সবুজ ঘাসগুলো যেন একটা অলিখিত চুক্তি করেছে রাতের সাথে,রাতের যত কান্না সব-ই যেন ঢেলে দেয় তার উপরে । আর সে কান্না মেখে সবুজ ঘাসগুলো ভোরের আলোয় মেতে ওঠে তুমুল উল্লাসে, রাতের কান্না আর মুক্ত দানা,এ-কি একই ! সবুজ ঘাস বুকে নিয়ে বিস্তৃন এ মাঠ সেজেছে নববধূর সাজে অথচ এ সৌন্দর্যের মায়ায় আমি একা দাড়িয়ে,কোথাও কেউ নেই যতদূর দৃষ্টি যায় শুধুই ঘন কুয়াশা । এই আলো আঁধারীর মাঝে কেমন যেন অদ্ভুত একটা শিহরন,আমি হারিয়ে যাই অচিন এক দেশে, কি অজানা এক টানে আমি যেতে থাকি সেই অচিনপুরে । আঁধারের মাঝেও একটা আঁধার দেখি,আমি থমকে যাই,আঁধারের মাঝে যে আঁধার দেখেছিলাম সেতো আঁধার নয় সে অন্য আলো! এ কি ছায়া মানবী !!! নিজেকে কেমন অসহায় মনে হচ্ছে, ধীরে ধীরে সে আলোয় আলোকিত হচ্ছি আমি । কুয়াশা কেটে এখন স্পষ্ট সে আমার সামনে ! ভেজা চোখ,কয়েক ফোটা জল সেখানে ঝরার অপেক্ষায়, আমি অপলক চেয়ে থাকি , হাত বাড়ালো সে, এ হাত ফেরানোর ক্ষমতা যেন হারিয়ে ফেলেছি আমি । আমার হাত তার হাতে,সে হাটতে থাকলো আমিও তার সাথে, শিশিরে ভেজা ঘাস যেন নরম গালিচা হঠাৎ খেয়াল করি আমি খালি পায়ে হাটছি সে ও ঠিক তাই, অন্যরকম একটা ভালোলাগায় বিভোর আমি । হেটে হেটে বহুদূর, যেন এ চলার কোন শেষ নেই । এ যেন এক অন্য পৃথিবী এখানে শুধুই আমরা দুজন । ক্লান্ত আমি পা দুটো কেমন ভারী মনে হয় থেমে যায় আমি । অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো সে,কয়েক ফোটা জল ঝরলো,সে জলের সাথে অনেক কথাও যেন ঝরে পড়লো,খুব ইচ্ছে করলো তাকে কিছু বলতে,কিন্তু কি আচ্চার্য আমি কিছুই বলতে পারলাম না,আমি যেন বোবা হেয় গেছি । তার দৃষ্টিতে করুন আকুতি পথচলার, আবারো হাটতে থাকি সম্মহিতর মতো,হালকা বাতাসে তার দীঘল চুল ছুয়ে যাচ্ছে আমার সমস্ত অবয়ব । স্বর্গীয় সুবাসে মাতাল তখন আমি । হঠাৎ সে থমকে যায়,ভেজা চোখে আমার দিকে তাকালো,অবুঝের মতো আমি চেয়ে থাকি তার চোখে, আমার হাতটা আরো শক্ত করে ধরলো । সামনে তাকিয়ে দেখি এখানে মাঠের শেষ , ঠিক শেষ প্রান্তে একটা ছোট ঘর যা স্বপ্নের মতো সুন্দর,আমার হাত ধরে আবার হাটতে থাকলো সেই ঘরের দিকে । ঘরটার সামনে এসে দাড়ালো, আমার দিকে তাকিয়ে আছে সে। অবাক হয়ে আমি দেখি তার ঠোটের কোনে এক টুকরো হাসি যেন এর আগে আর কখনো হাসেনি সে,চোখের কোনে সেই জল, মনে হলো তার সব কষ্টগুলো এখন এই জলে ঝরছে, আমার হাত ধরে টানছে সেই ঘরের দিকে ,অপলক চেয়ে আছে আমার দিকে যেন কিছু একটা বলবে,তার ঠোট নড়ে উঠলো, সমস্ত প্রকৃতি নড়ে উঠলো...... আমার সমস্ত শরীর নড়ে উঠলো, চোখ মেলে তাকালাম, অনুভব করলাম সমস্ত শরীর ঘামে ভেজা,ঘরের বাইরে নিশাচরের ডাক, এই নিশুতি রাতে এখন সবাই ঘুমিয়ে । আর ঘুম আসেনা জেগে থাকি আমি,আবার কখন ঘুমিয়ে পড়ি হয়তো। এভাবে-ই সে প্রায়ই আসে নিশুতি রাতে আমার ঘুমে....
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০৮