খবরঃ ২০৭০ সালেই ইসলাম খ্রিষ্টধর্মকে ছাড়িয়ে জনসংখ্যায় পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্মে পরিণত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান 'পিউ রিসার্চ সেন্টার' এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করেছেন।
এই খবরের ভাষ্য অনুযায়ী বিশ্বে মুসলমানদের সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ১৬০ কোটি। সেটা বেড়ে ২০৫০ সালে হবে ২৮০ কোটি। আর খ্রিস্টানদের সংখ্যা ২১৭ কোটি থেকে হবে ২৯০ কোটি। ২০৭০ সালেই মুসলমানদের সংখ্যা খ্রিস্টানদের ছাড়িয়ে যাবে। ফলে ইসলাম হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ট বর্ধনশীল ধর্ম।
খবরটা শুনার পরে যে সব মুসলমান ভাইয়েরা গর্বে লাফ দিতে চাইবেন তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া উচিত যে, ভাইয়েরা লাফ দিতে যেয়ে যেন ঘরের ছাদের সাথে মাথায় বারি খেয়ে আঘাত না পান। এতো খুশি হবার কিছু নেই। আর গর্ব করে লাফ দেবারও দরকার নেই। কারণ মুসলমানদের সংখ্যা এজন্য বৃদ্ধি পাবে না যে অন্য ধর্ম থেকে মানুষ দলে দলে মুসলমান হবে। বরং মুসলমানরা হাজারে হাজারে বংশ বৃদ্ধি করবে বলে তারা পৃথিবীর বৃহৎ ধর্মে পরিনত হবে। এমনিতেই মুসলসমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি হয় অত্যধিক জন্মহার বৃদ্ধির কারণে। বাংলাদেশের কথাই চিন্তা করুন। ১৯৭১ সালে যে জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৭ কোটি, সেটা ২০১০ সালে হয়ে গেছে প্রায় ১৬ কোটি। অর্থাৎ আমাদের ছোট দেশটিতেই প্রায় ৭ কোটি মুসলমান বেড়ে গেছে। সেটা ২০৫০ বা ২০৭০-এ কত হতে পারে?
তাহলে মিডলইস্টের কথা চিন্তা করলেই বেপারটা পানির মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, কেন মুসলমানরা এতো দ্রুত সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়।
২০১০ সালের হিসেব অনুযায়ী মুসলমানের সংখ্যা ছিল ১৬০ কোটি। ২০৫০ সালে তা হবে ২৮০ কোটি। অর্থাৎ তারা সংখ্যায় (প্রায় সবটাই জনসংখ্যায়) বৃদ্ধি পাবে ২৮০-১৬০=১২০ কোটি। অর্থাৎ বৃদ্ধির হার ৭৫%। আবার খ্রিষ্টানদের জনসংখ্যা ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী ২১৭ কোটি যেটা ২০৫০ সালে হবে ২৯০ কোটি। অর্থাৎ তারা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে ২৯০-২১৭=৭৩ কোটি। অর্থাৎ বৃদ্ধির হার ৩৩.৬৪%। অর্থাৎ খ্রিস্টানদের থেকে মুসলমানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ধরা যেতে পারে ৪১.৩৬% বেশী। অর্থাৎ বিশ্বের সব ধর্মের মানুষের থেকে মুসলমানদের বংশবৃদ্ধির হার হবে অতিমাত্রায় বেশী। ফলে বংশ বৃদ্ধির মাধ্যমেই মুলত মুসলমানদের সংখ্যা বেড়ে হবে সব থেকে বেশী।
অর্থাৎ মুসলমানদের বৃদ্ধির হার এতবেশী হবার একমাত্র কারণ ধরা যায় বংশ বৃদ্ধি বা জনসংখ্যা বৃদ্ধি। অন্য কোন কারণ নেই।
বর্তমানে কোন ধর্মেরই নয় এমন মানুষ বা নির্ধামিকের (অর্থাৎ নাস্তিক ও সংশয়বাদীর) সংখ্যা বিশ্বে তৃতীয় হলেও ২০৫০ সালের মধ্যে হিন্দু হবে তৃতীয় বৃহত্তর ধর্ম। ধর্মহীনদের থেকে হিন্দুদের সংখ্যায় বৃদ্ধির কারনও ধরা যায় বংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। (নাস্তিকদের বংশবৃদ্ধি স্বাভাবিক ভাবেই ঘটবে। অর্থাৎ জন্ম হার ও মৃত্যু হার সমান থাকবে।)
সুতরাং আস্তিকদের অহংকারে বুক ফুঁলাতে যেয়ে বুক ফাটানোর দরকার নেই। আর মুসলমানদের অহংকারে লাফ দিয়ে ছাদের সাথে মাথায় বারি খেয়ে আঘাত পাবারও দরকার নেই।
এখানে উল্লেখ্য, আমরা যারা (অর্থাৎ অধার্মিকরা) বাংলাদেশের মত মুসলিম দেশে আছি এবং যারা (অর্থাৎ অধার্মিকরা) অন্যান্য ধর্মীয় গোঁড়ামীর দেশে বাস করি তারা স্বাধারণত কাগজে কলমে মুসলমান বা অন্য কোন ধর্মের অনুসারীই আছি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা নিধার্মিক। কিন্তু আমাদের নামগুলো নিধার্মিকের খাতায় উঠেনি বলে হিসেবটা এরকম হয়েছে। যদি আমাদের নাম কাগজে কলমে অধার্মিক ধরে নিয়ে এই পরিসংখ্যানটা করা হতো তবে হিসেবটা একটু অন্যরকম হতে পারতো।