
''আমরা যাইনি ম’রে আজো— তবু কেবলি দৃশ্যের জন্ম হয়:
মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে,
প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন— এখনও ঘাসের লোভে চরে
পৃথিবীর কিমাকার ডাইনামোর ’পরে।''
-জীবনানন্দ দাশ।
১৯৭৫ সালে জীবনানন্দ দাশের কবিতার থেকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকজন ছেলে একটি গানের দল তৈরি করলো, নাম দিলো মহীনের ঘোড়াগুলি৷ আমাদের বুঝে উঠবার বয়সের আগে মহীনের ঘোড়াগুলি দাপিয়ে বেড়াতো পশ্চিমবঙ্গের পথে-ঘাটে। প্রথম পরিচয় হয় পৃথিবীটা ছোট হওয়ার মধ্য দিয়ে। যখন ওরা গাইল,
''পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে স্যাটেলাইট আর কেব্লের হাতে ড্রয়িংরুমে রাখা বোকা বাক্সতে বন্দী
আ হা হা হা আ হা...''
আর প্রথম চিনলাম, ''যে গেছে বনমাঝে চৈত্র বিকেলে...'' শুনবার মধ্য দিয়ে।
মহীনের ঘোড়াগুলি-র এই গান গাওয়া ছিল মূলত পশ্চিমবঙ্গের নক্সালদের নিয়ে, সেইসব তরুণের দল, যারা সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নিয়েছিল। তারা কখনও মৃত্যুর কাছাকাছি গিয়েছিল, কখনোবা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিল।
আস্তাবল পূর্বেই ভেঙে গেছে, শেষ ছিল আর একটি মাত্র ঘোড়া। আজ সেই শেষ ঘোড়া তাপস বাপি দাস চলে গেলেন।
ওদেরকে কেউ কেউ বাংলার পিংক ফ্লয়েড বলতো কিংবা বলে, কিন্তু আমি ওদের স্বতন্ত্র কীর্তিকে ছোট করতে চাই না।
মহীনের ঘোড়াগুলি বারবার ফিরে আসে৷ ফিরে আসে, যেমনটা জীবনানন্দ দাশ লেখেছেন, ''এই সব ঘোড়াদের নিওলিথ-স্তব্ধতার জ্যোৎস্নাকে ছুঁয়ে''।
ওদের কয়েকটি গানের লিংক দিচ্ছি-
১) পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে...
২) হায় ভালোবাসি...
৩) যে গেছে বনমাঝে চৈত্র বিকেলে...
২৬শে জুলাই, ২০২৩
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২৩ বিকাল ৪:৩১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




