান্ডের বিচার আমরা স্বাভাবিক ভাবে করতে পারছিনা, মেনে নেয়া কষ্টকর!
সকলের প্রতি অনুরোধ, যে যেভাবে যতোটুকু পারেন.. নিজের অবস্থান থেকে সাহায্য করুন রাহেলা হত্যার সুবিচারের জন্য। সামহোয়্যারইনব্লগের ব্লগাররা বিভিন্ন পরামর্শ, পরিক্লপনা ও পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন, তাঁদের সাহায্য করুন। সুবিচার পেতে আপনার নিজস্ব উদ্যোগ থাকলে, স্বাগতম। আমরা আপনার পাশে থাকবো।
যাঁরা রাহেলা'র হত্যাকারীদের সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে এগিয়ে আসতে চান, তাঁদের জন্য:-
প্রবাসী সহ সকলের জন্য কিছু সুপরামর্শ, যোগাযোগের ঠিকানা এবং কিছুস্যাম্পল মেইল পোস্ট করেছেন ব্লগার মৃদুল, ব্লগার একরামুল শামীম ও ব্লগার জ্বিনের বাদশা। আপনারা সাধ্যমতো বিভিন্ন স্থানে রাহেলা হত্যার বিচার চেয়ে যোগাযোগ করুন।
আমরা সকলে মিলে চেষ্টা করলে হয়তো সুবিচার সম্ভব। সকলের উৎসাহ উদ্দীপনা এক সময় ঝিমিয়ে পরতে পারে, নিজেদের গরজে, নিজেদের বিবেকের তাগিদে কিছুটা সময় ব্যয় করে হলেও এই মামলাটিকে সাহায্য করুন প্লীজ।
নিজেরা উদ্যোগী হয়ে কিছু করতে চাইলেও স্বাগতম। সামহোয়্যারইন ব্লগে গৃহীত পদক্ষেপ ছাড়া, রাহেলার পক্ষে আপনাদের নিজস্ব কোন পরিকল্পনা থাকলে আমরা যথাসাধ্য সহযোগীতা করবো। কে, কোথায় বসে কি করছেন তা মূখ্য নয়- আমাদের সকলের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন- রাহেলার হত্যাকারীদের সমাজ থেকে বিতাড়িত করে আইনের আশ্রয়ে দেয়া, আইনগত ভাবে তাদের প্রাপ্য শাস্তি নিশ্চিত করা।
গত প্রায় একমাসের বেশি সময় বাংলাদেশে আইন ও শালিস কেন্দ্র, আইন ও বিচার বিভাগ সহ প্রশাসনের বিভিন্ন জনের সাথে রাহেলা বিষয়ে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ হয়েছে। প্রাপ্ত যেকোন তথ্য ও পরিচিত দিয়ে রাহেলা হত্যার সুবিচারের জন্য যাঁরা লড়াই করবেন, সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো।
প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছেন' "লিটন গ্রেফ্তার হবে"। তবে, এমন অসহায় দরিদ্র মেয়ের কথা কতো দিন তাঁরা মনে রাখবেন, তার উপর শোনা যায় ' কুলাঙ্গার লিটন' ভারতে পালিয়ে গেছে।
লিটনের সহযোগী নরকের কীটরা সমাজে মুক্ত ভাবে ঘুরছে। হয়তো আপনার আমার পরিবারের সজনদের আশে পাশে আছে ওরা, আমাদের পরিবারের যে মেয়েটি আজ রিক্সা অথবা গাড়িতে উঠেছেন, পথে হেঁটে গেছেন....হয়তো তাঁর পাশেই ছিলো এই নরপশুদের কেউ!!!! কে জানে কে কখন এই নরপশুদের শিকারে পরিনত হয়!
সকলের প্রতি অনুরোধ..পোস্ট স্টিকি আনস্টিকি'র সাথে যেন আমাদের সচেতনতার তারতম্য না হয়.. এই অন্যায়ের ভয়াবহতা, অপরাধীদের প্রাপ্য শাস্তি দিতে ব্যথর্ হলে তার কুফল যেন আমরা ভুলে না যাই.. আমরা সবাই যেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে রাহেলা হত্যার সুবিচারের জন্য চেষ্টা করে যাই....
সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ.. আপনার আরেকটু চেষ্টা করুন এই দরিদ্র হতভাগ্য নির্যাতিতা নারীর প্রতি করা অন্যায়ের কথা দেশবাসীকে মনে করিয়ে দিতে.. নিজেদের সাধ্যমতো লিখুন আপনার পত্রিকায়..
রাহেলা হত্যার বিচার চেয়ে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার প্রধানের কাছে আজ একটি অলাইন পিটিশন করা হয়েছে। সকলের প্রতি অনুরোধ, পিটিশনটিতে স্বাক্ষর করুন, পরিচিতদের স্বাক্ষর করতে বলুন। আপনার পরিচিত সকল গ্রুপমেইল, ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে দিন পিটিশনটি...
রাহেলা হত্যা মামলার দ্রুত সুবিচারের দাবী জানিয়ে অনলাইন পিটিশন
* * * * * * * * * * * * * * * * * * * * * *

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


