সন্ধ্যা বেলায় যখন আলীফ প্রধান বমি করেই যাচ্ছিল তখনো নিলয় ভাই চুপ করে শুয়ে নিজেকে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিল ।আমি ভাইয়ার পাশে বসেছিলাম আর ল্যাপটপে স্কোয়াডের অসুস্থতার খবর আপডেট করছিলাম । কিন্তু আমার পাশেই যে নিলয় ভাই অজ্ঞান হয়ে শুয়ে আছে তা আমরা বুঝতে পারি নাই । অবস্থা অনেক খারাপ হওয়ায় এম্বুল্যান্স আনানো হয় ।
তখন আমাদের ভালোবাসা-মমতার বাঁধ ভেঙ্গে যায় ।এম্বুল্যান্সে যখন নিলয় ভাইকে উঠানো হল তখন বুঝতে পারলাম সে ঘুমিয়ে ছিলনা তাঁর জ্ঞান নেই ।নিলয় ভাইয়ের মাথার কালো ব্যাজটি পরে রইল তাঁর শোয়ার স্থানে ।আমরা সবাই তখন আর আমাদের কান্না থামিয়ে রাখতে পারি নাই । নদী , আনন্দ , নীল , সাগুফতা এবং আমি তখন কাঁদছিলাম ।এরপর আবেগপ্রবণ হয়ে নদী মাইকে এনাউন্স করে আমাদের সমন্বয়ক সাদাত হাসান নিলয় , আলীফ প্রধান , দ্বীপ গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পরেছে ।সবাই তখন সবাইকে শান্তনা দিচ্ছিল । আমাদের পাশে এসে শান্তনা দেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী , সুমনা শোভা , অঞ্জন রায়(গণমাধ্যম কর্মী) । ঠিক এর ৩মিনিটের মাথায় অসুস্থ হয়ে পরে শুভ্র , জ্যোতি । এদের এই অবস্থা দেখে বিমর্ষ হয়ে শুয়ে পরে অঝোরে কাঁদতে থাকেন রায়হান ভাই ।
আমি ছিলাম নিস্তব্ধ, বাকরুদ্ধ !! তখন ঠিক প্রথম বারের মত গণ জাগরণ মঞ্চ থেকে শহীদ রুমী স্কোয়াডের নাম ঘোষণা করে বলা হয় এখানকার অণশন কারীরা যাদের মধ্যে রয়েছেন এর সমন্বয়ক সাদাত হাসান নিলয় গুরুত্বর ভাবে অসুস্থ হয়ে পরেছেন ।এবং গণ জাগরণ মঞ্চ থেকে আরো বলা হল –“ শহীদ রুমী স্কোয়াডের ছেলে মেয়েরা বাংলাদেশে জামাত-শিবির নিষিদ্ধের লক্ষ্যে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন আজকে ৪ দিন যাবৎ এবং আমরাও একই দাবী করি ।বাংলাদেশে জামাত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধ করার জন্য সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি”।
এরপর আমি নিলয় ভাইয়ের শোয়ার স্থানে চুপ করে বসে থাকি আর দেখি তাঁর মাথার কালো ব্যাজটা পরে রয়েছে ।সবার অলক্ষ্যে তা ব্যাগে ঢুকিয়ে বাসায় নিয়ে আসি ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২৩