somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজে কানা পথ চিনেনা, পরকে ডাকে বারংবার..!!!

১৭ ই জুলাই, ২০০৮ সকাল ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা মনে হয় সবচেয়ে বেশি শঠতা করে থাকি নিজের সাথেই।



এই দুর্মূল্যের বাজারে দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ উর্দ্ধগতির সাথে তাল মিলিয়ে যেন মূল্যহীন হয়ে পড়ছে মানুষের জীবন, তার চেয়েও দ্রুত বেগে ঘটছে আমাদের মূল্যবোধের অধ:পতন আর অবক্ষয়। এসব কিছুর কারনেই হয়তো আমরা আজ শুধু বলার জন্য কথা বলি, কতোখানি মন থেকে বলি, কতোখানি সততা আর সত্য মেনে বলি তা নিতান্তই গৌণ এখানে।



আমাদের দেশের নেতা নেত্রী, শাসক গোষ্ঠি এই হঠকারিতায় সবচেয়ে এগিয়ে। আদর্শহীণতাই যেন তাঁদের আদর্শ!! মূল্যবোধহীন ব্যক্তিত্ত্বই তাঁদের সবচেয়ে বড় যোগ্যতা!



কেউ মুক্তিযুদ্ধ কে পূঁজি করে দেশবাসীর সাথে হঠকারিতা করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বোল তুলে মুখে ফেনা তুলে অথচ দেশপ্রেমের রেশ মাত্র নেই! ক্ষমতা আরোহনের ব্যর্থতা সইতে না পেরে নিমেষেই দেশের মর্যাদা ভূলিন্ঠিত করতে, দেশের অস্তিত্বকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে এতোটুকু দ্বিধা করেনা- দেশ বিদেশে ছুটে গিয়ে নিজের দেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে!! এমনই এদের মুক্তি যুদ্ধের চেতনা আর দেশ প্রেম!! শুধু তাই নয়, দলের নেত্রীকে দেশে ফিরতে দেয়া হবেনা শুনে মরিয়া হয়ে উঠে সকল সমর্থক। ছুটোছুটি শুরু হয় আমেরিকা, ইংল্যান্ডের ছোট বড় নেতানেত্রীদের কাছে করুণা ভিক্ষার জন্য! আবেগঘন কন্ঠে নেত্রী জানান, "জেল হবে, ফাঁসী হবে.. যা কিছুই হোক আমি মাথা পেতে নিবো। তবু দেশেই থাকবো, দেশের বাইরে নয়"। তাঁকে যখন দেশে ফিরতে দেয়া হলো, কারাগারে নেবার সাথে সাথেই অস্থিরতা শুরু হলো দেশ ত্যাগের, শেষ পর্যন্ত দেশ ত্যাগ করে শান্তি। শোনা যায় এখন আত্মীয় সজনদের বিয়ে সহ বিভিন্ন আনন্দ উৎসব উদযাপনে নেত্রীর ইউরোপ আমেরিকায় ঘুরে বেড়ানোর কথা। মিথ্যা বলায় পারদর্শীতা আর এই নির্লজ্জতাই হয়তো তাঁদের সবচেয়ে বড় শক্তি!!!



আরেকটি প্রধান দল ও নেতা কর্মীদের অবস্থা তথৈবচ! "জিয়ার আদর্শ" আর স্বপ্নের কথা বলে মুখে ফেনা তোলা দলটির নেতা কর্মীদের মাঝে দূর্নীতির নজিরবিহীন চর্চা! দেশের মানুষ সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজি থেকে মুক্তির লক্ষ্যে অনেক আশা নিয়ে দ্বিতীয়বার দলটিকে নির্বাচিত করে নেত্রীর সুকঠিন সংকল্প ও দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা রেখে! দেশের মানুষের আশা নর্দমায় ছুঁড়ে ফেলে শুরু হয় দূর্নীতি আর চাঁদাবাজির তান্ডব। বাবার সততার আদর্শকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে পুত্রের অসততার নজিরবিহীন প্রতিযোগিতা! দেশের সম্পদ পাচার আর দেশে ব্যবসায়ীরা জিন্মী হয়ে পড়েন এক আদর্শ পিতার কুপুত্রের লোভলালসার কাছে! (!)স্বল্পভাষী নেত্রী অক্টোপাস মাতার মতো চারপাশে হাতপা ছড়িয়ে মেতে উঠেন পুত্র দ্বয়ের কুকর্ম ও স্বার্থ রক্ষায়! সামরিক জান্তার প্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও যে মানুষ তাঁর নৈতিকতা আর সততা দিয়ে দেশের মানুষের মন জয় করেছিলেন, তাঁর পরিবারে যেন শুরু হয় নৈতিক স্খলনের এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতা। ক্ষমতার অবসান ঘটে, মসনদ থেকে সরা দাঁড়াতে হয়... ধর পাকড় শুরু হয় ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ও দূর্নীতিবাজদের। গণতান্ত্রিক দেশে শাসক মহলে পারিবারিকধারার কুফলের কারণে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। দেশের মানুষ সরাসরি নেতৃদ্বয়ের বিদায় সমর্থন না করলেও পারিবারিক ধারার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করেন। এসময় আবার দেশবাসী এবং আইন প্রয়োগকারীদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে, দলের জেষ্ঠ নেতৃবৃন্দকে অগ্রাহ্য করে (?)অতি বুদ্ধিমতি নেত্রী নিজের অযোগ্য ভাইকে দলীয় উচ্চপদে আসীন করেন! এধরনের নির্বুদ্ধিতা আর গোয়র্তুমীই যেন তাঁদের ক্ষমতা গ্রহণের সবচেয়ে বড় পূঁজি!!



আর যেসব ছোট খাট দল আছে সেসবের চিত্রও ভিন্ন নয়। ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের আবেগ ও বিশ্বাস নিয়ে খেলা করে এদের কারো কারো মূল লক্ষ্য। একটি দলকে দেখা যায় ইসলামকে ঢাল বানিয়ে এগিয়ে চলা, তবে সত্যিকারের ইসলাম তাদের কথাবার্তা কর্মকান্ডে কখনো পরিলক্ষিত হয়না। বরং তাদের ভন্ডামীর বিরোধীতা করা মানেই যেন ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা, এধরনের চোখ রাঙানী দেবার ধৃষ্টতা করতে এরা দ্বিধাবোধ করেনা। লাম্পট্য আর নারীঘটিত একেকটি নোংরামীর শীর্ষে এসব ছোট খাট দলের কোন কোন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। ইসলাম বা কোন ধর্মের আদর্শই এদের মূলমন্ত্র নয়, ছলেবলে কৌশলে ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছানোই মূল লক্ষ্য! আরেকটি দল কে দেখা যায় সমাজতন্ত্রের মন্ত্র পড়ে যুবসমাজকে বিভ্রান্ত করতে। সমাজতম্ত্রের আদর্শের বুলি আউড়ানো শীর্ষ নেতাদের দেখা যায় বিলাসী আর ব্যয়বহুল জীবন যাপনে অভ্যস্ত!


এসব ছোট দলের না আছে কোন আদর্শ না আছে নৈতিকতা, এরা একান্তই সুবিধাবাদী। প্রধান দল দুটি যেসময় ক্ষমতায় যাবে, এরা সেসব সুযোগের সদ্বব্যবহার করে ফায়দা লুটবে, এটাই তাদের মূল মন্ত্র!



এসব নেতা নেত্রীদের পেটে পীড়া হলেই বাংলাদেশের বাতাস, পানি, মাটি অসহনীয় হয়ে পড়ে। দেশে চিকিৎসার প্রশ্নই আসেনা।
প্রতিটি দল গত পঁচিশ বছরে কোননা কোন ভাবে ক্ষমতায় ছিলো, দেশবাসীর জন্য না হোক অন্তত নিজের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার নূন্যতম যোগ্যতা কারো হয়নি!

কি বিচিত্র অক্ষম আর অযোগ্য আমাদের নেতৃবৃন্দ!!!!!!




রাজনৈতিক দল সমূহের এহেন চরম আদর্শহীনতা আর নৈতিক স্খলনের মাঝে (!)ত্রাতা রূপে আবির্ভুত হয় অন্তবর্তীকালীন সরকার!
দেশবাসীকে স্বপ্ন দেখানো হয় স্বল্প সময়ের মধ্যেই দূর্নীতি আর অনাচার মুক্ত একটি সুন্দর দেশের, আর তারপর সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন। আশা এবং আশংকা নিয়ে আমরা তাকিয়ে থাকি। দুর্নীতিবাজদের প্রাথমিক ধরপাকড়ে আর কারাগারে নিক্ষেপে অনেকের মাঝেই সেই আশার আলো কিছুটা উজ্জল হয়ে উঠে। তারপর...... সময়ের সাথে সাথে আশংকাটি প্রকট রূপ ধারন করে।

যে দুর্নীতি নাশের আশা নিয়ে মানুষ দিনগুনছিলো, হঠাৎ শোনা যায় নতুন নতুন ব্যংক আর তার বিশেষ মালিকদের গল্প। শোনা যায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ (!)বিশেষ পারিবারের সদস্যদের কথা!
দেশবাসী চরম অর্থনৈতিক ও ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মাঝে শোনা যায়, বিশেষ একটি ক্ষমতাধর মহলের কর্তাব্যক্তিদের ঘনঘন সপরিবারে বিদেশযাত্রার কথা!!!
মামলার সাক্ষীর সাথে আলাপ না করেই লেখা হয়ে যায় তাঁর বয়ান, সে বিষয়ে পুলিশকে স্বাক্ষী প্রশ্ন করলে তাঁকে চোখ রাঙ্গিয়ে বলা হয়, "এখন দিন পাল্টেছে, আমরা যা বলবো তাই মানতে হবে!!"
উচ্ছৃংখল ছাত্র দমনের নামে নিরাপরাধ অছাত্র, সাধারন মানুষকে শারীরিক ভাবে হেনস্থার অভিযোগ শোনা যায়!
গ্রেফ্তারকৃত রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের অমানুষিক পঙ্গুত্বের খবর জেলের সুউচ্চ প্রাচীরের বাইরে এসে পৌঁছে।



*সরকারি খরচে এরশাদ, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া পরিবারের বিদেশযাত্রা যেমন ঘৃণ্য ও নিন্দনীয়- (!)দুর্নীতি দমনকারী সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের স্ত্রী পরিবারের বিদেশযাত্রাও তেমনি ঘৃণ্য ও নিন্দনীয়!!!


*আমরা বিগতদিনের দুর্নীতিবাজদের শাস্তি চাই, নতুন নতুন দুর্নীতিবাজের আবির্ভাব চাইনা।

*আমরা সুবিচার আর ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা দেখতে চাই, অমানবিক নির্যাতন আর বিভৎস অত্যাচারের নিদর্শন চাইনা।

*আমরা দুর্নীতির অবসান চাই, প্রশাসনের অন্যায় চোখ রাঙ্গানি দেখতে চাইনা।



কানার হাট বাজার থেকে মুক্তি চাই। একবার অন্তত চক্ষুষ্মান কারো নেতৃত্বে আমরা পথ চলতে চাই.....



সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১০ ভোর ৪:২৮
৯৯টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×