somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ 'শুধু স্বপ্ন নয়' - রহস্যপত্রিকা, ডিসেম্বর, ২০১২

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘তামান্না বাহার মৌরি?’
‘জ্বী।’
‘থাকেন কোথায় আপনি?’
‘এই গ্রীন রোডেই বাসা।’
‘সাথে কেউ এসেছে?
‘না, আমি একাই..।’
‘বিবাহিত?’
‘না। অবিবাহিত।’
‘কি করেন আপনি?’
‘একটা প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করি। মাস্টার্স শেষ করেছি মাস ছয়েক হলো। এর পর মাস তিনেক ধরে চাকরি।’
‘মাস্টার্স কিসে?’
‘অ্যাকাউন্টিংয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।’
‘আচ্ছা। এবার বলুন। কি হেল্প করতে পারি?’
‘উমম.. আমি একটা অদ্ভূত সমস্যায় ভুগছি বেশ ক’দিন ধরে। আ.. কিভাবে বলবো? আমি প্রতি রাতে...মানে.. প্রায় প্রতি রাতেই একটা স্বপ্ন দেখি। নির্দিষ্ট একটা স্বপ্নই..’ - বলে থেমে যায় মৌরি।
‘হুম। বলুন কি স্বপ্ন?’
ইতস্তত করে মৌরি কিছুক্ষণ। তারপর বলে - ‘স্বপ্নটা হলো- আ .. আমি দেখি যে, আমি একটা.. মানে.. আমার সাথে একজন লোক.. মধ্যবয়সী লোক সেক্স করছে। আমি বলতে চাচ্ছি, যৌন মিলনের প্রথম থেকে শেষ ধাপ পর্যন্ত আমি দেখি না। শুধু দেখি.. ’ আবার থেমে গেল মৌরি।
এবার কিছু বললেন না সাইকোলজিস্ট তাসনুভা।
মৌরিই আবার শুরু করলো -‘আমি দেখি, আমি শুয়ে আছি বিছানায়। লোকটা আমার উপরে শুয়ে আছে। আমার পরনের জামাটা গলা পর্যন্ত তোলা। পায়জামা হাঁটুর অনেকটা নিচ পর্যন্ত নামানো। লোকটার শরীরে কোন জামা নেই। এবং সে.. আপনি বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই.. করে যাচ্ছে।’
‘ওকে। বুঝতে পেরেছি । আর বলতে হবে না। কিন্তু এটাকে আপনি অদ্ভূত বলছেন কেন? এই বয়সে একটা অবিবাহিত মেয়ে এরকমটা দেখতেই পারে। দেখে উত্তেজনা বোধ করতেই পারে। অস্বাভাবিক কিছু তো নয়। অনেকেরই হয়।’
‘উহু, অনেকেরই এরকমটা হয় না। হ্যাঁ, এরকম উত্তেজক স্বপ্ন আমি আগেও দেখেছি বার কয়েক - কাউকে চুমু খাচ্ছি, বা জড়িয়ে ধরছি বা শারীরিক সম্পর্ক হচ্ছে। এবং এতে যৌন উত্তেজনায় আমার ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে। এরকম অনেকেরই হয় আমি জানি। কিন্তু এখানে অস্বাভাবিকতাটা হচ্ছে - আমি দিনের পর দিন একই স্বপ্ন দেখে যাচ্ছি। কোথাও এতটুকু নতুনত্ব নেই স্বপ্নে। আর এই স্বপ্নটা দেখে আমি উত্তেজিত হচ্ছি ওভাবে -তাও না। এই স্বপ্নের পর আমার যৌন কোন অনুভূতি হচ্ছে না। স্রেফ অস্বস্তি আর বিরক্তি বোধ হচ্ছে। ঘুমটা ভেঙ্গে যাচ্ছে। তারপর অনেকক্ষণ এপাশ ওপাশ করে ঘুম আসছে।’
‘ঘুম ভেঙ্গে গেলে কি ঘড়ি দেখেন? কয়টা বাজে তখন?’
‘এটাও একটা অদ্ভূত ব্যাপার। প্রতিদিন ঘুম ভেঙ্গে দেখি ঘড়িতে দেড়টা বাজে বা তার কয়েক মিনিট এদিক-ওদিক। মানে হচ্ছে, স্বপ্নটা আমি প্রতি রাতে নির্দিষ্ট একটা সময়েই দেখি।’
‘কবে থেকে এই স্বপ্ন দেখছেন?’
‘তা প্রায় মাস তিনেক হবে।’
‘তার মানে কি, চাকরিতে ঢোকার পর থেকে?’
একটু থমকায় মৌরি। এ ব্যাপারটা আগে কখনো চিন্তা করেনি।
‘বোধহয়।’ অনিশ্চিত শোনায় মৌরির কন্ঠ। ‘চাকরির পর পরই। আগে নয়। ঠিক কতদিন পর এটা অবশ্য মনে নেই।’ কিছু ক্ষণ ভাবে মৌরি। ‘সম্ভবত চাকরিতে জয়েন করার দু-একদিন পরই প্রথম দেখি।’
‘তিন মাস ধরে প্রতিদিনই?’
‘না, ঠিক প্রতিদিন নয়। প্রথমে মনে হতো প্রতিদিনই। পরে খেয়াল করে দেখি, শুক্র আর শনিবার দেখি না, মাঝে মধ্যে অন্যদিনও বাদ পড়ে..’
‘শুক্র আর শনিবার আপনার অফিস বন্ধ?’
‘হ্যাঁ , তা বন্ধ। আপনি অফিসের সাথে মেলাতে চেষ্টা করছেন? কিন্তু গত মাস খানেক ধরে শুক্র-শনিবারেও মাঝে-মধ্যে দেখছি।’
‘আচ্ছা। আপনি তো অবিবাহিত। বিয়ের ব্যাপারে কোন চিন্তাভাবনা চলছে বা কোন সম্পর্ক আছে?’
‘জ্বি। সম্পর্কটা রিসেন্টলি হয়েছে। দু মাস মতো হবে। আমার অফিসেরই কলিগ ও। আমার চেয়ে দু’বছরের বড়। চাকরির পরই পরিচয়। একই অফিসে অন্য সেকশনে কাজ করে। বিয়ের ব্যাপারে বা ভবিষ্যতের ব্যাপারে ওভাবে সিরিয়াসলি কথা হয়নি এখনও আমাদের মধ্যে। তবে, আমরা দুজনেই বুঝতে পারছি, আমরা পরস্পরকে পছন্দ করছি। হ্যাঁ - আমি ভালবাসি ওকে - এটা বলতে পারি। তবে, দুজন দুজনকে আরো একটু বোঝার সময় নিচ্ছি। বাসায় বলা হয়নি এখনো। মাস খানেকের মধ্যেই বলবো বোধহয়।’
‘দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক?’
‘না না। শুধু ঐ হাত ধরা পর্যন্তই। বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক আমার পছন্দ নয়।’
‘তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, আপনার শারীরিক সম্পর্কের কোন অভিজ্ঞতা নেই?’
‘শারীরিক সম্পর্ক বলতে যদি যৌন মিলন বুঝিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে উত্তরটা হচ্ছে- নেই। কিন্তু এই একটু জড়িয়ে ধরা, চুমু -এরকম অভিজ্ঞতা আছে।’
‘আরেকটু বিস্তারিত বলবেন? কখন বা কতবার?’
‘কতবার!! একটু হাসে মৌরি। না না। এমন কিছু না। ক্লাস নাইনে পড়ার সময় আমার এক মামাতো ভাই একদিন জোর করে চুমু খেয়েছিল। তারপর থেকে আমাদের বাসায় ও বেড়াতে এলে সকলের চোখ এড়িয়ে বার কয়েক চুমুর অভিজ্ঞতা হয়েছে ওর সাথে- কিন্তু এটা ঠিক প্রেম বা এরকম কিছু ছিল না। অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে প্রেম হয়েছিল, ডিপার্টমেন্টেরই দু ব্যাচ সিনিয়র একজনের সাথে। তার সাথে সম্পর্ক টিকেছিল মাস ছয়েক। ও সময় জড়িয়ে ধরা- চুমুর অভিজ্ঞতা কয়েকবার।’
‘সম্পর্কটা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণ?’
‘ও শুধু শারীরিক সম্পর্কের জন্যই প্রেম করতো। কোনো মেয়েকে পুরোপুরি পেয়ে যাওয়ার পর ও সম্পর্কটা কাট-আপ করে দিত। প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি। পরে কয়েক জনের কাছ থেকে শুনে আর ওর আচরণ দেখে ওরকম মনে হওয়ায় নিজ থেকেই সরে আসি। প্রথম কয়েক মাস খুব কষ্ট লেগেছিল। কিন্তু পরে মানিয়ে নিয়েছি। এ নিয়ে এখন আর কোন আক্ষেপ নেই আপনার।’
‘প্রেমটা নিয়ে আক্ষেপ নেই। কিন্তু শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে? চুমু খাওয়ার জন্য কোন অপরাধবোধ? অথবা শারীরিক সম্পর্কের চাহিদা?’
‘না না।’ আবার হেসে ফেলে মৌরি। ‘শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে অতটা আকুল-ব্যাকুল নই আমি। বিয়ের পরেই ওটা হবে। আর চুমুর ব্যাপারে। - হ্যাঁ মাঝে মধ্যে মনে হয় চুমুর ব্যাপারটা উচিত হয়নি। কেন এমন পাপ করলাম? তবে সেটা মাঝে-মধ্যে। খুব তীব্র কোন অনুভূতি নয়।’
‘আচ্ছা। এবার আমরা আবার আপনার স্বপ্নের ব্যাপারটায় আসি। স্বপ্নে শারীরিক মিলনটা আপনি উপভোগ করেন না বলছেন। যন্ত্রণা হয়? মনে হয় কি, আপনাকে কেউ ধর্ষণ করছে?’
‘এই ব্যাপারটাও আমি নিশ্চিত বুঝতে পারি না। এ জন্যও অস্বস্তি হয়। স্বপ্নের ভেতর আমি ব্যাপারটা ঠিক উপভোগও করছি না, খুব সক্রিয়ভাবে অংশও নিচ্ছি না, আবার বাধা যে দিচ্ছি - তাও না। ধর্ষণই যদি হবে, আমি তো তা ঠেকাতে চেষ্টা করবো, বাধা দেব, চেঁচামেচি করবো - কিছুই করছি না আমি।’
‘আচ্ছা। আমি তাহলে একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করাবার চেষ্টা করি। সেটা ঠিক না-ও হতে পারে। আপনার পছন্দ না-ও হতে পারে। ফ্রয়েডের মতে, ফ্রয়েডের নাম তো শুনেছেন.. মানব মনের অনেক কিছুর ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি, যদিও তার সব ব্যাখ্যা এখন আর গ্রহণযোগ্য নয় বা পরীক্ষার মাধ্যমে অযৌক্তিক বলে প্রমাণিত.. তবু কিছু কিছু ব্যাখ্যা এখনও আমরা গ্রহণ করি বা ব্যবহার করি। ফ্রয়েডের মতে, স্বপ্ন হচ্ছে, মানব মনের অবদমিত কোন আকাঙ্খার বা অপূর্ণতার প্রকাশ। আমরা যা চাই অথচ পাই না, স্বপ্নের মাধ্যমে তা পেতে চাই, আংশিকভাবে হলেও। আমার যতটুকু মনে হচ্ছে, আপনি আপনার অফিস কলিগকে ভালবাসেন বলছেন, আপনি তাকে চাইছেন এবং শারীরিকভাবেই চাইছেন। কিন্তু এই চাওয়াটা আপনার অবচেতন বা অচেতন মনে। যেহেতু ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক-সামাজিক যে কোন কারণেই হোক অচেতন বা অবচেতন মনের এই চাওয়াটা আপনার সচেতন মনের কাছে অব্যক্ত বা সচেতন মনে এই চিন্তা আসাটা আপনার কাছে অস্বস্তিকর বা অগ্রহণযোগ্য, মনের একটা অংশ- যাকে আমরা ইগো বলি- এই ইগো অবচেতনের আকাঙ্খাটা সচেতন মনে আসতে দিচ্ছে না। অবচেতনের এই ইচ্ছেই প্রতিফলিত হচ্ছে আপনার স্বপ্নে। স্বপ্নে আপনি নিজেকে শারীরিকভাবে মিলিত হতে দেখছেন। আপনি তাতে বাধা দিচ্ছেন না, কারণ মিলনটা আপনি চাচ্ছেন। আবার সক্রিয় অংশগ্রহণও করছেন না, সামাজিক-ধর্মীয় বাধার ব্যাপারটা এর মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। আমার মনে হয়, আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, যেদিন ওর সাথে আপনার দেখা হয়, সেদিনই স্বপ্নটা আপনি দেখছেন। শুক্র-শনি অফিস বন্ধ বলে তার সাথে দেখা হতো না, তাই স্বপ্নও আসতো না। এখন নিশ্চয়ই মাঝে-মধ্যে শুক্র বা শনি বারে আপনারা দেখা করেন বা ঘুরতে যান - সেদিন স্বপ্নে দেখেন। আর যেদিন তিনি বা আপনি ছুটিতে থাকেন অর্থাৎ আপনাদের দেখা হয় না, সেদিন স্বপ্নটাও আসে না। .. ’- বলে সমর্থনের আশায় মৌরির দিকে তাকিয়ে থেমে যান তাসনুভা।
কিছুক্ষণ ভেবে ধীরে মাথা ঝাঁকায় মৌরি - ‘হতে পারে।’
‘সমস্যাটা তেমন জটিল কিছু নয়। এই বয়সে এই রকম মানসিক দ্বন্দ্ব বা কনফ্লিক্ট হতেই পারে। এবং এর প্রকাশ ঘটতে পারে স্বপ্নের মাধ্যমে। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’
‘কিন্তু আমি তো স্বপ্নে ওকে দেখি না।’
‘স্বপ্নে তাকেই দেখবেন এমনটা না-ও হতে পারে। স্বপ্নে যে কোন পুরুষের মাধ্যমেই আকাঙ্খার আংশিক পূর্ণতা দেখতে পারেন আপনি। অস্বাভাবিক কিছু না।’
‘তাহলে এখন আমি কি করতে পারি?’
‘আমার মনে হয়, বিয়ের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন। বিয়ের পর তার সাথে শারীরিক মিলন হলেই অবচেতনের এই অতৃপ্তিটা আর থাকবে না। আশা করি, স্বপ্নটা আপনি আর দেখবেন না। তার আগ পর্যন্ত ঘুমের খুব বেশী সমস্যা হলে কোনো সাইকিয়াট্রিস্টের সাথে পরামর্শ করে কিছুদিন ঘুমের ওষুধ খেয়ে দেখতে পারেন।’
‘ঘুমের ওষুধ আমি খেয়েছি এর মাঝে কিছুদিন। কারো পরামর্শ ছাড়াই। কিন্তু কোন ফল হয়নি। একই স্বপ্ন দেখছি। একই সময়ে। একইভাবে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে।’
‘হয়তো যে ওষুধ খাচ্ছেন, তা খুব কার্যকরী নয়। ওষুধ লাগবেই- এমনটা বলছি না। এ ব্যাপারে সাইকিয়াট্রিস্টের সাথে পরামর্শ করে দেখতে পারেন।’
‘আপনার সাথে আবার কবে দেখা করবো?’
‘আমার সাথে আর দেখা করা লাগবে বলে মনে হয় না। বিয়েটা দ্রুত সেরে ফেলুন। এর পরও কোনো সমস্যা হলে তো অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে যে কোন দিনই দেখা করতে পারেন।’
........................................................................
সাত দিন পরই আবার তাসনুভার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয় মৌরি।
‘কি অবস্থা? কেমন আছেন?’ হালকা চালে প্রশ্ন করেন তাসনুভা।
মৌরির চোখে-মুখে বিচলিত ভাব- ‘ভাল না।’
‘কেন? স্বপ্ন দেখা বন্ধ হয়নি?’
‘স্বপ্ন তো বন্ধ হয়ই নি। নতুন এক ঘটনা হয়েছে।’
‘আচ্ছা। কি ঘটনা?’
‘আপনি তো সেদিন বললেন, বিয়ের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে। আমি বাবা-মাকে জানালাম সাব্বিরের কথা। ওকে আমাদের বাসায় দাওয়াতও করলাম একদিন। বাবা-মাও খুব পছন্দ করলেন ওকে। এরপর আমার যাবার পালা ওদের বাসায়। সাব্বিরের মা নেই। জরায়ুর ক্যান্সারে মারা গেছেন বছর তিনেক আগে। একটা ছোট বোন আছে। অনার্সে পড়ে। ওদের বাবা ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে মাঝে-মধ্যেই বিদেশে যান। গত এক সপ্তাহ ধরে উনি সুইজারল্যান্ডে। আগামী বৃহস্পতিবার তিনি দেশে আসছেন। শুক্রবার সাব্বির ওদের বাসায় আমাকে লাঞ্চের দাওয়াত দিয়েছে।’
‘ভাল তো।’
‘গত শনিবার আমরা বাইরে দেখা করি। সাব্বির ওর পারিবারিক অ্যালবাম এনেছিল আমাকে দেখাতে।’ বলে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে মৌরি।
তার পর গলার স্বর খাদে নামিয়ে বলে- ‘আমি স্বপ্নে যে লোকটাকে দেখি সে সাব্বিরের বাবা।’
ভেতরে ভেতরে চমকে গেলেও বাইরে তা প্রকাশ করেন না তাসনুভা।
কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে যেন তথ্যটা হজম করে নেন। তারপর জিজ্ঞেস করেন -‘ আপনি সিওর?’
‘হান্ড্রেড পারসেন্ট। গত তিন মাস ধরে নিয়মিত এই স্বপ্নটা দেখছি আমি। ঐ লোকের কাঁচা-পাকা চুল, ভ্রƒ, গোঁফ, কান-নাক-ঠোঁটের গঠন- সবই আমার চোখের সামনে চাইলেই পরিস্কার দেখতে পাই এখন। হুবহু এই লোকই।’
‘তাকে আগে কখনো দেখেছেন আপনি?’
‘কোত্থাও না।’
‘অতটা শিওর হচ্ছেন কিভাবে? হয়তো দেখেছেন। হয়তো অনেক আগেই দেখেছেন। হয়তো কথা হয়নি, রাস্তাঘাটে কোথাও দেখেছেন। হয়তো আপনার ব্যাংকে এসেছিলেন তিনি কখনো। হয়তো আপনার সাথে কথা হয়নি, কাজ ছিল আপনার কোন কলিগের সাথে বা ছেলের সাথে দেখা করতে এসেছেন।’
‘আমার ব্যাংকে উনি কোন দিনই যাননি। সাব্বিরই বলেছে আমাকে।’
‘ধরুন, আপনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন। দেখলেন, দুজন লোক রাস্তায় মারামারি করছে। আাপনি এক বা দু’পলক হয়তো লোক দুটোকে দেখলেন। তারপর পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন। রাস্তায় চলতে-ফিরতে এরকম কতো ঘটনাই তো চোখে পড়ে। কিছুক্ষণ পর সচেতনভাবে ঘটনাটা মনে না-ও থাকতে পারে। কিন্তু এমনও হতে পারে, লোক দুটোর চেহারা আপনার অবচেতন বা অচেতন মনে গেঁথে গেল। সচেতনভাবে আপনি তা চিন্তাই করলেন না কিন্তু ছবিটা থেকে গেল মনের খুব গভীরে- আপনার অজান্তেই। বহুদিন পর লোকটাকে দেখার পর হয়তো আপনি তাকে এক পলকেই চিনে ফেললেন। অথবা ঘুমের মাঝে কোনো স্বপ্নে হাজির হয়ে গেল লোকটা । হতে পারে, লোকটা আপনার জীবনে কোনভাবেই গুরুত্বপূর্ণ কেউ না। কিন্তু অবচেতনে, যে কোন কারণেই হোক, তার ছবিটা থেকে যাওয়ায় স্বপ্নে চলে এলো সে। হয়তো দেখলেন, রাস্তার ঐ লোকটাই স্বপ্নে আপনার পারিবারিক কোন অনুষ্ঠানে আপনার বাবার সাথে খুব জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। হতে পারে, সাব্বিরের বাবাকে কোথাও দেখেছেন আপনি। সাব্বিরকে দেখার পর তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে গিয়ে স্বপ্নে চলে এসেছে আপনার অবচেতনে লুকিয়ে থাকা ওর বাবার ছবিটা, যেহেতু বাবার সাথে ছেলের চেহারার মিল থাকাটা স্বাভাবিক।’
মৌরির চেহারা দেখে মনে হলো না তাসনুভার কথায় সে মোটেও প্রভাবিত হয়েছে। অনিশ্চিত ভঙ্গিতে মাথা নাড়লো কয়েক বার। তারপর বললো - ‘আমার একটা ব্যাখ্যা আছে। শুনবেন?’
‘বলুন।’
‘আমার মনে হচ্ছে, আমি ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছি। আমার ধারণা, সাব্বিরের বাবার চরিত্র খুব একটা ভাল না। এবং সাব্বিরের সাথে বিয়ের পর আমার স্বপ্নে দেখা ঘটনাটা ঘটবে। স্বপ্নের এই ঘটনাটা আমার জন্য এক ধরণের সাবধান বাণী। এ কারণে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি ওকে বিয়ে করছি না। ওর বাসায়ও যাচ্ছি না।’
ভেতর থেকে উঠে আসা হাসিটা কোনোমতে দমন করেন তাসনুভা - ‘আপনার অস্বস্তির ব্যাপারটা বুঝতে পারছি। এরকম না ঘটলেও বিয়ের পর আপনি সব সময়ই এরকম একটা শংকায় ভুগবেন। তবু, আমি বলবো, সাব্বিরের বাসায় যান। উনার বাবার সাথে কথা বলে দেখুন। হয়তো উনার বাবা খুবই ভাল মানুষ। হয়তো উনি মনে করতে পারবেন, উনি আপনাকে কোথাও দেখেছেন কি না। তখন আপনার এই অহেতুক ভীতি হয়তো চলে যাবে। শুধু এরকম একটা স্বপ্নের ভয়ে ভালবাসার মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়া ঠিক হবে না। তবুও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আপনার হাতেই। যদি দেখা হওয়ার পর ওরকম কিছু মনে হয়, বাতিল করে দিতে পারেন বিয়ের সিদ্ধান্ত।’
......................
শুক্রবার অজানা আশংকা সঙ্গী করে দুরু দুরু বুকে সাব্বিরের বাসায় হাজির হয় মৌরি। শুনে স্বস্তি পায়, দুপুরে সাব্বিরের বাবা থাকছেন না বাসায়। তবে, বিকেলে ফিরবেন। তখন মৌরির সাথে দেখা হবে। সাব্বিরের বোন আনিতার সাথে দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দেয় মৌরি। এক সাথে লাঞ্চ করে। শুরুর অস্বস্তিটা কেটে যায় অনেকটা।
তবে, বিকেলে সাব্বিরের বাবার ফেরার সংবাদে আবার বুকের ভেতর ধুকপুকানি শুরু হয় মৌরির। প্রবল অস্বস্তি নিয়ে ড্রইংরুমে তার মুখোমুখি বসে। বাবা মৌরির সাথে একা কথা বলতে চান বুঝতে পেরে সাব্বির আর আনিতা চলে যায় ভেতরের ঘরে। সাব্বিরের বাবার মুখের দিকে মৌরি তাকিয়ে থাকতে পারে না বেশীক্ষণ। চোখ নামিয়ে নেয়। মনে হতে থাকে, ওর চোখের দিকে তাকালেই স্বপ্নের ব্যাপারটি বুঝে ফেলবেন তিনি।
সাব্বিরের বাবার আচরণে অবশ্য পূর্ব পরিচয়ের কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই তিনি মৌরির পরিবার-পড়ালেখা-চাকরির খোঁজ খবর নেন। আলাপচারিতার ফাঁকে চোরা চোখে সাব্বিরের বাবার দিকে তাকায় মৌরি। সাব্বিরের বাবার আচরণে বা অভিব্যক্তিতে আশংকার কিছু দেখতে পায় না মৌরি। ধীরে ধীরে অস্বস্তি কাটতে থাকে। অহেতুকই একটা স্বপ্ন নিয়ে কত কিছু ভেবে বসে আছে সে - মনে করে নিজেকেই খানিকটা বকে দেয় মনে মনে।
আলাপের মাঝেই মৌরির ফোন বেজে ওঠে কয়েকবার। প্রতিবারই ফোন কেটে দেয় মৌরি। শেষে রিং টোন বন্ধ করে দেয়। লক্ষ্য করে সাব্বিরের বাবা বলেন- ‘জরুরী কিছু? যাও, ভেতরে গিয়ে ফোন রিসিভ করে আসো।’
‘না না আঙ্কেল, তেমন জরুরী কিছু না।’ অপ্রতিভ ভঙ্গিতে বলে মৌরি। ‘আমার ফ্রে-রা ফোন করছে। আজ একটা গেট-টুগেদার আছে তো আমাদের। এক বছর আগে ঠিক এই দিনেই আমরা ইন্ডিয়া ছিলাম। আমাদের চার বান্ধবীর সেই প্রথম দেশের বাইরে যাওয়া। তাই, কথা ছিল, এর বছর পূর্তির দিনটা আমরা সেলিব্রেট করবো এক সাথে।’
‘আচ্ছা। ইন্ডিয়ার কোথায়? কি উপলক্ষ্যে? ঘুরতে?’
‘ঠিক ঘুরতে না। একটা ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ছিল। ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে দুই শিক্ষক-দম্পতি আর আমরা চার ছাত্রী গিয়েছিলাম। অনার্সে ভাল রেজাল্ট করায় আমাদের চার জনকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল। তবে, যাতায়াত খরচ দিতে হয়েছে নিজেদের। কনফারেন্সটা ছিল কোলকাতায়। একদিনের কনফারেন্স। আমরা আরও একদিন বেশী ছিলাম ঘোরাঘুরি করার জন্য।’
সাব্বিরের বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলছিল বলে মৌরি তার মুখের পেশীর পরিবর্তনটা লক্ষ্য করে। তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তিনি তাকিয়ে আছেন মৌরির মুখের দিকে। দ্রুত চোখ নামিয়ে নেয় মৌরি। পুরনো অস্বস্তিটা জেঁকে বসতে থাকে আবার- তিনি কি বুঝে ফেলছেন তার স্বপ্নের ব্যাপারটা?
‘কোন হো... কোথায় থেকেছিলে তোমরা?’
‘হোটেল অশোকায় উঠেছিলাম আমরা। ট্রেনে করে গিয়েছি ঢাকা থেকে। কনফারেন্সের আগের রাতে উঠেছি হোটেলে। এক বছর আগের আজকের দিনটায় ছিল কনফারেন্স।’
‘ঠিক আছে। যাও তুমি। তোমার বান্ধবীরা অপেক্ষা করবে তোমার জন্য। অন্য আরেকদিন কথা হবে।’ - বলে সাব্বিরকে ডাকতে ডাকতে তিনি ভেতরের রুমে চলে যান।
গেট টুগেদার নুসরাতের বাসায়। চার বান্ধবীর মধ্যে শাম্মী আর পূজার বিয়ে হয়ে গেছে। নুসরাত আর মৌরি বাকী। নুসরাতের বাসাটাই গেট টুগেদারের জন্য সবচেয়ে ভালো।
মৌরি পৌঁছে দেখে বাকী তিনজন এরই মধ্যে হাজির। চলছে কোলকাতা ভ্রমণের স্মৃতিচারণ। ওদের সামনে খোলা পড়ে আছে ছবির অ্যালবাম। ছবি ধরে ধরে স্মৃতিচারণ করছে ওরা। ওদের যাত্রার ছবি, কনফারেন্সের ছবি, হোটেল রুমের ছবি, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, সায়েন্স সিটির ছবি। এক পাতায় খালি একটা বোতলের ছবি দেখে ওখানে আঙুল রাখে মৌরি - ‘এটা কি? এটা তো আগে দেখিনি।’
চোখে চোখে চেয়ে মুখ টিপে হাসে তিন জনে। শাম্মী বলে- ‘এটা আগে প্রিন্ট করাইনি। কম্পিউটারেও অন্য ফোল্ডারে ছিল। তাই দেখিসনি। গত সপ্তাহে প্রিন্ট করিয়েছি। বল এটা কি?’
‘একটা বোতল। কিন্তু শুধু বোতলের ছবি কেন? ছবিতে তো আমাদের কেউ নেই।’
‘হু হু খালা। এইটা হইলো ধন্বন্তরী বোতল। এর মাহাত্ম্য সকলে বোঝে না।’ মাথা দুলিয়ে টানা টানা উচ্চারণে রসিকতা করে পূজা।
‘বল না, এটা কি? রহস্য করিস না।’- জানতে চায় মৌরি।
নুসরাত বলে - ‘এটা হলো, মদের বোতল, অ্যালকোহল। আমরা কোলকাতায় এই বোতলের মদ খেয়েছিলাম।’
‘মদ খেয়েছিলি তোরা? কই বলিসনি তো?’
আবার মুখ টিপে হাসাহাসি তিনজনের। - ‘শুধু আমরা না, তুই-ও খেয়েছিলি। স্যরি দোস্ত, না জানিয়েই তোকে খাইয়েছিলাম। পূজার দূর সম্পর্কের চাচাতো বোন ছিল কোলকাতায়। ওর লাভারের মাধ্যমে যোগাড় করা হয়েছিল। পূজা আগেই যোগাযোগ করে বলে রেখেছিল ওকে। খেয়ে একেক জনের কি অবস্থা!!’
মৌরি একটু দমে যায় যেন। মদ! যে জিনিসটা আজীবন ঘৃণা করে এসেছে সে - সেটাই কি না অজান্তে পান করে বসে আছে!!
মৌরির চেহারা দেখে ওর মনের ভাব আন্দাজ করতে পারে বাকীরা। শাম্মী সোজা ওর পা জড়িয়ে ধরে - ‘স্যরি , দোস্ত। ভেরী স্যরি। জাস্ট মজা করার জন্য ঐ দিন আনা হয়েছিল। মাপ করে দে। মন খারাপ করে আজকের সন্ধ্যাটা মাটি করিস না। আমরা বললে তুই না করতি। এজন্য তোকে বলিনি।’
যা হওয়ার তা তো হয়েছেই। কি আর করা। সে তো আর ইচ্ছে করে খায়নি। ওর নিজের দোষ তো আর অতটা নয়। এই ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করে মৌরি। মন খারাপ ভাবটা থেকেই যায়। তবুও সহজ হওয়ার চেষ্টা করে সে। পায়ের কাছ থেকে শাম্মীকে সরাতে সরাতে জিজ্ঞেস করে - ‘আমাকে কেমনে খাইয়েছিলি? আমি টের পাইনি কেন?’
উত্তর দেয় পূজা - ‘স্প্রাইটের সাথে মিশিয়ে নিয়েছিলাম। আমি আগেও দু-একবার খেয়েছি। তোরা তো নতুন। এজন্য সরাসরি র দিই নি। আর র দিলে তুই গন্ধে টের পেয়ে যাবি। রাতের খাবারের পর রুমে স্প্রাইট নিয়ে বসেছিলাম মনে আছে?’
মনে পড়ে মৌরির। এক বছর আগের ঠিক এই রাতে রাতের খাবারটা ওরা খেয়েছিল বাইরে, রেস্টুরেন্টে। কনফারেন্স শেষ হয়ে গিয়েছিল বিকেলেই। রাতের খাবার খেয়ে শিক্ষক দম্পতিরা চলে গিয়েছিলেন যার যার রুমে। ওরা বসেছিল এক রুমে- ওটা ছিল পূজা আর শাম্মীর রুম। নুসরাত আর মৌরির জন্য বরাদ্দ ছিল পাশের রুমটাই। ওদের রুমে তালা মেরে দুজনে চলে এসেছিল পূজাদের রুমে। উদ্দেশ্য- আড্ডা দিয়ে, সিনেমা দেখে তারপর ঘুম দেয়া। স্প্রাইট আনা ছিল। স্প্রাইট খেতে খেতে সিনেমা দেখছিল ওরা। সিনেমার নামটাও মনে পড়ে মৌরির -অদ্ভূত নামটা- ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’। কিন্তু তার পর?
নুসরাত বলে - ‘আমার তো একটু খেয়েই বমি পেয়ে গিয়েছিল। আমি গিয়ে ঢুকলাম বাথরুমে। বমি-টমি করে একাকার। তারপর বেরিয়ে দেখি তুই রুমে নেই।’
পূজা সায় দিলো- ‘হুম। নুসরাত আমাদের বাথরুমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তুইও বললি রুমে চলে যাবি - ঘুম পাচ্ছে। আমরাও আর আটকালাম না তোকে। নুসরাত পরে সিনেমা শেষ করে বের হলো।’
আবার নুসরাত কথার খেই ধরলো - ‘সিনেমা শেষ হতে হতে রাত প্রায় আড়াইটা। রুমে টোকা দিতে গিয়ে দেখি, তুই দরজা খোলা রেখেই ঘুমিয়ে গেছিস। তোকে আর না জাগিয়ে আমিও চুপচাপ শুয়ে পড়লাম। জানতাম, তুই রাগ করবি, তাই তোকে আর কিছু জানাইনি। আজ বছরপূর্তি বলে জানালাম। তোর কিছুই মনে নেই, না?’
এখন যেন একটু একটু করে মনে পড়ে মৌরির। মনে পড়ে, স্প্রাইটে চুমুক দিতে দিতে হঠাৎ খুব ঘুম পেয়ে যায় তার। বিদায় জানিয়ে ওর রুমের চাবিটা নিয়ে পূজার রুম থেকে বের হয়ে পাশেই নিজের রুমে যায়। ততক্ষণে কেন যেন হাঁটতে গিয়ে পা জড়িয়ে আসতে থাকে তার, চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা ঝাপসা লাগতে থাকে। এটা নিয়ে কখনো সে চিন্তাও করেনি আগে। এখন বুঝতে পারে- অ্যালকোহলের ক্রিয়া ছিল ওটা। হঠাৎ যেন ঐ রুমের সামনের করিডোর আর ঐ সময়ের ঘটনাগুলো ছবির মতো ভেসে ওঠে মৌরির চোখের সামনে।
সেই ছবিতে মৌরি নিজেকে দেখতে পায় - কোনোমতে হেঁটে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে চাবি ঢোকাতে যাচ্ছে সে তালার ফুটোয়। হাত কাঁপতে থাকে। ঢোকে না ফুটোয়। চেষ্টা করতে গিয়ে চাবিটা পড়ে যায় হাত থেকে। কোনোমতে উপুড় হয়ে কুড়িয়ে চাবিটা নিয়ে আবার তালার ফুটোয় ঢোকাতে যায়। এ সময় পাশ থেকে মৃদু কন্ঠস্বর - ‘মে আই হেল্প ইউ?’ কোনমতে দরজার সাথে মাথা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মৌরি। সারাটা শরীর যেন নিঃসাড় হয়ে আসতে থাকে। পাশ থেকে একটা হাত এগিয়ে এসে তার কাছ থেকে চাবিটা নিয়ে তালার ফুটোয় ঢোকায়। ঐ হাত বেয়ে দৃষ্টি উপরের দিকে উঠতে থাকে মৌরির। আরও ঝাপসা হয়ে আসতে থাকে চারপাশ। গা এলিয়ে দেয়ার আগ মুহূর্তে দৃষ্টি লোকটার মুখ পর্যন্ত ওঠে ছবির মৌরির।
চমকে ওঠে বর্তমানের মৌরি - সে চেহারা সাব্বিরের বাবার।
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×