somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইজরায়েল জালেম এইটা গোটা দুনিয়াই জানে, নতুন করে বলার কিছু নেই।

০২ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাজাবাসী অবরুদ্ধ হয়ে আছে এইটা ফ্যাক্ট। পরম সত্য। Absolute truth.
ওখানে কোন হাসিতামাশা চলছে না। আধুনিক মারণাস্ত্র দিয়ে ইজরায়েলি সেনারা নিরীহ, নিরস্ত্র মানুষদের শহীদ করছে।
অস্ত্র ব্যবহারের পাশাপাশি এখন অনাহারেও মারছে। ত্রাণ যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কেউ ওদের জন্য খাবার নিয়ে যেতে পারবেনা। অনাহারে অপুষ্টিতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই একে একে মারা যাচ্ছে।
ক্ষুধার্ত মানুষ যখন খাবার নিতে ছুটে আসে, তখনও ওদের উপর গুলি চালাচ্ছে। নৃশংসতার চিত্র সেখানে ভয়াবহ।
এই অবস্থায় গোটা বিশ্বই এই অমানবিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার। ধর্ম বর্ণ কাঁটাতারের সীমানা ইত্যাদি ভুলে লোকজন পথে নেমেছে, ইজরায়েলি দূতাবাসের সামনে, মিডিয়ার সামনে নিজেদের আওয়াজ তুলে ধরছে। আওয়াজ তুলছেন হলিউডের তারকারা। এমনকি বহু ইহুদিও এদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
প্রায় অর্ধশত দেশ "ফ্লোটিলা বহরের" মাধ্যমে গাজাবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছে। গোটা বিশ্ব সেদিকেই নজর রাখছে। তারপরেও ইজরায়েল নির্লজ্জের মতন সেখানেও নিজেদের পাশবিক রূপ তুলে ধরেছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবরে ওরা প্রতিটা জাহাজেই "ইন্টারসেপ্ট" করেছে। ওদের ভাগ্যে কি আছে আল্লাহ মালুম।
আমার আজকের লেখার বিষয় সেটা না। ইজরায়েল জালেম এইটা গোটা দুনিয়াই জানে, নতুন করে বলার কিছু নেই।
এবং এইটা আমার ঈমানী বিশ্বাস, আমি জানি ওদের পতন হবেই। আমি আমার ঈমান বাজি রাখতে পারি এর উপর। আমি জানি জালিম কখনই জুলুম করে পার পায় না। আল্লাহ একদিন ওদের ঠিকই ধরবেন। কবে ধরবেন, কিভাবে ধরবেন, সেইটা দেখতেই তাকিয়ে আছি। আমার আব্বুও তাকিয়ে থাকতেন, আমার দাদাও। উনারা কেউ স্বাধীন ফিলিস্তিন দেখে যেতে পারেননি। আমি যদি নাও পারি, আমার ছেলে, নাতি বা ওর বংশধর দেখবেই ইন শা আল্লাহ। ব্রিটিশরাও আমাদের উপর ২০০ বছর জুলুম আর লুটপাট করেছে, একদিন ওদের বিদায় ঘটেছে। ফিলিস্তিনিদের সেই "একদিন"টা কবে হবে, সেইটাই প্রশ্ন।
আজকে লিখতে বসেছি শুধু এইটা বলতে যে এই গাজা ইস্যুতেও আমরা আমাদের কুৎসিত রূপ মেলে ধরতে পিছপা হচ্ছিনা।
একটা সহজ উদাহরণ দেই। তাহলে মূল বিষয়টা ধরতে পারবেন।
আমাদের এক বড় ভাই অনেক বড় ডাক্তার হয়ে গেছেন। তিনি নিজের বন্ধুবান্ধব সহকর্মীদের নিয়ে নিজ গ্রামের দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে চাইলেন। বিশাল ব্যাপার। আমেরিকান ডাক্তারের চিকিৎসাসেবা নিতে হলে হাজার হাজার ডলার বিল গুনতে হয়, এইসব দরিদ্র গ্রামবাসী সেটা পাবে একদমই বিনামূল্যে।
প্রথমেই বাগড়া দিল এলাকার চেয়ারম্যান। সে বলল প্রচার করতে হবে যে তার উদ্যোগে এই জনসেবা আয়োজিত হচ্ছে।
বড় ভাইয়ের সমস্যা নাই। ওর উদ্দেশ্য গরিব মানুষের সেবা। ওরা সেবা পেলেই হয়। বাকিটা আল্লাহ দেখছেন। কার নাম প্রচার হলো, তাতে উনার কিছু আসে যায়না।
এইবার মাঠে নামলো বিরোধী দল। ওদের দাবি, ওদের নামও থাকতে হবে। নাহলে এই আয়োজন হতে দেয়া যায়না। আরও কিছু সংগঠনও এগিয়ে এলো। শুরু হলো রাজনৈতিক মারপ্যাঁচের খেলা, এতটাই নোংরা যে শেষ পর্যন্ত বড় ভাই চিন্তা করলেন নিজের জীবনের রিস্ক নিয়ে জনসেবার কোন মানে হয়না।
সবচেয়ে বড় ক্ষতি কাদের হয়েছে বলেনতো? ঐ গরিব মানুষগুলির। যারা মরলো কি বাঁচলো তাতে রাজনীতিবিদদের বা ওদের চ্যালাচামচাদের কিছুই যায় আসেনা।
একই ঘটনা আমি দেখি বন্যার্তদের বেলায়। একই ঘটনা দেখছি গাজাবাসীর বেলাতেও।
ওদেরকে "ত্রাণ" দেয়া হয়েছে কিনা এর চেয়ে বড় বিষয় হয়ে গেছে ওদেরকে "কে" ত্রাণ দিল - সেটা।
আমি যেতে পারিনি, এই অনুশোচনাতেই দগ্ধ হয়ে মরছি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি যেন কেয়ামতের দিন তিনি আমাকে প্রশ্ন না করেন যে "যখন ফ্লোটিলা যাচ্ছিল, তুমি কেন গেলে না?"
কঠিন প্রশ্ন। উত্তর জানা নেই। যদি অন্যান্য দেশের অমুসলিমরা যেতে পারে, তাহলে মুসলিম হিসেবে আমার থাকার কথা ছিল সবার আগে। অথচ আমি কিছুই করি নি। Damage control এর জন্য আমি কি করতে পারি? যারা যাচ্ছে তাঁদের জন্য দোয়া, তাঁদের পক্ষে থাকা, নিজের পক্ষে যা সম্ভব সেটা করা। ঠিকতো? যাতে কিছুটা হলেও নিজের বিবেকের কাছেও পরিষ্কার থাকি যে কিছু একটা করেছি।
কিন্তু আমাদের দেশে একদল লোক শুরু করেছে ফাত্রামি।
যেহেতু আমার প্রিয় রাজনৈতিক দল বিশেষ কোন একটা, এবং সেই দলগুলোর কেউ ঘোড়ার ডিমটাও পাড়ছে না, কাজেই যে যাচ্ছে, ওকে ছোট করার জন্য প্রোপাগান্ডা চালাও। ওর নিয়্যত কত খারাপ, ও কতটা ভন্ড, ওর জাহাজের অবস্থান সেই নৌবহরের কতটা পিছে সেটা তুলে ধর।
আমি ড্রয়িংরুমে বসে বসে স্ট্যাটাস লিখছি সেই লোকেদের নিয়ে যারা কিনা জাহাজে চেপে রওনা হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্ট অমানুষের জাত ইজরায়েলের বিরুদ্ধে গিয়ে গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে!
মানে ফাত্রামীর লেভেলটাও বুঝতে হবে!
অথচ এই কাজটার সিঁকিভাগও যদি আমার প্রিয় রাজনৈতিক দলের একটা পাতি নেতাও করতো, যেমন নিজের ফেসবুকে ফিলিস্তিনের পতাকার ছবি বা ওদের পক্ষে দুই লাইনের কোন স্ট্যাটাস পোস্ট - তাহলেই দেখতেন এই আমিই কত মহান, কত মহানুভব হয়ে যেতাম!
ফেসবুকের অনেক দোষের মাঝে সবচেয়ে বড় গুন এইটাই, সহজেই মানুষের ভিতরকার চেহারা বের করে আনে। মানুষ চেনা সহজ হয়ে যায়।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১:৩০
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×