somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হে খোদা ! পুরুষ হয়ে জন্মানোটা কি পাপ ?

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চট্টগ্রামের ইপিজেড মোড়ে সন্ধ্যার সময় লোকাল সিটি সার্ভিস বাসগুলোর অবস্থা বছরের প্রতিটি কর্মদিবসেই একই ।
কিছু মানুষ বাসে উঠার জন্য জীবন বাজি ধরছে,বাসে উঠা বলতে পায়ের তালুর সামান্য যে কোন একটি অংশ বাসে রাখতে পারলেই হল । বাসের ভেতর আগে থেকেই প্রচুর সংখ্যক মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একে অপরের বগলের তলার ঘামের গন্ধ শোঁকায় ব্যাস্ত এবং গুটিকয়েক মানুষ বাসের গুটিকয়েকটি সিট সিংহাসনের মত দখল করে বসে থাকে । যদিও কখনো বুঝিনা এরা সিটের দখল পায় কিভাবে । মাঝে মাঝে মনে হয় এদের জন্মই মনে হয় বাসে এবং জন্মসুত্রেই তারা বাসের সিটগুলো দখল করে বসে থাকে । ইপিজেড মোড় থেকে সন্ধ্যার সময় বাসে প্রচুর গার্মেন্টস শ্রমিক মেয়েও উঠে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে থাকে । সেদিনও উঠেছিল কয়েকজন । বাস চলছে । কাস্টমস মোড়ে আসতেই হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি । বাস দাঁড় করানো হল । ঘটনা যেটা বুঝা গেল সেটা হল,একজন উদীয়মান নারী পকেটমার ধরা পড়ছে । স্বাভাবিকভাবেই মারধরের পালা । কিন্তু সেই মারধোর টা দিচ্ছিল ২-৩ জন । যাদের একটু পরই বাকীরা জানোয়ার পাষাণ বলে থামিয়ে দিল । এরইমধ্যে ধৃত পকেটমার কান্নাকাটি করে তার অভাব অনটন দুঃখ দুর্দশার কাহিনী বয়ান শুরু করে দিয়েছেন । মনে হল বাসের কয়েকজন দরদী ব্যক্তির চোখ ভিজে গেল । তাদের হস্তক্ষেপে মেয়েটিকে ওখানেই নামিয়ে দিয়ে বাস তার আপন পথে যাত্রা শুরু করলো ।
ধরুন ধরা পড়া পকেটমারটি ছেলে । তাহলে ধরা পড়ার কিছুক্ষনের ভেতরই বেচারার মরদেহ মেডিকেল ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য পাঠিয়ে দেয়া হত । এভাবেই পুরুষরা বৈষম্যের শিকার !
চট্টগ্রামের গোলপাহাড় মোড় থেকে জিইসি মোড় পর্যন্ত রাস্তাটিকে এখন ওয়ান ওয়েতে রূপান্তর করা হয়েছে । জনসাধারণকে ব্যাপারটি মানতে বাধ্য করার জন্য গোলপাহাড় মোড়ে সবসময় একজন ট্র্যাফিক পুলিশ দাড়িয়ে থাকে । । গোলপাহাড় মোড় থেকে হেঁটে জিইসি মোড় যেতে পাঁচ মিনিটই লাগে বড়জোর । সেইদিন দন্ডায়মান ট্র্যাফিক পুলিশ বড়ই দায়িত্ব সচেতন মানুষ । নিয়মমাফিক সামনের বাকি সব রিকশার মত তিনি আমার রিকশাও থামিয়ে দিলেন । নেমে হাঁটা ধরব । রিকশার ভাড়া দিতে একটু সাইড করে দাঁড়িয়েছিলাম । ততক্ষণে আরেকটি রিকশার আগমন । যাত্রি হল দুইজন অতি সুদর্শনা মেয়ে । হম । দায়িত্ব সচেতন ট্র্যাফিক পুলিশ টিকেই তারা দুইজন অতি বিনয় সহকারে নাকি ঢঙ্গ সহকারে হেলিয়া ঢুলিয়া নাচিয়া হাসিয়া অনুরোধ করিল তাদের রিকশাটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য । এবং তিনি ১ মিনিটের বেশী আর ধরে রাখতে পারলেন না ! ছেড়ে দিলেন ! হায়রে অবলা পুরুষ ! আমরা বৈষম্যের শিকার ।
দেশের যে কোন প্রান্তে যেখানে আপনার কাজটি শেষ করার জন্য লাইন ধরার প্রয়োজন হয় ,সেখানে কয়েকদিন লাইনে দাঁড়ালেই আপনি হাড়ে হাড়ে টের পাবেন বৈষম্য । আপনার চৌদ্ধপুরুষ অসুস্থ, এই কাজটি দ্রুত শেষ করতে না পারলে আপনি স্বজনহারা হয়ে যাবেন । যাই বলুন না কেন আপনাকে লাইন ছাড়া কাজটি করতে দেয়া হবেনা । একজন দুইজন রাজী থাকলেও বাকীরা তাদের বীরত্ব প্রমানে উঠেপড়ে লাগবে । কিন্তু একজন মেয়ের বেলায় একজন দুইজন রাজী না থাকলেও বাকীরা তাদের দয়ার শরীর প্রমানে উঠেপড়ে লাগবে । হয়তো মেয়েটি বেশীক্ষণ লাইনে দাঁড়ালে উনারা কাপড় চোপড় নাপাক করে ফেলতে পারেন । আমরা কি বৈষম্যের শিকার না?
আপনি আপনার কোন এক ক্লাসমেট বন্ধুর পায়ে পড়ে হয়ত তার থেকে একটি নোট খুঁজছেন । দিলনা সে আপনাকে । ভাবখানা এমন,আপনাকে নোট দিলে নিশ্চিত সে পরীক্ষায় ফেল । কিন্তু একই নোটটি একজন মেয়ে ক্লাসমেট খুজল এবং আপনার বন্ধু দিয়ে দিল । তখন তার ভাবখানা এমন এই নোটটা দেয়ার জন্য সে মানুষ খুঁজে পাচ্ছিল না। মেয়েটি খুঁজল, তাই সে দিয়ে দিল । হায়রে ! এবারো কি বলবেন আমরা বৈষম্যের শিকার না?

আমি এখানে সামান্য কয়েকটা উদাহরণ দিলাম । এধরণের হাজারটা উদাহরণ আপনার চারপাশে আপনি নিজেই পাবেন । যেসব দেখে ছেলে হয়ে জন্মানোর কারনে আপনার আফসুস হতেও পারে । আমি এখানে মেয়েদের বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। প্রচলিত সমঅধিকারের ধারণা গুলোর বিরুদ্ধেও কিছু বলছিনা । আমি বলছি সেসব পুরুষদের বিরুদ্ধে যারা মেয়ে দেখলেই তলপেটে সুড়সুড়ি অনুভব করেন । শুধুমাত্র মেয়েটি একটু সুন্দর এবং আপনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়েছেন বলেই যারা মেয়েটির সাত খুন মাফ করে দেন তাদের বিরুদ্ধে । দৃস্টিভঙ্গি বদলান ।
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×