somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এরা কি আসলেই কোন মানুষের ঘরে জন্মেছে?

০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগে তাবুক অভিযানের ঘটনা বলি। তারপরে মূল বিষয়ে আসছি।
নবী (সঃ) হঠাৎ করেই তাবুক অভিযানের ঘোষণা দিলেন। সাহাবীরা চমকে উঠলেন। যে মৌসুমে এই ঘোষণা এসেছে, সেটা ফসল কাটার মৌসুম। এখন অভিযানে যাওয়া মানে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় পড়া।
তার সাথে যোগ করেন তাবুক অভিযানে শক্তিশালী রোমান বাহিনীর মুখোমুখি হতে হবে। তখনকার বিশ্বের পরাশক্তি।
তবুও রাসূলাল্লাহ (সঃ) যেহেতু বলেছেন, যেতেই হবে। সাহাবীরা যা কিছু আছে তা নিয়েই তৈরী হয়ে গেলেন।
কিছু সাহাবী টালবাহানা শুরু করলেন। একটু পরে যাব, আরেকটু সময় হাতে আছে, এই কাজ শেষেই রওনা হবো ইত্যাদি করতে করতে অভিযান মিস করেন। তারপরে অনুশোচনা, কান্নাকাটি, অনেক লম্বা কাহিনী।

আর মুনাফেকরা? ওদের কথাবার্তা শুরু হয় এইভাবে "আমি চলে গেলে আমার বাড়িতে লোকজন একা হয়ে যাবে।"
"রোমান মেয়েরা অনেক সেক্সি। ওদের দেখলেই আমার নিয়্যত খারাপ হয়ে যাবে। তাই আমার ইয়াথরিবে (মুনাফেকরা মদিনাকে "ইয়াথরিব" বলতো) থাকাই ভাল।"

এখন বর্তমানে আসা যাক।
বাংলাদেশে কিছু অতি জনপ্রিয় হুজুর আছে।
এরা তরুণপ্রজন্মকে জিহাদি জোশে উদ্বুদ্ধ করে। জালিমদের (মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইজরায়েল) পতন চায়, দেশে খিলাফা প্রতিষ্ঠা চায়, আল্লাহর রাস্তায় তরুণ প্রজন্মকে শহীদ হতে বলে। ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের জন্য কষ্টে বুক ফাটে।
হুজুরদের বয়ান শুনলে মনে হবে এখনই অস্ত্র হাতে জিহাদে নেমে পড়ি। ওয়াজ মাহফিল গরম করে তামা তামা করে ফেলে।
হুজুরকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় উনি নিজে কেন জিহাদে যান না, তখন হিন্দি চুল এবং সেটার সাথে ছন্দে মিলে একটা শব্দ টাইপ বাহানা দিতে শুরু করে। শুনলে তখন তাবুক অভিযানের ঐ মুনাফেকদের ঘটনা মনে পড়ে।
কথা হচ্ছে, কাজের বেলায় এইসব হুজুরদের দেখা পাওয়া যায়না।
এই যে ফ্লোটিলা গেল, বিশ্বের ৪৪টি দেশ থেকে জাহাজ ভরে এত এত মানবতাকর্মী গেল, এইসব হুজুরদের বা ওদের মুরিদদের একটাকেও দেখলাম না। এদের দৌড় কোন বেডি ওড়না কোথায় পড়েছে, কার দাড়ি আছে কি নাই, থাকলেও সেটা কতটা সুন্নতি কতটা বেদাতি, কোন ব্যাটার প্যান্ট টাখনুর নিচে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

আচ্ছা, ঠিক আছে। সবাইকে দিয়ে সবকিছু হয়না। শুধু এইসব ধান্দাবাজগুলি যখন জিহাদের ডাক দিবে, আর বলবে "জালেমের পতন না হওয়া পর্যন্ত, খিলাফা প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের জিহাদ চলতেই থাকবে। প্রয়োজনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করে ফেলবো, তবু আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করে ছাড়বো ইন শা আল্লাহ" - তখন শুধু একটু খেয়াল রাখবেন। আপনি হয়তো এদের কথায় ঘর পরিবার ইত্যাদি ছেড়ে জিহাদে নেমে শহীদ হয়ে যাবেন, এদিকে আপনার নেতা বিশ্রাম নিতে কোন রিজোর্টে যাবেন।

তবে আরেক লেভেলের ইতর আছে, যেগুলি নিজেরাতো যায়ই নাই, উল্টা যে গেছে, ওকে সমকামীদের এজেন্ট, ফ্রী মিক্সিংয়ের দূত, নারীবাদী, নাস্তিক ইত্যাদি ইত্যাদি ট্যাগ দিয়ে ছোট করার চেষ্টা করছে। এগুলির মুরিদেরও অভাব নাই। "ঠিক বলেছেন ভাই" "একদম মনের কথা বলেছেন" ইত্যাদি ইত্যাদি কমেন্টে ঐসব বিষ্ঠাপ্রসবকারী পোস্ট ভরপুর।
আমি বুঝিনা, এরা কি আসলেই কোন মানুষের ঘরে জন্মেছে? গরুও যদি কথা বলতে পারতো, তাহলে গরুর বুদ্ধিশুদ্ধিও এদের চেয়ে বেশি হতো আমি নিশ্চিত।

এইযে এতগুলি মানুষ গেল, যাদের বেশিরভাগই অমুসলিম, আমাদেরই মুসলিম ভাইবোনদের সাহায্যার্থে, আমাদেরতো শরমেই মরে যাওয়ার কথা! আমরা কি করলাম ওদের জন্য? কোথায় আমরা সেই গ্লানি ঢাকতে উল্টো এদের পাশে এসে দাঁড়াবো, তা না, এদেরকেই ছোট করার চেষ্টা করছি? এদের ঈমান আমলের হিসাব নিয়ে ফেসবুকে আলোচনা করছি? এই ইতরগুলি নিজেদের "মুসলিম" দাবি করে কিভাবে? আমরা কি আমাদের রবের কাছে আমাদের অপরাধের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি? আমাদের মুনাফেকির জন্য মাফ চাইছি? কেয়ামতের দিন আমাদের খবর আছে। সত্যি বলছি, আমাদের খবর আছে।
"ইয়া আল্লাহ! আমাদেরকে মুনাফেক বানায়ো না! জীবনে যদি আমাদের করা একটা পুন্যও তোমার পছন্দ হয়ে থাকে, সেটার দোহাই, তুমি আমাদেরকে মুনাফেকদের দলভুক্ত করো না!"
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৩৬
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×