
বার্লিন কিংবা প্যারিসে ইজরায়েলের পক্ষে বিক্ষোভ কিংবা সহমর্মিতা জানাতে রাস্তায় দাঁড়ালে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিয়েছে, অথচ প্যালেস্টাইনের পক্ষে দাঁড়ালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইউএসএ বা আমরা যাকে আমেরিকা নামে চিনি, সেই আমেরিকা এখন বিশ্বের ডুবন্ত সূর্য। ডুবতে থাকে ব্রিটিশ এম্পায়ারের বেঁচে থাকার শেষ ভরসা ছিল আরও একটি বিশ্বযুদ্ধ, যদিও তা কাজে লাগেনি বা ব্রিটেনের বদলে কর্পোরেশন ও পরিবারগুলো আমেরিকাকে বেছে নিয়েছিল।বলা বাহুল্য নয়, শক্তির এই ট্রানজিশনে অন্য কোন নতুন রক্তক্ষয়ের প্রয়োজন পড়েনি। এই ব্যাপারটি কিন্তু খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সচেতন পাঠক এই ঘটনার অনুসন্ধান করুন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জাপান, জার্মানি, তুরস্ক কিংবা ইতালির মতো দেশগুলো হয়ে যায় আমেরিকার স্যাটেলাইট স্টেট। পরবর্তীতে আমরা দেখবো আরও প্রায় অর্ধশত বছর কিংবা তারও অধিক সময় পরে এই দেশগুলোর নিজস্ব কোন পররাষ্ট্রনীতি থাকবে না। আমরা দেখেছি ইউরোসেন্ট্রিক যুদ্ধ হলেও দূর প্রাচ্যের জাপানে নিউক্লিয়ার হামলা হয়ে গেছে, যা ছিল একপ্রকার ধরাছোঁয়ার বাইরে। সেই মাইটি এম্পায়ার জাপান, যারা বর্তমান চীনের বহু অংশ শাসন করতো, তাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয় আমেরিকাকে। নিজেদের সংবিধান পরিবর্তন করে মিলিটারি শক্তিকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় আমেরিকার পকেটে। আর সেই সংবিধানের নাম দেওয়া হয় শান্তির সংবিধান।
জার্মানি মিলিটারি ইকুইপমেন্ট রপ্তানিতে বিশ্বের শীর্ষ দেশ হলেও মিলিটারি পাওয়ার ইনডেক্সে এদের অবস্থান নগন্য। এই দেশগুলোর সরকারব্যবস্থা ও সামগ্রিক মূল্যবোধের নীতি ঠিক করে দেয় সেই কর্পোরেশন বা পরিবারগুলো, যেমনটি তারা আমেরিকার জন্য করে আসছে।
কিন্তু এখন পাওয়ার ওয়েস্ট থেকে ইস্টের দিকে ট্রানজিশন হচ্ছে, যা রক্তের দাবি করছে, দাবি করছে আরও একটি মহাযুদ্ধের৷
ইউক্রেন-রাশিয়া কিংবা গাজা-প্যালেস্টাইন ইস্যুতে বহুবার যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান করা হয়েছে, কিন্তু আমেরিকা কিংবা জায়ানিস্টরা সায় দেয়নি। কেননা তারা আরও ক্যাওস বৃদ্ধি করতে চায় ও এই ক্যাওসের ভেতর থেকে ফায়দা লুটতে চায়। হানাহানিতে পৃথিবীর কিছু মানুষের মৃত্যু হলে তাদের কিছু যায় আসে না।
ওসমানী খিলাফতের সাতশো বছর কেউ প্যালেস্টাইনের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস পায়নি, অথচ আজ তুরস্ক নিজেই গোলামে পরিণত হয়েছে। যদিও এরদোয়ান সরকার গোলামীর থেকে বের হওয়ার পক্ষে বেশ কিছু কাজ করেছেন, যার ফলশ্রুতিতে তাকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য ক্যু করা হয়েছিল। আপনারা যারা পাকিস্তানকে পৃথিবীর সপ্তম মিলিটারি পাওয়ারের দেশ হিসেবে চিনেন, তারা জানেন না পাকিস্তানও একটি গোলাম রাষ্ট্র। পৃথিবী একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় চলে শুধুমাত্র বিশেষ কাউকে ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি পাইয়ে দেবার জন্য। সেই বিশেষ ব্যবস্থাকে আঘাত করতে চেয়েছিলেন মোয়াম্মর গাদ্দাফী। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি নাগরিক সুবিধা পেয়েও তার দেশের লোকেরা(?) তাকে হত্যা করেছে। আসলেই কী তা-ই? তাকে হত্যা করেছে সেই কর্পোরেশনগুলোর অধীনে থাকা শক্তিশালী দেশগুলো।
আজকের চীন কিংবা রাশিয়ার মতো শক্তি নতুন করে ছক কষছে, নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলবার নিমিত্তে। আমি বলছি না নতুন শাসন কল্যাণ বয়ে আনবে, নতুন শাসন এর চেয়েও খারাপ হতে পারে৷ পৃথিবীর কী হবে তা শুধু সময়-ই বলে দিতে পারে।
ছবি: The Plumb-pudding is in danger
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




